ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তনের নিয়ম এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ড প্রতিটি মানুষ এর জন্য অনেক জরুরী একটি ডকুমেন্ট।

তার জন্য ভোটার আইডি কার্ড এ কোন প্রকার ভুল থাকা উচিত নয়। অনেক লোকের ভোটার আইডি কার্ড এ ঠিকানা ভুল রয়েছে।

এছাড়া, প্রতিটি সময় শুনতে হয় যে ভোটার আইডি কার্ড এর ঠিকনা সংশোধন এর উপায় কি? কিভাবে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকনা পরিবর্তন করব।

ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তনের নিয়ম এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তনের নিয়ম এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে। ভোটার আইডি কার্ড করতে কত টাকা লাগে।

উক্ত ভোটার আইডি কার্ড এর এই সংক্রান্ত তথ্য জানতে আমাদের দেওয়া আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনযোগ দিয়ে পড়ুন।

বর্তমান সময়ে আমাদের মধ্যে এমন অনেক অসংখ্য লোক আছে। যাদের ভোটার আইডি কার্ডে ভুল রয়েছে।

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কাজ কর্ম করতে গিয়ে, জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকনা ভুল এর জন্য সমস্যায় পড়তে হয়।

ভোটার আইডি কার্ড এর ঠিকানা ভুল থাকলে যে সমস্যা গুলো হতে পারে।

যেমন-

  • ব্যাংক একাউন্ট খুলতে গেলে।
  • চাকরির আবদেন করতে গেলে।
  • পাসপোর্ট করতে গেলে।
  • সরকারি কোন সহায়তা পেতে গেলে। ইত্যাদি।

উক্ত কাজ গুলো ছাড়া আরো অসংখ্য কাজে বাধা সৃষ্টি হয়। তাই সময় থাকতে সেই ভোটার আইডি কার্ড এর ঠিকানা ঠিক করুন।

তা না হলে প্রয়োজন এর সময় ভোগান্তির শিকার হতে হবে।

তার জন্য এনআইডি কার্ডে ভুল থাকলে, সকলের উচিত হবে সময়মত, ভোটার আইডি কার্ড তথ্য সংশোধন করে নেওয়া। যার ফলে প্রয়োজনীয় কাজে কোন প্রকার বিঘ্ন না ঘটে।

ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা ভুল হওয়ার কারণ

ভোটার আইডি কার্ড বিভিন্ন কারনে ঠিকনা ভুল হতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্র অসাবধানতার জন্য এমন ভুল গুলো হয়ে থাকে।

তো সেই অসাবধানতা হতে পারে আপনার বা তথ্য সংগ্রহকারী কিংবা টাইপিং অপারেটর এর।

তথ্য সংগ্রহকারী যখন মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে, নতুন ভোটার হওয়ার জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ করে। তখন ২নং নিবন্ধন ফরম এর পিছনের পাতায় ভোটার এর বর্তমান ঠিকনা এবং স্থায়ী ঠিকনা লিখা হয়।

এক্ষেত্রে, অনেক সময় সেখানে, ঠিকানা লিখতে গিয়ে মৌজার নাম এর স্থানে মৌজার নাম বানান করে না লিখে সেই মৌজার কোর্ড নম্বর লিখে দেয়।

যে অপারেটর সেই ভোটার এর ডাটা এন্ট্রি করেন সে জানেন এটি মৌজার কোর্ড। তবে, কোন মৌজার কোড এটি তিনি হয়তো জানেন না।

যার ফলে গ্রাম এর নাম ও মৌজার নাম ২টি একই লিখে থাকে। যার ফলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ভোটার হতে আসা মানুষ এর কাছে, যদি প্রশ্ন করা হয়। আপনার বাড়ী কোন মৌজায়? তখন তারা 90% বলতে পারে না। তাদের মৌজার নাম আসলে কি?

