আমাদের আজকের এই পোস্টে শেয়ার করতে যাচ্ছি, ভার্চুয়াল অফিস কি এবং ভার্চয়াল অফিসের সুবিধা ও অসুবিধা গুলো নিয়ে।
বর্তমান সময়ে কর্ম জীবন থেকে শুরু করে, দৈনন্দিন জীবন যাত্রায় এই একবিংশ শতাব্দিতে জীবন এর সকল ভাগে দেখা যায়, এক অমূল পরিবর্তন।
তার কারণ আমাদের জীবন এখন অনেকটা ডিজিটাল যন্ত্রপাতি এবং প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল হয়ে গেছে। যার ফলে মানব জীবন আগের থেকে অনেকটা দ্রততর এবং সহজতর হয়ে গেছে।

তো এই ডিজিটাল প্রযুক্তির এক অবিশ্বাস্য অবদান হচ্ছে ভার্চুয়াল বা ডিজিটাল জগৎ। আমরা জানি ভার্চুয়াল শব্দটা অনেক মজার।
এই যে আমরা ইন্টারনেট কিংবা আমাদের মোবাইল ব্যবার করে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম এর মতো। সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম এ নিজিদের নামে কোন প্রোফাইল বা একাউন্ট তৈরি করে, সেটি কিন্তু শুধু কম্পিউটার বা মোবাইল স্ক্রিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে।
অন্যদিকে বাস্তব জগতে কোন ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র ছাড়া আমরা কিন্তু সেই, প্রোফাইল গুলোর উপস্থিতি অনুভব করতে পারি না। তারপরেও আমরা জানি যে, আমাদের প্রোফাইল গুলোর অবশ্যই কোন অস্তিত্ব আছে।
এক্ষেত্রে, ভার্চয়াল ওয়াল্ড বা জগত আমাদের স্পর্শ কিংবা অনুভুতির সাহায্যে বোঝা না গেলেও যন্ত্রের জগতে তার উপস্থিতি কিন্তু সম্পূর্ণ ভাবে সত্য সত্য রয়েছে।
তাই আমাদের আজকের এই পোস্টে আলোচনা করব, ভার্চুয়াল অফিস কি এবং এর সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত। আপনি যদি এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চান? তাহলে আমাদের লেখা আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
ভার্চুয়াল অফিস কি ?
বর্তমানে অফিস মানে কিন্তু বড় বড় চকচকে মাল্টি স্টোরিড বিল্ডিং হতে হবে তা কিন্তু না। আমরা কোভিড-19, করোনা ভাইরাস মহামারির দৌলতে সকলেই কম বেশি ওয়ার্ক ফরম হোম এর ধারণা অর্জন করেছি।
ঠিক সেরকম ভাবে ধীরে ধীরে ফিজিক্যাল অফিস এর বিপরীতে আমাদের সমাজে জায়গা করে নিয়েছে ভার্চয়াল অফিস এর ধারণাটি।
ফিজিক্যাল অফিস এর জন্য একটি নির্দিষ্ট ফিজিক্যাল এড্রেস বা ভৌত ঠিকানা থাকে। যেখান তেকে সকল কর্মীদের অফিস এর ঠিকানাতে উপস্থিত হয়ে কাজ গুলো পরিচালনা করতে হয়।
অপরদিকে ভার্চুয়াল অফিস হচ্ছে এমন একটি কোম্পনি বা প্রতিষ্ঠান যা একক ইউনিট হিসেবে কাজ করে। এবং যার একটি নির্ধারিত ফিজিক্যাল মেইলিং এড্রেস থাকলেও কর্মীরা বিশ্বের যে, কোন জায়গায় বসে অফিসের ঠিকানাতে উপস্থিত না হয়েও, কোম্পানি বা অফিসের যাবতীয় কাজ পরিচালনা করে যেতে পারে।
এখন আপনাকে যদি আরো সহজ ভাবে বলা হয়। তাহলে বলা যায় যে, ভার্চুয়াল অফিস হচ্ছে এমন একটি পরিষেবা। যার মাধ্যমে কর্মীরা এবং ব্যবসায়ীদের দুরবর্তী ভাবে কাজ করার সুবিধা প্রদান করে থাকে।
একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সুবিধা গুলো এখানে দেওয়া হয়। যে গুলোকে ইন্টারনেট এর মাধ্যমে পরিচালনা করা সম্ভব হয়।
কিন্তু এই ধরণের অফিসে ফিজিক্যাল অফিসের মতো ভিডিও কনফারেন্সিং, ফোন অ্যান্সারিং পরিষেবা কিংবা মিটিং রুম এর ভার্চুয়াল ব্যবস্থা থাকে।
তাই মূলত অনলাইন/ ইন্টারনেট ব্যবস্থা এবং ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস এর মাধ্যমে গড়ে উঠে এই ভার্চুয়াল অফিস গুলো।
ভার্চুয়াল অফিসের সুবিধা
