অনলাইনে কোন কাজের চাহিদা বেশি? চাহিদা সম্পন্ন 15 টি কাজ সম্পর্কে বিষদ আলোচনা করা হলো।
বর্তমানে তরুনদের মাঝে অনলাইনে কাজ করার আগ্রহ দিন দিন বেড়েই চলেছে। এর মূল কারণ হলো, অনেকের ধারণা এই প্লাটফর্মে সহজেই এবং অল্প সময়ে অধিক পরিমাণ আয় করা সম্ভব। কিন্তু আসলেই কি তাই? হ্যাঁ, অবশ্যই সম্ভব।
তবে এই পথের শুরুটা অনেক কণ্টকময় বা খুব কঠিন বলা চলে। আর অনেকে শুরুতেই ছিটকে পড়ার ফলে পুরো ফ্রিল্যান্সিং বিষয়টাকেই ভুয়া বলে আখ্যায়িক করে ফেলেন। যাই হোক, আপনি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চান, তাই তো??
তবে প্রথমেই আপনার মাথায় নিশ্চয়ই এসেছে, কোন কাজ দিয়ে শুরু করব? আর এ কথার সাথে সাথে চলে আসে, অনলাইনে কাজ এর চাহিদা কোন ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি?
আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা এমন কিছু অনলাইনে কাজ করা নিয়ে কথা বলব, যা বর্তমান এবং সামনের কয়েক দশক পর্যন্ত ভালো ডিমান্ড সম্পন্ন থাকবে বলে আশা করা যায়। তাহলে দেরি না করে শুরু করা যাক।
অনলাইনে কোন কাজের চাহিদা বেশি
আপনি যদি অনলাইন হতে আয় করতে চান তাহলে প্রথমেই আপনাকে জেনে নিতে হবে অনলাইনে কোন কাজের চাহিদা বেশি তারপর বেশি চাহিদা সম্পন্ন কজের উপর দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এখানে বিস্তারিত আলোজনা করা হলো।
ওয়েব ডিজাইন এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্টঃ
প্রথমে যেই কাজটির কথা না বললেই নয়, তা হলো ওয়েব ডিজাইন এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট।
ওয়েব ডিজাইন কী?
ডিজাইন মানে কী, তা তো জানেন। কোন একটি জিনিসের নকশাকেই আমরা সাধারণত ডিজাইন বলে থাকি। আর অয়েবডিজাইন বলতে কোন একটি ওয়েবসাইট এর তথ্যগুলো সেখানে কীভাবে প্রদর্শন করবে এবং তাদের সাইজসহ যাবতীয় বিষয় বোঝানো হয়। অর্থাৎ, ওয়েবসাইট লে আউট কেমন হবে, হেডারে কোথায় মেনু থাকবে, সাইডবার থাকবে কি না, বিভিন্ন ইমেজ কীভাবে প্রদর্শন করা হবে ; এই সবকিছুর একটি টেমপ্লেট বানানোই মূলত অয়েব ডিজাইনারদের কাজ।
আরও পড়ুনঃ
- ১০০% বিনামূল্যে ওয়েবসাইট তৈরি (Free)
- ওয়েব ডিজাইন কি, কিভাবে, কোথায় শিখবেন, খুটিনাটি বিষয়
- ওয়েব সাইট কি? কেন? কিভাবে
- সহজেই ব্লগারে আপনার ওয়েবসাইট তৈরি করুন।
ওয়েব ডিজাইনের চাহিদা কেন এত বেশি?
অনলাইনে কোন কাজের চাহিদা বেশি এব ব্যপারে বলতে গেলে প্রথমেই আসে ওয়েব ডিজাইন। বর্তমানে দিন দিন ওয়েবসাইটের পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওয়েবসাইট বেড়ে যাবার মূল কারণ হলো, এখন প্রত্যেক ব্যবসায়ীই তার নিজের প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের জন্য একটি ভালো মানের ওয়েবসাইট বানাতে চান , যেখানে সে প্রচার এবং ব্যবসায়িক অন্যান্য কাজকর্ম করতে পারেন।
তাছাড়া ইনটারনেট বাণিজ্যের এই যুগে তো ওয়েবসাইট ছাড়া কোন প্রতিষ্ঠানকে কল্পনাই করা যায় না। আর তাই সেইসব ওয়েবসাইট ডিজাইন করার জন্য প্রয়োজন হয় প্রচুর পরিমাণে ওয়েব ডিজাইনার। তাই যেমন চাহিদা বেশি, এই পেশায় আয়ের পরিমাণও অনেক ভালো।
ওয়েব ডিজাইন কীভাবে শিখবেন?
