ব্যবসা পরিকল্পনা হলো একটি পদক্ষেপের পরিকল্পনা প্রক্রিয়া যা কোন ব্যবসার বা উদ্যোগের ক্ষেত্রে অনুসন্ধান, প্রকৃতির অনুশীলন, নির্ধারণ এবং ব্যবসায় কার্যকর পদক্ষেপ গুলো গ্রহণের জন্য অনুকরণীয় নির্দেশিকা তৈরি করে।
ব্যবসা পরিকল্পনা ব্যবসা করতে, আগ্রহী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য সর্বাধিক সহায়ক হতে পারে, কারণ এটি ব্যবসায় একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য সাধাণ করে, তৈরি করে এবং এর মাধ্যমে সঠিক পথ নির্দেশ দেওয়া যায়।

সংক্ষেপে বলা যায় যে, ব্যবসা পরিকল্পনা হলো ব্যবসায় একটি পরিকল্পনা প্রক্রিয়া যা সঠিক পথ নির্দেশ দেয় এবং আগামী কার্যক্রম গুলো সম্পন্ন করতে সাহায্য করে।
নতুন ব্যবসা পরিকল্পনা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
নতুন ব্যবসা পরিকল্পনা গুরুত্বপূর্ণ কারণ এর ফলে সফল ভাবে ব্যবসা কার্য সম্পাদন করা যায়। তো চলুন নতুন ব্যবসা পরিকল্পনা কেন এত গুরুত্বপূর্ণ সেই বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।
প্রতিষ্ঠানের দিক দিয়ে সম্ভাব্যতা:
নতুন ব্যবসা পরিকল্পনা একটি প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়িক উদ্যোগের বিকাশে মূলত দরকারী ধাপ। এটি সাধারণত প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য নির্ধারণে সাহায্য করে, এটি নির্ধারিত করে যে, কোনও নতুন ব্যবসা পরিকল্পনা বা উদ্যোগ সম্ভাব্যতা রাখবে কিনা।
এটি প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যতের আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে কাজ করার সুবিধা যোগায়।
প্রতিযোগিতামূলক বাজারে একটি দিকনির্দেশ:
ব্যবসা পরিকল্পনা নতুন ব্যবসা কর্মকাণ্ডের জন্য প্রতিযোগিতা মূলক বাজারে একটি দিকনির্দেশ সৃষ্টি করে। পরিকল্পিত ব্যবসা কর্মকাণ্ড গুলো নতুন এবং আদর্শ সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান গুলোর সাথে প্রতিযোগিতা মূলক ভাবে পার্থক্য সৃষ্টি করতে পারে।
এটি ব্যবসায়িক সফলতার জন্য সঠিক সময়ে ব্যবসা প্রতিযোগিতা এবং নতুন মার্কেট নিয়ে গবেষণা ও পরিকল্পনা সম্পন্ন করার সুযোগ সৃষ্টি করে।
নিজস্ব সঠিকতা এবং সুযোগের চিত্রমূলক নির্ধারণ:
নতুন ব্যবসা পরিকল্পনা পরিচালনার মাধ্যমে, ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের একটি সঠিক ও সামরিক প্রচার পাওয়ার জন্য নিজস্ব সঠিকতা এবং সুযোগ নির্ধারণ করা যায়।
এটি একটি ভালো সুযোগ তৈরি করে, যার মাধ্যমে নতুন ব্যবসা পরিকল্পনা করা হয়। যাতে সংস্থা বা ব্যক্তির আইডেন্টিটি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের থেকে আলাদা হয়ে থাকে।
