আউটসোর্সিং কি ? আউটসোর্সিং এর সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত।

আউটসোর্সিং কি : আউটসোর্সিং হলো একটি ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া যেখানে একটি কোম্পানি বা সংস্থা নিজের কাজ বা প্রক্রিয়া গুলো অন্য কোনো সংস্থা বা ব্যক্তির মাধ্যমে করিয়া নেয়।

এটি সাধারণত খরচ কমাতে এবং পরিচালনার জন্য সময় কমাতে সহায়তা করে। আউটসোর্সিং ব্যবসায়িক কার্যক্রমের সাথে সাধারণত মানব সম্পদের বিদ্যমান সম্পদের ব্যবহার করার প্রবনতত্ত্ব নিয়ে কাজ করে।

আউটসোর্সিং কি ? আউটসোর্সিং এর সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত।
আউটসোর্সিং কি ? আউটসোর্সিং এর সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত।

এটি সম্প্রতি প্রচলিত কার্যক্রম গুলোর মধ্যে সফলতার জন্য প্রযুক্তিগত সামরিক বিশ্বাস তৈরি করার ক্ষেত্রে সাধারণত ব্যবহৃত হয়।

একটি উদাহরণ হলো- কোনো কোম্পানি যখন নিজের কার্যক্রমের একটি অংশ বা ধাপ বা প্রক্রিয়া অন্য দেশের কোনো সংস্থায় প্রদান করে দেয় তখন তা আউটসোর্সিং বলা হয়।

উদাহরণ স্বরূপ, একটি সফটওয়্যার কোম্পানি যখন একটি সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট এর জন্য একটি বিদেশী ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির সাহায্য নেয়, তখন তারা সেই কাজটি আউটসোর্স করে দেয়।

আউটসোর্সিং ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া বিভিন্ন ধরণের কাজের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে, যেমন- সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডাটা এন্ট্রি, কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং, মার্কেটিং, কাস্টমার সাপোর্ট, হার্ডওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি।

কেন আউটসোর্সিং করা হয়?

আউটসোর্সিং করা হয় একাধিক কারণের জন্য। বিভিন্ন কোম্পানি আউটসোর্সিং করার ফলে বিভিন্ন সুবিধা ভোগ করা থাকে। তো চলুন প্রথমে জেনে নেই কেন আউটসোর্সিং করা হয়।

খরচ কমাতে সাহায্য করে

আউটসোর্সিং একটি ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া খরচ কমিয়ে আনতে সহায়তা করতে পারে। অন্যান্য দেশের কর্মীদের মধ্যে খরচ সাধারণত কম হয়।

কারণ তাদের শ্রমিক খরচ মাধ্যমিক দেশের শ্রমিকের তুলনায় কম। এছাড়াও, আউটসোর্সিং করার মাধ্যমে কোম্পানির উদ্যোগের খরচ ও সময় কমাতে পারে।

দক্ষ ফ্রিল্যান্সার পাওয়া যায়

অন্যান্য দেশে উদ্যোগী বা উন্নত দক্ষতা এবং জ্ঞান সম্পন্ন ফ্রিল্যান্সার পাওয়া যায়। যারা বিশেষ কাজে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ। আউটসোর্সিং করে, এই দক্ষতা প্রাপ্ত করা যায়।

যা কোম্পানিকে উন্নত পদক্ষেপ নেওয়া এবং কোম্পানির প্রকল্প বা প্রক্রিয়া গুলোর গুণগত মান বাড়ানোর জন্য সহায়তা করে।

প্রয়োজনীয় সময় কমাতে সহায়তা করে

কোনো কোম্পানি যখন কিছু নতুন প্রকল্প বা উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সময় নিয়ে থাকে, তখন তারা অন্য কোম্পানির সাহায্য নিয়ে এই কাজ গুলো সম্পাদন করতে পারে। এটি কোম্পানির উন্নতি এবং ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির জন্য মৌলিক ভূমিকা পালন করে।

কাজের অগ্রগতি:

আউটসোর্সিং একটি কোম্পানির প্রধান কাজের উপর কেন্দ্রিত হয় না এবং তাদের সময় এবং সম্পদ ব্যবহারের সীমা বাড়ানোর জন্য কোম্পানি কাজের অগ্রগতি করতে পারে।

সেটি কোম্পানির কাজকর্ম প্রক্রিয়া গুলোর বিস্তারিত উন্নতির জন্য ব্যবহার করা সময় সংরক্ষণ করতে পারে এবং সম্পদ ব্যবহার করে, উন্নয়ন কার্যক্রম গুলো জন্য ব্যয় কমিয়ে আনতে সহায়তা করতে পারে।

তো বন্ধুরা আপনারা জানতে পারলেন। কেন আউটসোর্সিং করা হয়। আউটসোর্সিং করলে, কি কি সুযোগ সুবিধা ভোগ করা যায়। এখন আমি আপনাদের জানাবো আউটসোর্সিং হিসেবে কি কি কাজ করা যায়।

কি কি কাজ আউটসোর্স হিসেবে করা যায়?

