অনলাইনে জমির দলিল দেখার নিয়ম : আপনারা যারা জমি জমার দলিল পত্র বের করতে চান? তাহলে খুব সহজেই আমাদের দেখানো প্রক্রিয়া অবলম্বন করে দেখতে পারবেন।
আর সবথেকে মজার বিষয় হচ্ছে, আপনারা জমির দলিল দেখার নিয়ম নিজের ঘরে বসেই সম্পন্ন করতে পারবেন। তাই আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের সাথে আলোচনা করব। জমির দলিল দেখার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত।
আর্টিকেলের শুরুতে আপনাকে একটি কথা বলতে চাই, অনলাইনের মাধ্যমে আপনারা শুধুমাত্র জমির খতিয়ান যাচাই করতে পারবেন।
বাংলাদেশের সকল প্রকার খতিয়ান এখন, জাতীয় ভূমি তথ্য এবং সেবা কাঠামোর ওয়েবসাইট গুলোতে সংরক্ষিত রয়েছে।
জরিপ বিভাগের মাধ্যমে প্রস্তুত করা সর্বশেষ খতিয়ান হলো- আর এস খতিয়ান। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন- বিএসএস খতিয়ান, বি আর এস খতিয়ান, সিটি জরিপ কিংবা খতিয়ান ইত্যাদি নামে।
জমির খতিয়ান যাচাই করার উপায়
আপনারা যারা জমির কাগজপত্র সম্পর্কে জানতে চান? তারা চাইলে খুব সহজে অনলাইনের মাধ্যমে, জমির খতিয়ান যাচাই করে নিতে পারবেন।
তো কিভাবে যাচাই করবেন। সে বিষয়ে আমরা একটি লিংক প্রস্তুত করে দিয়েছি।
সেখানে আপনারা প্রবেশ করে আমাদের দেখানো পদ্ধতি অবলম্বন করলে খুব সহজেই জমির খতিয়ান যাচাই করে দেখতে পারবেন।
জমির খতিয়ান যাচাই করার জন্য আপনাকে এই eporcha.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।
তারপর, আপনার জমির খতিয়ান যাচাই করার জন্য। প্রথম অংশে বিভাগ, জেলার নাম, উপজেলার নাম এবং মৌজার নাম নির্ধারণ করতে হবে।
এই কাজটি করার আগে আপনাকে অবশ্যই জমির জরিপ ধরেন অনুযায়ী, নির্ধারণ করতে হবে বিএস, cs, brs, as, এগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি নির্বাচন করতে হবে।
তারপর, আপনার যমের খতিয়ান যাচাই করার চারটি অপশন পেয়ে যাবেন। যেমন-
- খতিয়ান নং অনুযায়ী।
- দাগ নং অনুযায়ী।
- মালিকানা নাম অনুযায়ী।
- পিতা বা স্বামীর নাম অনুযায়ী।
উক্ত ৪ টি এর মধ্যে যেকোনো একটি অপশনের তথ্য আপনার নিকট রয়েছে সেই অপশনের বাম পাশে গোলাকার ঘরে মাউস দিয়ে ক্লিক করুন।
গোল ঘরে সিলেট করলে, একটু নিচে গেলে আরো একটি বক্স দেখানো হবে। তার একটু নিচে আরও একটি ছোট বক্স দেখানো হবে সে বক্সটি সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।
খতিয়ান নম্বর সিলেক্ট করা থাকলে খতিয়ান নম্বরটি বক্সে লিখতে হবে। ডাকনং সিলেক্ট করা থাকলে দাগ নম্বরটি বক্সে লিখতে হবে।
মালিকের নাম সিলেট করা থাকলে মালিকের নাম বক্সে লিখতে হবে। আবার মালিকের পিতা বা স্বামীর নাম সিলেক্ট করা থাকলে, পিতা বা স্বামীর নাম লিখতে হবে।
তারপর, নিচে দুটি সংখ্যা যোগ করার জন্য বলা হবে। সেই সংখ্যাটি যোগফল তৈরি করে নিচের বক্সে লিখতে হবে।
সর্বশেষ আপনাকে খুজন বাটনের ক্লিক করতে হবে। তারপর আপনার অনুসন্ধান করা খতিয়ানটি সামনে চলে আসবে। এই পদ্ধতি অবলম্বন করে আপনারা নিজের ঘরে বসেই জমির খতিয়ান যাচাই করতে পারবেন অনলাইনের মাধ্যমে।
জমির দলিল যাচাই করার নিয়ম
আপনারা উপরের আলোচনায় জানতে পারলেন। অনলাইনে মাধ্যমে কিভাবে জমির খতিয়ান যাচাই করতে হয়। এখন আমি আপনাকে জানাবো জমির দলিল যাচাই করার নিয়ম সম্পর্কে।
আমরা জানি, জমির বিভিন্ন প্রকার দলিল হতে পারে। বিক্রয়কৃত দলিল থেকে শুরু করে ভূমি উন্নয়ন কর, খতিয়ান সবকিছুই হচ্ছে জমির দলিল। প্রথমে এ বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।
এর জন্য প্রস্তাবিত কমিটির সর্বশেষ রেকর্ডে জমি বিক্রয়কারীর নাম উল্লেখ রয়েছে কিনা ? এবং সিএস, আরএস আরো অন্যান্য খতিয়ান ক্রম মিলিয়ে দেখে নিতে হবে।
বিক্রির জন্য প্রস্তাবিত কমিটি বিক্রয়কারী দখলে থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে। এজন্য সরেজমিন নকশার সাথে জমির বাস্তব অবস্থা মিলিয়ে দেখে নিতে হবে।
প্রয়োজন পড়লে পার্শ্ববর্তী জমির মালিকদের কাছ থেকে দাগ নং এবং খতিয়ান নং জেনে নিতে হবে। জমির মালিক কোন আমমোক্তার কিংবা অ্যাটর্নিং নিয়োগ করছে কিনা জানতে হবে।
বিক্রেতা যদি আমমোক্তার নামা ‘র মাধ্যমে ক্ষমতায় গ্রহণ করে থাকে সেটি বৈধতা যাচাই করতে হবে।
প্রকৃতপক্ষে মালিকের সাথে যোগাযোগ করে দেখতে হবে প্রকৃত মালিক যথাযথ আছে কি না? আমমোক্তার ঠিক ঠাক আছে কিনা না।
জমি ক্রেতাকে প্রথমে দেখতে হবে সবশেষে যে দলিল করা রয়েছে তার সাথে পূর্ববর্তী দলিল গুলোর মিল আছে কিনা। বিশেষ করে, কোন ভায়া দলিলের সাথে সামঞ্জসংস আছে কিনা সেটিও দেখতে হবে। ভায়া দলিল এর মূল দলিল যা থেকে পরবর্তী দলিল তৈরি করা হয়।
এরকম ভাবে যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণ করার পর, আপনাদেরকে উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে, যোগাযোগ করে সকল তথ্য দাখিল করলে তারা আপনাকে জমির দলিল দেখাবে। আপনারা চাইলে নকল দলিল তুলতে পারবেন।
শেষ কথাঃ
আপনারা যারা অনলাইনে জমির দলিল দেখতে চান? তারা শুধুমাত্র অনলাইনে জমির খতিয়ান যাচাই করতে পারবেন। আর জমির দলিল দেখতে চাইলে, আপনাদের উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। তাহলে জমির দলিল দেখতে পারবেন।
এই আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার যদি আরো কোন কিছু জানার থাকে। তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন ধন্যবাদ।