ব্রাউজার কি? কিভাবে কাজ করে? 10 টি জনপ্রিয় ওয়েব ব্রাউজার!!

ইন্টারনেট ব্রাউজার কি? ব্রাউজার কিভাবে কাজ করে? আপনি একজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী অথচ কখনো ব্রাউজার নামটি শুনেন নি, এটা হতেই পারে না। কেননা ইন্টারনেট জগতে পা রাখার আগেই আপনাকে এটি অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। এই যে আপনি আমার আর্টিকেলটি পড়ছেন, এর জন্য নিশ্চয়ই ক্রোম বা অপেরা মিনি এর মত কোন না কোন ব্রাউজার আপনাকে ব্যবহার করতে হয়েছে।

প্রশ্ন হলো, আপনি কি এই ব্রাউজারের সকল খুটিনাটি বিষয়ে জ্ঞান রাখেন? আর এটি নিয়ে জানাটাই বা কেন এত গুরুত্বপূর্ণ? আপনি যদি মনে করে থাকেন, ব্রাউজার নিয়ে বিস্তারিতভাবে সকল বিষয় জানবেন, তাহলে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি শুধু আপনারই জন্য। 

মূল আলোচনা শুরু করার আগে আজকের আলোচ্য টপিকগুলো এক ঝলক দেখে নিই-

  • ব্রাউজার কি?
  • ব্রাউজার কীভাবে কাজ করে?
  • ব্রাউজার কীভাবে ডাটা কালেক্ট করে?
  • কোন ব্রাউজার কার জন্য? আপনি কোনটি ব্যবহার করবেন?
  • ব্রাউজারের নিরাপত্তা
  • ব্রাউজার ব্যবহারে কী কী সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত?
  • ব্রাউজার ব্যবহারে কিছু টিপস এন্ড ট্রিকস
  • কয়েকটি জনপ্রিয় ব্রাউজার
ইন্টারনেট ব্রাউজার কি? কীভাবে কাজ করে।
ইন্টারনেট ব্রাউজার কি? কীভাবে কাজ করে।

ব্রাউজার কী?

প্রথমেই বলে রাখি, এটি আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে ব্যবহারকৃত অন্যান্য কিছু সফটওয়ার এর মতই সাধারণ একটি অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়ার। তবে সাধারণ হলেও এটি কিন্তু বিশেষ একধরণের কাজ করার লক্ষ্যেই তৈরি করা হয়েছে। আর সেটি হলো ইন্টারনেট ব্যবহার।

আর ইন্টারনেট এর সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ভিজিট এবং সেখানে বিদ্যমান কোন লেখা, ছবি বা অন্যান্য কোন তথ্যের অনুসন্ধান করার কাজটিকে আমরা ইন্টারনেট ব্রাউজিং বলে থাকি।

আরও পড়ুনঃ

আর এই ব্রাউজিং এর সকল কার্যক্রম এর সঠিকভাবে পরিচালনা করার ক্ষেত্রে যে সফটওয়ারটি সহাহতা করে থাকে তাই হলো ওয়েব ব্রাউজার। ব্রাউজিং কথাটির মাধ্যমে মূলত বিভিন্ন ওয়েবপেইজের ভিতরকার লেখা, ছবি, ভিডিও এর চলাচলকে বোঝানো হয়ে থাকে।

সহজ কথায়, ইন্টারনেট জগতে কোন তথ্য অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে আমদের যে এপ্লিকাশন সফটওয়ারটি ব্যবহার করতে হয়, তাই ব্রাউজার। আশা করি, বুঝতে পেরেছেন। 

ব্রাউজার কীভাবে কাজ করে?