আউটসোর্সিং হিসাবে বিভিন্ন ধরণের কাজ করা যায়। তার কিছু উদাহরণ নিচের আলোচনায় প্রস্তুত করা হয়েছে। যেমন-

সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট:

সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট একটি জনপ্রিয় আউটসোর্সিং কাজ। এটি সফটওয়্যার প্রকল্পের বিভিন্ন পর্যায়ে আবশ্যক কোডিং, ডিজাইন, টেস্টিং ইত্যাদি সম্পর্কিত কাজ গুলোর জন্য বিভিন্ন কোম্পানির বা ফ্রিল্যান্সারদের সাহায্য নেয়া হয়।

ডাটা এন্ট্রি ও প্রক্সেসিং:

ডাটা এন্ট্রি এবং প্রক্সেসিং আউটসোর্সিং করে অন্যান্য কোম্পানিদের বা ফ্রিল্যান্সারদের সাহায্য নেয়া হয়। ডাটা ইনপুট, ফরম পূরণ, ডাটা সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরন, ডেটাবেস ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি সম্পর্কিত কাজ গুলো আউটসোর্স করা হয়।

গ্রাফিক্স ডিজাইন:

গ্রাফিক্স ডিজাইন কাজ হিসাবে আউটসোর্সিং করা হয়। যেখানে অন্যান্য কোম্পানির বা ফ্রিল্যান্সারদের সাহায্য নেয়া হয়। যেমন- প্রোফাইল ডিজাইন, লোগো ডিজাইন, ওয়েবসাইট ডিজাইন, প্রিন্ট ডিজাইন ইত্যাদির জন্য।

কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং:

কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং সম্পর্কিত কাজ গুলি যেমন- নেটওয়ার্ক ইনস্টলেশন, কনফিগারেশন, নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি, সার্ভার ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি সাধারণত আউটসোর্সিং করা হয়।

কাস্টমার সাপোর্ট:

অন্যান্য কোম্পানির কাস্টমার সাপোর্ট সেন্টার আউটসোর্স করা হয় যাতে কাস্টমারদের সাহায্য প্রদান করা যায়। যেমন- ফোন, ইমেল, চ্যাট সাপোর্ট, টিকেটিং সিস্টেম মাধ্যমে সেবা প্রদান করা হয়।

মার্কেটিং ও প্রচার:

মার্কেটিং ও প্রচারের জন্য কোম্পানির বিজ্ঞাপন, ডিজিটাল মার্কেটিং, সামাজিক মাধ্যম ইত্যাদি ব্যবহার করে আউটসোর্স করা হয়।

আউটসোর্সিং এর ওয়েবসাইট

আউটসোর্সিং সংক্রান্ত বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও প্লাটফর্ম রয়েছে। যেখানে কোম্পানিসমূহ আউটসোর্সিং প্রক্রিয়া গুলো সম্পাদন করতে পারেন। কিছু জনপ্রিয় আউটসোর্সিং ওয়েবসাইট গুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো :

  • Upwork (https://www.upwork.com).
  • Freelancer (https://www.freelancer.com).
  • Fiverr (https://www.fiverr.com).
  • Toptal (https://www.toptal.com).
  • Guru (https://www.guru.com).
  • Outsourcely (https://www.outsourcely.com).
  • Remote (https://remote.com).
  • 99designs (https://www.99designs.com).
  • PeoplePerHour (https://www.peopleperhour.com).
  • TaskRabbit (https://www.taskrabbit.com).

