জাতীয় পরিচয় পত্র এনআইডি কার্ডে স্বামী ও স্ত্রীর নাম সংশোধন : যারা ভোটার হওয়ার আগে বিয়ে করেছেন? তাদের জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ডে হয়তো স্বামী এবং স্ত্রীর নাম উল্লেখ করা রয়েছে।
তবে যারা ভোটার হওয়ার পরে বিয়ে করেছেন। তাদের জাতীয় পরিচয় পত্র/ এনআইডি কার্ড এর তথ্যে, স্বামীর নাম এবং স্ত্রীর নাম উল্লেখ করা নেই।
ভোটার হওয়ার পরে যারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। তাদের সকলের জাতীয় পরিচয় পত্র এনআইডি কার্ডে স্বামী/স্ত্রীর নাম আজ না হয় কাল সংযোজন করার দরকার হবে।
যদি কোন পুরুষ বা মহিলাদের জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ডে স্ত্রীর নাম কিংবা স্বামীর নাম লেখা না থেকে থাকে।
তাহলে ভোটার তথ্যের মধ্যে সকলের স্বামী/স্ত্রীর নাম সংরক্ষিত থাকে এবং সেই নাম কিছু কিছু কাজে এতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তা বলার ভাষা নেই।
বিশেষ করে যারা সরকারি চাকরি করে তাদের সার্ভিস বইয়ে, উল্লেখিত স্ত্রীর ও স্বামীর নাম এবং জাতীয় পরিচয় পত্র কার্ডে উল্লেখিত না থাকলে, বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
তার জন্য জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ডে স্বামী এবং স্ত্রীর নাম সংশোধন সম্পর্কে। বিস্তারিত তথ্য আজ আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নিতে পারবেন।
- নতুন ভোটারদের Nid Card Download করার নিয়ম
- জাতীয় পরিচয় পত্র চেক করার নিয়ম। 1 মিনিটেই জেনে নিন ভোটার তথ্য 2023
তো বন্ধুরা আপনারা যারা এনআইডি কার্ডে স্বামী এবং স্ত্রীর নাম সংশোধন করার উপায় জানতে চান। তারা আমাদের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
ভোটার আইডি কার্ডে স্বামী ও স্ত্রীর নাম কেন ভুল হয় ?
বর্তমান সময়ে বিভিন্ন কারণে জাতীয় পরিচয় পত্র এন আইডি কার্ডে, স্বামী এবং স্ত্রীর নাম ভুল হতে পারে। কিন্তু বেশিরভাগ অসাধারণতার জন্য ভুল গুলো বেশি হয়ে থাকে।
নতুন ভোটার হওয়ার সময় দেখা যায়। 2নং ফরম পূরণ করার জন্য স্বামী এবং স্ত্রীর ডাক নাম ব্যবহার করে বা নামের বানান গুলো লেখার সময়, যথেষ্ট পরিমাণ সতর্কতার সহিত না লিখে, গতানুগতিকভাবে লিখে থাকে। যার ফলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক গুণ বেড়ে যায়।
যারা পুরাতন ভোটার মানে ২০১৭ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে ভোটার হয়েছে তাদের অনেকের কাবিননামা, বৈবাহিক সনদ নাই। আর থেকে থাকলেও হারিয়ে গেছে।
তখন লোকেরা জাতীয় পরিচয় পত্র এন আইডি কার্ড এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে খুব বেশি জানতো না। যার ফলে 2 নং ফর্ম পূরণের সময় যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা হয়নি বিধায়। বিভিন্ন ধরনের ভুল তথ্য নিয়ে, তাদের জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ড তৈরি হয়।
তাছাড়া অপারেটর করতে টাইপিং করার সময় বিভিন্ন বানান মিসটেক হতে পারে। কিন্তু বর্তমানে নতুন ভোটারের ডাটা মেন সার্ভারে আপলোড দেওয়ার আগে ভালো করে প্রমাণ করে দেখা হয়। মানে অপারেটর করতে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম।
ভোটার আইডি কার্ডে স্বামী/স্ত্রীর নাম সংশোধনের আবেদন
তো আপনারা উপরে উল্লেখিত আলোচনাতে জেনে নিতে পারলেন। ভোটার আইডি কার্ডের স্বামী ও স্ত্রীর নাম কেন ভুল হয়।