ব্রাউজার কী, তা জানার পর আপনার মনে নিশ্চয়ই এই প্রশ্নটিও এসেছে যে ব্রাউজার কীভাবে কাজ করে থাকে। হ্যাঁ, বন্ধুরা এই নিয়েই আমরা এবারে বিস্তারিতভাবে জানার চেষ্টা করবো।

আপনি হয়তো লক্ষ করে থাকবেন প্রতিটি ব্রাউজারের সাইডে বা উপরে একটি এড্রেস বার থাকে। আর সেখানে আপনি আপনার কীওয়ার্ড লিখলেই কোন একটি ওয়েবসাইটে নিয়ে চলে যায়। সাধারণত প্রতিটি ব্রাউজারেরই ডিফল্ট কিছু সার্চ ইঞ্জিন এড করা থাকে , আর সেটার মাধ্যমেই আপনাকে বিভিন্ন ব্লগ বা সাইটে নিয়ে যায়। তবে আপনি ইচ্ছে করলেই ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন বাদে অন্য কোন সার্চ ইঞ্জিনও ব্যবহার করতে পারেন। সাধারণত বেশিরভাগ ব্রাউজার গুগল সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে থাকে। 

ব্রাউজার এমন একটি জটিল সফটওয়ার যার মাধ্যমে যেমন অনেক ওয়েবগেইমস খেলা যায়, তেমনি ইন্টারনেট এর বিশাল জগতের সাথে আমাদের মিলন করে দেয়। কিন্তু এতকিছু কীভাবে সম্ভব? ইন্টারনেট কানেকশন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রায় প্রতিটি ব্রাউজার HTTP প্রোটকোল ব্যবহার করে থাকে। যেখানে সিম্পল কিছু CRUDE( Create Read Update Delete) অপারেশন করা হয় বিভিন্ন ডকুমেন্ট ডিসপ্লে এবং রিড করার জন্য। আবার কেশ মেমরির মাধ্যমে ব্রাউজার বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংরক্ষণও করে রাখতে পারে । তবে ব্রাউজারের জন্য এত কিছু করা অনেকটা চ্যালেঞ্জিংও বটে।

আবার সবকিছুর সিকিউরিটি মেইনটেইন করার জন্য ডাটা ইঙ্ক্রিপশন এর মত জটিল কাজও ব্রাউজারকে করতে হয়। ইনটারনাল সকল কাজ নিয়ে জানতে হলে আপনাকে  এ বিষয়ে আরো গভীরভাবে স্টাডি করতে হবে। আপাতত জেনে রাখুন, HTML, CSS, JavaScript এই তিনটি ল্যাঙ্গগুয়েজ ব্যবহার করেই মূলত ব্রাউজার তার সকল কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। আশা করি, ব্রাউজার কীভাবে কাজ করে এর উপর একটু হলেও আধো আধো ধারণা তৈরি হয়েছে। 

ব্রাউজার কীভাবে ডাটা কালেক্ট করে ?

ব্রাউজার কীভাবে কাজ করে, তা সম্পূর্ণভাবে জানতে হলে এই প্রশ্নটি সবসময়ই থেকে যায় যে, ব্রাউজার নেটওয়ার্কের ড্যাটাগুলো কীভাবে কালেক্ট করে থাকে? সেটা নিয়েই কথা বলছি। আপনি যখনই ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে কোন ব্রাউজারে প্রবেশ করেন, সাথে সাথে সেই ব্রাউজারটি আপনার আইপি এড্রেস, অপারেটিং সেস্টেম, হার্ডওয়ার পয়েন্টস ইত্যাদি অনেক তথ্যাদি অটোমেটিক পেয়ে যায়।

আরও পড়ুনঃ

আর সেই সকল তথ্যকে কাজে লাগিয়েই ব্রাউজার বিভিন্ন ওয়েবপেইজ থেকে ডাটা কালেক্ট করে থাকে। আর তার জন্য ব্যবহার করতে হয় HTTP প্রোটোকল। সেটাতো আগেই আলোচনা করা হয়েছে। 

