বর্তমানে ব্লগ বা ওয়েবসাইট গুলোতে অর্গানিক ভাবে ট্রাফিক নিয়ে আসার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হলেঅ এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন।
আপনি যদি ওয়েবসাইটের জন্য, এসইও করেন, তাহলে সার্চ ইঞ্জিন থেকেই লক্ষ লক্ষ ট্রাফিক নিয়ে আসতে পারবেন। এটি ওয়েবসাইটে বেশি ট্রাফিক মানেই বেশি টাকা উপার্জনের মাধ্যম।
আমাদরে এই সাইটে এসইও সম্পর্কে, বিভিন্ন ধরণের পোস্ট পাবলিশ করা আছে। যেখানে আমরা এসইও বিষয়ে ভালো ভালো দিক নিয়ে আলোচনা করেছি। আপনি চাইলে সেই এসইও বিষয়ের আর্টিকেল গুলো পড়তে পারেন।
আমাদের এই পোস্টে, দুই প্রকার এসইও নিয়ে আলোচনা করব। যেমন- ব্ল্যাক হ্যাট এবং হোয়াইট হ্যাট এসইও সম্পর্কে। তাই শেষ পর্যন্ত মনযোগ দিয়ে পড়ুন।
এসইও কি? (What is SEO)
এসইও এর পূর্ণরুপ হলো- সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। মানে হলো- সার্চ ইঞ্জিন এর সকল শর্ত মেনে আপনার ওয়েবসাইট কে অপটিমাইজ করা।
এতে করে, সার্চ ইঞ্জিন আপনার ওয়েবসাইট কে রেঙ্ক করে দিবে, এবং আপনি ট্রাফিক নিতে পারবেন। একেই বলা হয়, এসইও। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক ব্ল্যঅক হ্যাট এসইও কি?
ব্ল্যাক হ্যাট এসইও কি? (Black Hat SEO)
বিশ্বের সব চেয়ে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন হলো গুগল। গুগল তাদের কিছু টার্মস এন্ড কন্ডিশন দিয়েছে।
যে গুলো অনুসরণ করে, ওয়েবমাস্টার’রা তাদের ওয়েবসাইট অপটিমাইজ করলে, ওয়েবসাইট এর রেংকিং ইমপ্রুভ হবে।
এর মানে এসইও এর জন্য গুগলের কিছু নিয়ম আছে বা অনেকে এ গুলোকে এলগোরিদম বা রেংকিং ফেক্টর বলে।
তবে অনেক সময় দেখা যায়, কিছু ওয়েবসাইট এসব নিয়ম না মেনে ফাঁকি দিয়ে। রেংক করে যায় গুগলে। আর এটিই হলো ব্ল্যাক হ্যাট এসইও।
সার্চ ইঞ্জিন এর নিয়ম না মেনে, অবৈধ পন্থা অবলম্বন করে রেংক করাকে ব্ল্যাক হ্যাট এসইও বলে।
উক্ত কথা অনুযয়ী এখন হয়তো আপনি ভাবছেন যে, ব্ল্যাক হ্যাট এসইও করে, আপনার ওয়েবসাইট রেংক করিয়ে অনেক টাকা আয় করে নিবেন।
তাহলে আপনার এটি ভুল ধারণা। ব্ল্যাক হ্যাট এসইও আপনাকে যে, ফলাফল দিবে সেটি হলো সাময়িক।
তার কারণ হলো সার্চ ইঞ্জিন আপনার চেয়ে বেশি চালাক। আপনি যদি ব্ল্যাক হ্যাট এসইও করে রেংক করেন এখন তাহলে কিছু সময় পরে সার্চ ইঞ্জিন বুঝতে পারবে।
আপনি ব্ল্যাক হ্যাট এসইও করছেন তখন সাথে সাথে আপনার ওয়েবসাইট কে প্যানল্টি দিয়ে দিবে।
তারপরে আপনার হোয়াইট হ্যাট এসইও করেও রেংক করা কষ্ট সাধ্য ব্যাপার হয়ে যেতে পারে।
