আমাদের এই পোস্টে আপনাদের সাথে শেয়ার করব। ভিসা কার্ড কি? কিভাবে ভিসা কার্ড করতে হয় সেই বিষয় নিয়ে। আপনি যদি উক্ত বিষয়ে সঠিক তথ্য পেতে চান? তাহলে আমাদের লেখা শেষ পর্যন্ত মনযোগ দিয়ে পড়ুন।
আমরা আগের সময় গুলোতে টাকা লেনদেন কার্যক্রম চালানোর জন্যে, কোন প্রকার ইলেকট্রনিক কার্ড কিংবা ব্যাংকিং সার্ভিস ব্যবহার করতাম। কিন্তু বর্তমান সময় হলো ডিজিটাল।
তাই আমরা ডিজিটাল সময়ে সকল ধরণের লেনদেন করতে পারি ডিজিটাল উপায়ে।
ডিজিটাল উপায়ে লেনদেন করার জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হলো ভিসা কার্ড। ভিসা এমন একটি কার্ড। যারমাধ্যমে আমরা সহজেই টাকা পয়সা লেনদেন করতে পারি, কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই।
আপনি যদি চান তাহলে অনলাইনে শপিং করার কাজের টাকা লেনদেন করতে পারবেন ভিসা কার্ডের মাধ্যমে। এছাড়া ভিসা কার্ড ব্যবহার করে, আপনি অনলাইনে সকল প্রকার লেনদেন করার সুযোগ পেয়ে যাবেন।
আপনি যদি ভিসা কার্ড এর বিষয়ে পূর্ণ ধারণা না রাখেন। তাহলে আমাদের এই পোস্টের মাধ্যমে ভিসা কার্ডের সকল তথ্য জেনে নিতে পারবেন।সবার আগে আপনার জেনে নিতে হবে, ভিসা কার্ড আসলে কি?
ভিসা কার্ড কি? (What is Visa Card?)
আপনাকে সহজ ভাষায় বলতে গেলে, ভিসা কার্ড হলো একধরণের পেমেন্ট কার্ড। উক্ত কার্ড একটি আন্তর্জাতিক পেমেন্ট কার্ড। যা ভিসা ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস এসোসিয়েশন দ্বারা প্রবর্তিত হয়।
বর্তমান সময়ে ভিসা কার্ড ব্যবহার করে, সারা বিশ্বব্যাপী 190 টির বেশি দেশে টাকা লেনদেন করার সুযোগ পাবেন।
এখানে নগদ উত্তোলন, ব্যাংক ট্রান্সফার ও সেভিংস ডিপোজিট সহ সারা বিশ্বে ভিসা গ্রহণ করে। বর্তমানে প্রায় সব জায়গায় অনলাইন কেনা কাটা ও লেনদেন করতে আপনি ভিসা কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন।
- ভিসা কার্ড কি ? ভিসা কার্ড কিভাবে করতে হয়
আরো অন্যরকম করে বলতে গেলে ভিসা কার্ড হলো এমন একটি প্রযুক্তির কার্ড যা দ্বারা সহজে অনলাইন নানা ধরণের লেনদেন করা সম্ভব। যদি ও এটি অনেকটা মাস্টার কার্ড এর মতো দেখা যায়। কিন্তু ভিসা কার্ড ও মাস্টার কার্ড এর মধ্যে ভিন্নতা আছে।
যদি আপনি না জেনে থাকেন ভিসা কার্ড কিভাবে করতে হয়। তাহলে চিন্তা করার কোন কারণ নাই। আমরা এখানে আপনাকে জানিয়ে দেব। কিভাবে ভিসা কার্ড সহজ নিয়ে করা যায়।
ভিসা কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা কি?
আপনি যদি ভিসা কার্ড পেতে চান তাহলে এখানে কোন ঝামেলা নাই। উক্ত প্রযুক্তি সম্পন্ন কার্ডটি পেতে শুধু আপনার একটি ব্যাংক একাউন্ট এর দরকার হবে। তাহলে আপনি ভিসা কার্ড এর জন্য একজন যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন।
ভিসা কার্ড করার জন্য আপনার কোন শিক্ষাগত যোগ্যার প্রয়োজন পড়বে না। ১৮ বছর থেকে যে, কোন ব্যক্তি ভিসা কার্ড খোলতে পারবে।
ভিসা কার্ড কোথায় করবেন?