তাছাড়া আপনি কোন সাইটে ভিজিট করছেন। আরা কোন কোন সাইটগুলি আপনি বেশি বেশি দেখছেন। এই সকল ইনফরমেশন কিন্তু আপনার অজান্তেই ব্রাউজারগুলি ব্যবহার করে থাকে। আর সেজন্যই আপনি সবসময় আপনার পছন্দের রিলেভেন্ট ইনফো বা এড দেখতে পান। ইচ্ছে করলেই আপনি সেটিংসে গিয়ে এটা অফ করে দিতে পারেন। সেজন্য আপনাকে Do not Track অপশনটি চালু করে রাখতে হবে। ওয়েব সিকিউরিটির জন্য এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। 

কোন ব্রাউজার কার জন্য? আপনি কোনটি ব্যবহার করবেন?

আপনার কাজের ধরণ অনুযায়ী আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে, কোন ব্রাউজার আপনার জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী এবং উপকারী। প্রায় সব ব্রাউজারের সোর্স কোড গুলো একই রকম হয়ে থাকে। তবুও বেশ কিছু ভিন্নতার কারণে এসব ব্রাউজারের কাজের ধরণ এবং প্রভাবও অনেক পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। নেটস্কেপ নামক একটি ব্রাউজার নিয়েই মানুষ একসময় মহাখুশি ছিল। কেননা তাদের সেটি ছাড়া আর কোন বিকল্প ছিল না। কালের পরিক্রমায় বর্তমানে মানুষকে তাদের কাজ এর ধরণ অনুযায়ী ব্রাউজার পছন্দ করতেই আজ হিমিশিম খেতে হচ্ছে। যাই হোক, আজকে আমরা জানবো, কোন কাজের জন্য কোন ব্রাউজার বেশি উপযোগী।

দ্রুত গতির ব্রাউজারঃ

বর্তমানে ধীর গতির ব্রাউজার নেই বললেই চলে। তবুও ব্রাউজারদের গতি তুলনামূলকভাবে আলাদা করতে সম্প্রতি সানস্পাইডার বেঞ্চমার্ক একটি পরীক্ষার আয়োজন করে। সেই পরীক্ষায় দেখা গেছে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার সবচেয়ে দ্রুত গতি সম্পন্ন একটি ব্রাউজার। তবে ক্রোম, অপেরা ও সাফারিও কিন্তু খুব একটা কম গতির বললে ভুল হবে। এসব ব্রাউজারের গতিও অনেক।

এড অনের জন্য সেরা ব্রাউজারঃ

দীর্ঘদিন ধরেই এড অন আর এক্সটেনশন এর দিক দিয়ে ব্রাউজারদের রাজা হিসেবে বসে আছেন ফায়ারফক্স ব্রাউজার। অ্যাড অন, পিন ট্যাব, গ্রিজ মাংকি এসব সুবিধার জন্য ফায়ারফক্স ব্রাউজারটি সকলের কাছেই অনেক জনপ্রিয়। তবে এই দিক দিয়ে এখন গুগল ক্রোমও পিছিয়ে নেই কিন্তু, বর্তমানে এই ব্রাউজারেরও অনেক এক্সটেনশন পাওয়া যায়।

আর অপেরা ব্রাউজার তাদের রেন্ডারিং ইঞ্জিন পরিবর্তন করে এখন গুগল ক্রোমের মত প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করছে। তাই ধারণা করা হয়, খুব কম সময়ের মধ্যেই গুগল ক্রোমের মত অনেক ফিচার আর এড অন এর সুবিধাও আমরা অপেরা ব্রাউজার থেকে পেতে পারি। 

আরও পড়ুনঃ মোবাইল দিয়ে অনলাইনে আয় করার সহজ উপায়

উইন্ডোজ এর জন্য সেরা ব্রাউজারঃ

যেহেতু গতির দিক থেকে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার এগিয়ে রয়েছে( যা আমরা বেঞ্চমার্ক পরীক্ষা থেকে জানি) তাই উইন্ডোজ ব্যবহারকারীদের জন্য ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার হতে পারে একটি ভালো মানের ওয়েব ব্রাউজার। তাছাড়া ফায়ারফক্স এবং ক্রোম ব্রাউজারও ব্যবহার করতে পারেন, কেননা এদের সিংক্রোনাইজেশন খুব ভালো।

