ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন : আমরা জানি বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ ভোটার আইডি কার্ডে তোলা ছবি নিয়ে সন্তুষ্ট নয়।
কারণ ভোটার আইডি কার্ডের ছবি গুলো স্পষ্ট হয়ে থাকে। বিশেষ করে 2007 সাল থেকে 2009 সালের মধ্যে যারা ভোটার হয়েছেন তাদের ভোটার আইডি কার্ডের ছবি এতটাই স্পষ্ট হয়েছে যা বলার কোনো ভাষা নেই।
ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করার নিয়ম অনেক সহজ। তবুও সেটিকে ঝামেলা মনে করে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য আবেদন অনেকেই করেন না।
এছাড়া ভোটার আইডি কার্ডের ছবি যত কষ্ট হোক না কেন? তাতে কোন কাজ আটকে থাকবে না। অন্যদিকে ভোটার আইডি কার্ডে নাম ভুল হলে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন না করা পর্যন্ত সেটি ব্যবহার করা যায় না।
আজ আমি আপনাকে জানিয়ে দেবো ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করার নিয়ম সম্পর্কে। আপনার ভোটার আইডি কার্ডের ছবি দেখে আপনার যদি সন্তুষ্ট হন।
- ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম [অনলাইনে সম্পূর্ণ নতুন নিয়মে]
- মোবাইল নাম্বার দিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র বের করা ২০২৩
সেক্ষেত্রে কোন চিন্তার কারন নেই আপনারা সহজেই ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করতে পারবেন।
তো বন্ধুরা আপনারা যারা ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করতে চান। তারা আমাদের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
যে কারণে ভোটার আইডি কার্ডের ছবি অস্পষ্ট হয়
যারা 2007 সাল থেকে 2009 সালের মধ্যে ভোটার হয়েছেন। তাদের ভোটার আইডি কার্ডের ছবি অস্পষ্ট হওয়ার পেছনের সবথেকে বড় কারণ ছিল লো কোয়ালিটির ওয়েব ক্যামেরার ব্যবহার।
এছাড়া আরও কারণ ছিল পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় এবং ছবি গ্রহণকারী অদক্ষতা।
ভোটার তালিকা হালনাগাদ এর সময় গণহারে নতুন ভোটার নিবন্ধন করা হয় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে চেহারা মলিন হয়ে যায়।
নতুন ভোটারদের থাকার কারণে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য ভোটারের ছবি তোলার সময় পর্যাপ্ত সময় ব্যয় করা সম্ভব হয় না। তাই ভোটার আইডি কার্ডের ছবি অস্পষ্ট হয়।
এছাড়া কিছু কিছু পোষাক পরিধান করার জন্য ভোটার আইডি কার্ডের ছবি অসুন্দর হয়ে যায় ছেলেদের ক্ষেত্রে টি-শার্ট পরে নতুন ভোটারদের ছবি তুলতে দেওয়া উচিত নয়।
সাধারণ এর পোশাক ব্যতীত অন্য যেকোনো রঙের টি-শার্ট পরা উচিত। অনেক মেয়ে রয়েছে যারা বাড়ির বাহিরে যেতে হলে, বোরখা/ হিজাব পরিধান করে বের হয়।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড এর জন্য ছবি তোলার সময় ভোটার এর দুই কানের গোড়া এবং গলা পর্যন্ত দেখার যাওয়া বাঞ্ছনীয়।
তার জন্য বাধ্য হয়ে, হিজাব খোলার প্রয়োজন হয়। তবে হিজাব সম্পূর্ণ খোলা সবার পক্ষে কিন্তু সম্ভব হয়না তারা হিজাবকে টেনে মাথার চুল এবং দুই কান বের করেন।
যার ফলে ভোটারের প্রকৃত চেহারা অনুযায়ী আসে না মেয়েদের হিজাব পরিধান করা অবশ্যই উচিৎ।
কিন্তু নতুন ভোটার হওয়ার জন্য ছবি তুলতে যাওয়া সময় সাথে একটি ওড়না জাতীয় কাপড় নিয়ে যাওয়ায় কোন প্রয়োজনের সময় হিজাব খুলে অরনা দিয়ে মাথায় ঘোমটা দিলে অবশ্যই ভালো ছবি চলে আসতো।
তো বন্ধুরা আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে কোন কারণে ভোটার আইডি কার্ডের ছবি অস্পষ্ট হয়।
যে কারণে ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করবেন?