এখন আমি আপনাদের সেই ভুল সংশোধনের জন্য ভোটার আইডি কার্ডের স্বামী স্ত্রীর নাম সংশোধনের আবেদন কিভাবে করবেন। সে বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করতে যাচ্ছি।
বিশেষ করে আপনারা এনআইডি কার্ড সংশোধনের আবেদন মূলত দুইভাবে করতে পারবেন। যেমন-
১। নির্দিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র এন আইডি কার্ড সংশোধন 2নং ফরম সংগ্রহ করে সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।
জাতীয় পরিচয় পত্র কার্ড সংশোধন এর ফি অবশ্যই হিসাব করে, রকেট অ্যাপের ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফি জমা দিতে হবে। নির্ধারিত ফ্রি প্রদানের রশিদ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আবেদনের পেছনে স্ট্যাবলার করে অফিসে সাবমিট করতে হবে।
২। আপনারা এক নম্বর নিয়ম ছাড়া এখন দুই নম্বর নিয়মে সহজেই ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধন করতে পারবেন। আর সেই নিয়মটি হচ্ছে অনলাইন সিস্টেম থেকে আবেদন।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট services.nidw.gov.bd ভিজিট করে একটি অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে।
এন আই ডি অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে অবশ্যই লগইন করতে হবে। লগইন করার পরে প্রোফাইল অপশনে গেলে, Other Info নামে একটি ট্যাবে, স্বামী/ স্ত্রীর নামসহ যাবতীয় তথ্য গুলো দেখতে পারবেন।
সেখান থেকে স্বামী এবং স্ত্রীর নাম এডিট করে সঠিকভাবে লিখে পরবর্তী ধাপে ক্লিক করতে হবে। এর পরের ধাপে পেমেন্ট সম্পর্কিত তথ্য দেখানো হবে। তারপর আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ডকুমেন্ট আপলোড করতে হবে। এবং প্রতিটি ধাপ অতিক্রম করার পর সাবমিট অপশনে ক্লিক করে দিতে হবে।
আপনার ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধন আবেদন সাবমিট হয়ে গেলে আবেদনের একটি পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
এবং সেটি ডাউনলোড করে অবশ্যই প্রিন্ট করে নিজের কাছে রেখে দিবেন। আর পরবর্তীতে কখনো অফিসে গিয়ে খোঁজখবর নিতে চাইলে, সেই অনলাইন আবেদন কপিটি সাথে নিয়ে যাবেন।
ভোটার আইডি কার্ডে স্বামী/স্ত্রীর নাম সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট
তো আপনারা উপরের আলোচনাতে জানতে পারলেন। ভোটার আইডি কার্ডের স্বামী এবং স্ত্রীর নাম কেন ভুল হয়। এবং ভোটার আইডি কার্ডের স্বামী স্ত্রীর নাম সংশোধনের আবেদন কিভাবে করা যায়।
তো বন্ধুরা এখন আমি সেই আলোচনার প্রেক্ষিতে আপনাকে জানাতে চাচ্ছি। ভোটার আইডি কার্ডের স্বামী এবং স্ত্রীর নাম সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় কি ডকুমেন্টগুলো লাগবে।
সেগুলো হলো-
- অনলাইনে ভোটার সিরিয়াল নাম্বার চেক করার উপায়
- নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে (জেনেনিন এখানে)
- ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন হতে কত দিন লাগে
01. কাবিননাম আর সনদ
জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ডে স্বামী এবং স্ত্রীর নাম যুক্ত করতে গেলে কাবিননামা/ আর হিন্দুদের ক্ষেত্রে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধকের কার্যালয় থেকে প্রদত্ত সনদপত্র আবেদনের সাথে যুক্ত করতে হবে।
02. স্বামী এবং স্ত্রীর জাতীয় পরিচয় পত্র কার্ডের কপি
