আপনি যদি জমি ক্রেতা হয়ে থাকেন। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি যার জমি কিনবেন। সেই জমি বিক্রেতার থেকে আপনার চাহিত জমি খারিজ করে নিতে হবে।
আবার আপনি যদি জমি বিক্রেতা হোন। তবে অবশ্যই আপনাকে জমি ক্রেতার নিকট জমি খারিজ করে বিক্রি করতে হবে। জমি ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয় কে জমি খারিজ করার উপায় গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত।
আর সেই জন্য আজকের এই পোস্টে, জমি খারিত করার উপায় এবং ই নামজারীর আবেদন করার নিয়ম জানিয়ে দেব। আপনি বিস্তারিত জানতে চাইলে নিচে দেওয়া তথ্য গুলো পড়ুন।
![জমি খারিজ করার উপায় - ই নামজারীর আবেদন করার নিয়ম](https://bloggerbangla.com/wp-content/uploads/2024/01/জমি-খারিজ-করার-উপায়-ই-নামজারীর-আবেদন-করার-নিয়ম.png)
জমি খারিজ কি?
জমি খারিজ হলো এমন একটি আইনি প্রক্রিয়া। যা ফলে একজন জমির মালিক তার জমি অন্য কারো কাছে নির্দিষ্ট পরিমানের টাকার বিনিময়ে হস্তান্তর করেন।
উক্ত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন মালিক জমির মালিকানা ভোগ করতে পারে। সেই সঙ্গে পুরাতন জমির মালিক তার জমির মালিকানা নতুন জমির মালিকের কাছে হস্তান্তর করেন।
এক্ষেত্রে আপনার যদি কোন নির্দিষ্ট পরিমানের জমি থাকে। এখন বিশেষ প্রয়োজনে আপনার জমি টি বিক্রি করা দরকার পরে। তবে অবশ্যই নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী আপনাদের জমি ক্রেতার নিকট খারিজ করে দিতে হবে।
আর জমি খারিজ করার জন্যে, অবশ্যিই জমি খারিজ করার উপায় সঠিক ভাবে জেনে নিতে হবে। আপনি যদি জমি খারিজ করার সঠিক পদ্ধতি না জানেন। তাহলে কিন্তু জমির দালালদের খপ্পরে পড়ে অনেক ক্ষতি গ্রস্ত হতে পারেন।
এখন আপনি যদি একজন জমি ক্রেতা হোন। তবে অবশ্যই আপনার জানাতে হবে। জমি ক্রয় করার আগে করণীয় গুলো কি কি? আশা করি বুঝতে পারলেন, জমি খারিজ কি? কেন মুলত জমি খারিজ করতে হয়। এখন এই সম্পর্কে যদি কোন প্রশ্ন থাকে। আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন।
জমি খারিজ করার উপায়
আপনি যদি জমি খারিজ করতে চান? মানে জমির মালিকানা হস্তান্তর করতে চান? তবে নিচে দেওয়অ তথ্য গুলো অনুসরণ করুন।
জমির নতুন দলিল তৈরি করুন
জমির বর্তমান মালিক ও আগ্রহী জমি ক্রেতার মধ্যে একটি নতুন দলিল তৈরি করতে হবে। উক্ত দলিলটি ভূমি মন্ত্রণালয় এর যে কোন রেজিস্ট্রার অফিসে গিয়ে করতে হবে।
তারপরে সেই জমির দলিল বিবরণ যেমন- জমির পরিমাণ, জমির অবস্থান, বিক্রিকৃত জমির মূল্য, মূল্য পরিশোধের শর্তাবলী ও অন্যান্য দরকারী তথ্য অন্তুর্ভুক্ত করতে হবে। জমির দলিলটি অব্যশই নোটারি পাবলিক এর সামনে স্বাক্ষর গ্রহণ করতে হবে।
ই নামজারি আবেদন করুন
জমি খারিজ করার জন্যে অবশ্যই ভূমি মন্ত্রণালয় এর নিকট জমির নাম জারি আবেদন করবেন। বর্তমানে সকল প্রকার নামজারি আবেদন গুলো অনলাইনের মাধ্যমে আবদেন করা যাবে। আর অনলাইনের ভাষায় ই নামজারি বলা হয়।
বর্তমান সময়ে ই নামজারি আবেদন করা যাবে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল এই mutation.land.gov.bd ওয়েবসাইট ভিজিট করার মাধ্যমে।
ই নামজারি আবদেন করার সময় কিছু বিষয় আপনাদের সংগ্রহ করে আবেদন এর সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। যেমন-
- দলিলের একটি ফটো কপি।
- জমির বর্তমান মালিক ও নতুন জমি ক্রেতার পরিচয়।
- এছাড়া আরো অন্যান্য কাগজপত্র।
উক্ত নিয়মে আপনার আবেদন সঠিক ভাবে সম্পন্ন হলে, অল্প কয়েক দিনের মধ্যে আপনাকে শুনানির জন্য ডাকা হবে। আপনার আবেদন পত্রটি আপনি ট্র্যাক করে জানতে পারবেন। আপনার ই নামজারি আবেদন এর সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে।
ই নামজারি শুনানি তে অংশগ্রহন করুন
আপনারা যখন ভূমি মন্ত্রণালয় এর নিকট ই নামজারি আবদেন করবেন। তখন আপনাকে সেখানে শুনানি তে ডাকবে। সেখানে অবশ্যই জমি ক্রেতা ও জমি বিক্রেতাকে উভয়কে ডাকা হবে। জমি সংক্রান্ত ও তাদের দাবি সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্ন করবে।
নামজারির আদেশ জারি ও মালিকানা পরিবর্তন
ভূমি মন্ত্রণালয় এর নির্ধারিত জাজ বা কর্মকর্তাগণ শুনারি পরে একটি ই নামজারি আদেশ জারি করবে। উক্ত আদেশ এর মাধ্যমে নতুন জমির মালিক মালিকানা ভোগ করবে।
এবং পুরাতন জমির মালিক তার জমির মালিকানা নতুন মালিক এর কাছে হস্তান্তর করবে।
উক্ত বিষয় গুলোর মাধ্যমে জমির মালিকানা হস্তান্তর বা জমি খারিজ করা যাবে।
জমি খারিজ করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- জমির ক্রেতা ও জমি বিক্রেতার এনআইডি কার্ড।
- জমি ক্রেতা ও জমি বিক্রেতার ছবি।
- নতুন জমির দলিল এর কপি।
- সর্বশেষষ হালনাগাদকৃত জমির খতিয়ান।
- ওয়ারিশ সনদ পত্র। ইত্যাদি।
জমি খারিজ করার প্রয়োজনীয় ফি
আপনি যদি জমি খারিত করতে চান? তাহলে সরকারে নির্ধারিত আবেদন ফি জমা দিতে হেব। আবেদন ফি কত সেটি নির্ভর করবে জমির পরিমান, জমি কোন এলাকায় তার উপর।
তাই আপনারা উক্ত বিষয়টি ভূমি অফিস থেকে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
শেষ কথাঃ
তো আপনারা যারা জমি খারিজ করতে চান? তারা উক্ত নিয়ম গুলো অনুসরণ করে কাজ শুরু করতে পারেন। তাহলে জমি ক্রেতা ও বিক্রেতার কোন ঝামেলা হবে না।
এখন জমি খারিজ করা নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্ট্ করে জানিয়ে দিবেন।
ধন্যবাদ।