আমাদের জানামতে বর্তমান সময়ে জাতীয় পরিচয় পত্র এন আইডি কার্ডে অনেকের পিতা ও মাতার নাম ভুল রয়েছে।
জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ডে পিতা এবং মাতার নাম সংশোধনের জন্য করণীয় কি এবং কি কি, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিলে।
দ্রুত আবেদন নিষ্পত্তি হতে পারে সে বিষয়ে আজকে আমরা এই আর্টিকেলে সঠিক তথ্য প্রদান করব।
কারণ অনেক লোক রয়েছে যাদের এন আইডি কার্ডের পিতা এবং মাতার নাম ভুল রয়েছে তারা সঠিক তথ্য না পেয়ে ভোগান্তের শিকার হচ্ছে।
কারণ অনেকে জাতীয় পরিচয় পত্র এন আইডি কার্ডে পিতা ও মাতার নাম সংশোধনের আবেদন জমা দিয়ে মাসের পর মাস অপেক্ষা করা যাচ্ছে।
কিন্তু কোনোভাবেই সংশোধন হচ্ছে না সঠিক কাগজপত্র জমা না দেওয়ার জন্য।
কারণ এনআইডি কার্ডে পিতা ও মাতার নাম সংশোধন করতে, চাইলে আজ এই কাগজ কাল এই কাগজ চাইতেই থাকছে। ঘুরতে ঘুরতে বিরক্ত ধরে যাচ্ছে।
তারপর বলে বেড়াচ্ছে নির্বাচন অফিসে ভোগান্তির শেষ নেই। কি কারনে মাসের পর মাস অপেক্ষা করা লাগে সে বিষয়ে আমরা এখানে জানিয়ে দেবো। আর জানিয়ে দেবো। কিভাবে আপনারা ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের আবেদন দ্রুত নিয়ে ভর্তি করবেন।
তো বন্ধুরা আপনারা যারা এনআইডি কার্ডে পিতা ও মাতার নাম সংশোধন যে কাগজপত্র লাগবে। সে বিষয়ে জানতে আমাদের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়েন।
আমাদের মধ্যে এমন হাজারো মানুষ এর জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ডে কিছু না কিছু তথ্য ভুল রয়েছে। প্রয়োজন পড়ছে না তাই হয়তো সেগুলো সংশোধনের কোন চিন্তা ভাবনা আমরা করছি না।
একটি সময় দেখবেন কোনো না কোনো কাজ করতে গিয়ে, জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ডের কপি না জমা দেওয়া পর্যন্ত। সেই কাজ সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। তখন আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র কার্ড এর সংশোধন করার জন্য দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দিতে হবে।
যখন আপনার নিত্যান্তই প্রয়োজন পড়বে, তখন এমন হয় ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে।
- ছবিসহ ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম
- একাধিকবার ভোটার হলে কি করবেন ? দ্বৈত ভোটার হলে করনীয়
- একাধিকবার ভোটার নিবন্ধন করলে যা হতে পারে
অথবা আবেদনের জটিলতার কারণে সময় বেশি প্রয়োজন হচ্ছে, যদি জাতীয় পরিচয়পত্র ভোটার আইডি কার্ডের সংশোধনের কার্যক্রম একটি চলমান প্রক্রিয়া।
এরপরও কখনো না কখনো এ কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ থাকে বিভিন্ন ধরনের নির্বাচন যেমন-
- ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন
- উপজেলা পরিষদ নির্বাচন
- সংসদ নির্বাচন
- পৌরসভা নির্বাচন
- সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইত্যাদি।
উক্ত নির্বাচনের সময়ে অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন সাময়িকভাবে বন্ধ থাকে।
কোন এলাকায় নির্বাচনের তফসিল একবার ঘোষণা হয়ে গেলে তখন সেই এলাকার অফিসগুলো তাদের সকল কাজ আপাতত করে রাখে শুধুমাত্র নির্বাচন কাজে ব্যস্ত থাকে।