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন আবেদনের সঙ্গে স্বামী এবং স্ত্রীর জাতীয় পরিচয় পত্র এর ফটোকপি জমা দিতে হবে।
জাতীয় পরিচয় পত্র এন আইডি কার্ডে স্বামী এবং স্ত্রীর নাম যদি ভুল হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে ১ এবং ২ নং ক্রমিকে বর্ণিত কাগজ পত্রের সাথে নিম্নক্ত কাগজপত্র গুলো সাবমিট করতে হবে।
03. সন্তানের এনআইডি কপি
ভোটার আইডি কার্ডে স্বামী এবং স্ত্রীর নাম সংশোধন করতে গেলে অবশ্যই সকল সন্তানের জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে।
04. সন্তানের শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদপত্র
এনআইডি কার্ড সংশোধনের আবেদনের সাথে আবেদনকারীর সকল সন্তানের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র জমা দিতে হবে।
05. সন্তানের জন্ম নিবন্ধন সনদ
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদনের সাথে আবেদনকারী সকল সন্তানের অনলাইন ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ জমা দিতে হবে।
06. সার্ভিস বইয়ের কপি
জাতীয় পরিচয় পত্র এন আইডি কার্ড সংশোধন আবেদনের সাথে স্বামী এবং স্ত্রীর সার্ভিস বইয়ের কপি যদি থাকে তাহলে জমা দিতে হবে।
যাদের প্রথম স্বামী বা স্ত্রী মারা গেছে এবং দ্বিতীয় বিবাহ করেছে তাদের জন্য যে ডকুমেন্ট লাগবে সেগুলো হচ্ছে।
যাদের প্রথম স্ত্রী বা স্বামী মারা গিয়েছে এবং জাতীয় পরিচয় পত্র থেকে তার নাম বাদ দিয়ে ২য় স্বামী/ স্ত্রীর নাম ব্যবহার করতে চান।
তবে এক্ষেত্রে নিন্মুক্ত কাগজপত্র গুলো জমা দিতে হবে।
সেগুলো হলো-
01. স্বামী স্ত্রীর মৃত সনদপত্র
মৃতজনিত কারণে যদি জাতীয় পরিচয় পত্র এন আইডি কার্ড থেকে স্বামী এবং স্ত্রীর নাম পরিবর্তন করতে হয়। সে ক্ষেত্রে স্বামী এবং স্ত্রীর মৃত সনদ আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে হবে।
ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কতদিন সময় লাগে
02. দ্বিতীয় বিবাহের কাবিননামা
প্রথম স্বামী এবং স্ত্রীর নাম বাদ দিয়ে দ্বিতীয় স্বামী এবং স্ত্রীর নাম সংযোজন করতে চাইলে অবশ্যই দ্বিতীয় বিবাহের কাবিননামা আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে।
03. দ্বিতীয় স্বামী এবং স্ত্রীর এন আইডি কার্ডের কপি
আবেদনের সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামী এবং স্ত্রীর জাতীয় পরিচয় পত্র এনআইডি কার্ডের জমা দিতে হবে।
এছাড়া যাদের ডিভোর্স এর কারণে দ্বিতীয়বার বিবাহ করা হয়েছে্ তাদের জন্য যে ডকুমেন্টগুলো লাগবে যেমন-
- ডিভোর্স পেপারের কপি
- কাবিননামা সনদপত্র
- স্বামী-স্ত্রীর এন আইডি কার্ডের কপি
শেষ কথাঃ
তো বন্ধুরা, আপনারা যারা এনআইডি কার্ডে বিভিন্ন কারণে স্বামী ও স্ত্রীর নাম সংশোধন করতে চান। তারা উপরোক্ত ডকুমেন্টগুলো সংগ্রহ করে সহজেই সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে বা অনলাইনের মাধ্যমে স্বামী ও স্ত্রীর নাম সংশোধন করার আবেদন করতে পারবেন।
তো বন্ধুরা আমাদের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার পর আপনার কাছে কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।
এছাড়া আমাদের এই ওয়েবসাইট থেকে এন আইডি কার্ড সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জানতে, নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।