তবে ডেস্কটপ মুডের জন্য ক্রোম ব্রাউজার খুব ভালো হবে। কেননা এটি কম সময়েই আপনাকে অনেক সাইটের এক্সেস দিয়ে থাকবে। আর কোন একটি ট্যাব ক্রাস করলে পুরো ব্রাউজার প্রভাবিত হয় না।

অন্যদিকে একটি ট্যাব ক্র্যাস করলেই ফায়ারফক্স এর পুরো সিস্টেম এর উপরই প্রাভাব পরে থাকে। আর ক্রোম ব্রাউজার এর অসুবিধা হলো এটি ড্যাটা চার্জ বেশি করে থাকে, যদি আপনি অনেকগুলো ট্যাব একসাথে অপেন করে রাখেন। 

নিরাপত্তার জন্য সেরা ব্রাউজারঃ

আপনি যদি নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে উপযোগী এবং সেরা ব্রাউজার অনুসন্ধানকারী হয়ে থাকেন, তাহলে ক্রোম ব্রাউজার হবে আপনার জন্য সর্বাধিক কার্যকরী। তাছাড়া প্রায় সব ব্রাউজারেই নিরাপত্তা রক্ষার জন্য বিশেষ মুড চালু করা যায়। যেটি অন রাখলে আপনি অনাকাংক্ষিত অনেক সাইট থেকে সুরক্ষা পেতে পারেন।

তাছাড়া এড অন এর সুবিধাকে কাজে লাগিয়েও আপনি আপনার ব্রাউজারের নিরাপত্তা কয়েকগুণে বাড়িয়ে নিতে পারেন। আর যারা নিরাপত্তা নিয়ে একটু বেশি সচেতন তারা তো একটি ব্রাউজার ইন্সটল করে সন্তুষ্ট হতেই পারেন না আজকাল। ক্রোম এর পাশাপাশি তাই ফায়ারফক্স এবং অপেরাও ইন্সটল দিয়ে রাখতে পারেন আপনার সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য।

তবে সকলক্ষেত্রে আপনাকে যে বিষয়টি খেয়াল রাখা অবশ্যই জরুরি তা হলো ব্রাউজারের নিরাপত্তা, গোপনীয়তা এবং গতি সবকিছুর যেন ভালো একটা সমন্বয় আপনি পান। আর সেটাই নির্ধারণ করে কোন ব্রাউজার সেরা। বর্তমান বাজারের এমন সেরা  এবং জনপ্রিয় ব্রাউজার হলো ক্রোম। পারসোনালি একটা সাজেশন দেই।

আপনি যদি বেশ জটিল কিছু কাজ না করে থাকেন এবং শুধু বেশ কিছু সাইটে ভিজিট করেন কেবল ইনফরমেশন কালেক্ট করাই আপনার মূল কাজ হয়ে থাকে, তাহলে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ব্যবহার করতে আপনাকে আমি উতসাহিত করতে চাই। কেননা সিম্পল ফিচারযুক্ত এই ব্রাউজারটি নিমেষেই আপনাকে আপনার কাংক্ষিত ফলাফল এনে দিতে সক্ষম।