এই ওয়েবসাইট গুলো কোম্পানি গুলোর আউটসোর্সিং প্রক্রিয়া সম্পাদনের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করে, যা ফ্রিল্যান্সারদের সাথে সংযুক্ত করে দেয়।

কোম্পানিরা এই ওয়েবসাইট গুলোতে নিজেদের কাজ পোস্ট করতে পারেন এবং কাজ করতে ইচ্ছুক ফ্রিল্যান্সার’রা সন্ধান করতে পারেন।

আউটসোর্সিং প্লাটফর্ম গুলো কাজের প্রকল্প, মূল্য নির্ধারণ, মাল্টিপল কাজের ব্যবস্থা, পেমেন্ট সংক্রান্ত ব্যবস্থা ইত্যাদি সম্পর্কিত সুবিধা নিতে পারেন।

এছাড়াও, কোম্পানি গুরো অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম, আউটসোর্সিং প্রক্রিয়া গুলো চালাতে পারেন, যেমন- LinkedIn, Facebook গ্রুপস, টুইটার ইত্যাদি।

আউটসোর্সিং এর সুবিধা গুলো

আউটসোর্সিং করার সাথে সাথে এর সুবিধা গুলো মধ্যে নিম্নলিখিত কিছু সুবিধা রয়েছে। যেমন-

দক্ষ কাজের লোক পাওয়া যায়:

আউটসোর্সিং করে, কোম্পানিরা বিভিন্ন দেশে এক্সপার্ট ও দক্ষ কর্মীদের সন্ধান করতে পারেন। এটি দক্ষতা, জ্ঞান এবং পেশাগত দক্ষতার প্রসারে সাহায্য করে এবং কোম্পানি গুলোর কাজের মান বা পদক্ষেপে উন্নতি করে।

আউটসোর্সিং করে খরচ কমাতে পারেন:

আউটসোর্সিং করার ফলে, কোম্পানির খরচ কমে যায়। কারণ বাস্তবিকতার জোট বা অফিস খরচ বন্ধ করা যায়। এবং আলাদা করে অফিস ব্যবহার করার প্রয়োজন কমে যায়। অতিরিক্ত সময় এবং টাকা ব্যবহার করে, কাজ করার দরকার হয় না।

ফ্রিল্যান্সারদের দিযে দ্রুত কাজ করিয়ে নেওয়া যায়:

অনেক আউটসোর্সিং প্লাটফর্মে আপনি ফ্রিল্যান্সারদের সাথে দ্রুত কাজ শুরু করতে পারেন। আপনি তাদের প্রোফাইল দেখে কাজের বিস্তারিত নির্বাচন করতে পারেন। এবং যে কোনও প্রকল্পে কাজ দিয়ে নিজের প্রজেক্ট সম্পন্ন করে নিতে পারবেন।

অফ টাইমে কাজ করা যায়:

আউটসোর্সিং করার ফলে, কোম্পানির টিম বা কর্মীরা দৈনিক অফিস সময়ের বাইরে প্রকল্পের কাজ সম্পাদন করতে পারেন। এটি টিমের কাজ সমূহের সময়কে সংযত করতে সুযোগ দেয়।

আউটসোর্সিং করে বিজনেস স্কেলিং বৃদ্ধি করা যায়:

আউটসোর্সিং করে, কোম্পানি গুরো বিজনেস স্কেলিং বৃদ্ধি করতে পারে। কাজ প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে বা মার্কেটিং এ নতুন কাজ গুলো যোগ করার জন্য আউটসোর্সিং একটি দক্ষ ব্যবস্থা সরবরাহ করে, যা কোম্পানিকে ও মার্কেট প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

এ গুরেঅ আউটসোর্সিং করার সুবিধার কিছু উদাহরণ, যা কোম্পানি গুলো লাভ করতে পারেন।

শেষ কথাঃ

আউটসোর্সিং ব্যবসায়িক পদক্ষেপ হিসাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম হতে পারে, যা কোম্পানিদের সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সুবিধা ও লাভ সরবরাহ করে।

আউটসোর্সিং করার মাধ্যমে, কোম্পানি গুলো দক্ষ কর্মীদের সন্ধান করতে পারে, খরচ কমিয়ে আনতে পারে, কাজের গতিতে প্রায়োগিকতা যোগ করতে পারে, অফ টাইমে কাজ করতে পারে এবং বিজনেস স্কেলিং এর জন্য একটি সম্ভাব্য উপায় হতে পারে।

এই সুবিধা গুলো আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে ভোগ করা যায়।

এখন আউটসোর্সিং এর সুবিধা সম্পর্কে আপনার যদি আরো কোন কিছু জানার থাকে। অবশ্যই আমাদের জানাতে পারেন। ধন্যবাদ…

আপনার জন্য আরও আর্টিকেল

Leave a Comment