এটি আরও পরিচালনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ যাতে, প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির সৃজনশীলতা এবং সামরিকতা বর্ণনা করা যায়।
ব্যবসার পূর্বাভাস:
নতুন ব্যবসা পরিকল্পনা করা একটি উদ্যোগের আগে পূর্বাভাস প্রদান করে। এটি কিন্তু আগামীতে কি হবে তা আগ্রহী ব্যক্তিদের মতামত এবং পর্যালোচনা সংগ্রহ করতে সাহায্য করে, এটি আরও উদ্যোগের জন্য স্বয়ংক্রিয় ভাবে প্রতিবেদন এবং অনুসন্ধান করার জন্য উৎসাহিত করে।
এটি ব্যক্তির মতামত ও অভিজ্ঞতা এবং ব্যবসায়িক দক্ষতা বিবেচনা করে, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ ব্যবসা পরিকল্পনার জন্য প্রস্তাবনা তৈরি করতে সাহায্য করে।
এমনকি নতুন ব্যবসা পরিকল্পনার মাধ্যমে, ব্যবসায়িক অনুভূতি, সম্পদ নিয়ন্ত্রণ, উন্নয়ন এবং সামগ্রিক ব্যবসায়িক সম্পদ পরিচালনা সম্ভব হয়।
নতুন ব্যবসা পরিকল্পনা প্রয়োগ করে, প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসা উদ্যোগের মাধ্যমে, নতুন ব্যবসা কার্যক্রম সম্পন্ন করার সুযোগ সৃষ্টি করে এবং ব্যবসায়িক সাফল্যের জন্য সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য পরিকল্পনা করা হয়।
নতুন ব্যবসা পরিকল্পনা করার নিয়ম
১. নির্বাহী সারসংক্ষেপ।
২. কোম্পানির বর্ণনা।
৩. বাজার বিশ্লেষণ।
নতুন ব্যবসা পরিকল্পনা করার নিয়ম গুলোর বিস্তারিত আলোচনার নিম্নরূপ :
১. নির্বাহী সারসংক্ষেপ:
প্রথমে একটি নির্বাহী সারসংক্ষেপ তৈরি করুন যা নতুন ব্যবসা পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য, লক্ষ্য এবং মূল্যবান বৈশিষ্ট্য গুরো সংক্ষেপে উল্লেখ করবে। এটি ব্যবসা পরিকল্পনার ভৌগোলিক এবং পরিবেশিক পরিস্থিতির সাথে মিল রাখতে সহায়তা করবে।
২. কোম্পানির বর্ণনা:
নতুন ব্যবসা পরিকল্পনার মাধ্যমে, আপনার কোম্পানির বর্ণনা তৈরি করুন। এটি আপনার কোম্পানির পরিচয়, সেবার অবস্থান, পণ্য বা সেবার বৈশিষ্ট্য, আইডেন্টিটি ইত্যাদি উল্লেখ করবে। এটি আপনার কোম্পানির অন্যান্য প্রতিষ্ঠান গুলো থেকে আলাদা করতে সাহায্য করবে।
৩. বাজার বিশ্লেষণ:
ব্যবসা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাজার বিশ্লেষণ গুরুত্বপূর্ণ। আপনাকে আপনার লক্ষ্য মূলক বাজারের জন্য সম্ভাব্য বাজার দক্ষতা, সংকট , আপনার সংস্থার পণ্য বা সেবার জন্য চাহিদা, প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান গুলোর সম্পর্ক ইত্যাদি বিশ্লেষণ করতে হবে।
বাজার বিশ্লেষণ আপনাকে সঠিক মার্কেটিং পদক্ষেপে নিয়ে যাবে এবং আপনার ব্যবসা প্রতিযোগিতামূলক করতে সাহায্য করবে।
এ গুলো নতুন ব্যবসা পরিকল্পনা করার নিয়ম হিসাবে মনে রাখা উচিত। এছাড়াও, আপনি নিজের প্রকৃতি, উদ্যোগশীলতা, আর্থিক উপস্থিতি ইত্যাদির প্রতিষ্ঠানে কাজের জন্য মনে রাখতে পারেন।
মার্কেট এনালাইসিস করার জন্য যা করতে হবে?
