গুগল কে আবিষ্কার করেন, গুগল এর জনক কে [গুগল সম্পর্কে যত অজানা তথ্য]

গুগলের নাম আমরা হয়তো সবাই শুনেছি। অনেকে হয়তো বিভিন্ন গান ছবি তথ্য বা অন্য যে কোন কিছু খোঁজার জন্য গুগল কে ব্যবহার করেছি। তবে আমরা অনেকেই হয়তো জানি না যে, গুগল কি? গুগল কিভাবে কাজ করে?  গুগল কে আবিষ্কার করেন, গুগল এর জনক কে?

আজ থেকে কুড়ি বছর আগেও পৃথিবীতে ইন্টারনেটের অস্তিত্ব ছিল। তবে তখন ইন্টারনেট থেকে মানুষ খুব বেশি সুবিধা নিতে পারতো না। তার কারণ হচ্ছে ইন্টারনেট জুড়ে প্রায় লক্ষ লক্ষ ওয়েবসাইট রয়েছে। এই ওয়েবসাইট গুলো আবার ভিন্ন ভিন্ন কাজের জন্য তৈরি করা হয়েছে।

এখন একজন মানুষের পক্ষে এতগুলো ওয়েবসাইটের নাম মনে রাখো তো কোনভাবেই সম্ভব না। মানুষ তখন মূলত বই-পুস্তক পড়ে বা বিভিন্ন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তথ্যগুলো সংগ্রহ করত।  পরবর্তীতে গুগল সার্চ ইঞ্জিনের আবিস্কার মানুষের জ্ঞানের এই অগ্রযাত্রাকে আরো সহজ করে দিয়েছে।

গুগলের জনক কে? গুগল কি? গুগল কিভাবে কাজ করে? গুগল কিভাবে আয় করে, এই বিষয়গুলো নিয়ে এই লেখাটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব তো চলুন শুরু করা যাক।

গুগল এর জনক কে। গুগল সম্পর্কে অজানা তথ্য
গুগল এর জনক কে। গুগল সম্পর্কে অজানা তথ্য

গুগল কি

সাধারণ ভাষায় গুগল বলতে আমরা পৃথিবীর সবচাইতে বড় সার্চ ইঞ্জিন কে বুঝে থাক।  world wide web (www) বা ইন্টারনেট জুড়ে বিস্তৃত থাকা অসংখ্য ওয়েবসাইট থেকে যেকোনো ধরনের তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, বই সহ অন্যান্য সবকিছু খুঁজে বের করার একটি অনলাইন সফটওয়্যার বা টুলস হচ্ছে গুগল।

গুগলের সার্চ ইঞ্জিনের সার্চ বক্সে সার্চ করে আপনি যে কোন ধরনের ছবি, ভিডিওচিত্র, বই, বা তথ্য অনুসন্ধান করতে পারবেন। যেকোনো ধরনের তথ্য পাওয়ার সুবিধার জন্য গুগল এতই বেশি ব্যবহার হয় যে google.com এখন সারা বিশ্বের সবচেয়ে বেশিবার ভিজিট করার ওয়েবসাইট।

বিশ্বের সকল প্রান্ত থেকে প্রতি সেকেন্ডে হাজার হাজার মানুষ google.com সার্চ করে থাকে। শুধুমাত্র সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও গুগল এখন সার্চ ইঞ্জিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। গুগল ইনকরপোরেশনের এখন রয়েছে বিভিন্ন ধরনের নিত্য নতুন পণ্য, ব্যবসা ও সেবা।

গুগলের এসব পণ্য ও সেবার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-

  • Google cloud computing services
  • Google play store
  • Gmail নামের একটি ইমেইল সার্ভিস
  • Google Adword
  • Adsense,AdMob দ্বারা online advertising services
  • বিভিন্ন কম্পিউটার application ও mobile সফটওয়্যার
  •  Android Operating system

এছাড়া ২০১৬ সালে গুগল তার নিজস্ব  স্মার্টফোন ডিভাইস পিক্সেল বাজারে ছেড়েছিল। Google Pixel মোবাইলটি বাজারে ছাড়ার পর থেকেই জনপ্রিয়তার দিক থেকে শীর্ষে অবস্থান করে আসছে। সুতরাং যারা গুগলকে কেবল একটি সার্চ ইঞ্জিন বলে জানেন, তারা অনেকটাই ভুল।  কারন Google বিশ্বের সবচেয়ে নামকরা এবং বিখ্যাত মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি। এখানে প্রায় এক লক্ষ  কর্মচারী দিন-রাত কাজ করছেন। গুগলে কাজ করার স্বপ্ন নিয়ে অনেকেই চেষ্টা চলিয়ে যাচ্ছেন।

