এডসেন্স এড লিমিট কি? এডসেন্স এড লিমিট কেন হয় ?এডসেন্স এডস লিমিট কি : বর্তমান সময়ে আমরা যারা ব্লগিংয়ের মাধ্যমে এবং ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে, এডসেন্স থেকে টাকা ইনকাম করি। এক্ষেত্রে, অবশ্যই আমাদের কাছে এডসেন্স এড লিমিট বিষয়টি অনেক পরিচিত।
সাধারণত, ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেলে যখন অ্যাড লিমিট হয়। তখন আমোদের সাইটে আর এড বা বিজ্ঞাপন শো করানো হয় না।

তাই আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের সুবিধার জন্য জানাতে যাচ্ছি, এডসেন্স অ্যাড লিমিট কি ? এবং এডসেন্স এড লিমিট কেন হয়। তাই আপনি যদি এই বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা পেতে চান? তাহলে আমাদের লেখা আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
এডসেন্স এড লিমিট কি?
আপনাকে যদি সহজ ভাবে বলি, তাহলে গুগল অ্যাডসেন্স এড লিমিট হচ্ছে- এডসেন্স যুক্ত ওয়েবসাইটে এড না দেখানো বা কম কম এড দেখানো কে অ্যাড লিমিট বলা হয়।
অ্যাড লিমিট এর বাংলা শব্দের অর্থ হচ্ছে বিজ্ঞাপন সীমা। এর মানে ওয়েবসাইটে অল্প আকারে বিজ্ঞাপন দেখানো বা একেবারেই না দেখানো হচ্ছে- এডস লিমিট।
আপনাদের ওয়েবসাইটে যদি কখনো এড লিমিট আসে তবে আপনাকে এডসেন্স থেকে একটি মেইলের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে। আপনি যখন এই ধরনের মেইল পাবেন। তখন সেখানে লেখা থাকবে- “Ads limit placed on your site”.
আপনারা অবশ্যই মনে রাখবেন, গুগল এডসেন্স অ্যাড লিমিট আসলে, আপনার ওয়েবসাইটে কোন বিজ্ঞাপন দেখানো হবে না।
এছাড়া আপনি যদি বিজ্ঞাপন গুলোতে না ক্লিক করেন। তারপরেও অনেক সময় অ্যাড লিমিট করে দেওয়া হয়। আর যদি আপনার ব্লগে অল্প পরিমাণের বিজ্ঞাপন দেখানো হয়, তারপরও কিন্তু টাকা ইনকাম হবে না।
তো বন্ধুরা আশা করছি, আপনারা বুঝতে পারলেন, এডসেন্স এড লিমিট মূলত কি। যদি না বুঝে থাকেন তাহলে উপরের আলোচনা আরো একবার পড়ুন।
এডসেন্স এড লিমিট কেন হয়?
উপরে উল্লেখিত আলোচনায় আপনাকে জানিয়ে দিলাম, এডসেন্স এড লিমিট কি? তো এখন আমি আপনাদের জানাবো এডসেন্স এড লিমিট কেন হয়। এ বিষয়ে জানতে নিচের তথ্য গুলো অনুসরণ করুন।
গুগল এডসেন্স প্রতিটি সময় এথিক্যাল কাজ গুলোকে বেশি প্রাধান্য দেয়। এজন্য যারা অসাধু উপায় ব্যবহার করে, এডসেন্স থেকে টাকা ইনকাম করার সিদ্ধান্ত নেয় তাদেরকে শাস্তি হিসেবে গুগল এডসেন্স এডস লিমিট প্রদান করেন। তো কথায় আছে না অতি লোভে তাতি নষ্ট, এরকম অবস্থা।
এছাড়া, গুগল এডসেন্স এড লিমিট হওয়ার প্রধান কারণ গুলোর মধ্যে, সব থেকে ক্ষতিকারক কারণ হচ্ছে, ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপনে ইনভেলিড ক্লিক।
ইনভেলিড ক্লিক কিভাবে হয় এবং কিভাবে এডসেন্স এড লিমিট হয়। সে বিষয়ে আমি বিস্তারিত ধারণা দিচ্ছি।
→এডসেন্স এড লিমিট হওয়ার কারণ←
- ইনভেলিড ক্লিক।
- নিজের ওয়েবসাইট বা youtube এর বিজ্ঞাপনে নিজে নিজে ক্লিক করা।
- হুটহাট করে বিজ্ঞাপনে ক্লিকের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে গেলে।
- ট্রাফিক এক্সচেঞ্জ কিংবা ট্রাফিক বট করে ওয়েবসাইটে ভিজিটর নিয়ে আসলে।
- বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বেশি বেশি ভিজিট নিয়ে আসলে।
- গুগল এডসেন্স এর এড গুলো সঠিক ভাবে, প্লেসমেন্ট না করলে।
তো চলুন, এডসেন্স অ্যাড লিমিট হওয়ার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেয়া যায়।
ইনভ্যালিড ক্লিক
ইনভেলিড ক্লিক এর মাধ্যমে, এড লিমিট দেওয়া হয়। তো আমরা যারা ব্লগিং করে এডসেন্স থেকে ইনকাম করি তাদের জেনে নিতে হবে ইনভেলিড ক্লিক কি।
এডসেন্সের বিজ্ঞাপন গুলো ভুলভাবে ক্লিক করলে সিটিআর অনেক বৃদ্ধি হয়ে যায়। আর যখন হঠাৎ করে সিটিআর এর সংখ্যা বেড়ে যায় তখন এডসেন্স এড লিমিট করে দেওয়া হয়।