১. ব্যবস্থাপনা ও সংগঠন।
২. পণ্য ও সেবা।
৩. কাস্টমার পরিকল্পনা।
৪. ব্যবসায় মার্কেটিং পরিকল্পনা।
৫. সরবরাহ ও সাংগঠনিক পরিকল্পনা।
৬. অর্থনৈতিক পরিকল্পনা।
মার্কেট এনালাইসিস করার জন্য নিম্নলিখিত কার্যক্রম গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
১. ব্যবস্থাপনা ও সংগঠন:
ব্যবস্থাপনা ও সংগঠনের সম্পর্কে বিশ্লেষণ করুন। ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি, প্রক্রিয়াকরণ, কার্যক্রম গুলো সম্পর্কে জানুন এবং সংগঠনের ক্ষমতা, পরিচালনা ও প্রভাবের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করুন।
২. পণ্য ও সেবা:
আপনার পণ্য বা সেবার বৈশিষ্ট্য, মান ও মার্কেট মূল্য সম্পর্কে বিশ্লেষণ করুন। ক্রেতাদের চাহিদা, মার্কেট ট্রেন্ড, প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের ক্ষেত্রে আপনার পণ্য বা সেবার উপর গুরুত্ব দিন।
৩. কাস্টমার পরিকল্পনা:
আপনার লক্ষ্য মূলক কাস্টমারের উপর ভিত্তি করে, কাস্টমার পরিকল্পনা করুন। আপনার কাস্টমার সেগমেন্টেশন, কাস্টমারের চাহিদা, বৈশিষ্ট্য এবং মূল্যবান বিষয়ে প্রস্তাবনা পর্যালোচনা করুন।
৪. ব্যবসায় মার্কেটিং পরিকল্পনা:
আপনার ব্যবসায়ের মার্কেটিং পরিকল্পনা তৈরি করুন। ব্যবসায়ের পণ্য বা সেবা প্রচারের উপায়, মার্কেটিং ক্যাম্পেইন, ব্র্যান্ডিং, প্রমোশন এবং বিক্রির পর্যালোচনা করুন।
৫. সরবরাহ ও সাংগঠনিক পরিকল্পনা:
আপনার ব্যবসায়ী পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থাপনা, বাজারে আপনার উপস্থিতির সংগঠন সম্পর্কে বিশ্লেষণ করুন। এটি আপনার পণ্য বা সেবার প্রভাবকে নির্ধারণ করবে। এবং সরবরাহ পণ্য ব্যবস্থাপনা করার সুযোগ প্রদান করবে।
৬. অর্থনৈতিক পরিকল্পনা:
আপনার অর্থনৈতিক পরিকল্পনা তৈরি করুন, যেমন- আর্থিক খরচ, নির্দিষ্ট মূল্যবান অবস্থা, ব্যবসার পূর্বাভাস পর্যালোচনা ইত্যাদি। এটি আপনার ব্যবসায়িক সাফল্যের জন্য অর্থনৈতিক পরিকল্পনা করার সুযোগ প্রদান করবে।
উপরে উল্লিখিত কার্যক্রম গুলো মার্কেট এনালাইসিস করার সাধারণ পদ্ধতির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও, প্রতিষ্ঠানের বৈশিষ্ট্য, কার্যক্রম, ব্যক্তিগত ক্ষমতা ইত্যাদি বিবেচনা করতে পারেন।
শেষ কথাঃ
আপনারা যারা নতুন ব্যবসার পরিকল্পনা করতে চান? তারা উপরে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কাজ করুন। তাহলে আশা করা যায় আপনি সঠিক ভাবে ছোট বা বড় যে কোন নতুন ব্যবসার পরিকল্পনা করে সফলতা অর্জন করতে পারবেন।
এছাড়া, আমাদের এই ওয়েবসাইট থেকে নতুন নতুন ব্যবসা-বাণিজ্য পাস্ট পড়তে চাইলে ভিজিট করতে পারেন। আমরা এখানে লাভজনক বিভিন্ন ব্যবসা আইডিয়া আপলোড করে রেখেছি।
আর নতুন ব্যবসা পরিকল্পনা সম্পর্কে আপনার যদি বাড়তি কিছু জানার থাকে। তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
ধন্যবাদ।