বর্তমান সময়ে আমাদের মধ্যে এমন অসংখ্য মন ভোলো লোক আছে। যারা নতুন ভোটার হালনাগাদ করার সময় একটি ভোটার স্লিপ গ্রহণ করে।
কিন্তু আমি আগেই বললাম যে, ভোলো মনের লোক রয়েছে। তাদের কাছে থেকে টাকা খুব সহজে হারায় না। তবে নতুন ভোটার হওয়ার পরে ভোটার নিবন্ধন স্লিপ হারিয়ে যায়।
যার ফলে, তারা জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর পাওয়া কিংবা জাতীয় পরিচয় পত্র কার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে দুশ্চিন্তায় পড়ে।
অধিকাংশ মানুষ এর কাছে শুনতে হয় ভোটার স্লিপ হারিয়ে ফেলছি। এখন কি করব? ভোটার নিবন্ধন স্লিপ হারিয়ে গেলে এনআইডি নম্বর এবং ভোর আইডি কার্ড পাওয়ার উপায় কি?
বন্ধুরা, এতে চিন্তার কোন কারণ নাই। কারণ ভোটার স্লিপ হারিয়ে গেলে এর কিছু না কিছু সমাধান অবশ্যই আছে।
কিন্তু তার জন্য বাড়তি একটু ঝামেলা পোহাতে হবে। সেই সকল বাড়তি ঝামেলা গুলো কি? আমরা আজ আপনাকে জানিয়ে দেব।
আর এই পোস্টে আমি আপনাকে জানিয়ে দেব। ভোটার স্লিপ হারিয়ে গেলে এনআইডি নম্বর এবং কার্ড পাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানাব।
আপনি যদি ভোটার স্লিপ হারিয়ে যাওয়া সংক্রান্ত তথ্য জানতে চান। তাহলে আমাদের দেওয়া আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনযোগ দিয়ে পড়ুন।
- ছবিসহ ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম
- ৪ টি উপায়ে ভোটার আইডি কার্ড যাচাই করুন মুহুর্তেই
- জন্ম নিবন্ধন ইংরেজি করার ফি কত টাকা (জানুন এখানে)
বাংলাদেশের সকল নাগরিকদের নির্দিষ্ট বয়সে ভোটার হওয়া অধিকার। যাদের জন্ম তারিখ 01-01-2007 সাল বা তারও আগে জন্ম হয়েছে। তারা সবাই ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হতে পারেন।
কিন্তু যাদের বয়স 18 বছর এর কম তারা শুধু জাতীয় পরিচয় পত্র পাবেন। তবে 18 বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত ভোটার তালিকায় তাদের নাম আসবে না। এছাড়া, ভোটও দিতে পারবে না।
আর যাদের বয়স 18 বছর হয়ে যাবে। তাদের ভোটার তালিকায় নাম অটোমেটিক ভাবে চলে যাবে। সেই সময় তারা ভোট দিতে পারবে।
আমাদের মধ্যে অনেকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এর অধিনে অনুষ্ঠিত হওয়া হালনাগাদ কার্যক্রমে ভোটার হয়ে থাকে।
আবার অনেক লোক হালনাগাদ এর সময় ভোটার না হতে পারায় নির্বাচন অফিসে নতুন ভোটার হওয়ার জন্যে আবেদন করেন। এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দিয়ে অফিসিয়াল ভাবে ভোটার হোন।
লোকেরা নতুন ভোটার হওয়ার সময় আবেদনকারীর ২নং নিবন্ধন ফরম এর নিচের অংশ ছিড়ে দেওয়া হয়।
যেটাকে প্রাপ্তি স্লিপ বা ২নং ভোটার নিবন্ধন স্লিপ বলা হয়ে থাকে। উক্ত ভোটার স্লিপ এর ডান পাশে 8/9 সংখ্যার একটি ইউনিক নম্বর দেওয়া থাকে।
যাকে ফরম নাম্বার বলা হয়। শুধুমাত্র ফরম নাম্বার/ জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর দিয়ে একজন ভোটার তার বিস্তারিত তথ্য দেখতে পারে।
একজন নতুন Underage ভোটারের বিস্তারিত তথ্য দেখার জন্য এবং জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর পাওযার জন্য ফরম নাম্বারা ছাড়া আর অন্য কোন উপায়ে দেখা যায় না।
আর দেখা গেলেও তা অনেক ঝামেলার একটি বিষয় হয়ে দাড়ায়।
তাই বোঝা যাচ্ছে যে, উক্ত ভোটার স্লিপ কতটা গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট। তবে অনেকে এই গুরুত্বপূর্ণ ভোটার স্লিপ অসাবধানতার জন্য হারিয়ে ফেলেন। এবং প্রয়োজনের সময় ভোগান্তির শিকার হয়।
ভোটার নিবন্ধন স্লিপ হারিয়ে গেলে কি করবেন?