নিজের ওয়েবসাইট বা ইউটিউবের বিজ্ঞাপন নিজে নিজে ক্লিক করা
আপনারা সবসময় মনে রাখবেন google এডসেন্স একাউন্টে ১০% এর বেশি সিটিআর যখন হয়ে যাবে। তখন কিন্তু এড লিমিট হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যারা নিজের বিজ্ঞাপনে নিজে নিজে ক্লিক করেন, ইনকাম বৃদ্ধি করার জন্য। তবে এক্ষেত্রে ইনকাম হওয়ার তো দূরের কথা, নিজে নিজে ক্লিক করার ফলে এডসেন্সের সিটিআর অনেক হাই হয়ে যায়। যার ফলে, এডসেন্স এড লিমিট করে দেয়।
এমন কত গুলো এডসেন্স একাউন্ট রয়েছে যে অ্যাকাউন্ট গুলোতে নিজে নিজে বিজ্ঞাপন ক্লিক করলে, এড লিমিটেড পাশাপাশি, এডসেন্স অ্যাকাউন্ট ডিজেবল করে দেয়া হয়।
ট্রাফিক এক্সচেঞ্জ কিংবা ট্রাফিক বট করে ওয়েবসাইটে ভিজিটর নিয়ে আসলে
অনেকে গুগল এডসেন্স থেকে ইনকাম বৃদ্ধি করার জন্য, চালাকি করে এমনভাবে কনটেন্ট পাবলিশ করেন। যেগুলোতে ভিজিটর প্রবেশ করলে ক্লিক করতেই হবে।
এরকম পলিসি খাটিয়ে, বিজ্ঞাপন যুক্ত করলে, ভিজিটর অনেক বিরক্ত হয় এবং এডসেন্সে হিউজ পরিমাণের ক্লিক করে, যেখানে ইনকামের বিপরীতে এডসেন্স এড লিমিট করে দেয়া হয়।
আবার অনেকেই রয়েছে, ওয়েবসাইটের ট্রাফিক এক্স চেঞ্জ, ট্রাফিক বট করে, ওয়েবসাইটে ভিজিটর নিয়ে আসে। যারা এ সকল অসৎ উপায় অবলম্বন করে এডসেন্স থেকে ইনকাম করতে চায়, তাদের এডসেন্স একাউন্ট খুব দ্রুত ভাবে এড লিমিট করে দেওয়া হয়।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বেশি বেশি ট্রাফিক নিয়ে আসা
আমাদের মধ্যে অনেক ব্লগার এবং ইউটিউবার রয়েছে। যারা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে বড় বড় পেজ তৈরি করে সেখানে, কন্টেন্টের লিংক শেয়ার করে, অনেক পরিমাণের ভিজিটর নিয়ে আসেন।
এই পলিসি খাটিয়ে ইনকাম করতে চাইলে, মারাত্মক ভুল হতে পারে। কারণ এ সকল ভিজিটর গুগল থেকে অর্গানিক ভিজিটর মনে করা হয় না। google এই বিষয়টি কে মনে করেন এ সকল ভিজিটর কে ভাড়া করে নিয়ে আসা হয়েছে। যার ফলে এডসেন্সের অ্যাড লিমিট করে দেয়া হয়।
তো আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বেশি বেশি ট্রাফিক নিয়ে আসেন। তাহলে অ্যাকাউন্ট 90% অ্যাড লিমিট হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
এডসেন্স এড সঠিক ভাবে প্লেসমেন্ট না করা
আমাদের মাঝে অনেকেই রয়েছে যারা তাদের ওয়েবসাইটে এলোমেলো ভাবে যেখানে, ইচ্ছা সেখানেই বিজ্ঞাপন প্লেসমেন্ট করে দেন। যার ফলে ভিজিটরদের কনটেন্ট দেখতে বা পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।
এছাড়া অনেক সময় আমরা সঠিক জায়গায় বিজ্ঞাপন প্লেসমেন্ট করতে পারি না। ভুল জায়গায় বেশি পরিমাণে বিজ্ঞাপন প্লেসমেন্ট করে দেয়। যার ফলে সাইটে এডসেন্স এড লিমিট হয়ে যায়।
- আর্টিকেল লেখার নিয়ম | আর্টিকেল লেখার জন্য কি জানতে হবে।
- অনলাইন ইনকাম- মাসে 100,000+ টাকা আয় করার উপায় [45 টি মাধ্যম]
- গুগল এডমোব (AdMob) থেকে আয় করার উপায়
শেষ কথাঃ
তো বন্ধুরা, এডসেন্স এড লিমিট কি? এবং এডসেন্স এড লিমিট কেন হয় ? যারা এই বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন, তারা উপরে উল্লেখিত আলোচনা অনুসরণ করে, বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে পারেন।
কারণ আমরা আপনাকে জানিয়ে দিয়েছি, কি কি কারণে মূলত এডসেন্স এড লিমিট করে দেয়া হয়। সে বিষয় গুলো আপনি যদি এড়িয়ে চলতে পারেন। তাহলেই এডসেন্স এড লিমিট সমস্যা হতে সুরক্ষিত থেকে অনলাইন ইনকাম করতে পারবেন।
আর এই আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার যদি আরো কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে আমাদের জানাতে পারেন। ধন্যবাদ…