ব্রাউজারের নিরাপত্তা

আর্টিকেল এর এই পর্যায়ে আমরা আলোচনা করবো ব্রাউজারের নিরাপত্তা বিষয়ক কিছু কথাবার্তা নিয়ে। যেকোন ওয়েব ব্রাউজার কেবল ব্যবহার করলেই চলবে না, সাথে এর নিরাপত্তা বিষয়েও আমাদের সচেতন থাকাটা খুব জরুরী। কেননা আপানার একটি ক্লিকেই হয়তো কোন ভাইরাসযুক্ত সাইটে আপনি চলে যেতে পারেন। যা  আপনার পুরো কম্পিউটার সিস্টেমকেই হুমকির মুখে ফেলতে সক্ষম। তাই নিরাপত্তা বিষয়টিও আপনাকে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। এর আগে আমরা দেখেছি কোন কোন ব্রাউজার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ উপযোগী? এগুলোর মধ্যে ক্রোম এবং ফায়ারফক্স সবার উর্ধে একথা না বললেই নয়। কেবল ব্রাউজার সিলেকশনই আপনার সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নাও নিশ্চিত করতে পারে। তাই এর ভিতরেও কিছু বিষয়ে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে । নিচে এমন কিছু নিরাপত্তা বিষয়ক পয়েন্ট আমি তুলে ধরছি-

  •  সর্বপ্রথম আপনার উচিত একটি সিকিউর ওয়েব ব্রাউজার ব্যবহার করা।
  • ব্রাউজারের প্রাইভেসি সেটীংসটি একবার ঘুরে আসুন এবং যাবতীয় প্রয়োজনীয় কার্যাবলি সম্পাদন করে ফেলুন।
  • আপনার ব্যবহৃত ব্রাউজার যতটা পারেন Up To Date আপ টু ডেট রাখার চেষ্টা করুন।
  • ইচ্ছে করলে আপনি প্রাইভেট বা ইনকগনিটো মুড (Private or incognito mode) চালু রেখে ব্রাউজ করতে পারেন।
  • ব্রাউজার এর জন্য আপনি সিকিউরিটি রক্ষামূলক কিছু এক্সটেনশন ব্যবহার করতে পারেন। যেমনঃ ক্রোম এর জন্য আপনি ব্রাউজার সিকিউরিটি প্লাস ( Browser security plus) ব্যবহার করতে পারেন। আপনাদের সুবিদার্থে আমি ডাউনলোড লিঙ্ক ও এখানে দিয়ে দিলাম। বিভিন্ন এডব্লকারও ব্যবহার করতে পারেন। যেমনঃ www.adblockplus.org 
  • তাছাড়াও আপনি ইচ্ছে করলে একটি ভালো মানের ভিপিএন (VPN) ব্যবহার করতে পারেন, ওয়েব ব্রাউজিং করার সময়। এতেও আপনার সুরক্ষা অনেক নিশ্চিত হবে।
  • সর্বোপরি আপনার কমন সেন্স (common sense) ব্যবহার করুন, ইন্টারনেট জগতে বিচরণ করার সময়। এমন কোন সাইটে প্রবেশ করবেন না, যা দেখে আপনার মনে হতে পারে কোন হ্যাকার সাইট বা ক্ষতিকারক। আর এইসব সাইট চেনার জন্য অনেক টেকনিক রয়েছে। সেগুলো জানতে আমাদের সাথেই থাকুন। এ নিয়ে আমরা আরেকদিন আলোচনা করবো। অথবা ইন্টারনেট ঘাটাঘাটি করে আপনি নিজে থেকেই সেগুলো শিখে নিতে পারেন। 

আশা করি ওয়েব ব্রাউজার ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বিষয়টি আপনার কাছে অনেকটা পরিষ্কার হয়ে গেছে।

ব্রাউজার ব্যবহারে কী কী সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত?