আমরা জানি, ভিসা কার্ড করার জন্যে অনেক নিয়ম আছে। যে গুলো আমরা এখানে স্টেপ বাই স্টেপ দেখাবো।
আমাদের বাংলাদেশে অনেকটি সরকারি এবং বেসরকারি বাণিজিক ব্যাংক আছে। যারা গ্রাহকদের কিছু নির্দিষ্ট পরিমানের টাকা চার্জ নেওয়ার বিপরীতে ভিসা কার্ড করে দিতে সাহায্য করে।
মানে বলতে পারেন, আপনাকে ভিসা কার্ড তারা দিয়ে দিবে। তার জন্য আপনাকে তাদের নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট কিছু ফি তাদেরকে দিতে হবে।
আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে ভিসা কার্ড করতে চান? তাহলে নিচে দেওয়া ব্যাংক গুলোর মাধ্যমে করতে পারবেন যেমন-
- শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক
- ডাচ্ বাংলা ব্যাংক
- ইসলামী ব্যাংক
উক্ত ব্যাংক গ্রাহদের কিছু নির্দিষ্ট পরিমাণের ফি (টাকা) নিয়ে ভিসা কার্ড করে দিয়ে থাকে। কিন্তু এই সকল ব্যাংক এর বাহিরেও অনেক সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক থেকে ভিসা কার্ড করে নেওয়া যায়। কিন্তু উক্ত তিনটি ব্যাংক এখন সকলের কাছে জনপ্রিয় ভিসা কার্ড করার জন্যে।
তাই আপনি উক্ত যে কোন একটি ব্যাংকের মাধ্যমে আপনার প্রয়োজনীয় ভিসা কার্ড করে নিতে পারেন কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই।
ভিসা কার্ড কিভাবে করতে হয়?
আপনি উক্ত আলোচনাতে জানতে পারছেন, কোন ব্যাংক গুলোর মাধ্যমে ভিসা কার্ড করা যায়। কিন্তু এখন আপনার প্রশ্ন হতে পারে যে, ভিসা কার্ড কিভাবে করতে হয়? তো চলুন এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য নিচের অংশ থেকে জেনে নেওয়া যাক।
ভিসা কার্ড করার নিয়ম গুলো
শুরুতে আপনি যে, ব্যাংক এর মাধ্যমে ভিসা কার্ড করতে যাবেন চিন্তা করছেন। তখন খুঁজ নিয়ে দেখুন তারা গ্রাহকদের ভিসা কার্ড সেবা দিচ্ছে কি না।
আপনি নিশ্চিত ভাবে উক্ত ডাচ্ বাংলা ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামি ব্যাংক, ইসলামি ব্যাংক এর মাধ্যমে ভিসা কার্ড করতে পারবেন।
আপনি নিরদ্বিধায় উক্ত ব্যাংক গুলোতে গিয়ে ভিসা কার্ড করে নিতে পারবেন। তাই মোট কথা আপনাকে জেনে নিতে হবে। যে সকল ব্যাংক ভিসা কার্ড এর সার্ভিস প্রদান করে থাকে।
আপনার পছন্দ বা নির্বাচিত করা ব্যাংকে যাওয়ার পরে, সেখান থেকে সরাসরি চলে যেতে হবে, ব্যাংক এর এজেন্টের নিকট। এবং শুরুতে আপনাকে একটি ব্যাংক একাউন্ট খোলে নিতে হবে।
মানে ভিসা কার্ড করার আগে যদি আপনার কোন ব্যাংক একাউন্ট না থাকে। তাহলে কিন্তু অবশ্যই ব্যাংক একাউন্ট খুঁলে নিতে হবে। কারণ ব্যাংক একাউন্ট ছাড়া আপনি ভিসা কার্ড খুলতে পারবেন না।
ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য আপনার কিছু ডকুমেন্ট দরকার হবে। যেমন- আপনার পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি, জাতয়ি পরিচয় পত্র এর ফটোকপি।
আপনার পরবর্তী হিসাব পরিচালনার নমিনির ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্র এর ফটোকপি এবং যদি আগের কোন ব্যাংক একাউন্ট থাকে সেই একাউন্ট গুলোর যাবতীয় কাগজ পত্রাদি।
উক্ত ডকুমেন্ট সঠিক করে প্রথমে আপনি একটি ব্যাংক একাউন্ট খোলে নিন। আর যখন আপনি একটি ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করে নিবেন। তখন আপনার ভিসা কার্ড পাওযার কাজ অনেক সহজ হয়ে যাবে।