বর্তমানে সব কিছুই ডিজিটাল। সেই অনুযায়ী এখনকার অফিস গুলোও ডিজিটাল পদ্ধতিতে তাদের কাজ পরিচালনা করে যায়। সেই ক্ষেত্রে, আপনি এখন জানতে পারবেন। ভার্চুয়াল অফিসের কিছু সুবিধা সম্পর্কে। যেমন-
স্থায়ী অফিসের তুলনায় ভাড়া কম
পুরো একটি অফিস ভাড়া করা বা ক্রয় এর বিপরীতে আপনারা ভার্চুয়াল অফিস স্পেস ভাড়া করতে পারবেন। যেখানে আপনাকে আলাদা করে অফিস সাজানোর প্রয়োজন হবে না।
তার কারণ সেখানে আপনি শুধু মাত্র ভাড়ার বিনিময়ে একটি অফিস সেটআপ ব্যবহার করবেন। আর তার পাশাপাশি আপনি সেখানকার কিছু সার্ভিস যেমন- রিসেপশনিস্ট, অ্যাসিস্ট্যান্ট সার্ভিসও পাবেন। যা আপনাদের ব্যবসা পরিচালনা করার খরচ অনেকটা কমিয়ে আনবে।
পেশাদারি অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠা করা
স্টার্ট-আপ ব্যবসার আইডিয়া ব্যাপক ভাবে জনপ্রিয় হওয়া এখানে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। তাই ক্লায়েন্টদের মন জয় করার লক্ষ্যে অনেক স্টার্ট আপ উদ্যোক্তারা কম খরচে প্রফেশনাল উপস্থিতি তৈরি করতে ভার্চুয়াল অফিস এর সহায়তা গ্রহণ করে।
এই সকল অফিস কাঠামো ক্লায়েন্টদের বিশ্বাস অর্জন করতে বিশেষ ভাবে সহায়তা করে থাকে। অথচ উক্ত সকল অফিসে সেটাপ এর খরচ অনেক কম হয়।
রক্ষণাবেক্ষণ এর দ্বায়িত্ব নেই
আপনাদের ভার্চুয়াল স্পেস আপনার ক্রয় করা জমি নয়। তাই এখানে কোন ধরণের ক্ষতি বা রক্ষণা বেক্ষণ এর খরচের দ্বায়িত্ব আপনার না।
নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা
অনেক সময় দেখা যায় নতুন উদ্যোক্তাদের নিজস্ব বাড়ির ঠিকানাতে তাদের ব্যবসার লাইসেন্স আছে। যা তাদের ব্যক্তিগত জীবন- এ সমস্যার কারণ হতে পারে।
তো নিজেদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার জন্য একটি ভার্চুয়াল অফিস থাকাটা অনেক জরুরী বিষয়।
ভার্চুয়াল অফিসের অসুবিধা
আপনারা উক্ত আলোচনায় ভার্চুয়াল অফিস কি এবং ভার্চুয়াল অফিসের সুবিধা গুলো সম্পর্কে। এখন আপনারা জানতে পারবেন। ভার্চুয়াল অফিসের সুবিধা গুলোর পাশাপাশি কিছু অসুবিধা সম্পর্কে।
তো ভার্চুয়াল অফিসের অসুবিধা গুলো হলো-
অফিস ব্যবহার এর পরিকল্পনা
অনেক সময় আপনাদের ভার্চুয়াল অফিস এর জন্য আগে থেকে কনফারেন্স রুম বা ডেস্ক বুক করতে হবে। যার ফলে যে সকল ব্যবসাতে ঘনঘন ক্লায়েন্ট মিটিং করা হয়। তাদের কাছে বিষয়টি অসুবিধা হতে পারে।
সীমিত পরিষেবা
অনেক সময় শুধু মাত্র কনফারেন্স রুম ভাড়া পাওয়া যায় না। সেখানে টেলিকনফারেন্সিং বা ভিডিও কনফারেন্সিং এর জন্য সময় নির্ধারিত করা হয়ে থাকে।
যা খুব সীমিত সময় হয়। যার ফলে সম্পন্ন ভাবে মিটিং শেষ করা যায় না। যা ব্যবসায় অনেক ক্ষতির প্রভাব ফেলে।
পরিষেবা’র সীমিত অ্যাক্সেস
আপনারা হয়তো ভার্চুয়াল অফিস এর মেম্বারশিপ প্লান আপনাকে সপ্তাহে মাত্র কয়েক দিন এর জন্য অফিসে আসার অনুমতি প্রদান করবে। তাও আবার উইকডে এবং স্ট্যান্ডর্ড ওয়ার্কিং আওয়ার মেনে।
যা হয়তো আপনার কাজ এর সময়ের সঙ্গে সব সময় না মিলতে পারে। যার ফলে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
শেষ কথাঃ
তো বন্ধুরা, আমাদের এই পোস্ট থেকে জানতে পারলেন, ভার্চুয়াল অফিস কি এবং ভার্চুয়াল অফিসের সুবিধা ও অসুবিধা গুলো সম্পর্কে। আশা করি বিস্তারিত তথ্য পেয়ে গেছেন।
এখন এই বিষয়ে যদি কোন প্রশ্ন থাকে। তাহলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আর ভার্চুয়াল জগৎ সম্পর্কে আরো নতুন নতুন তথ্য পেতে আমাদের সাইটটি ভিজিট করুন।
ধন্যবাদ।