ব্রাউজারের নিরাপত্তা রক্ষার্থে আপনার সতর্কতার কোন বিকল্প নেই। তাই যতটা পারেন আপনাকে সচেষ্ট থাকতে হবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। নিরাপত্তা ছাড়াও ওয়েব ব্রাউজার ব্যবহারের সময় আমাদের বেশ কিছু বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যাবশ্যকীয়। যেমনঃ

১। একসাথে অনেক ট্যাব না ওপেন করে রাখা।

২। যেকোন এড এ ক্লিক করার আগে নিশ্চিত হওয়া যে, সেটা আশংকা মুক্ত কি না।

৩। এডব্লকার ব্যবহার করা।

৪। www.google.com/alerts (গুগল এলার্টস) এর মত কিছু সফটওয়ার আপনার ব্রাউজারে ইন্সটল দিয়ে রাখা।

৫। যেকোনো Plug-ins ইন্সটল করার সময় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা।

৬। কোন এন্টিভাইরাস ব্যবহার না করে থাকলে অবশ্যই একটি এক্সটেন্সন রাখুন আপনার ওয়েব ব্রাউজার এর জন্য।

৭। আপনি যদি মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে তো আরো বেশি সতর্ক থাকতে হবে। এর জন্য ইচ্ছে করলে আপনি আলাদা একটি সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করতে পারেন। যার নাম হলো ‘’সালাম ওয়েব’’। এটি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন।

৮। ওয়েব ব্রাউজার এর মাধ্যমে কোন এপ ইন্সটল দেবার সময় সতর্ক থাকুন। 

৯। ব্রাউজারের সিকিউরিটি অপশনগুলো নিয়মিত চেক করুন।

এই নয়টি বিষয়ে সতর্ক থাকলে আপনি অনেকটাই নিশ্চিত হতে পারবেন যে, আপনার সুরক্ষার কোন কমতি হয় নি। আর ইন্টারনেট ব্যবহারে সুরক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ওয়েব ব্রাউজার ব্যবহারে কিছু টিপস এন্ড ট্রিকস-

হঠাত আপনি এমন একটি সাইটে গেলেন যেখানে লেখাগুলো খুবই ছোট ছোট আর সেজন্য আপনি পড়তেই পারছেন কী লেখা আছে। এখন আপনি কী করবেন? নিশ্চয়ই এমন কিছু করার চেষ্টা করবেন, যাতে লেখার ফন্টগুলো বড় করা যায়।

মোবাইলে আপনি দুই আঙ্গুলের সাহাজ্যে খুব সহজেই মেলে ধরে লেখাগুলো বড় করে নিতে পারেন। ল্যাপটপ এর ক্ষেত্রেও টাচ এরিয়া এর সাহায্যে একইভাবে লেখা ছোটবড় করতে পারেন। কিন্তু ডেস্কটপ কম্পিউটারের ক্ষেত্রে আপনি কী করবেন? 

 এর জন্য আপনার কী-বোর্ডের কন্ট্রল ( ctrl ) বোতামটি চেপে ধরে, প্লাস(+) বোতাম চাপুন লেখা বড় করার জন্য আর মাইনাস (-) বোতাম চাপুন লেখার ফন্টগুলো ছোট করার জন্য। 

Ctrl+ : To increase font size

Ctrl- :  To decrease font size

এবার ধরুন আপনি একটি ওয়েবসাইটে ভিজিট করছেন এবং সেখান থেকে নির্দিষ্ট কিছু শব্দ বিশিষ্ট লাইন আপনি পড়তে চান। এর জন্য কী করবেন? শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব লাইন পড়া আরম্ভ করবেন? না ! আপনাকে এর জন্য এত কষ্ট করতে হবে না। আপনার কী-বোর্ডের Ctrl বোতাম চেপে ধরে F বাটনে ক্লিক করুন (ctrl+F)।

দেখবেন আপনার সামনে একটি সার্চ বক্স চলে আসবে। তারপর সেখানে আপনি আপনার ইচ্ছানুযায়ী কী-ওয়ার্ড লিখে সার্চ করতে পারেন। কী-ওয়ার্ড লিখার পর ইন্টার এ প্রেস করলেই দেখবেন, আপনার সাইটের সেই সেই টেক্সট গুলো হাইলাইট হয়ে গেছে, যেগুলো আপনি সার্চ করেছেন। 

