বায়না দলিল বাতিল করার নিয়ম : বর্তমান সময়ে, আমরা কোন কিছু বিক্রি করার সময় বা কেনার সময় বায়না পত্র করে থাকে।
এক্ষেত্রে বায়না করা সম্পন্ন হয়ে গেলে, পরবর্তীতে, ক্রয় বিক্রয় শেষ হলে, অবশ্যই বায়নাপত্র দলিল বাতিল করতে হয়।
কিন্তু বায়না দলীল বাতিল করার নিয়মটি যদি আপনার জানা না থাকে, সেক্ষেত্রে কিন্তু বিপদে পড়ে যেতে পারেন।
তাই আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের সুবিধার জন্য, বায়না দলিল কিভাবে বাতিল করতে হবে। সে বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব।
তাই আপনি যদি বায়না দলিল বাতিল সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেতে চান? তাহলে আমাদের লেখা আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
কোন প্রকার সম্পত্তি হস্তান্তর আইন অনুযায়ী বায়না দলিল মেয়াদ থাকা অবস্থায় বায়নাকৃত স্থাপর সম্পত্তি কে বায়না গ্রহীতা ছাড়া অন্য কারণে বিক্রি করা যাবে না।
যতদিন না পর্যন্ত বায়না দলিল আইন সম্মত ভাবে বাতিল করা না হয়। অনেক সময় জমি বা ফ্লাটের ক্রেতা সঠিক সময়ে টাকা জোগাড় না করতে পারলে এ ধরনের সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে।
বায়না দলিল করার পরে, যত দ্রুত সম্ভব দলিল রেজিস্ট্রেশন করে নেওয়া। যার মাধ্যমে আপনারা ভবিষ্যতে, সকল প্রকার সমস্যা গুলোর সমাধান করতে পারবেন।
তাই জমে বিক্রি করার পরে সম্পূর্ণ টাকা হাতে, পাওয়ার পর, নিশ্চিন্ত হয়ে বায়না করা উত্তম। অনেক ক্ষেত্রে আমরা অতি উৎসাহী হয়ে আসল টাকা জোগাড় না করতে পেরেই, অল্প টাকাতে বায়না করে ফেলি এটা কিন্তু একদম সঠিক নয়।
এক্ষেত্রে, আপনাদের কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সে বিষয়ে জানতে দেওয়া তথ্য গুলো অনুসরণ করুন।
জমি বা কোন সম্পত্তি ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয় বায়না চুক্তি বাতিলের ক্ষেত্রে রাজি থাকলে এ পদ্ধতি অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। তবে উভয়পক্ষ যদি বায়না দলিল বাতিলের জন্য রাজি না থাকে। সেক্ষেত্রে কাজটি করতে অনেক কঠিন হয়ে পড়ে।
যদি জমির ক্রেতা এবং বিক্রেতা বায়না দলের বাতিলের জন্য রাজি থাকে। সেক্ষেত্রে উভয়কে একত্রিত হয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে, বায়না দলিল বাতিলের জন্য নতুন করে, একটি দলিল সম্পন্ন করতে হবে।
উক্ত দলিল গুলোতে ডাটা এবং গ্রহিতা উভয়ের স্বাক্ষর দিয়ে দলিলটি রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে। তাহলে, কিন্তু বায়না দলিল বাতিল করার কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।
এক্ষেত্রে উভয়পক্ষ বায়না দলিল বাতিল করতে রাজি না থাকলে করণীয় কি? এর উত্তরে আমি আপনাকে বলব। জমি ক্রেতা বায়না দলিল বাতিলের জন্য রাজি না থাকলে।
এক্ষেত্রে জমি বিক্রেতা প্রথমে, কোন আইনজীবীর কাছে গিয়ে, সেই বায়না দলিলের ক্রেতা বরাবর একটি উকিল নোটিশ পাঠাতে পারবেন।
উক্ত উকিল নোটেশন মাধ্যমে ক্রেতাকে বায়না দলিল এর অবশিষ্ট টাকা পরিষদের জন্য কয়েক দিন সময় নির্ধারণ করে দিতে পারবেন।
এছাড়া আরো উল্লেখ করে দিতে হবে যে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যদি বাকি টাকা পরিশোধ না করতে পারে, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উকিল নোটিশ প্রাপ্তের পরে ক্রেতা সময়মতো টাকা পরিশোধ করে, রেজিস্ট্রি করে নেয় তাহলে ভালই ভালই সমাধান হয়ে যাবে।
সেটে যদি না সম্ভব হয় তাহলে, বিক্রেতা আদালতে গিয়ে যথাযথ কারণ দেখিয়ে, বায়না চুক্তিপত্র বাতিল করার মামলা করতে পারবেন।
আদালত সকল তথ্য যাচাই বাছাই করে সন্তুষ্ট হলে, উক্ত বায়না দলিল বাতিল করে দিবে। আবার একসাথে আদালতে, জমির বিক্রেতা’র ক্ষতিপূরণ হিসেবে, বায়না দলিল টাকা বিক্রেতার কাছে রেখে দেওয়ার আদেশ প্রদান করতে পারেন।
আদালত হতে বায়না দলিল বাতিলের রায় পাওয়ার পরে, জমির মালিক পুনরায় জমি টি চাইলে। অন্য কারো কাছে বিক্রি করে দিতে পারবেন, কোন ঝামেলা ছাড়াই।
শেষ কথাঃ
তো বন্ধুরা আশা করব আপনারা উক্ত আলোচনা অনুসরণ করে, বায়না দলিল বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে ধারণা নিতে পেরেছেন।
এ বিষয়ে, ক্রেতা বায়না দলিলপত্র যদি বাতিল করতে রাজি না থাকে। তাহলে আপনারা সরাসরি আদালতের মাধ্যমে, মামলা করে বায়না দলিল পত্র বাতিল করতে পারবেন।
আদালতের মাধ্যমে বায়না দলিল বাতিল করতে চাইলে, অবশ্যই আপনাকে কোন একটি উকিলের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
তার মাধ্যমে উকিল নোটিশ পাঠিয়ে, যদি বায়না দলিল বাতিল করা সম্ভব হয় তাহলে ভালো।
আর যদি নোটিশ পাঠিয়ে কাজ না আসে, সে ক্ষেত্রে সরাসরি আদালতে মামলা করলে, দ্রুত সময়ের মধ্যে বায়না দলিল বাতিল করে নিতে পারবেন।
আর এই বায়না দলিল বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে আরো যদি কোন প্রশ্ন জানার থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ…