টেলিগ্রাম কি ? টেলিগ্রাম অ্যাপ এর সুবিধা, ইতিহাস ও বৈশিষ্ট্য

টেলিগ্রাম কি : টেলিগ্রাম অ্যাপ সম্পর্কে এবং টেলিগ্রামের ইতিহাস ও মুখ্য বৈশিষ্ট্য গুলো জানতে, আমাদের আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

বর্তমান সময়ে, ইন্টারনেটে নির্ভর মেসেজিং অ্যাপ গুলো আমাদের যোগাযোগ করার জনপ্রিয় এবং পছন্দের মাধ্যম হয়ে উঠেছে।

টেলিগ্রাম কি ? টেলিগ্রাম অ্যাপ এর সুবিধা, ইতিহাস ও বৈশিষ্ট্য
টেলিগ্রাম কি ? টেলিগ্রাম অ্যাপ এর সুবিধা, ইতিহাস ও বৈশিষ্ট্য

অফিশিয়াল যেকোনো আলোচনা থেকে শুরু করে, প্রিয় বন্ধুবান্ধবদের সাথে যে, কোন সময় যে কোন জায়গায় চ্যাটিং করা এই অ্যাপগুলো ব্যবহার ভীষণ সহজ হয়ে গেছে।

ফেসবুক মেসেঞ্জার কিংবা হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেঞ্জার সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হলেও। বর্তমানে আরো একটি মেসেজিং অ্যাপ সুরক্ষিত মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম প্রদান করার জন্য খুবই জনপ্রিয় হয়ে, উঠেছে আর সেটি হল টেলিগ্রাম ম্যাসেঞ্জার।

তাই আজকের এই আর্টিকেলে টেলিগ্রাম এপ সম্পর্কে জানা-অজানা বিভিন্ন তথ্য প্রদান করব। তাই টেলিগ্রাম কি এ বিষয়ে জানতে আমাদের লেখা আরটিকেলটি শেষ পর্যন্ত ধৈর্য সহকারে পড়ুন।

টেলিগ্রাম কি ?

টেলিগ্রাম অ্যাপের বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে বলতে গেলে মূলত এ টেলিগ্রাম হল এক ধরনের অনলাইন মেসেজিং অ্যাপস। যা অনেকটাই ফেসবুক মেসেঞ্জার এবং হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেঞ্জার এর মত কাজ করে থাকে।

বিশেষ করে মোবাইল ডাটা, হটস্পট কিংবা ওয়াইফাই ব্যবহার করে, তারপর যে কাউকে বার্তা পাঠানো যায়। এজন্য অবশ্যই সে ব্যক্তির একটি টেলিগ্রাম একাউন্ট থাকতে হবে।

এ টেলিগ্রাম একটি ক্লাউড ভিত্তিক মেসেজিং অ্যাপস। আর এ টেলিগ্রাম অ্যাপের দাবি হচ্ছে যে, এটি নিরাপত্তা এবং হাই স্পিড মেসেজিং পারফরম্যান্স প্রদান করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এই জনপ্রিয় ক্রস প্ল্যাটফর্ম মেসেজিং অ্যাপটির বর্ধিত গোপনীয়তা এবং এনক্রিপশন বৈশিষ্ট্য এর জন্য মানুষের মধ্যে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

এছাড়া টেলিগ্রাম অ্যাপটি বিশাল বড় গ্রুপ চ্যাট বৈশিষ্ট্য গুলো সমর্থন করেন। ফেসবুক মেসেঞ্জার আর হোয়াটসঅ্যাপ এ দুইটি অ্যাপস একই কোম্পানির মালিকানাধীন হলেও। টেলিগ্রামের সাথে অন্য কোন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের যোগসূত্র নাই।

এটি প্রতিটি মানুষের কাছে, টেলিগ্রামের সার্ভিসকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলেছে। এই টেলিগ্রাম অ্যাপটির সংস্করণ প্রতিটি জনপ্রিয় মাল্টি প্ল্যাটফর্ম এর সঙ্গে কাজ করে।