অনেক লোক আছে যারা জানেন না তাদের পোস্ট কোড কত। নতুন ভোটার নিবন্ধন ফরম পূরণ এর সময় ঠিকনা সংক্রান্ত সকল তথ্য। অনেক সতর্কতার সঙ্গে না লিখলে, জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ডে তথ্য অবশ্যেই ভুল আসতে পারে।

অনেক লোকের স্থায়ী ঠিকানা এবং বর্তমান ঠিকানা ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে নতুন ভোটার নিবন্ধন ফরম পূর্ন এর সময় স্থায়ী ঠিকনা এবং বর্তমান ঠিকানা উভয়ই যদি এক হয়। তাহলে, ক্ষেত্রে ভোটার আইডি কার্ড ঠিকনা ভুল হয়।

তার জন্য নতুন ভোটার হওয়ার সময় ২নং ফরম পূরন করে ভালো করে, যাচাই করে নেওয়া উচিত। যাতে করে কোন প্রকার ভুল না হয়।

এছাড়া, কম্পিউটার অপারেটরদের অসাবধানতার জন্য ভুল গুলো বেশি হয়ে থাকে। ডাটা এন্ট্রি করার সময় ভুল টাইপ করলে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা ভুল হয়।

কিন্তু অপারেটর কর্তৃক ভুল বিনা ফিতে সংশোধন করার সুবিধা আছে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শেষ হয়ে যাওয়ার পরে নতুন ভোটারদের খসড়া ভোটার তালিকা অফিসে চলে আসে।

সকল নতুন ভোটার এর উচিত ভোটার তালিকাটি যাচাই করে আসা।

ভোটার তথ্য তে যদি কোন ভুল থাকে। তবে বিনা ফ্রিতে মাত্র একটি আবেদন করে, সকল প্রকার ভুল সংশোধন করে নেওয়া যায়।

বর্তমান সময়ে রিভাইজিং অথোরিটি এর কার্যক্রম চালূ থাকে ও বাদ পড়া ভোটারদের এই সময়ে ভোটার করে নেওয়া হয়।

আর যাদের ভোটার আইডি কার্ড ইতোমধ্যে ভুল হয়েছে। তাদের ক্ষেত্রে কোন ভুল হয়ে থাকলে কি কারণে ভুল হলো সে গুলো বিচার বিশ্লেষণ করে, অযথা সময় নষ্ট করার দরকার নাই।

ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা যেহেতু ভুল হয়ে গেছে, এখন সেটি কিভাবে সংশোধন করতে হবে সেটি নিয়ে চিন্তা করা প্রয়োজন।

ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা সংশোধনের নিয়ম

আপনি যদি ভোটার আইডি কার্ড ঠিকনা সংশোধন করতে চান। তাহলে আপনাকে কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে।

আমি আপনাকে এখানে কিছু পদক্ষেপ বলব, যে গুলো অনুসরণ করে, সহজেই আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ড ঠিকানা সংশোধন করে নিতে পারবেন।

যেমন-

১। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে গিয়ে ২নং সংশোধন ফরম পূরণ করতে হবে।

জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন এর সরকারি ফি কত টাকা প্রদান করতে হবে। সেটি হিসাব করে রকেট বা বিকাশ এর মাধ্যমে জমা দিতে হবে।

নির্ধারিত সরকারি ফি জমা দেওয়ার রশিদ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আবেদন পত্রের পিছনে পিন-আপ করে। নির্বাচন অফিস চলাকালিন সময়ে, জমা দেওয়ার পরে, আবেদন এর কার্যক্রম শুরু হয়ে থাকে।

২। অনলাইন এর মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড ঠিকানা পরিবর্তন করা যায়। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট services.nidw.gov.bd, ভিজিট করে, প্রথমে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন হলে লগইন করতে হবে। লগইন করার পরে প্রোফাইল অপশনে গিয়ে আপনার ঠিকানা সহ সকল তথ্য দেখতে পারবেন।

