বর্তমান সময়ে গুগলের অনেক সার্ভিস আছে। যার মধ্যে সকলের জনপ্রিয় একটি সার্ভিস হলো গুগল ড্রাইভ। আমরা জানি, যারা স্মার্ট মোবাইল ব্যবহার করেন, তারা সকলেই গুগল ড্রাইভের বিষয়ে জানেন।
আপনি যদি গুগল ড্রাইভ সম্পর্কে না জানেন তাহলে চিন্তার কোন কারণ নাই। আজ আমাদের এই পোস্টে আপনাকে জানাব, গুগল ড্রাইভ কি? কিভাবে গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করবেন।
আপনি যদি গুগল এর গুগল ড্রাইভ সুবিধা নিতে চান? তাহলে আমাদের দেওয়া আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনযোগ দিয়ে পড়ুন।
প্রথমেই বলে রাখি গুগল ড্রাইভ একটি মেমোরি কার্ডের মতো স্টোরেজ স্পেস। এটি আবার একদম ফ্রিতে ব্যবহার করতে পারবেন।
Google Drive কি ?
গুগল ড্রাইভ হচ্ছে একটি ফাইল স্টোরেজ স্পেস। এই ড্রাইভ সার্ভিস টি চালু করেছে google.com.
আমাদের জানামতে, গুগল ড্রাইভ সার্ভিস টি গত ২০১২ সালে তৈরি করা হয়েছে। গুগল ড্রাইভকে সহজ ভাবে বলতে গেলে ফাইল স্টোরেজ সার্ভিস বলা যায়।
আপনি উক্ত গুগল ড্রাইভ যে কোন ডিভাইসে ব্যবহার করতে পারবেন যেমন- কম্পিউটার, ল্যাপটপ এবং মোবাইল এর মাধ্যমে। উক্ত ড্রাইভ ব্যবহার করে আপনি 15 GB ফ্রি স্টোরেজ স্পেস পেয়ে যাবেন। যেখানে আপনার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট, ছবি, ফাইল, ভিডিও, অডিও ইত্যাদি সংরক্ষণ করে রাখতে পারবেন।
আবার গুগল ড্রাইভ অনলাইনে ফাইল স্টোরেজ করে রাখার পরে। পরবর্তী যে কোন সময়ে আপনার কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা স্মার্ট মোবাইল দিয়ে গুগল ড্রাইভ অ্যাপস বা ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে আপলোড করা ফাইল গুলো পূর্ণরায় ডাউনলোড করতে পারবেন।
উক্ত গুগল ড্রাইভে আপনার মূল্যবান ডকুমেন্ট, ছবি, ফাইল গুলো নিরাপদে রাখতে পারবেন। আপনি দি মোবাইল দিযে ড্রাইভ ব্যবহার করেন।
সেক্ষেত্রে বলা তো যায় না। আপনার মোবাইলটি যদি হারিয়ে যায়। তাহলে আপনার মোবাইলে যে সকল ডকুমেন্ট থাকবে সেগুলো সব হারিয়ে গেল।
সেই জন্য আপনি যদি গুগল ড্রাইভে আপনার, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট গুলো সংরক্ষণ করে রাখেন। কোন কারণে যদি মোবাইল হারিয়ে যায়।
তাহলে আপনি ইমেইল ব্যবহার করে, নতুন যে কোন মোবাইল ব্যবহার করে, সহজেই পূর্ণরায় ডাউনলোড করতে পারবেন।
আপনি যদি গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করতে চান? তাহলে অনেক সহজেই এই গুগল ড্রাইভ এ ফাইল ব্যাকআপ করার জন্য ফাইল আপলোড করা অনেক সোজা।
আরো দেখুনঃ
- গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট কি? এর কাজ কি, কিভাবে মোবাইলে সেটিং করবেন?