গুগল কিভাবে আয় করে

বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগল পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি আয় করা কোম্পানি গুলোর মধ্যে অন্যতম। বিশ্ব বিখ্যাত ম্যাগাজিন ফোর্বস এর তথ্য মতে, গুগলের দৈনিক আয় প্রায় 6 কোটি টাকা। সে হিসেবে গুগল প্রতি সেকেন্ডে 82 হাজার টাকা আয় করে।

গুগলের আয়ের প্রধান উৎস মূলত বিজ্ঞাপন। গুগল এডসেন্স, গুগল এডমোব ও ইউটিউব এর বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে গুগলের আয়ের সবচেয়ে বড় অংশটি আসে। এছাড়া বিভিন্ন ডিভাইস, সফটওয়্যার তৈরি ও ক্লাউড কম্পিউটিং এর মাধ্যমে গুগলের অনেক টাকা আয় হয়।

গুগল এর জন্ম ইতিহাস

স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে Larry Page এবং Sergey Brin নামের দুজন পিএইচডি ছাত্র (PhD students) ছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি যুক্তরাষ্ট্রের  California রাজ্যে অবস্থিত। এই  দুজন বন্ধু  রিসার্চের অংশ হিসেবে একসাথে একটি search algorithm তৈরি করলেন। যেটির নাম ছিল BackRub (ব্যাকরাব)। পরবর্তীতে, এই BackRub নামটি বদলে এর নাম দেওয়া হয়েছিল গুগল (Google)।

১৯৯৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গুগল কেবল একটি research project হিসেবে চালু করা হয়েছিল। নানান কঠিন পরিস্থিতি ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার পর এই প্রজেক্ট সফল হলো এবং পরে পরে এর নাম Google search হয়ে দাঁড়ালো।

শুরুরদিকে শুধুমাত্র Research প্রজেক্ট হওয়ায়, সে সময়ে গুগল search engine এর নিজস্ব কোনো ডোমেইন (domain) বা সার্ভার ছিলোনা। শুরুর দিকে তাই এটিকে Stanford university এর ওয়েবসাইটের থেকেই google.stanford.edu এবং z.stanford.edu ডোমেইনের মাধ্যমে চালানো হয়েছিল।

এরপরে ব্যবসায়িক ভেঞ্চার হিসেবে গুগলের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৭ সালে৷ ১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৯৭ সালে Google.com ডোমেইন নামটি প্রথম বারের মত রেজিস্টার (register) করা হয়।

আরও পড়ুন:

গুগলের জনক কে

গুগল এর জনক হলো Larry Page এবং Sergey Brin উভয়েই। যুক্তরাষ্ট্রের California অঙ্গরাজ্যের Stanford University তে Ph.D করছিলেন। সে সময়ে তারা একটি research project হিসেবে গুগলের মত একটি সার্চ ইঞ্জিন ওপরে কাজ শুরু করেছিলেন। এরপরে তাদের সফলতার ফলাফল স্বরূপে আজকের এই Google Inc এর সৃষ্টি।

গুগলের মালিক কে

এই লেখাটির শুরু থেকে পড়ে থাকলে আপনি এতক্ষনে হয়তো গুগল কি? গুগলের জনক কে এসব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন। আপনার মনে হয়তো প্রশ্ন আসতে পারে যে গুগল এর মালিক কে?