আপনি টেলিগ্রাম উইন্ডোজ কম্পিউটার থেকে শুরু করে যে কোন এন্ড্রয়েড মোবাইলে ইন্সটল করে ব্যবহার করতে পারবেন। এমনকি টেলিগ্রামের অ্যাপস ব্যবহার করে, আপনারা কম্পিউটার বা মোবাইলের যে কোন ওয়েব ব্রাউজারে প্রবেশ করেও টেলিগ্রামে মেসেজিং করতে পারবেন।

টেলিগ্রামের এর বৈশিষ্ট্য

টেলিগ্রাম অ্যাপ মেসেঞ্জারার এর বেশ কয়েকটি প্রধান বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আর সেগুলো আমি আপনার সামনে সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপন করব। যেমন-

  • টেলিগ্রাম অ্যাপটি আপনারা একদম বিনামূল্যে, দ্রুত গতিতে বার্তা গ্রহণ এবং প্রেরণ করতে পারবেন নিরাপত্তার সাথে।
  • আপনি এই টেলিগ্রাম ব্যবহার করে সকল ডিভাইসে একই সময় ব্যবহার করতে পারবেন।
  • আপনার বার্তা গুলো আপনার যে কোন মোবাইল, কম্পিউটার বা ল্যাপটপে কোন ঝামেলা ছাড়াই দ্রুত সিঙ্ক হয়ে যাবে।
  • টেলিগ্রাম অ্যাপে বর্ধিত এনক্রিপশন এবং গোপনীয়তা সহ ক্রস প্লাটফর্ম মেসেজিং সার্ভিস প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে।
  • টেলিগ্রামে বার্তার উপর সাধারণত ক্লায়েন্ট টু সার্ভার এনক্রিপশন দেওয়া হয়ে থাকে। তবে গোপন চ্যাট বার্তাগুলোর গোপনীয়তা বজায় রাখার ক্ষেত্রে জরুরী এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন সংযুক্ত করা থাকে।
  • এই টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপ টি গ্রুপ চ্যাট এবং সেল্ফ ডেস্ট্রাকটিং মেসেজগুলোও সমর্থন করে থাকে।
  • আপনার ডিভাইসে এই অ্যাপটি ১০০ এমবির বেশি জায়গা গ্রহণ করে না, অনেক কম এমবিতেই মোবাইলে ইন্সটল হয়। তাই আপনার মোবাইল মেমোরি থেকে কোন কিছু ডিলিট না করে, সকল মিডিয়ার ক্লাউড স্টোরি রেখে দিতে পারবেন।
  • টেলিগ্রাম এর মাল্টি ডাটা সেন্টার স্ট্রাকচার এবং এনক্রিপশন অনেক দ্রুত এবং নিরাপদ হয়ে থাকে।
  • আর টেলিগ্রাম অ্যাপটি আপনারা সারা জীবনের জন্য ফ্রিতে ব্যবহার করতে পারবেন। আর এখানে কোন প্রকার সাবস্ক্রিপশন ফি এবং বিজ্ঞাপন ছাড়াই ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন।

টেলিগ্রাম এর ইতিহাস

টেলিগ্রাম অ্যাপ সম্পর্কে বলতে গেলে বলা যায়, এ টেলিগ্রাম অ্যাপটি সর্বপ্রথম যাত্রা শুরু করে ২০১৩ সালে। নিকোলাই এবং পাভেল দূরভ নামের দুই রাশিয়ান বংশোদ্ভূত ভাই এ টেলিগ্রাম অ্যাপটি প্রতিষ্ঠিত করেন।

পাভেল টেলিগ্রাম অ্যাপকে আর্থিক এবং আদর্শিকভাবে সমর্থন করেন। আর নিকোলাই টেলিগ্রামের প্রযুক্তিগত উন্নতির বেগ নজর রাখেন।

