বর্তমান সময়ে, আমরা ব্লগিং থেকে শুরু করে ইউটিউব চ্যানেলে গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে ইনকাম করি। তো যারা এডসেন্স ব্যবহার করেন। তারা সকলেই এডসেন্স এড লিমিট শব্দটির সাথে পরিচিত।
সাধারণত ওয়েবসাইটে যখন এক লিমিট হয়। তখন আপনার ওয়েবসাইটে আর বিজ্ঞাপন দেখানো হবে না। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের সাথে আলোচনা করব। গুগল এডসেন্স এড লিমিট কি ? কেন হয় এবং এর সমাধান কি ?
আপনারা যারা এডসেন্সের অ্যাড লিমিট সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেতে চান? তারা আমাদের লেখা আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
- দ্রুত গুগল এডসেন্স পাওয়ার উপায় (জেনেনিন এখানে)
- গুগল এডসেন্স থেকে মাসে কত টাকা আয় হয় [দেখলে চমকে যাবেন]
- গুগল এডসেন্স এর যে ১০টি বিষয় জানা খুবই জরুরী
এডসেন্স এড লিমিট কি ?
গুগল এডসেন্স এড লিমিট হচ্ছে, এডসেন্স ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন না দেখানো কে এড লিমিট বলা হয়। অ্যাড লিমিট এর বাংলা তে রূপান্তরিত করলে বলা হয় বিজ্ঞাপন সীমা।
আপনাদের ওয়েব সাইটে যদি কখনো অ্যাড লিমিট হয়ে থাকে। তাহলে আপনাকে এডসেন্স থেকে ইমেইল এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে।
আপনারা এ ধরনের মেইল পাবেন। যেমন “Ads limit placed on your site” এই বিষয় অনুযায়ী।
আপনারা মনে রাখবেন এডসেন্স এড লিমিট হলে আপনার ওয়েবসাইটে কোন বিজ্ঞাপন দেখাবেন।
এছাড়া আপনি যদি বিজ্ঞাপনে নাও ক্লিক করেন। তারপরেও, অনেক সময় বিজ্ঞাপন লিমিট হয়ে যেতে পারে। আর যদিও আপনার ব্লগে কম পরিমাণ এর অ্যাড দেখিয়ে থাকে তাহলে টাকা ইনকাম হবে না।
তো বন্ধুরা আশা করি অ্যাড লিমিট কি এ বিষয়ে সঠিক ধারণা পেয়ে গেছেন।
গুগল এডসেন্স এড লিমিট কেন হয় ?
গুগলের সব সময়ই ইথিক্যাল কাজগুলোকে প্রাধান্য দেয়। তার জন্য যারা অসাধু উপায় ব্যবহার করে, গুগল এডসেন্স থেকে টাকা ইনকাম করার চিন্তা করে, তাদেরকে শাস্তি হিসেবে অ্যাড লিমিট করে দেওয়া হয়।
এছাড়া অ্যাড লিমিট হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে, ওয়েবসাইট এর বিজ্ঞাপনে ইনভেলিড ক্লিক করার জন্য। ইনভেলিড ক্লিক কিভাবে হয়, এবং কিভাবে এড লিমিট হয় সে বিষয়ে আমি নিচে কিছু ধারনা উল্লেখ করেছি দেখুন।
গুগল এডসেন্স এড লিমিট হওয়ার কারণ ?
- গুগল এডসেন্সের অ্যাড লিমিট হওয়ার বড় কারণ হচ্ছে, ইনভেলিড ক্লিক।
- নিজের সাইটে নিজে নিজে বিজ্ঞাপন ক্লিক করা।
- আপনার সাইটে ভিজিটরদের বিজ্ঞাপন ক্লিক করতে বাধ্য করলে।
- হুট করে, সাইটে এট ক্লিকের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে।
- ট্রাফিক অ্যাকশনস বা ট্রাফিক বট করে, ওয়েবসাইটে ভিজিটর নিয়ে আসলে।
- বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে বেশি পরিমাণে ট্রাফিক আসায়।
- গুগল এডসেন্স এড সঠিকভাবে প্লেসমেন্ট না করলে।
তো আপনার google adsense এর কোন প্ল্যাটফর্মে যদি এই ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। তাহলে অ্যাড লিমিট হবে।
তো চলুন, এড লিমিট হওয়ার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেয়া যাক।
ইনভেলিড ক্লিক
আমরা যারা গুগল এডসেন্স নিয়ে টাকা ইনকাম করি, তাদেরকে অবশ্যই জানতে হবে ইনভেলিড ক্লিক কি।
ইনভেলিড ক্লিক হচ্ছে- ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপন গুলোকে ভুল ভাবে ক্লিক করলে সিটিআর হাই হয়ে যায়। আর যখন অ্যাডসেন্সের সিটিআর হাই হয়ে যায় তখন google এডসেন্স এড লিমিট করে দেয়।
নিজের সাইডে নিজে নিজে বিজ্ঞাপন ক্লিক করা