গুগলের মালিক আসলে নির্দিষ্ট কেউই না। Google যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একটি রেজিস্টার্ড publicly traded company। এ ধরনের কোম্পানি গুলো শেয়ারবাজারে কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে মালিকানা নির্ধারণ করে। সে হিসেবে যারা যারা শেয়ারবাজারে গুগলের শেয়ার কিনেছেন তারা সবাই গুগলের মালিক। ফোর্বসের তথ্যমতে, এসব শেয়ার হোল্ডারদের মধ্য থেকে গুগল কোম্পানিতে সবথেকে বেশি শেয়ার রয়েছে –

  • Larry page – ২৭.৪ % শেয়ার।
  • Sergey Brin – ২৬.৯ % শেয়ার।
  • Eric Schmidt – ৫.৫ % শেয়ার।

গুগলের সিইওর নাম কি

গুগল কোম্পানির নির্বাহী দায়িত্বের যিনি প্রধান থাকেন তাকে বলা হয় সিইও। সিইও কোম্পানির সব ধরনের কাজের তদারকি করেন৷ গুগলের প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই বিভিন্ন সিইও দায়িত্ব পালন করেছেন।

বর্তমানে Google এর CEO এর নাম হলো Sunder Pichai। সুন্দর পিচাই জন্মস্থান সূত্রে ভারতের একজন নাগরিক। গুগলের নতুন সিইও হিসেবে ২০১৫ সালের ১০ আগস্ট তারিখে সুন্দর পিচাইকে বেছে নিয়েছিল গুগল।

বর্তমান সময়ে গুগলের কয়েকটি জনপ্রিয় প্রোডাক্ট এবং তাদের কাজ

১. গুগল ড্রাইভ (Google Drive)

বর্তমান সময়ে Google  অন্যতম জনপ্রিয় একটি প্রেডাক্ট হলো   Google Drive. গুগল এর এই প্রোডাক্টটিতে আপনারা খুব সহজে যেকোনো ফাইল, ছবি, ভিডিও বা পিডিএফ/ ওয়ার্ড ডকুমেন্ট ফাইল সেভ করে রাখতে পারবেন।

প্রোডাক্টির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এখানে সেভ করা ফাইলটি আপনার ফোন মেমোরিতে কোনো জায়গা দখল না করে সেভ হয় ক্লাউডে। যার ফলে আপনার মোবাইলে স্পেস কম অপচয় হয় এবং আপনার মোবাইল স্লো হয়ে যায় না। তাছাড়া এটি আপনার কোনো ফাইল সহজে ডিলিট হয়ে যাওয়ার হাত থেকেও রক্ষা করে।

কোনো কারনে আপনার ফোন নষ্ট হয়ে গেলেও আপনি আপনার জি-মেইল দিয়ে লগইন করে গুগল ড্রাইভ হতে আপনার প্রয়োজনীয় ফাইলটি সংগ্রহ করতে পারবেন। গুগল ড্রাইভ থেকে অসাবধানতাবসত কোনো ফাইল রিমুভ হলেও ভয় পাবার কোনো কারন নেই।  আপনি বিনে ফাইলটির কপি পাবেন। বিন থেকে ডিলিট ফরেভার না দেওয়া হলে ফাইলটি হারানোর কোনো ভয় নেই।

বর্তমানে এন্ড্রয়েড ইউজারদের কাছে গুগলের এই প্রোডাক্টটি অনেক সমাদৃত। বর্তমান সময়ের ইউজাররা গুগলের এই প্রোডাক্টটির সিকিউরিটি আর সহজবোধ্যতার করানে ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্য প্রকাশ করেন।

২. গুগল ম্যাপ (Google Map)

বর্তমান সময়ে Google এর সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রোডাক্টটি হলো Google Map. আমাদের মাঝে সবাই মোটামুটি গুগলের এই প্রোডাক্টির সাথে পরিচিত এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কমবেশি সবাই এটি ব্যবহার করি। গুগল ম্যাপের সাহা্য্যে খুব সহজেই আমরা কোনো জায়গা খুজে বের করতে পারি।

গুগলের এই সেবাটি আমাদের জীবনকে অনেক সহজ করে তুলেছে। এর সাহায্যে যেমন আমরা কোন স্হানের দুরত্ব দেখতে পারি তেমনি আমাদের আশেপাশে অবস্হিত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান যেমন ব্যাংক, এটিএম বুথ, রেল ওয়ে স্টেশন, বাস্ স্টেশন সহ সকল স্হানের সন্ধান পেতে পারি। বর্তমানে আমাদের আর কোনো জায়গা চেনার প্রয়োজন হয় না, গুগল ম্যাপ ব্যবহার করে নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা আমাদের কাঙ্খিত স্হানে পৌছে যেতে পারি।

