ভোটার আইডি কার্ড জন্ম সাল সংশোধন : বর্তমান সময়ে ভোটার আইডি কার্ডে বিদ্যমান সকল তথ্যের মধ্যে, জন্ম তারিখ সংশোধন করা সব থেকে ঝামেলার একটি কাজ।
জাতীয় পরিচয় পত্র এন আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন করার জন্য করণীয় কি। এবং ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম সাল সংশোধন করতে কি কি, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিলে। ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন দ্রুত করা সম্ভব হয়।
তো আপনি যদি ভোটার আইডি কার্ড জন্ম সাল সং সংশোধন করতে চান। এবং কি কি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে সে বিষয়ে জানতে, নিজে দেয়ার তথ্য গুলো ধাপে ধাপে অনুসরণ করুন।
ভোটার আইডি কার্ড জন্ম সাল সংশোধন
জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধনের আবেদন করার আগে। আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জানতে হবে।
যেমন-
- ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে জন্ম নিবন্ধন নম্বর বের করার নিয়ম
- পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম
- নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে (জেনেনিন এখানে)
জাতীয় পরিচয় পত্র এন আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য আবেদন করলে যে, সংশোধন হয়। আসবে সেটা কিন্তু একদম সঠিক না।
যদি আপনার ভোটার আইডি কার্ডে বিদ্যমান জন্মতারিখ প্রকৃতপক্ষে ভুল থেকে থাকে। তবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে আবেদন করলে, সেটি সংশোধন হবে।
তবে কেউ যদি স্বার্থপরের জন্য বা সুবিধার জন্য জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন করার জন্য আবেদন করে তবে সেই আবেদন অনুমোদন নাও হতে পারে।
এর কারণ অনেকেই রয়েছে সরকারি ভাতা পাওয়া বা সরকারি চাকরি পাওয়া। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের জন্য ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে, কমানো বা বাড়ানোর জন্য আবেদন করেন।
এই ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পরিমাণের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাবমিট ছাড়া শুধু অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সনদ/ চেয়ারম্যান/ কাউন্সিলর এর প্রত্যয়ন পত্র/ কোন স্কুল থেকে অষ্টম শ্রেণী পাসের সনদপত্র তৈরি করে আবেদনের সাথে সাবমিট করে দেয় এবং পাঁচ থেকে দশ বছর বয়স পরিবর্তন করতে চায়।
এ সকল আবেদন গুলোর সচরাচর অনুমোদন দেওয়া হয় না। কারণ এই ব্যক্তির গুলোর দাখিল করা কাগজপত্র। তার জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ডে চাহিত জন্ম তারিখ এর জন্য যথেষ্ট পরিমাণের প্রমাণ বহন করে না।
আমাদের মধ্যে এমন অসংখ্য মানুষ আছে যারা অষ্টম শ্রেণী পাস তেমন কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদ নাই। এবং তাদের চাকরির বয়স চলে গেছে কোন না কোন ভাবে। জন্ম নিবন্ধন সনদ জমা দিয়ে ছোটখাটো একটি চাকরি করছে।
ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন
পরবর্তীতে জাতীয় পরিচয় পত্র ছাড়া বেতন ভাতা তুলতে পারছে না। এদিকে জাতীয় পরিচয়পত্র উল্লেখিত জন্ম তারিখের সাথে চাকরির বইয়ের জন্ম তারিখের 5 থেকে 8 বছর গরমিল আছে।
এতে করে বাধ্য হয়ে নির্বাচন অফিসে গিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধনের আবেদন দাখিল করে।
আবেদনের সাথে তার দাখিল করা কাগজপত্র পাস থেকে আট বছর বয়স কমানোর জন্য পর্যাপ্ত নয় আবেদন পড়ে থাকে।
নির্বাচন অফিসে ঘুরতে ঘুরতে হয়তোবা তার পায়ের জুতো ক্ষয় হয়ে যায় ।তারপরও জাতীয় পরিচয়পত্র ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন হয় না।
যার ফলে বেতন ভাতা উত্তোলন করতে পারে না। কিছুদিন এরকম ভাবে থাকার পরে হয়তো। লোকটি মানুষের কাছে, বলে বলে বেড়ায় নির্বাচন অফিসে গেলে শুধু ভোগান্তি হয়। আর কিছু না বিভিন্নভাবে অফিসের দুর্নাম করা থাকে।
কিন্তু কখনো কি কেউ ভেবে দেখেছে যে কর্মকর্তা এমন আবেদনগুলো অনুমোদন দেবেন কিসের উপর ভিত্তি করে।
আবেদনকারীর দাখিলকৃত কাগজপত্র সরেজমেন্ট তদন্ত প্রতিবেদন এগুলোর কোন কিছুই আবেদনকারীর পক্ষে নেই। এমন আবেদন অনুমোদন নিয়ে কেন সে কর্মকর্তা নিজের নিজেকে আনবেন।
তাছাড়া যার চাকরির বয়স নেই তার বয়স কমিয়ে দিয়ে চাকরির সুযোগ করে দিলে। একজন যোগ্য ব্যক্তির চাকরির সুযোগ চিরজীবনের জন্য বন্ধ হয়ে যায়।