আপনি হয়তো অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন তবে সেই আবেদনের কার্যক্রম যারা সম্পন্ন করবে তারাই তো নির্বাচন কাজে ব্যস্ত থাকবে তবে আপনার আবেদনটি কিভাবে দ্রুত অনুমোদন দেবে।
যদি আপনি ঘোরাঘুরি করে ক্ষমতা প্রাপ্ত নেতা ধরে, সুপারিশ করিয়ে কোনো না কোনো উপায় আপনার কাজ করিয়া নিলেন। এক্ষেত্রে কি পরিমাণের ঝামেলা হবে তা আপনারা বুঝতেই পারছেন।
তো আপনার যদি জাতীয় পরিচয় পত্র এন আইডি কার্ডে কোন প্রকার ভুল থেকে থাকে। তবে কত দ্রুত তা সংশোধন করে রেখে দেওয়াই শ্রেয়।
আর তা যদি না করতে চান তবে পরবর্তীতে ভোগাতে শিকার আপনি নিজেই হবেন অফিসকে দায়ী করে কোন লাভ নেই।
প্রতিটি অফিসে কার্যক্রম কর্তৃপক্ষের আদেশ অনুযায়ী চলে থাকে। আপনার একার জন্য অফিস তাদের জরুরী কাজ ফেলে রেখে, আপনার কাজ নিয়ে ব্যস্ত নাও হতে পারে।
ভোটার আইডি কার্ডে পিতা ও মাতার নাম সংশোধনে করণীয়
একটি জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ড একজন ব্যক্তির অনেকগুলো তথ্য বহন করে থাকে। যাদের জাতীয় পরিচয় পত্র কার্ড এর পিতা ও মাতার নাম ভুল রয়েছে।
তারা নিচে দেওয়া পদ্ধতি অনুসরণ করে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে সংশোধনের আবেদন করতে পারবেন।
পিতা ও মাতার নাম কি ধরনের ভুল হতে পারে, হতে পারে তাদের নামের আগে থাকা মোঃ বা নেই যোগ করতে হবে এছাড়া মোহাম্মদ বা মোসাম্মৎ দেওয়া আছে সেটি বাদ দিতে হবে। তাদের নাম পদবী ভুল থাকতে পারে নামের বানানো ভুল হতে পারে।
কিছু কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে দেখা যায় পিতা এবং মাতার নাম সম্পূর্ণই ভুল রয়েছে। তাছাড়া আরো অন্যান্য কিছু ব্যতিক্রম ধর্মে ভুল থাকতে পারে।
যেমন- পিতার নামের পদবী হয়েছে বেগম বা খাতুন মাতার নামের আগে রয়েছে মোহাম্মদ ইত্যাদি।
যে ধরনের ভুল পিতা-মাতার নামের ক্ষেত্রে হয়ে থাকুক না কেন। সেগুলো সংশোধন করার জন্য দুটি উপায় আপনারা আবেদন করতে পারবেন।
প্রথমতঃ
উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফর্ম করতে হবে। ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফি হিসাব করে, রকেট বা বিকাশের মাধ্যমে প্রেরণ করতে হবে।
তারপর ফি জমার রশিদ সহ প্রয়োজনে কাগজপত্র আবেদনের সাথে স্ট্যাবলার করে আবেদন সাবমিট করতে হবে।
দ্বিতীয়তঃ
অনলাইনের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ডের সংশোধনের আবেদন করা সম্ভব নির্বাচন অফিসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে services.nidw.gov.bd প্রবেশ করে।
রেজিস্ট্রেশন করে লগইন করার পর প্রোফাইল অপশন এ গিয়ে ভুল তথ্য গুলো এডিট করে সঠিকভাবে, লিখে সংশোধনের আবেদন সাবমিট করা যায়।
অনলাইন সিস্টেম আবেদন করলে অফিসে ঘোরাঘরের প্রয়োজন পড়ে না। বাড়িতে বসে সবকিছু করা সম্ভব হয়। আপনি নিজের রকেট থেকে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফি জমা দিতে পারবেন। যে কাগজপত্রগুলো সাথে জমা দিতে হবে। সেগুলো মোবাইলের ছবি তুলে পিডিএফ ফাইল আকারে আপলোড করে দিতে পারবেন।
NID কার্ডে পিতা ও মাতার নাম সংশোধন করতে যে সকল কাগজপত্র লাগবে ?
জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ডে পিতা ও মাতার নাম সংশোধনের জন্য নিজেদের কাগজপত্র গুলো জমা দিতে হবে। যেমন-
এসএসসি সনদ-
আপনি যদি এসএসসি পাশ করে সার্টিফিকেট গ্রহণ করেন। তাহলে আপনার এসএসসি সনদের কপি জমা দিতে হবে। আর এসএসসি পাস না হলে বা কোন প্রকার শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদ না থাকে তাহলে দেওয়ার প্রয়োজন হবে না।
কিন্তু মনে রাখবেন আপনি কি পাশ নির্বাচন কমিশনের সার্ভার সেটা দেওয়া রয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবেদনটি অনুমোদন দেওয়ার আগে অবশ্যই আপনার তথ্য যাচাই করে দেখবেন। তাই কাগজপত্র গোপন রেখে কোন লাভ নেই।
অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ-
বর্তমান সময়ে সকলের ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ রয়েছে কিন্তু হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধন সনদ জমা দিবেন না। অনলাইন ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন দেওয়াই উচিত।
হাতে লেখা জন্মনিবন্ধন জমা দিলে আবেদন অনুমোদন না দিতে পারে তাই অনলাইন জন্ম নিবন্ধন দাখিল করার জন্য আবেদনের স্ট্যাটাস পরিবর্তন করে এডিশনাল ডকুমেন্ট রিকোয়ার্ড করে দিতে পারে। তখন অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সম্ভব না দেওয়া পর্যন্ত আবেদনের আর কোন অগ্রগতি হবে না।
পিতা ও মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র কপি-
আপনার ভোটার আইডি কার্ডে, যেহেতু আপনার পিতা ও মাতার নাম সংশোধনের বিষয়। তাই পিতা ও মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি সাবমিট করা বাধ্যতামূলক।
আর যদি দাখিল না করতে পারেন। তাহলে পিতা এবং মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র এর কপির চেয়ে আবেদন স্ট্যাটাস পরিবর্তন করে, এডিশনাল ডকুমেন্ট রিকোয়ার্ড করে দিতে পারে।
তাই জরুরী ভিত্তিতে পিতা ও মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র কপি সাবমিট করতে হবে।
সকল ভাই বোনের জাতীয় পরিচয় পত্র কার্ডের কপি-
আপনার আবেদনের সাথে সকল ভাই বোনের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি সাবমিট করে দেবেন ।
ভাই বোনের ভোটার আইডি কার্ডের পিতা-মাতা নাম কি দেওয়া আছে এবং আপনি পিতা মাতার নাম কি চাচ্ছেন সেটা মিলিয়ে দেখা হবে।
ভাই বোনের জাতীয় পরিচয় পত্র কার্ডে বিদ্যমান পিতা ও মাতার নামের সাথে আপনার চাহিত পিতা ও মাতার নাম মিলে যায়। তাহলে দ্রুত অনুমোদন পাওয়া যাবে।
যদি সাধারণ ভুল হয় সেক্ষেত্রে, ওপর উল্লেখিত কাগজপত্র দিয়ে পিতা এবং মাতার নাম সংশোধনের জন্য আবেদন সাবমিট করলে, আবেদনটি অনুমোদন হওয়ার সম্ভাবনা 99% থাকবে।
এক্ষেত্রে যদি পিতা এবং মাতার নাম সম্পূর্ণ পরিবর্তন করতে চান। তাহলে উপরোক্ত কাগজপত্র গুলো দিয়ে সাবমিট করতে হবে।
সম্পূর্ণ নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে সম্পাদিত হলফন আমার কপি সাবমিট করতে পারবেন।
এছাড়া যত বেশি কাগজপত্র দাখিল করতে পারবেন তত ভাল হবে। আপনার বেশি কাগজপত্র মানে যেসব কাগজপত্রে আপনার পিতা ও মাতার নাম সঠিকভাবে লেখা রয়েছে সেই সকল কাগজপত্র দাখিল করতে পারবেন।
যেমন-
চেয়ারম্যান, পৌরসভা কাউন্সিলর করতে প্রদত্ত উত্তরাধিকার/ ওয়ারিশ সনদপত্র, পিতা এবং মাতার অনলাইন জন্ম নিবন্ধন কপি, জমের পর্চা, পিতার নামে বিদ্যুৎ বিল/ পানি বিল/ গ্যাস বিল, ড্রাইভিং লাইসেন্স চাকরিজীবী হলে, সার্ভিস বইয়ের কপি, ব্যবসায়ী হলে ট্রেড লাইসেন্সের কপি ইত্যাদি।
আপনারা জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ডে পিতা এবং মাতার নাম পরিবর্তন করতে চাইলে বা সংশোধন করতে চাইলে, উপজেলা নির্বাচন অফিস আপনার চাহিত তথ্যের সঠিকতা যাচার জন্য সরেজমিন তদন্ত করতে পারে।
তদন্ত প্রতিবেদন এবং আপনার দাখিলকৃত কাগজপত্র পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আপনার আবেদনটি অনুমোদন হলে, বাতিল হলে বা আরো অন্যান্য কোন কাগজপত্র চাওয়া হলে। আবেদনের সময় দেওয়া আপনার মোবাইল নাম্বারে মেসেজের মাধ্যমে জানানো হবে।
শেষ কথাঃ
তো বন্ধুরা আজ আমাদেরকে আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাকে জানিয়ে দেয়া হলো এন আইডি কার্ডে পিতা ও মাতার নাম সংশোধন করতে যে, কাগজপত্র গুলো লাগে।
আপনি যদি আমাদের দেওয়া তথ্য গুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করে থাকেন। তাহলে আশা করা যায় আপনি বুঝতে পেরেছেন। এনআইডি কার্ডে পিতা এবং মাতার নাম ভুল থাকলে, কিভাবে সংশোধন করতে হবে।
বন্ধুরা আমাদের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার পর আপনার কাছে কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।
এছাড়া আমাদের এই ওয়েবসাইট থেকে জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ডের বিভিন্ন তথ্য জানতে নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।