বর্তমানে অনেক এপ্লিকেশন এই প্রোডাক্টি ব্যবহার করে প্রেরক বা গ্রাহকের অবস্থান জানাতে। ফুড পান্ডা, উবার থেকে শুরু করে বিভিন্ন এপ্লিকেশন গুগল ম্যাপ ব্যবহার করে ভোক্তার কাছে তাদের সেবা পৌছে দিচ্ছে। তরুন সমাজের মাঝে যারা জিমে যান তারা রানিং বা হাটা বা সাইকেল চালানোর সময় ক্যালোরি মেজারিং এপ্লিকেশনেও গুগল ম্যাপ ব্যবহার করেন।

৩. গুগল প্লে এপ স্টোর ( Google Play App Store)

বর্তমন সময়ে গুগলের একটি জনপ্রিয় প্রোডাক্ট Google Play App Store যাকে আমরা Google Play Store নামে পরিচিত। এন্ড্রয়েড ইউজার সবাই আমরা এই প্রোডাক্টির সাথে পরিচিত।

কোন এপ্লিকেশন বা গেম্স ডাউনলোডের কথা আসলে সবার আগে আমাদের যার কথা মনে হয় সেটি Goole Play Store. এই প্রোডাক্টির মাধ্যমে খুব সহজেই আমরা আমাদের ফোনের জন্য হাজার হাজার ফ্রি এবং পেইড এপ্লিকেশন পেয়ে যাই।

এর ব্যবহার অত্যন্ত সহজ হবার কারনেই সবাই এই প্রোডাক্টি অনেক পছন্দ করে। মোটামুটি আমাদের ফোনের জন্য সেসব এপ্লিকেশন দরকার তার সবই আমরা এখানে পাবো।

শুধু তাই নয় কোনো এপ্লিকেশন পুরাতন হয়ে গেলে বা আপডেটের দরকার হলে এখান হতে খুব সহজে আপনার মোবাইলের যোকোনো এপ্লিকেশন আপডেট করতে পারবেন। এর সবচেয়ে ভালো দিকটি হলো যেকোনো এপ্লিকেশন ফাইল এটি খুব দ্রততার সাথে ডাউনলোড করতে পারে যার কারনে সবাই গুগলের এই প্রোডাক্টটি পছন্দ করেন।

আরও পড়ুন:

৪. গুগল এডসেন্স (Google Adsense)

বর্তমান সময়ে গুগলের একটি জনপ্রিয় প্রোডাক্ট হলো Google Adsense. আমাদের মাঝে অনেকেই এই সেবাটির সাথে পরিচিত হলেও বেশিরভাগ লোক এই প্রোডাক্টির কাজ সম্পর্কে জানেন না। গুগল এডসেন্স গুগলের এমন একটি সার্ভিস যার মাধ্যমে advertiser রা টাকা দিয়ে যেকোনো বিজ্ঞাপন ইন্টারনেটে দেখাতে পারেন এবং পাব্লিশাররা তাদের ইউটিউব ভিডিও বা ব্লগে এসব বিজ্ঞাপন দেখিয়ে টাকা আয় করতে পারেন।

এটা সোজাসুজি একটি advertising network যর মাধ্যমে ব্লগ ও ওয়েবসাইট মালিকেরা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনি সহজেই টাকা আয় করতে পারবেন কিন্তু প্রথমেই আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট থাকতে হবে যেখানে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আপনি টাকা আয় করবেন। বিজ্ঞাপন দেখিয়ে যারা টাকা আয় করেন তাদেরকে বলা হয় পাবলিশার্স। এর মাধ্যামে বর্তমান সময়ে হাজারে যুবক সাবলম্বী হবে উঠছে।

৫. গুগল পে (Google Pay)

বর্তমান সময়ে গুগলের একটি জনপ্রিয় প্রোডাক্ট হলো Google Pay যাকে আমরা সচরাচর G-Pay নামে চিনে থাকি। গুগল পে বর্তমান সময়ে বেশি ব্যবহার করা একরি Mobile Wallet application.  এটির সাহায্যে মোবাইলের মাধ্যমে আমরা নিজের ব্যাংক একাউন্ট থেকে যেকোনো একাউন্টে টাকা পাঠাতে পারি।