আপনারা যারা ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব নিয়ে, গুগল এডসেন্স মনিটাইজেশন করে ইনকাম করেন। তাদেরকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে, এডসেন্সের সেটিআর ১০% এর বেশি হলে অ্যাড লিমিট হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
আমাদের মাঝে অনেকে আছে যারা নিজের নিজে নিজে ক্লিক করে ইনকাম বাড়ানোর জন্য। তবে এতে বিপরীত ঘটনা ঘটে যায়।
অ্যাড লিমিট হওয়ার মতো। আপনারা না বুঝে যদি একই ইন্টারনেট আইপি দিয়ে এড ক্লিক করেন। সে ক্ষেত্রে কিন্তু অ্যাড লিমিট হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
ভিজিটরদের বিজ্ঞাপনে এড ক্লিক করতে বাধ্য করা
আমাদের মধ্যে অনেক লোক এমনভাবে আর্টিকেল পাবলিশ করেন যাতে করে আর্টিকেল দেখতে গেলে বিজ্ঞাপনে ক্লিক করার প্রয়োজন হয়। আসলে সত্যি বলতে এটি ভিজিটরদের কাছে বিরক্তি কর মনে হয়। আর এটি গুগল এডসেন্স এর কাছে অনৈতিক।
তাই আপনাকে এ বিষয়টি নজরে রেখে, ওয়েবসাইটের পোস্টে বা ইউটিউব ভিডিওতে, ভালোভাবে এড প্লেসমেন্ট করতে হবে। যাতে কোন ভিজিটর বিরক্ত বোধ না করেন। আপনি যদি ভিজিটরদের কথা চিন্তা না করে, শুধুমাত্র ইনকামের কথা চিন্তা করেন। তাহলে আপনার এড লিমিট হয়ে যাবে।
হুট করে বিজ্ঞাপনে ক্লিক এর পরিমাণ বৃদ্ধি পালে
আপনারা যারা গুগল এডসেন্স ব্যবহার করেন। তাদের এডসেন্স একাউন্টে এড ক্লিকের পরিমাণ যদি বৃদ্ধি পায় তাহলে ১ লিমিট হয়ে যেতে পারে।
আপনাকে বোঝানোর জন্য বলছি মনে করুন- আপনার এডসেন্স একাউন্টে প্রতিদিন, ২০-৩০ টি ক্লিক করে।
একদিন হঠাৎ করে দেখলেন যে, আপনার এডসেন্স একাউন্টে প্রায় 200 থেকে 300 ক্লিক আসলো। তখন এডসেন্স এটিকে ইসলাম হিসেবে ধরে নেবে। আর্ট লিমিট করে দেবে।
ট্রাফিক এক্সচেঞ্জ বা ট্রাফিক বট করে সাইটে ভিজিটের নিয়ে আসলে
আপনি যদি ওয়েবসাইটে ক্লিক করার জন্য কোন ভাড়াটিয়া ক্লিকার নিয়ে আসেন। সে ক্ষেত্রে, একই আইপি যদি হয়।
তাহলে অ্যাড লিমিটেড আশঙ্কা অনেক গুণ বেড়ে যাবে। যার ফলে, ওয়েবসাইট সারা জীবনের জন্য ডিজেবল করে দেওয়া হতে পারে।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বেশি ট্রাফিক নিয়ে আসলে
আমাদের মাঝে এমন অনেক ইউটিউবার এবং ব্লগার আছে যারা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে বড় বড় পেজ তৈরি করে সেখানে আর্টিকেলের লিংক শেয়ার করে। প্রচুর পরিমাণে ভিজিটর নিয়ে আসে।
এটি কিন্তু মারাত্মক একটি ভুল। তার কারণ ওয়েবসাইটে যদি গুগল সার্চ ইঞ্জিন থেকে। অর্গানিক ভিজিটর না আসে। শুধুমাত্র প্ল্যাটফর্ম গুলো থেকে ভিজিটর আসে। তাহলে অটোমেটিক ভাবে এডসেন্স একাউন্ট লিমিট হয়ে যাবে।
সঠিকভাবে প্লেসমেন্ট না করলে
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা google এডসেন্স থেকে এড এর মাধ্যমে বেশি পরিমাণে ইনকাম করার চিন্তা করে, অনেক বেশি পরিমাণের বিজ্ঞাপন সাইটে যুক্ত করেন। আপনি যদি এরকম কাজ করে থাকেন, তাহলে দ্রুত অ্যাড লিমিট হয়ে যাবে।
আপনারা উপরোক্ত আলোচনা অনুসরণ করে জানতে পারলেন। অ্যাড লিমিট কি এবং এড লিমিট কেন হয়? আপনারা যারা উপরোক্ত আলোচনায় জানানো কাজগুলো করে থাকেন।
তাহলে আপনাদের এডসেন্স একাউন্ট লিমিট হওয়ার সম্ভাবনা অনেক গুণ বেশি থাকবে। আবার এমন কতগুলো কাজ রয়েছে যে কাজগুলো করার পর, এডস লিমিট হতে হতে, একসময় এডসেন্স একাউন্ট ডিজেবল করে দেয়া হবে।
শেষ কথাঃ
তো বন্ধুরা আপনারা যারা গুগল এডসেন্স এড লিমিট কি এবং এড লিমিট কেন হয় জানতে চেয়েছিলেন। তারা উপরোক্ত আলোচনা অনুসরণ করে, সঠিক তথ্য গুলো জেনে নিতে পারেন।
তো আজকের আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে। তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন ধন্যবাদ।