- কিভাবে একটি সিভি লিখতে হয় | সিভি (CV) লেখার নিয়ম
গুগল ড্রাইভে ফাইল আপলোড ও ডাউনলোড করার জন্যে কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা মোবাইল দরকার হবে। আর তার সাথে আপনার ডিভাইসে ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে।
সব থেকে মজার বিষয় হলো গুগল ড্রাইভ আপনি একদম ফ্রিতে ব্যবহার করতে পারবেন। এবং সাথে পাবেন ১৫ জিবি স্টোরেজ স্পেস ফ্রি। গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করার জন্য আপনার অবশ্যই একটি জিমেইল ঠিকানা দরকার হবে।
আমরা আশা করি উক্ত আলোচনা অনুসরণ করে বুঝতে পারছেন যে, গুগল ড্রাইভ আসলে কি? যদি না বুঝে থাকেন, তাহলে উক্ত আলোচনাটি আরো একবার পড়ে নিন।
গুগল ড্রাইভের সুবিধা ও লাভ
আমাদের মধ্যে অনেক লোক আছে যারা, গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করে অনেক সুবিধা ভোগ করছে। কিন্তু যারা গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করে, তাদের মধ্যে বেশি ইউজার দেখা যায় মোবাইল থেকে।
গুগল ড্রাইভ এর কিছু সুবিধা ও লাভ সম্পর্কে জানতে নিচের তথ্য গুলো অনসুরণ করুন।
আপনি গুগল ড্রাইভে যে, ডকুমেন্ট, ফাইল, ছবি ইত্যাদি গুলো আপলোড করবেন। সেগুলো স্মার্ট মোবাইল, কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ব্যবহার করে গুগল ড্রাইভ থেকে ডাউনলোড করার সুযোগ পাবেন।
আপনি গুগল ড্রাইভে যত দিন ডকুমেন্ট, ফাইল, ছবি ইত্যাদি গুলো রেখে দিবেন, ইচ্ছাকৃত ভাবে ডিলিট না করবেন। ঠিক তত দিন আপনার একাউন্টে সকল ডকুমেন্ট জমা হয়ে থাকবে।
যদি কোন কারণে আপনার কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা মোবাইল হারিয়ে যায়, সেক্ষেত্রে আপনি যে, ইমেইল দিয়ে গুগল ড্রাইভ একাউন্ট তৈরি করেছিলেন।
সেই ইমেইল ব্যবহার করে, নতুন যে কোন ডিভাইস থেকে আপনার গুগল ড্রাইভ একাউন্ট লগইন করে, পূর্ণরায় সকল ডকুমেন্ট খুজে পাবেন। এবং সেগুলো ডাউনলোড করার অপশন পেয়ে যাবেন।
আরো একটি বড় সুবিধা হলো এখানে আপনি মেমোরি স্টোরেজ পাবেন 15 জিবি একদম ফ্রিতে। জায়গা দেখে মনে হয় এখানে যদি আপনি শুধু ফাইল বা ছবি রাখেন তাহলে লক্ষ লক্ষ ডকুমেন্ট জমা রাখতে পারবেন।
গুগল ড্রাইভে যে, কোন ডকুমেন্ট, ফাইল বা ছবি গুলো আপনার নিজের একাউন্টে শেয়ার করতে পারবেন। আপনার শেয়ার করা লিংক থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
আপনি যদি গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করতে চান। তাহলে গুগল ড্রাইভ অ্যাপ আপনার যে কোন স্মার্ট মোবাইলে ফ্রিতে ব্যবহার করতে পারবেন।
এছাড়া আপনি যদি পিসি ব্যবহার করেন, তাহলে সরাসরি ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে ফ্রিতে গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করতে পারবেন।
আপনি গুগল ড্রাইভে কোন ডকুমেন্ট জমা রাখার পরে, সেগুলো যদি দেখতে চান তাহলে আপনার ইন্টারনেট সংযুক্ত দরকার হবে না। এটি একটি বড় সুবিধা।
আপনি গুগল ড্রাইভে মোবাইল মেমোরির মতো বিভিন্ন আলাদা আলাদা ফাইল তৈরি করে ডকুমেন্ট যুক্ত করার সুযোগ পাবেন।
আপনি গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করে, নিজের মোবাইলের স্টোরের এবং মেমোরি কার্ডের স্পেস বাচিয়ে নিতে পারবেন। কারণ গুগল ড্রাইভে তো 15 জিবি পাবেন। এখানেই আপনারা অসংখ্য ডকুমেন্ট জমা করতে পারবেন।
আপনি যদি গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করেন।তাহলে উক্ত সকল সুবিধা গুলো ভোগ করতে পারবেন। তাই আপনি যদি আগে এটি ব্যবহার না করে থাকেন তাহলে আজ থেকে গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করা শুরু করুন।
আরো পড়ুনঃ
- ০৫ টি ফ্রি ওয়েব হোস্টিং কোম্পানির তালিকা (বিস্তারিত এখানে)
- ৫০ টি প্রয়োজনীয় এবং কাজের ওয়েবসাইট (জেনেনিন এখানে)
কিভাবে গুগল প্রাইভ ব্যবহার করবেন?