তার জন্য কোন সুযোগ সুবিধা পাওয়ার আশায়। জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ডে, জন্ম তারিখ সংশোধনের বৃথা চেষ্টা করে, অযথা সময় নষ্ট না করাই ভালো।
তো প্রকৃতপক্ষে যদি জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ ভুল থেকে থাকে তাহলে আপনার কাছে, সঠিক প্রমাণ পত্র যেমন-
এসএসসি সনদ থাকে তার সঙ্গে অন্যান্য আরো কিছু কাগজপত্র দিয়ে আবেদন করলে, অল্প সময়ের মধ্যে ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সাল সংশোধন হবে।
ভোটার আইডি কার্ডে জন্ম তারিখ সংশোধন এর আবেদন
জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের আবেদন দাখিল আপনারা দুই ভাবে করতে পারবেন। যেমন-
- সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে এবং
- নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে
সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে
প্রথমত সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচনে অফিসে গিয়ে দুই নং সংশোধনের ফর্ম পূরণ করে নির্ধারিত ফি জমাদানের রশিদ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আবেদনের সাথে যুক্ত করে অফিসে জমা দেওয়া যায়।
আর আপনি পূরণ করে সঠিকভাবে উপজেলা নির্বাচনে দিতে পারলে। আপনার ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন আবেদন সম্পন্ন হবে।
নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে
দ্বিতীয়তঃ আপনি যদি অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের আবেদন করতে চান। তাহলে আপনাকে সরাসরি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট services.nidw.gov.bd এই ঠিকানায় একটি একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
আপনারা প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করার পর অবশ্যই লগইন করতে হবে। লগইন করার পরে প্রোফাইল অপশনে গেলে জন্ম তারিখ সহ ভোটার আইডি কার্ডের যাবতীয় তথাপি দেখানো হবে।
আপনারা সেখান থেকে যে তথ্যটি সংশোধন করতে চান অবশ্যই এডিট করতে হবে।
তো আপনার জন্ম তারিখ এডিট করে সঠিক তারিখটি লিখে দেবেন এবং পরবর্তী ধাপে ক্লিক করবেন তারপর আপনাকে পেমেন্ট সম্পর্কিত তথ্য দেখানো হবে।
পেমেন্ট পরিশোধ করার পর আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো আপলোড করতে হবে। এরকম ভাবে প্রতিটি ধাপ পূরণ করার পর আবেদনটি সাবমিট করতে হবে। সাবমিট করার পর আপনাকে একটি পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করার অপশন দিয়ে দিবে আপনার চাইলে সেটি সরাসরি প্রিন্টও করতে পারেন।
সংশোধনের জন্য যে আবেদন করবেন। সেই আবেদনের প্রিন্ট কপিটি নির্বাচন অফিসে সংশোধন সংক্রান্ত খোঁজ খবর নিতে চাইলে, অনলাইন কপি সাথে নিয়ে যেতে হবে।
ভোটার আইডি কার্ডে জন্ম তারিখ সংশোধন এর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
আপনি যদি ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন করতে চান। তাহলে এক্ষেত্রে সঠিক প্রমাণক হিসেবে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে।
সেগুলো হচ্ছে-
- এসএসসি সার্টিফিকেট
- অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
- বিবাহিত হলে কাবিননামার কপি
- স্বামী স্ত্রীর জাতীয় পরিচয় পত্র কপি
- সকল ভাই বোনের ভোটার আইডি কার্ডের কপি
- পিতার উত্তরাধিকার সনদপত্র
- সার্ভিস বইয়ের কপি
- পাসপোর্টের কপি
- ড্রাইভিং লাইসেন্স
- অবসর ভাতা বইয়ের কপি
তো বন্ধুরা আপনারা যারা ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম সাল বা জন্মতারিখ সংশোধন করতে চান? তাদের এই ধরনের প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র গুলো আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে।
শেষ কথাঃ
তো আজকের আর্টিকেলে আপনাকে জানিয়ে দেয়া হলো, ভোটার আইডি কার্ড জন্ম সাল সংশোধন করার নিয়ম সম্পর্কে। এবং ভোটার আইডি কার্ড জন্ম সাল সংশোধন করার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কি কি লাগে।
তো আমাদের লেখা আর্টিকেলটি পড়ার পর আপনার কাছে কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।
আর জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ড সংক্রান্ত আরো নতুন নতুন তথ্য জানতে নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।