আসলে এসইও করতে গিয়ে জেনে বা না জেনে আমরা অনেক ব্ল্যাক হ্রঅট মেথড আবেদন করে ফেলি।
যার কারণে পরবর্তীতে আমাদের ভোগান্তিতে পরতে হয়। তাই যদি আপনার ব্ল্যাক হ্যাট টেকনিক গুলো জানা থাকে তাহলে আপনি সহজে সে-গুলোকে ইগনোর করতে পারবেন।
আরো দেখুনঃ
- ইউটিউব ভিডিও এসইও কি? ভিডিও র্যাংক করানোর 100% কার্যকরি কৌশল
- অফ পেজ এসইও কি ? off page SEO করার উপায়
ব্ল্যাক হ্যাট এসইও টেকনিক
লিংক এর জন্য কিছু অফার করা- অনেক সময় দেখা যায় অনেকে ব্যাংকলিংক এর বিনিময়ে অনেক কিচূ অফার করে থাকে।
যেমন- আমাদের ওয়েবসাইটের লিংক যদি আপনার ওয়েবসাইটে যুক্ত করেন। তাহলে আমারা আপনাকে এই সার্ভিস বিনামূল্যে দেব বা এই সার্ভিস ডিসকাউন্ট বা কুপন দেব।
উক্ত কাজটি সার্চ ইঞ্জিন ভালো দৃষ্টিতে দেখে না। সার্চ ইঞ্জিন সব সময চাই অর্গানিক লিংক বিল্ডিং। সার্চ ইঞ্জিন যদি বুঝতে পারে এমন কিছূ করা হয়েছে তাহলে পেনাল্ডি দিয়ে দিবে।
আর্টিকেল স্পিনিং- আর্টিকেল স্পিনিং হলো- কোন স্পিনিং টুলস এর মাধ্যমে অন্য কারো, আর্টিকেল কে স্পিন করে, ইউনিক করে নিজের সাইটে পাবলিশ করা।
কিন্তু সার্চ ইঞ্জিন এর অত্যাধুনিক প্রযক্তির মাধ্যমে তারা স্পিন করা আর্টিকেল সহজেই ধরে ফেলতে পারে। এবং সার্চ ইঞ্জিন এর কাছে স্পিন আর্টিকেল মোটেও ভালো না।
তাই তারা এসব আর্টিকেল কে রেংক করে না। আপনি যদি স্পিন আর্টিকেল ব্যবহার করে, রেংকিং এর চিন্তা করেন তাহলে আপনি একধরণের বোকা।
কপি কন্টেন্ট – আমরা জানি কপি করা অপরাধ। কারো অনুমতি ছাড়া ওয়েবসাইট থেকে পোস্ট বা ছবি করে, নিজের ওয়েবসাইটে পাবলিশ করেন সেটিও কিন্তু অপরাধ।
আপনি যদি কোন সাইট থেকে কনটেন্ট কপি করে নিয়ে নিজের সাইটে প্রকাশ করেন তাহলে সার্চ ইঞ্জিন সহজেই বুঝতে পারে। এবং কপি কনটেন্ট গুগলে ইডেক্স হচ্ছে হবে রেংক ও হবে না।
কমেন্ট স্প্যাম- অনেক ওয়েবসাইট এর মালিক অন্য ওয়েবসাইট এর কমেন্ট বক্সে প্রবেশ করে লিংক যুক্ত করে দেয়।
যদিও এটি কোন ভাবে রেংকিং এ প্রভাব করে না। তবে অনেকে না বুঝেই করে কমেন্ট লিংক যুক্ত করে। সার্চ ইঞ্জিন এটিকে ব্ল্যাক হ্যাট মেথড বিবেচনা করে কোন কমেন্ট এ রিলেভেন্সি ছাড়াই লিংক যুক্ত করা।
আপনার ওয়েবসাইটে যদি অন্য কোন ওয়েবসাইট এর লিংক কমেন্ট করে সেগুলো অবশ্যই রিমুভ করা উচিত।
অতিরিক্ত লিংক যুক্ত করা- আর্টিকেলে অন্য কোর দিয়ে লিংক যুক্ত করা এটি ভালো চর্চা। তবে যখন কেউ অতিরিক্ত লিংক যুক্ত করে। তখন সার্চ ইঞ্জিন সেটি খারাপ চোখে দেখে। এবং রেংক হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
তাই অতিরিক্ত ভাবে ওয়েবসাইট লিংক যুক্ত করা একটি ব্ল্যাক হ্যাট মেথড, এটিকে এড়িয়ে চলতে হবে।