আপনি যদি গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করতে চান।তাহলে দুই ভাবে ব্যবহার করতে পারবেন যেমন- মোবাইল এবং পিসি দিয়ে। আপনি যদি মোবাইল দিয়ে গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করেন।
তাহলে আপনি মোবাইল অ্যাপ দিয়ে কাজ করতে পারবেন। আর যদি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ দিয়ে গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করতে চান। তাহলে সরাসরি গুগল এর মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারবেন।
গুগল ড্রাইভ অ্যাপ ব্যবহার
আপনি যদি মোবাইল ইউজার হয়ে থাকেন। তাহলে এপ ব্যবহার করে অনেক সহজ ভাবে গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করতে পারবেন। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক গুগল ড্রাইভ অ্যাপ এর ব্যবহার সম্পর্কে।
গুগল ড্রাইভ অ্যাপ ব্যবহার করতে চাইলে, সেটি আপনার স্মার্ট মোবাইলে নতুন অবস্থায় অটোমেটিক ভাবে দেওয়া থাকবে।
আর যদি না থাকে। তাহলে আপনি গুগল প্লে স্টোরের মাধ্যমে একদম বিনামূল্যে ডাউনলোড করে নিয়ে কাজ করতে পারবেন।
গুগল ড্রাইভ মোবাইল অ্যাপ দিয়ে বা ওয়েবসাইট ব্যবহার করে কাজ করার নিয়ম একই। আপনার সুবিধার জন্য গুগল ড্রাইভ অ্যাপ ডাউনলোড করার লিংক শেয়ার করেছি।
ডাউনলোড করুন- গুগল ড্রাইভ অ্যাপ
গুগল ড্রাইভ ওয়েবসাইটে ব্যবহার
আপনি যদি গুগল ড্রাইভ মোবাইল বা কম্পিউটার দিয়ে ব্যবহার করতে চান, তাহলে অনেক সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন।
কিন্তু ওয়েবসাইট এর ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই একটি জিমেইল একাউন্ট তৈরি করে নিতে হবে। এবং ইন্টারনেট কানেকশন ব্যবহার করতে হবে। যেমন-
আরো পড়ুনঃ
- মাসে অন্তত 900 ডলার গুগল এডমব থেকে আয় করুন [এডমব থেকে ইনকাম]
- গুগল এডসেন্স থেকে মাসে $১৫০০ ডলার আয় করার উপায় । পূর্ণাঙ্গ গুগল এডসেন্স এর নিয়ম
- কিভাবে জিমেইল বা গুগল একাউন্ট ডিলেট করবেন সমাধান সহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য।
স্টেপ- ০১
গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করার জন্য প্রথমে আপনাকে Google Drive ওয়েবসাইটে যেতে হবে। তারপরে আপনার ডিভাইসে যদি, আগে থেকেই জিমেইল একাউন্ট লগইন করা থাকে। তাহলে সরাসরি আপনার ড্রাইভে চলে যাবে।
আর যদি আপনার জিমেইল খোলা না থাকে। তাহলে আপনাকে একাউন্ট লগইন করার জন্য, ইমেইল এড্রেস ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে লগইন করতে হবে।
আর যদি আপনার কোন প্রকার ইমেইল একাউন্ট না থাকে। সেজন্য আপনাকে একটি জিমেইল একাউন্ট তৈরি করতে হবে।
তারপরে আপনি সরাসরি ইমেইল ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করলে গুগল ড্রাইভ নামে একটি ড্যাশবোর্ড পাবেন।
স্টেপ- ০২
গুগল ড্রাইভ লগইন হওয়ার পরে, আপনি আপলোড করার ডকুমেন্ট, ফাইল ও ছবি গুলো দেখতে পারবেন।
স্টেপ- ০৩
আপনি যদি গুগল ড্রাইভে নতুন ডকুমেন্ট যুক্ত করতে চান তাহলে আপনাকে ড্যাশবোর্ডের ডান পাশে New লেখাতে ক্লিক করতে হবে।
তারপরে আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারের স্টোরেজ দেওয়া হবে। সেখান থেকে আপনার প্রয়োজনীয় সকল ফাইল গুলো জমা করতে পারবেন।
ফাইল আপলোড করার জন্য আপনি দুইটি অপশন পাবেন যেমন-
- File Upload
- Folder Upload
আপনি যদি, শুধু একটি ফাইল বা ছবি জমা করতে চান। তাহলে File Upload নির্বাচন করবেন।
আর যদি আপনি কোন ফোল্ডার তৈরি করে সেখানে অনেক গুলো ডকুমেন্ট এক সাথে রাখতে চান। তাহলে আপনাকে Folder Upload নির্বাচন করতে হবে।
স্টেপ- ০৪
আপনার গুগল ড্রাইভে যে, 15 জিবি স্টোরেজ স্পেস দেওয়া হয়েছে, সেখান থেকে কত টুকু জায়গা খরচ করছেন সেটি আপনি ড্যাশবোর্ডের বাম পাশে নিচের দিকে দেখতে পারবেন।
স্টেপ- ০৫
আপনি গুগল ড্রাইভে প্রয়োজনীয় সকল ফাইল আপলোড করার পরে, আপনি যদি সেগুলো ডাউনলোড করতে চান, তাহলে এক ক্লিক করেই ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ
- গুগল এডসেন্স এর বিকল্প এড নেটওয়ার্ক সাইট
- গুগল এডসেন্স কি? কিভাবে গুগল এডসেন্স থেকে ইনকাম করবেন?
- দ্রুত গুগল এডসেন্স পাওয়ার উপায় (জেনেনিন এখানে)
শেষ কথাঃ
তে বন্ধুরা, আজ আমাদের এই পোস্টের মাধ্যমে শিখতে পারলেন। কিভাবে গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করবেন। আপনি যদি মোবাইল বা পিসি ব্যবহার কারী হয়ে থাকেন।
তাহলে একই পদ্ধতিতে গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করতে পারবেন। এখানে আপনি যে কোন ডকুমেন্ট সারা জীবনের জন্য সুরক্ষিত রাখতে পারবেন।
আমাদের আর্টিকেল আপনার কাছে, কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আমাদের সাইট থেকে আরো নতুন নতুন আর্টিকেল পড়তে চাইলে নিয়মিত ভিজিট করুন, ধন্যবাদ।