টেলিগ্রামকে তৈরি করতে, নিকোলাই একটি অনন্য কাস্টম ডাটা প্রোটোকল তৈরি করেন। যার ফলে এর টেলিগ্রাম অ্যাপটি একাধিক ডাটা সেন্টার এর সাথে কাজ করতে সক্ষম।

টেলিগ্রাম সুরক্ষিত এবং অপটিমাইজড এফ হয়ে উঠেছে। বর্তমানে সারা পৃথিবীতে প্রায়ই ৬০০ মিলিয়নেরও বেশি টেলিগ্রাম একটি ব্যবহার করে সক্রিয় রয়েছেন।

টেলিগ্রাম কোম্পানিটি রাশিয়ার অধীনে থাকলেও পরবর্তীতে এর পাভেল দূরভ 2017 সালে এই কোম্পানিটিকে আরবে নিয়ে যান এবং তিনি ২০২১ সালে ফরাসি নাগরিকত্ব গ্রহণ করে ফেলেন।

টেলিগ্রাম এর সুবিধা

টেলিগ্রাম অ্যাপ ব্যবহার করে বেশ কিছু বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়। তো চলুন এমন কিছু সুবিধা সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক। যেমন-

বর্তমানে হোয়াটসঅ্যাপ মাত্র ২৫৬ জনের গ্রুপ তৈরি করতে সাপোর্ট করে থাকে। আর সেখানে এই টেলিগ্রাম অ্যাপটি ২ লাখ জন মানুষের বড় একটি গ্রুপ তৈরি করতে পারে।

টেলিগ্রামের সেল্ফ ডেস্ট্রয়িং মেসেজ এবং প্রাইভেট চ্যাট অপশন আপনাকে বিশেষ নিরাপত্তাসহ চ্যাট করার সুবিধা প্রদান করবে।

টেলিগ্রাম আপনারা উইন্ডোজ, লিনাক্স, যে কোন স্মার্ট ফোনে খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারবে। বিশেষ করে টেলিগ্রাম অ্যাপটি আপনারা যে কোন ডিভাইসের ওয়েব ব্রাউজার দিয়েও ব্যবহার করতে পারবেন।

Whatsapp বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বার্ষিক ফিচার্জ করলেও টেলিগ্রাম সারা বিশ্বে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সার্ভিস দেয়।

আপনার ডিভাইসে ইন্টারনেট থাকলেও এখানে বার্তা এবং বড় বড় যে কোন ফাইল পাঠানো অনেক সহজ।

টেলিগ্রাম অ্যাপ গোপনীয়তা বজায় রাখার জন্য অন্যতম। টেলিগ্রাম এ ফেরত এবং গ্রাহক তরফ এর ব্যবহারকারীরা কোন প্রকার প্রমাণ না রেখে নিজেদের মেসেজ সম্পূর্ণভাবে ডিলেট করে দিতে পারে।

টেলিগ্রামে ১.৫ জিবি সাইজ পর্যন্ত ফাইল ট্রান্সফার করা যায়। আর হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টের শুধুমাত্র ১৬ mb পর্যন্ত যেকোনো ফাইল আদান প্রদান করা যায়।

আপনারা এতক্ষণ যে টেলিগ্রামের সুবিধা গুলো জানতে পারলেন। এগুলো ছাড়া আরও বিভিন্ন সুবিধার রয়েছে, যা আপনারা টেলিগ্রাম একাউন্ট ব্যবহার করলে জানতে পারবেন।

শেষ কথাঃ

তো বন্ধুরা, আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের জানিয়ে দেয়া হলো টেলিগ্রাম কি ? টেলিগ্রাম অ্যাপ এর সুবিধা এবং টেলিগ্রামের ইতিহাস ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তারিত।

এখন টেলিগ্রাম সম্পর্কে আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।

ধন্যবাদ।

আপনার জন্য আরও আর্টিকেল

Leave a Comment