ইউটিউব বা কোন সাইট থেকে ভিডিও ডাউনলোড করতে চান? এর জন্য আপনার ওয়েব ব্রাউজার এ একটি এক্সটেনশন ইন্সটল করে নিন। প্রয়োজনমত বিভিন্ন এক্সটেনশন ব্যবহারও আপনার ব্রাউজিং এক্সপেরিএন্স অনেকটা আনন্দদায়ক আর সুবিধাজনক করে দেয়।  

এরপর ধরুন আপনি একটি সাইটে ভিজিট করছেন, এমন সময় আপনার প্রয়োজন হলো আরেকটি পেইজে ঘুরে আসার। তখন কী করবেন, সেই সাইটটি ক্লোজ করে আবার নতুন সাইটে যাবেন? না ! এটা করতে হবে না। এর জন্য আপনি আপনার ব্রাউজারে আরেকটি ট্যাব অপেন করে নিতে পারেন। তারপর সেই ট্যাব এর মাধ্যমে আপনি ভিন্ন আরেকটি সাইটে ভিজিট করে আসতে পারেন। এভাবে আপনি যত খুশি ট্যাব ওপেন করে সাইট ভিজিট করতে পারেন।

তবে একসাথে অনেকগুলো ট্যাব ওপেন করার ফলে আপনার ব্রাউজিং স্পিড অনেক কমে যেতে পারে। আবার ব্রাউজারেরও অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই প্রয়োজন মাফিক যতটা পারেন স্বল্পসংখ্যক ট্যাব ওপেন করে কাজ করুন। বিভিন্ন ব্রাউজারে ট্যাব ওপেন করার সিস্টেম আলাদা আলাদা রকমের হয়ে থাকে। তবে সাধারনত, এড্রেসবারের পাশে প্লাস সাইন যুক্ত অং শে ক্লিক করলে নতুন ট্যাব ওপেন হয়ে যায়। বেশিরভাগ ব্রাউজার এর ক্ষেত্রে এটিই দেখা যায়।

কয়েকটি জনপ্রিয়  ওয়েব ব্রাউজার-

এবার আমি আপনাদের বেশ কিছু ব্রাউজারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেব এবং সাথে এদের বিভিন্ন সুবিধা অসুবিধা নিয়েও কথা বলার চেষ্টা করবো।

ক্রোম ওয়েব ব্রাউজার( Google chrome):

বর্তমানে জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছে এই গুগল ক্রোম ব্রাউজারটি। ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন। জনপ্রিয়তার কারণও আছে অনেক।

সুবিধাঃ

  • গতির দিক দিয়ে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার এর পরেই ক্রোম ব্রাউজার এর অবস্থান। 
  • এই ব্রাউজার এর সিঙ্কক্রোনাইজেশন অনেক ভালো মানের।
  • সহজেই অনেক সাইটে এক্সেস পাওয়া যায়।
  • অনেক রকম এক্সটেনশন রয়েছে।
  • কোন কারণে একটি ট্যাব ক্রাস করলে, তা পুরো ব্রাউজারে প্রভাব ফেলে না।

অসুবিধাঃ

  • একসাথে অনেকগুলো ট্যাব ওপেন করলে স্পীড কমে যায়।
  • তুলনামূলকভাবে ড্যাটা খরচ বেশি হয়।
  • অন্যান্য ওয়েব ব্রাউজার এর তুলনায় বেশি মেমরি নিয়ে থাকে।
  • ব্যাটারি খরচও অনেকাংশে বেশি হয়।

মজিলা ফায়ারফক্স( Mozilla Firefox):

এই ওয়েব ব্রাউজার টি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন।

সুবিধাঃ

  • এই ব্রাউজারটির সিংক্রোনাইজেশনও অনেক ভালো।
  • একে এড অন এর রাজা বলা হয়। কারণ ভিন্নধর্মী এক্সটেনশন এই ব্রাউজারে প্রচুর পাওয়া যায়।
  • নিরাপত্তা বিষয়টি অনেক জোড়দার।
  • ওয়েব ব্রাউজার এর আউটলুক অনেক সুন্দর।
  • ড্যাটা খরচ কম হয়।

অসুবিধাঃ

  • এই  ওয়েব ব্রাউজার এ কোন কারণে একটি ট্যাব এ ক্র্যাস করলে, এর প্রভাব পুরো ওয়েব ব্রাউজার এর উপর পরে।
  • ক্রোম এর তুলনায় মজিলা ফায়ারফক্স এর ব্রাউজিং স্পীড একটু কম।

ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার( Internet explorar):

এই ব্রাউজারটি ইন্সটল করতে এখানে ক্লিক করুন।

সুবিধাঃ

  • বলা হয়ে থাকে ইন্টারনেট দুনিয়ার সবচেয়ে বেশি গতিসম্পন্ন ওয়েব ব্রাউজার এটি।
  • খুব সহজেই অনেক সাইটে এক্সেস পাওয়া যায়।
  • এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক ভালো।
  • ইন্টারনেট ইক্সপ্লোরার এর মেমরি খরচ অনেক কম হয়ে থাকে।

অসুবিধাঃ

  • এর আউটলুক অতীব সাধারন। তাই অনেকের এটি পছন্দ নাও হতে পারে। 
  • খুব বেশি টূলস এবং ফিচারস আপনি এর মধ্যে দেখতে পাবেন না। 

অপেরা মিনি( Opera mini):

এই ব্রাউজারটি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন।

সুবিধাঃ

  • ক্রোম এর তুলনায় এই ওয়েব ব্রাউজার এ আপনি অনেক বেশি ফিচারস পাবেন।
  • এই ব্রাউজারের আউটলুক অনেক সুন্দর হয়ে থাকে।
  • সবরকম সাইটে এক্সেস পাওয়া যায়।

অসুবিধাঃ

  • এই ওয়েব ব্রাউজার এর সিকিউরিটি ব্যবস্থা তেমন একটা ভালো না।
  • ব্রাউজিং স্পিড একটু স্লো হতে পারে।
  • খুব ঘন ঘন ট্যাব ক্রাস করে থাকে।

আপনি হয়তো লক্ষ করে থাকবেন, সব রকম ব্রাউজারেরই কিছু না কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে। এই সকল দিক বিবেচনা করেই আপনাকে আপনার প্রয়োজন মত নিজের কাজের উপযোগী ব্রাউজার বাছায় করে নিতে হবে। আমি এখান হাতে গোনা মত্র কয়েকটি ব্রাউজার এর কথা উল্লেখ করলাম।

এগুলো ছাড়াও আরো অনেক ওয়েব ব্রাউজার রয়েছে আপনি সেগুলোও বিবেচনা করতে পারেন। যেমনঃ ইউ সি ওয়েব ব্রাউজার, মাইক্রোসফট এজ, সাফারী এবং আরো অনেক। তবে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে ক্রোম ওয়েব ব্রাউজার এবং দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার। এবার বাকি সিদ্ধান্ত আপনার আপনি কোন ব্রাউজার ব্যবহারে বেশি সাচ্ছ্যন্দ বোধ করবেন।

আমরা আমাদের আর্টিকেলের একেবারে শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। আশা করি, আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার ভাল লেগেছে এবং মনে করছি এটা আপনার অনেক উপকারেও আসবে। আর সেটাই হবে আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন। এই ধরনের আরো আর্টিকেল পড়তে চাইলে আমাদের পেইজে ভিজিট করতে পারেন। আর নিয়মিত আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ । অনেক অনেক শুভ কামনা রইলো।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 thoughts on “ব্রাউজার কি? কিভাবে কাজ করে? 10 টি জনপ্রিয় ওয়েব ব্রাউজার!!”

Scroll to Top