বর্তমান সময়ের যাদের ভোটার আইডি কার্ডের ছবি অস্পষ্ট হয়েছে তাদের উচিত এমনিতেই পরিবর্তন করে নেওয়া।
এছাড়া মানুষের চেহারা এবং শারীরিক অবস্থা সারাজীবন এক্রকম থাকে না পরিবর্তন হয়ে যায়।
যারা 2007-2008 সালে ভোটার হয়েছিলেন। তাদের সেই সময়ের চেহারা, শারীরিক অবস্থা আর এখনকার চেহারা, শারীরিক অবস্থার মধ্যে অনেক পরিবর্তন ঘটেছে।
তাই আপনি যখন বুঝবেন আপনার চেহারা পূর্বের তুলনায় পরিবর্তন হয়েছে। তখন আবেদন করে, ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করে নেয়া উত্তম।
ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তনের আবেদন
আমরা জানি বর্তমান সময়ে অনলাইনের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করার জন্য অনেকেই নিয়ম খোঁজে থাকে।
কিন্তু অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করার কোন উপায় নেই।
ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করতে চাইলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে 2 নং ফরম পূরণ করে আবেদন সাবমিট করতে হবে।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফরম অফিস থেকে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। আবেদন সাবমিট করার আগে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফি হিসাব করে বিকাশ, রকেট এর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে।
সংশোধনী আবেদন ফরমের ফি পরিশোধের ট্রানজেকশন নাম্বারটি লিখে দিতে পারবেন। এছাড়া ফি জমার রশিদ আবেদনের সাথে যুক্ত করে দিতে পারবেন।
আমি আপনার সুবিধার জন্য এখানে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফরম-২ ডাউনলোড করার একটি লিংক দিয়ে দিব।
ডাউনলোড করুন ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফরম-2
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফরম পূরণ করার নিয়ম
আপনাদের ভোটার আইডি কার্ড হবে পরিবর্তন করতে চাইলে অবশ্যই ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফরম পূরণ করতে হবে।
আর সে ফরম আপনারা অনলাইন থেকে এবং নির্বাচন কমিশনের অফিস থাকে সংরক্ষণ করতে পারবেন। আর সেই ফরমটি হচ্ছে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফরম-2।
কিভাবে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফরম পূরণ করবেন। সেই অনুযায়ী আমরা একটি নমুনা স্ক্রিনশট দেখুন।
সংশোধনের ফর্ম-2 এর এক নং ক্রমিকে (ক) অংশে আবেদনকারীর নাম বাংলায় লিখতে হবে।
- ১ নং ক্রমিকের (খ) অংশে আবেদনকারীরর এনআইডি কার্ড এর নাম্বার লিখতে হবে।
- ২ নং ক্রমিকে কিছু লেখার প্রয়োজন নেই।
- ৩ নং ক্রমিকের (ঝ) অন্যান্য এর ৩য় কলামে চাহিত সংশোধিত তথ্য’র জায়গায় ছবি পরিবর্তন লিখে দিতে হবে।
- তার পরে আবেদনকারীর স্বাক্ষর
- পূর্ণ নাম
- ঠিকানা এবং
- মোবাইল নাম্বারা লিখতে হবে।
ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
তখন ধরে আপনারা ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করতে চাইলে উপরের নিয়ম অনুযায়ী ফরম পূরণ করে নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে।
এখন আমি আপনাকে জানাবো ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন এর জন্য প্রয়োজনীয় কি কি কাগজপত্র লাগবে।
যেমন-
ভোটার আইডি কার্ডের কপি- আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্র কার্ডের ফটোকপি জমা দিতে হবে।
জন্ম নিবন্ধন সনদ- আবেদনের সাথে আবেদনকারীর অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ ফটোকপি জমা দিতে হবে।
শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ- আবেদনকারীর যদি এসএসসি সার্টিফিকেট থাকে। তবে আবেদনের সাথে যুক্ত করতে হবে। এক্ষেত্রে যদি শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকে তাহলে জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই কারণ ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তনের জন্য বাধ্যতামূলক নয়।
ছবি পরিবর্তনের প্রত্যয়ন পত্র- ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, ওয়ার্ড কাউন্সিলর এর নিকট থেকে ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তনের জন্য প্রত্যয়ন পত্র সংগ্রহ করে আবেদনের সাথে সাবমিট করতে হবে।
ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তনের আবেদন সাবমিট করার সময় আবেদনকারীকে স্ব-শরীরে উপজেলা নির্বাচন অফিসারের সামনে উপস্থিত হতে হবে।
তিনি আপনাকে শনাক্ত করার পর প্রাথমিকভাবে আপনার আবেদন অনুমোদন করবে, এবং অফিস স্টাফ আপনার নতুন ছবি তুলে নেবেন।
জাতীয় পরিচয় পত্র ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তনের আবেদন সাবমিট করার পরে আবেদনের কার্যক্রম শুরু হয়। আপনার আবেদনটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিলে পুরাতন ছবি পরিবর্তন করে।
এনআইডি নতুন ছবি যুক্ত হয়ে যায়। এবং একটি নতুন আইডি কার্ড ভোটার আইডি কার্ড সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে চলে আসে।
এক্ষেত্রে মোবাইল মেসেজে নাও জানিয়ে দিতে পারে আবেদন এর বর্তমান অবস্থা কি এছাড়া ছবি সংশোধন হয়েছে কিনা সে বিষয়ে খোঁজখবর নিতে।
সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করতে হবে। ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তনের আবেদন নিষ্পত্তি হতে পারে, 7 থেকে 14 কর্মদিবস। এতে আরও কখনো কখনো সময় কম-বেশি লাগতে পারে।
আপনার জন্য আরো লেখাঃ
- ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে জন্ম নিবন্ধন নম্বর বের করার নিয়ম
- ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে
- ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার নিয়ম
শেষ কথাঃ
তো বন্ধুরা আজ আমাদের এই পোস্টে আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হল ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করার নিয়ম।
আপনার ভোটার আইডি কার্ডের ছবি যদি আপনার কাছে পছন্দ না হয় থাকে। সে ক্ষেত্রে আপনারা সহজেই ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফরম-2 পূরণ করে, উপজেলা নির্বাচন অফিসে জমা দিলে সহজেই ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করে নিতে পারবেন।
আমাদের আর্টিকেলটি আপনার কাছে কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। আর বিশেষ করে এ বিষয়ে আপনার বন্ধুদের জানাতে একটি সোশ্যাল মিডিয়া শেয়ার করবেন ধন্যবাদ।