ব্যাকলিংক কেনা- আমরা আগেই বলেছি, সার্চ ইঞ্জিন সব সময় চাই ন্যাচারাল লিংক বিল্ডিং। আপনি যদি টাকার বিনিময়ে লিংক তৈরি করেন তাহলে সটি একটি ব্ল্যাক হ্যাট এসইও হিসেবে গণ্য হবে।
একটি ভালো ব্যাকলিংক আপনার ওয়েবসাইটের রেংকিং কে অনেক বেশি ইমপ্রুভ করতে পারে দ্রুত।
আপনার ওয়েবসাইট এর অথোরিটি অনেক বেড়ে যেতে পারে। একটি কোয়ালিটি ব্যাকলিংক এর মাধ্যমে।
তবে অবশ্যই সেটি ন্যাচারাল হতে হবে। সার্চ ইঞ্জিন গুলোর নিজস্ব প্যার্টান রয়েছে। যার মাধ্যমে তারা বুঝতে পারে কোনটি ন্যাচারাল আর পেইড লিংক।
ফুটার লিংক- এটি একটি শক্তিশালী লিংক। কারণ একটি ওয়েবসাইট এর সব পেজই ফুটার থাকে।
তাহলে সব জেই সেই রিংক থাকবে। তাই ফুটারে কোন কমার্শিয়াল এনকোর দিয়ে লিংক যুক্ত করাটা ব্ল্যাক হ্যাট এসইও এর মধ্যে পরে।
হিডেন লিংক- আমরা মনে করি, অন্য কোরের কালার পরিবর্তন করে দিলে। সার্চ ইঞ্জিন বুঝতে পারে না লিংকটি।
এরকম ভাবে গোপনে বেশি বেশি লিংক করে অনেকে অন্য লিংকে ট্রাফিক ড্রাইভ করে নিয়ে থাকে।
এটি সম্পুর্ণ ভাবে অবৈধ। এবং ব্ল্যাক হ্যাট এসইও একটি মেথড। শুধু কালার নয় অনেকে সোর্স কোডে পোগনে লিংক যুক্ত করেও রাখে।
উক্ত কাজ গুলো করলে আপনার সার্চ ইঞ্জিন থেকে সাময়িক রেংক লাভ করলেও এক সময় পেনাল্টি দিয়ে দিবে।
হিডেন কন্টেন্ট- হিডেন লিংক এর মতো হিডেন কনটেন্ট রয়েছে। যেমন- অনেকে ইচ্ছাকৃত ভাবে কিওয়ার্ড কনন্টেন্ট এ তারপরে লিখার কালার ও ব্যাক গ্রাউন্ট কালার এক রকম করে রাখে।
তার মনে করে এমটা করে দিলে সার্চ ইঞ্জিন বুঝতে পারবে না। কিন্তু সার্চ ইঞ্জিন ঠিক ধরতে পারে এবং সেই সকল কনটেন্ট কে কোন ভাবে রেংক করে না।
হোয়াইট হ্যাট এসইও কি? (White Hat SEO)
হোয়াইট হ্যাট এসইও সার্চ ইঞ্জিনের সকল টার্মস এন্ড কন্ডিশন মেনে করা হয়েছে তাকে হোয়াইট হ্যাট এসইও বলা হয়।
হোয়াইট হ্যাট এসইও আপনাকে দীর্ঘ সময় সার্চ ইঞ্জিনে রেংকিং টিকিয়ে রাখবে। এবং ভালো ফলাফল দেবে। যেখানে ব্ল্যাক হ্যাট এসইও সাময়িক সুবিধা দেয় এবং ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়ায়।
এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, কিভাবে হোয়াইট হ্যাট এসইও করব। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।
হোয়াইট হ্যাট এসইও টেকনিক
কিওয়ার্ড রিসার্চ – এসইও এর প্রথম কাজ হলো- কিওয়ার্ড রিসার্চ। আপনি কোন বিষয় নিয়ে আর্টিকেল লিখবেন। কোন কিওয়ার্ড নির্বাচন করে লিখবেন সেটি আপনাকে ভালো ভাবে রিসার্চ করে নিতে হবে।