সেখান থেকে ঠিকানা পরিবর্তন করে, সঠিক ঠিকানা লিখে পরবর্তী পদক্ষেপে যেতে হবে।

তারপরে মপেমেন্ট সম্পর্কিত তথ্য দেখানো হবে। এরপরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করতে হবে। এরকম ভাবে প্রতিটি পদক্ষেপ শেষ করার পরে আবেদন সাবমিট করতে হবে।

ভোটার আইডি কার্ড তথ্য সংশোধন করার পরে, আবেদন সাবমিট করা হলে আবেনদ এর একটি পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।

আর সেই ডাউনলোড কপি প্রিন্ট করে নিজের কাছে সংরক্ষণ করে রাখবেন। পরবর্তীতে অফিসে গিয়ে খোজ খরবর নিতে চাইলে আবেদন এর সেই ডাউনলোড/প্রিন্ট কপি টি সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে।

কিন্তু বর্তমান সময়ে ভোটার আইডি কার্ড ঠিকানা সংশোধন এর জন্য অনলাইন আবেদন করার সময় কাঙ্খিত গ্রাম ও ডাকঘর এর নাম না পাওয়া গেলে, ম্যানুয়ালী সে গুলো লিখার অপশন পাওয়া যায় না।

যে, নাম গুলো সেখানে ডিফল্ট করা থাকে। সেগুলো  থেকে সিলেক্ট করতে হয়। যার ফলে আবেদনকারী সঠিক বানান ব্যবহার করে, গ্রাম ও ডাকঘর এর নাম লিখতে পারেন না।

তার জন্য ভোটার আইডি কার্ড এর ঠিকানা সংশোধন করার জন্য সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে গিয়ে করা উত্তম হবে বলে আমি মনে করি।

ভোটার আইডি কার্ড ঠিকানা সংশোধনের জন্য যে ডকুমেন্ট লাগবে

  • অনলাইন জন্ম নিবন্ধন।
  • বিদ্যুৎ বিল / গ্যাস / পানি বিলের কপি।
  • চৌকিদারী ট্যাক্স / পৌর করের রশিদ।
  • চেয়ারম্যান / পৌর কাউন্সিলরের প্রত্যয়ন পত্র।
  • এনআইডি কার্ডের কপি।

উক্ত ডকুমেন্ট গুলা দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড এর ঠিকানা সংশোধন এর আবেদন করতে পারবেন।

ভোটার আইডি কার্ড এর ঠিকানা সংক্রান্ত ভুল অল্প সময় এর মধ্যে অনুমোদ দেওয়া হয়।

আবেদন অনুমাদন পেলে বা বাতিল হলে বা অন্যান্য ডকুমেন্ট লাগলে মোবাইল ম্যাসেজ এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়।

মোবাইলে অনুমোদন ম্যাসেজ পাওয়ার পরে, অনলাইন সিস্টেম থেকে মূল ভোটার আইডি কার্ড অনুলিপি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে লেমিনেটিং করতে পারবেন।

আরো দেখুনঃ

শেষ কথাঃ

তো বন্ধুরা আপনারা যারা ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করতে চান। তারা উক্ত আলোচনা অনুসরণ করে, দ্রুত ঠিকানা সংশোধন করতে পারবেন।

আমি শেষ অংশে এসে আবারো বলছি, আপনি যদি ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করতে চান।

তবে আপনারা সরাসরি নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে গিয়ে ফরম পূরণ করে আবেনদ করবেন। তবে দ্রুত ঠিকানা সংশোধন করে নতুন কার্ড গ্রহণ করতে পারবেন।

তো আজ আমাদের আর্টিকেলটি ছিল ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তনের নিয়ম। আর এটি এখানেই সমাপ্তি ঘোষণা করা হলো।

সেই সঙ্গে আমাদের লেখাটি আপনার কাছে কেমন লাগলো একটি কমেন্ট করে জানাবেন।

আর এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার পরিচিতদের জানাতে নিচে দেওয়া সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top