এর সাথে নিজের বা অন্যের মোবাইল রিচার্জ থেকে শুরু করে বিল পেমেন্টের মতো সব ধরনের কাজ আমরা ঘরে বসে খুব সহজে মোবাইলের মাধ্যমে করতে পারি। বর্তমান সময়ে দেশের সব সরকারি বিদ্যালয়ে বেতন পরিশোধ গুগল পে সেবাটিকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা হয়েছে। এর ফলে খুব সহজেই কোনো অসুবিধা ছাড়া ঘরে বসেই আমরা আমাদের সন্তানদের স্কুলের বেতন পরিশোধ করতে পারি।

৬. গুগল এডওয়ার্ডস (Google Adwords)

বর্তমান সময়ে গুগলের একটি জনপ্রিয় সেবা হলো Google adwords.  গুগলের এই অনলাইন সার্ভিস দ্বারা আপনার নিজের বিজনেস বা প্রোডাক্ট অনলাইনে মার্কেটিং বা প্রচার করে বাকি লোকদের নিজের ব্যবসা সম্পর্কে জানাতে পারবেন। প্রতিভাবান তরুন সমাজের জন্য সেবাটি উন্নয়নের দ্বার খুলে দিয়েছে।

খুব সহজেই নিজের পরিশ্রমে ব্যবসা দাড় করিয়ে অনলাইনে প্রাচরের মাধ্যমে আমরা আমাদের আইডিয়া শেয়ার করতে পারি আর পাশাপাশি আমাদের ব্যবসায়িক আইডিয়া সম্পর্কে অভিজ্ঞদের মতামত পেতে পারি। এতে করে যেমন নতুনেরা আমাদের দেখে অনুপ্রেরণা পাবে পাশাপাশি অভিজ্ঞদের পরামর্শ অনুসরন করে আমরা যেকোনো রকম আর্থিক বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচতে পারি।

৭. গুগল ট্রান্সলেট ( Google Translate)

বর্তমান গুগলের সবচেয় বেশি প্রচলিত একটি প্রোডাক্ট হলো Google translate. এটি এমন একটি অনলাইন সার্ভিস যা ব্যবহার করে আমরা যকোনো ভাষাকে নিজের ভাষায় রূপান্তর করতে পারি। শিক্ষাক্ষেত্রে এটি নতুন সুযোগের দ্বার উন্মোচন করেছে। এর মাধ্যমে খুব সহজেই আমরা আমাদের বিদেশি বন্ধুদের ন্যাটিভ ল্যাঙ্গুয়েজ বুঝতে পারি যা আমাদের দেশের বাইরে পড়াশোনাকে অনেক সহজ করে তোলে।

তাছাড়া আমাদের মাঝে অনেকেই বাংলার পাশাপাশি ইংরেজী সহ অন্যান্য ভাষায় তেমন একটা পারদর্শী নন। তারা খুব সহজেই বাংলায় লিখে গুগল ট্রান্সলেটের মাধ্যমে প্রত্যাশিত ভাষায় নিজের কথা রূপান্তর করতে পারবে। ভাষার কারনে যে জড়তা দেখা যায় আমাদের মাঝে সেটি দূর করতে  গুগল ট্রান্সলেট খুব গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছে। এর মাধ্যমে মুখে বলেও আমরা সেটা লিখিত আকারে পরিনত করতে পারি যারা এটিকে আরো সমাদৃত করেছে।

৮. ইউটিউব (YouTube)

বর্তমান সময়ে গুগলের প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রোডাক্ট হলো ইউটিউব। হাতে একটি স্মার্টফোন আছে অথচ ইউটিউবের সাথে পরিচিত না এমন ইউজার খুজে পাওয়া যাবেনা।

ইউটিউব এমন একটি এপ্লিকেশন যার মাধ্যমে আমরা খুব সহজে আমাদের কাঙ্খিত ভিডি, অডিও উপভোগ করতে পারি এবং প্রয়োজনে সেভ করে রাখতে পারি। বিনোদনের পাশাপাশি শিক্ষার ক্ষেত্রে ইউটিউব সম্ভাবনার নতুন দ্বার খুলে দিয়েছে। অবসর সময়ে ক্লান্তি আর একঘেয়েমিতা দূর করতে আমরা যেমন গান, মুভি দেখতে পারি ঠিক একই ভাবে আমরা ইউটিউবে নামকরা শিক্ষকদের ভিডিও দেখে অনেক জটিল সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান পেতে পারি৷

করোনাকালীন সময়ে আমরা এর গুরুত্ব আরো ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারছি। ইউটিউবে শুধু গান ভিডিও পাওয়া যায় এমন না। আপনার প্রয়োজনীয় যেকোন শিক্ষামূলক প্রয়োজনীয় ক্লাস, ডকুমেন্টারি,  এনিমেশন টিউটোরিয়াল বা ইন্জিনিয়ারিং টিউটোরিয়াল দেখে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে পারি। এছাড়া এখানে আমরা পাবে বিভিন্ন স্কলারদের মতবাদ যা থেকে আমরা স্বচ্ছ ধারনা পেতে পারি কোনো বিষয়ে।

= ইউটিউব থেকে আয় করার ফুল টিউটরিয়াল

৯. এন্ড্রোইড ওএস ( Android OS)

বর্তমান সময়ে গুগলের জনপ্রিয় প্রোডাক্টগুলোর মাঝে Android OS অন্যতম। আমাদের স্মার্টফোনে চলা অপারেটিং সিস্টেম হলো Android OS যা গুগলের একটি প্রেডাক্ট। আজ এন্ড্রয়েড মোবাইল বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া মোবাইল হয়ে দাড়িয়েছে।

আমাদের মতো সল্পোন্নত দেশে যাদের ব্যয়বহুল মোবাইল ব্যবহারের সামর্থ্য নেই তারা খুব সহজেই তাদের সহনীয় সীমায় একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল কিনতে পারেন। এর আরেকটি সুবিধা হলো এটি ব্যবহার করা অত্যন্ত সহজ এবং সবাই এটি ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। পৃথিবীর বিশাল এক সজসমাজকে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার সুযোগ করে দিয়ে এটি আমাদের জীবনকে করেছে উন্নত।

= এন্ড্রোয়েড এপ ডেভেলপমেন্ট এর খুটিনাটি সকল বিষয়

১০. ব্লগার.কম ( Blogger.com)

বর্তমান সময়ে গুগলের জনপ্রিয় প্রোডাক্টগুলোর মাঝে Blogger.com অন্যতম। আজ ব্লগার (Blogger) বিশ্বের সব থেকে বড় প্রচলিত ও জনপ্রিয় ফ্রি প্লাটফর্ম যেটা ব্যবহার করে একজন খুব সহজেই ব্লগ তৈরি করতে পারে৷ ব্লগারের মাধ্যমে অনেক তরুনেরা নতুন নতুন বিষয়ে ব্লগ তৈরি করে তা ইউটিউব চ্যানেলে দেখিয়ে আয় করতে পারছে।

কীভাবে ফ্রিতে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়

ইউটিউবে গেলেই আমরা দেখতে পাবো ট্রাভেল ব্লগ তেকে শুরু করে নানা রকম ভিডিও। পাব্লিশাররা তাদের শৈলির পরিচয় দেখিয়ে ট্রাভেল ব্লগ সহ নতুন নতুন কন্টেন্ট বানিয়ে তাদের ইউটিউব চ্যানেলে আপ্লোড করে। এসব দেখে যেমন আমরা একদিকে আনন্দ পাই অন্যদিকে অনেক সুক্ষাতিসুক্ষ বিষয় সম্পর্কে জানতে পারি।

উদাহরন হিসেবে বলা যায় কোনো ট্রাভেল ব্লগ দেখে আমরা সেখানে যাবার সহজ উপায় ও বিপদ সম্পর্কে জানতে পারি যা আমাদের অর্থ বাঁচাতে পারে। অন্যদিকে আমরা প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পেতে পারি। ব্লগারের মাধ্যমে ব্লগ বানিয়ে আমাদের তরুন সমাজের অনেকে আয়ও করতে পারছে।

গুগল তার বিভিন্ন প্রোডাক্ট দ্বারা এভাবে আমাদের জীবনকে কত এডভান্সড ও সহজ করে দিয়েছে।

শেষ কথা

গুগল সম্পর্কে এই ছিল আমাদের আজকের এই লেখা। লেখাটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে গুগল কি? গুগলের জনক কে? গুগল কিভাবে আয় করে? এসব বিষয় নিয়ে আপনাদের আর কোনো প্রশ্ন থাকবেনা আশা করি। লেখাটি ভালো লেগে থাকলে সোসাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন। আর কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্টবক্সে জানান।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top