আপনি চাইলে যে কোন একট কিওয়ার্ড ধরে লেখা শুরু করতে পারবেন না। কারণ কিছু কিওয়ার্ড আছে অনেক বেশি কম্পিটিশন থাকে।
যে গুলো নিয়ে কাজ করা বোকামি। আবার লো কম্পিটিশন কিওয়ার্ড গুলোতে শূন্য সার্চ ভলিউম থাকে, যে সকল কিওয়ার্ড লোকেরা কখনও সার্চ করে না।
তাই আপনাকে এমন কিওয়ার্ড নিয়ে কাজ করতে হবে। যার কম্পিটিশন কম এবং মোটামুটি সার্চ ভলিউম রয়েছে। আপনি যদি নতুন হয়ে থাকেন তাহলে প্রথম অবস্থায় লো ভলিউম কিওয়ার্ড নিয়ে কাজ করুন।
কন্টেন্ট রাইটিং- কিওয়ার্ড রিসার্চ করার পরে আপনাকে সেই কিওয়ার্ড এর উপর ভালো করে আর্টিকেল লিখতে হবে।
আর্টিকেল লেখার সময় আপনাকে এমন কিছু লিখতে হবে। যেন কোন ব্যবহারকারী যে, কারণে আপনার আর্টিকেল পড়ছে। সেই বিষয়ে সঠি তথ্য জানতে পারে।
আপনি যে টপিক নিয়ে আর্টিকেল লেখবেন সেটি হতে হবে সহজ সরল ভাষায়। যাতে ভিজিটর লেখা পড়তে এসে বিরক্ত বুধ না হয়।
অন পেজ এসইও- অন পেজ এসইও সম্পর্কে আমাদের এই সাইটে বিস্তারিত পোস্ট প্রকাশ করা রয়েছে। আপনি সেই আর্টিকেল পড়লে আরো ভালো ভাবে অন পেজ এসইও এর বিষয়ে জানতে পারবেন।
এখানে আমরা সংক্ষিপ্ত ভাবে অন পেজ এসইও নিয়ে কথা বলব। যেমন-
- অন পেজ এসইও এর জন্য- ইউআরএল স্ট্রাকচার ছোর রাখতে হবে। এবং ফোকাস কিওয়ার্ড ওয়েবসাইটে রাখতে হবে।
- টাইটেল সঠিক ভাবে অপটিমাইজ করেন। ন্যাচারাল ফোকাস কিওয়ার্ড রাখার চেষ্টা করবেন।
- সম্পুন্ন আর্টিকেলে ফোকাস কিওয়ার্ড এর পাশাপাশি রিলেটেড কিওয়ার্ড গুলো যুক্ত করবেন।
- আর্টিকেল উপযুক্ত হেডিং ব্যবহার করবেন। হেডিং এ কিওয়ার্ড রাখার চেষ্টা করবেন।
- ছাড়া প্রয়োজনীয় রিলেভেন্ট ইন্টারনাল লিংক যুক্ত করবেন সঠিক এনকোর এর সাহায্যে, তবে অতিরিক্ত নয়।
- আর্টিকেল যে সকল ছবি যুক্ত করবেন, সেই ছবির বিষয়ে টেক্স (লেখা) যুক্ত করে দিবেন।
উক্ত কাজ গুলোর করার ফলে আপনি, ওয়েবসইট এবং আর্টিকেল দ্রুত ভাবে সার্চ ইঞ্জিনে রেংঙ্ক করাতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ
- টেকনিক্যাল এসইও কি? টেকনিক্যাল এসইও করার উপায়
- এসইও কি? কিভাবে এসইও শিখবেন ? (বাংলা টিউটরিয়াল)
- লোকাল এসইও কি? কিভাবে লোকাল এসইও করবেন?
শেষ কথাঃ
তো বন্ধুরা, আমাদের এই পোস্টে জানতে পারলেন- ব্ল্যাক হ্যাট এসইও এবং হোয়াইট হ্যাট এসইও সম্পর্কে।
উক্ত আলোচনায় যদি কোন ভুল ত্রুটি থাকে তাহলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। এবং আমাদের আর্টিকেল ভালো লাগলে একটি কমেন্ট করে জানিয়ে নিবেন।
আমাদের আর্টিকেলের সাথে শেষ পর্যন্ত সময় দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
nice post