প্রথমেই বলে রাখি , ওয়েব ডিজাইন শুধুমাত্র তাদের জন্য যারা ক্রিয়েটিভ কাজ করতে ভালোবাসেন এবং কাজের মাঝেই নিজেকে খুজে পান। আর ওয়েবডিজাইন শিখতে হলে আপনাকে প্রচুর পরিমাণে ডেডিকেটেড হতে হবে। কেননা ওয়েব ডিজাইন করতে হলে আপনাকে জানতে হবে কিছু প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গগুয়েজ, স্ক্রিপ্টিং ল্যাঙ্গগুয়েজ এবং মার্কাপ ল্যাঙ্গগুয়েজ। যেমনঃ HTML, CSS, Javascript ইত্যাদি। আর প্রোগ্রামিং এ নেশা না থাকলে এটি শেখা সম্ভব নয়।
তাই বলব ওয়েব ডিজাইন শুধুমাত্র তাদের জন্য যারা কাজের প্রতি আকর্ষণ বোধ করেন। আপনি ইউটিউব ফ্রি কিংবা বিভিন্ন পেইড কোর্স করে ওয়েবডিজাইন শিখতে পারেন।
ডিজিটাল মার্কেটিংঃ
আমাদের তালিকার দ্বিতীয় স্থানে আমরা রেখেছি ডিজিটাল মার্কেটং কে। এর কারণ সহ বিস্তারিত নিচে আলোচনা করা হলো-
ডিজিটাল মার্কেটিং কী?
মার্কেটিং মানে হলো কোন পণ্য বা সেবার প্রচার এবং প্রসার ঘটানো। আর ডিজিটাল বলতে আমরা ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস সম্বলিত কিছু বা অনলাইন-ইন্টারনেটের কথায় বুঝিয়ে থাকি। সুতরাং ডিজিটাল মার্কেটিং এর অর্থ দাঁড়ায়, অনলাইন বা ইন্টারনেট ব্যবহার করে পণ্যের প্রচার বা প্রসার ঘটানো। অনলাইনে কাজ এর মধ্যে এটা অন্যতম একটি সেক্টর।
মূলত ব্লগ, সোশ্যাল মিডিয়া, ওয়েবসাইট, ইউটিউব এসবের মাধ্যমেই ডিজিটাল মার্কেটিং এর যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর চাহিদা এত বেশি কেন?
এই প্রশ্নটির উত্তর অনেক সোজা। কারণ আমরা দেখছি, বর্তমানে সবকিছুই ডিজিটাল অর্থাৎ অনলাইন এর অধীনে চলে আসছে। আর বিজনেসও এর ব্যতিক্রম নয়। যেহেতু বিজনেস ডিজিটালি হচ্ছে, তাই এর মার্কেটিং ও এখন ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। একই কারণে দিন যতই এগুচ্ছে অনলাইন মার্কেটিং এর চাহিদাও বিপুল পরিমানে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আরও পড়ুন: গুগল এডসেন্স থেকে মাসে $১৫০০ ডলার আয় করার উপায় । পূর্ণাঙ্গ গুগল এডসেন্স এর নিয়ম
আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং এ একজন বিগিনার হিসাবে ডিজিটাল মার্কেটিং পছন্দ করে থাকেন, তাহলে আপনাকে স্বাগতম । কেননা আগামী কয়েক দশক পর্যন্ত এই সেক্টরে কাজের চাহিদা ফুরাবে না।
কীভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখবেন?
ডিজিটাল মার্কেটিং এ কাজ করতে হলে আপনাকে ওয়েব ডিজাইন এর মত এত ক্রিয়েটিভ না হলেও চলবে। তবে এই সেক্টরে আপনি যত বেশি অভিজ্ঞ হবেন, আপনার দক্ষতা বাড়ার সাথে সাথে ইনকামের পরিমাণই বাড়বে। শুরুর দিকে ডিজিটাল মার্কেটিং আপনি কোন পেইড কোর্স বা ফ্রিতে ইউটিউব এ ভিডিও দেখেও শিখতে পারেন। তবে ধৈর্য ধরে কাজ না শিখলে, ডিজিটাল মার্কেটিং এ ভালো করা সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন:
- ওয়েব হোষ্টিং কেনার আগে যে বিষয়গুলি জানা উচিৎ
- নতুন ওয়েবসাইটে ভিজিটর নিয়ে আসার কার্যকরি উপায়
- প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট তৈরি করার পূর্বে যে বিষয়গুলি আপনাকে জানতেই হবে
- ওয়েবসাইট তৈরির খরচ কত? বিস্তারিত জেনে নিন
ভার্চ্যুয়াল সহকারী বা Virtual Assistants:
বর্তমানে অনলাইন অফিসগুলোর সংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছ, তেমনি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে ভার্চুয়াল সহকারীদের চাহিদাও দিন দিন তুমুল হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট কী?
ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট কাকে বলে তা যদি আপনার অজানা হয়ে থাকে, তাহলে বলছি বাস্তবে বিভিন্ন কোম্পনিতে এসিস্ট্যান্ট দের যেরকম কাজ থাকে ভার্চুয়াল এসিস্ট্যানট দেরও ঠিক একই রকম কাজ করতে হয়। তবে পার্থক্য হলো এখানে আপনি সকল কাজ ঘরে বসেই কম্পিউটারে মাধ্যমে করতে পারেন। আপনাকে কোন রকম, অফিসে যাবার ঝামেলা পোহাতে হয় না।
একজন ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্টের কাজ কোম্পানিভেদে আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। তবে গ্রাহক সেবা, ব্লগ মেইনটেনেন্স, কোম্পানির যেকোন কাজে সাহায্য সহযোগীতা করা ইত্যাদির মত সাধারণ কিছু কাজ একজন ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্টকে করতে হয়।
ভার্চ্যুয়াল এসিস্ট্যান্ট এর চাহিদা বাড়ার কারণঃ
বর্তমানে প্রায় সবরকম অফিসগুলোরই একটি অনলাইন প্লাটফর্ম থাকে। আর সেগুলো মেইনটেনেন্স করার জন্যও প্রয়োজন হয় প্রচুর ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্স এর। ভবিষ্যতে এই কাজের সাথে সংস্লিস্ট ব্যক্তিদের চাহিদা আরো বাড়বে বলে ধারণা করছেন অনেকে। কেননা এখন ফ্রিল্যান্সিং ডট কম, ফাইবার এসব মার্কেটপ্লেসগুলোর দিকে তাকালেই বোঝা যায় কত শত শত কোম্পানি তাদের কাজের জন্য একজন পার্মানেন্ট ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট খুজছেন।
তবে সঠিক দক্ষতা না থাকার কারণে আজও অনেকে কর্মক্ষেত্র ফাকা পরে রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ
- ঘরে বসে অনলাইনে আয় করার সহজ উপায়
- অনলাইনে আয় করার ১২ টি সহজ উপায়
- ওয়েবসাইট তৈরি করে আয় করার উপায় 2021
ভার্চ্যুয়াল এসিস্ট্যান্ট হতে হলে আপনাকে যা যা জানতে হবে?
প্রথমেই আপনাকে ইংরেজীতে খুব ভালো দক্ষ থাকতে হবে। কেননা এই কাজের প্রায় সবটাই ইংলিশ এ করতে হয়। তাছাড়া একজন ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট হলে আপনাকে অনেক বিদেশি মানুষের সাথে কমিউনিকেট করতে হবে।
দ্বিতীয় যে জিনিসটি আপনার জানা অনেক গুরুত্বপূর্ণ তা হলো কম্পিউটার ব্যবহারে এক্সপার্ট হওয়া। এছাড়াও আপনাকে ইংলিশে ভালো লিখতে এবং পড়তে জানতে হবে। এসব কমন স্কিল ছাড়াও কোম্পনি ভেদে আপনাকে বিশেষ কোন ক্ষেত্রে এক্সপার্টও হওয়া লাগতে পারে। তাই বলাই যাই, যত বেশি দক্ষতা আর স্কিল থাকবে এই সেক্টরে ততই ভালো করা যাবে।
শেষ কথাঃ
অনলাইনে কোন কাজের চাহিদা বেশি এ সম্পর্কে আমি যতটা পারি সঠিক তথ্য দেবার চেষ্টা করলাম। তবে ফ্রিল্যান্সিং ক্ষেত্রে কিছু বিষয় আপনার অবশ্যই মনে রাখা প্রয়োজন। প্রথমত কখনো এটা খুজবেন না যে, কোন কাজের চাহিদা বেশি এবং ইনকাম ভালো। বরং আপনার এটা জানা বেশি জরুরি যে , আপনি কোন কাজটা করতে পারবেন এবং কোন কাজের প্রতি আপনার আগ্রহ রয়েছে।
কেননা অনলাইনে কাজে এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। শুধু দরকার দক্ষতা আর ক্রিয়েটিভিটি। দক্ষতা না থাকলে কোন সেক্টরেই ভালো করা সম্ভব না।
২০ বছর কষ্ট করে পড়াশুনা শেষে চাকরি পাওয়ার পর ২০ হাজার টাকা বেতন নিয়ে খুশি থাকতে পারেন আর এখানে ১/২ বছর কষ্ট করেই প্রায় ২ লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারছেন। তবুও আমরা এত অধৈর্য কেন? মূল কথা হলো, দক্ষতা থাকলে কখনো কাজের অভাব হবে না।
তাই কোন কাজের চাহিদা বেশি, এটা না খুজে ভাবুন কোন কাজ আপনি করতে পারবেন। আশা করি , বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। এছাড়াও আপনি যদি সহজ উপায়ে উপার্জন শুরু করতে চান তাহলে পড়ে আসুন আমাদের – অনালাইনে কাজ করুন সহজ উপায়ে।
Nice
আমারও একই মত বস। কোন কাজের চাহিদা বেশি, এটা না খুজে ভাবুন কোন কাজ আপনি করতে পারবেন।