যদি আপনি প্রকৃত ভোটার হোন। মানে পূর্বে ভোট দিয়েছেন বা 18 বছর এর বেশি বয়স প্রাপ্ত হন। কিন্তু এখানোর জাতীয় পরিচয় পত্র গ্রহণ করেন নিন। তাদের জন্য যা করতে হবে।
যেমন-
- আপনার গ্রাম/ মহল্লা/ পাড়ার যে, ভোটার তালিকা রয়েছে। সেই ভোটার তালিকা থেকে দেখবেন।
- আপনার নাম, পিতা ও মাতার নাম, জন্ম তারিখ সহ ১৩/১৭ ডিজিট এর ভোটার নম্বর রয়েছে।
- সেখান থেকে ভোটার নম্বরটি লিখে নিবেন। আর সেটি নিয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে।
- সেই ভোটার নম্বার এর মাধ্যমে জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর বা জাতীয় পরিচয় পত্র কার্ড গ্রহণ করতে পারবেন।
- আপনার ওয়ার্ড এর মেম্বার/ মহিলা মেম্বার/ কাউন্সিলর/ মহিলা কাউন্সিল এর নিকট সর্বশেষ হালনাগাদকৃত ভোটার তালিকা সংগ্রহ করতে পারবেন।
- ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন হতে কত দিন লাগে
এক্ষেত্রে, আপনারা যদি উক্ত ব্যক্তিদের কাছে, ভোটার তালিকা না পান। তাহলে উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে সর্বশেষ হালনাগাদকৃত ভোটার তালিকা পেয়ে যাবেন।
আর যারা 18 বছরের কম বয়সী এখনও ভোটার তালিকায় নাম যায়নি। আগে কখনও ভোট দেনননি। জাতীয় পরিচয় পত্র/ এনআইডি নম্বর বা এনআইডি কার্ড পাননি, ভোটার স্লিপ হালিযে ফেলছেন।
এখন কোন না কোন জরুরী কাজে জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর দরকার বা জাতীয় পরিচয় পত্র/ এনআইডি কার্ড দরকার।
এমন ভোটারদের জন্য এনআইডি নম্বর পাওয়া বা এনআইডি কার্ড পাওয়া অনেক জটিল বিষয়।
কারণ জাতীয় পরিচয় পত্র এনআইডি কার্ড নম্বর পাওয়ার জন্য ফরম নম্বর বা ভোটার নম্বর কোনটাই আপনি সরবরাহ করতে পারছেন না।
এই ক্ষেত্রে, আপনাকে উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে অবশ্যই যোগাযোগ করতে হবে। তাদের জানাতে হবে, আপনার ভোটার স্লিপ হারিয়ে গেছে।
এবং আপনার তথ্য খুঁজে বের করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাবেন। নির্বাচন অফিসেরর স্টাফ বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এর সার্ভার থেকে আপনার তথ্য খুঁজে বের করে দেবে।
কিন্তু প্রসেসটা অনেক সময় স্বাপেক্ষ ও ঝামেলা। ভোটর যদি তার ২নং ফরমে ব্যবহৃত নাম এর বানান, পিতার নাম এবং মাতার নাম ও জন্ম তারিখ ইত্যাদি তথ্য সঠিক করে না দিতে পারেন তবে অনেক সময় সেটি খুজে পাওয়া অসম্ভব হয়ে যাবে।
তার জন্য আপনার ক্ষেত্রে যদি এমন হয়ে থাকে। তবে, ভোটার হওয়ার সময যে সকল নাম ব্যবহার করেছিলেন সে গুলো সঠিক ভাবে বলার চেষ্টা করবেন। তাহলে আপনার ভোটার স্লিপ তথ্য খুজে বের করা যাবে।
এখন যদি উপজেলা থেকে তথ্য খুঁজে না পাওয়া যায়। তবে পরবর্তী ভোটার তালিকা না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করে যেতে হবে। এছাড়া আপনারা চাইলে জেলা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন।
আপনারা জেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে বিস্তারিত খুলে বলবেন। তারা আপনার হাতের ছাপ নিয়ে আপনার আইডেন্টিটি চেক করে দেখবেন।
আপনার তথ্য যদি সার্ভারে থাকে তবে তারা আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর লিখে দেবে। আর সেটি নিয়ে আপনাকে উপজেলা নির্বাচন অফিস দিতে হবে। তারা বাকি কাজ সম্পন্ন করবে।
মানে, জেলা নির্বাচন অফিস থেকে যদি আপনাদের ভোটর তথ্য সার্ভার থেকে না পায়। সেক্ষেত্রে তারা আপনাকে একটি ভোটার স্লিপ দেবে। সেখানে লেখা থাকবে। কোন প্রকার বায়োমেট্রিক তথ্য পাওয়া যায় নাই।
আপনার সাথে যদি এরকম হয় তবে উপজেলা তে ফিরে নতুন করে ভোটার হতে হবে।
কিন্তু জেলা নির্বাচন অফিস থেকে প্রদান করা স্লিপ হারোনো যাবে না। আবার যদি হারিয়ে যায় পুনরায় অনুরুপ স্লিপ পাওয়ার জন্য আবার জেলা নির্বাচন অফিসে যেতে হবে।
শেষ কথাঃ
তো আজ ভোটার নিবন্ধন স্লিপ হারিয়ে গেলে এনআইডি নম্বার এবং কার্ড কিভাবে পাবেন। সেই বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হলো।
এখন আপনার যদি ভোটার স্লিপ সংক্রান্ত আরো কোন প্রশ্ন থাকে। তাহলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
আর আমাদের এই সাইট থেকে ভোটার আইডি কার্ড বিষয়ে আরো নতুন তথ্য জানতে চাইলে নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।