মুলত আপনি নিজের আর্থিক লেনদেন এর জন্যে একটি ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করে থাকবেন। আর অতিরিক্ত লেনদেন এর সুবিধা পাওয়ার জন্যেই একটি ভিসা কার্ড পেতে হলে, আপনাকে অতিরিক্ত কিছু টাকা দিতে হবে।
বিভিন্ন ব্যাংকে বিভিন্ন পরিমাণের ফি নেওয়া হয়। কিন্তু চিন্তার বিষয় নাই, যে কোন ব্যাংকে টাকার পরিমাণ 300/- টাকার মতো হয়ে থাকে।
আপনার সকল ডকুমেন্ট এজেন্ট এর নিকট জমা দেওয়া পরে সব কিছু সঠিক থাকলে। আপনাকে একটি কার্ড দেওয়া হবে। আর সেইটি হলো- ভিসা কার্ড। এই কাজ গুলো করে আপনি সহজেই ভিসা কার্ড খোঁলে নিতে পারবেন।
ভিসা কার্ড থেকে টাকা উত্তোলণ করার নিয়ম
আমরা উক্ত আলোচনায় জানতে পারলাম, কিভাবে ভিসা কার্ড করতে হয়। এখন আপনাকে জানাব ভিসা কার্ড থেকে টাকা উত্তোলণ করার নিয়ম সম্পর্কে। যেমন- আপনার ভিসা কার্ড থেকে টাকা তোলার সহজ নিয়ম হলো বিকাশ। তো চলুন এ বিষয়ে যেনে নেওয়া যাক।
- প্রথমে আপনার বিকাশ অ্যাপস লগইন করবেন।
- তারপরে আপনার বিকাশ অ্যাপস এ প্রবেশ করলে প্রথমে ইন্টারফেস এ অনেক কিছু অপশন দেখতে পারবেন। সেখান থেকে “অ্যাড মানি” অপশনে ক্লিক করবেন।
- তারপরে আপনি দুইটি অপশন দেখতে পারবেন। তার মধ্যে দ্বিতীয় অপশনটি হলো- “কার্ড টু বিকাশ” সেখানে ক্লিক করবেন।
- উক্ত কাজ করার পরে আরো দুইটি অপশন পেয়ে যাবেন, সেখান থেকে ২য় অপশনে লেখা থাকবে “Visa” সেখানে ক্লিক করবেন।
- তারপরে My Account অপশন নির্বাচন করে। যে বিকাশ নম্বরে টাকা নিবেন সেটি টাইপ করবেন এবং টাকার পরিমাণ দিবেন। তারপরে Proceed অপশনে ক্লিক করবেন।
- তারপরে আপনার ভিসা কার্ড এর নম্বর, ভেরিফিকেশন নম্বরসহ ইত্যাদি তথ্য দিয়ে সাবমিট অপশনে ক্লিক করবেন। সর্বশেষ কাজ হলো Pay অপশনে ক্লিক তাহলেই টাকা্ উত্তোলণ হয়ে যাবে।
ভিসা কার্ড থেকে মোবাইল রিচার্জ এর নিয়ম
আমরা জানি, ভিসা কার্ড থেকে সরাসরি কোন মোবাইল রিচার্জের অপশন নাই। কিন্তু আপনি ভিসা কার্ড থেকে বিকাশে টাকা নিয়ে তারপরে মোবাইলে রিচার্জ করে নিতে পারবেন।
ভিসা কার্ড থেকে নগদে টাকা নেওয়ার নিয়ম
ভিসা কার্ড থেকে নগদে টাকা নেওয়ার উপায়। এই কাজটিও প্রায় বিকাশ এর মতো। চলুন দেখে নেওয়া যাক।
- প্রথমে আপনার নগদ অ্যাপ লগইন করুন।
- তারপরে প্রথম পাতায় অ্যাড মানি অপশন দেখতে পারবেন। সেখানে ক্লিক করুন।
- তারপরে ব্যাংক টু নগদ বা কার্ড টু নগদ এর মধ্যে কার্ড টু নগদ অপশনটি ক্লিক করুন।
- এখন ভিসা কার্ড অপশন দেখতে পারবেন। সেখানে ক্লিক করুন।
- তারপরে আপনার কার্ড নম্বর, টাকার পরিমাণ ও ইমেইল আইডি দিয়ে পরবর্তী অপশনে ক্লিক করুন। ইমেইল আইডি না দিলেও কোন সমস্যা হবে না।
- তারপরে আপনাকে মোবাইল নম্বর ভেরিফাই করতে হবে। আর যদি ভেরিফাই না করতে চান তাহলে স্কিপ করে দিবেন।
- এখন আপনার ভিসা কার্ড এর তথ্য দিবেন এবং সিকিউরিটি ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করে কনফার্ম করলে আপনার টাকা লেনদেন সফল ভাবে শেষ হবে।
আরো পড়ুনঃ
- মালয়েশিয়া কলিং ভিসা ২০২২ (জেনেনিন এখানে)
- ভিসা কি? ভিসা কিভাবে করতে হয় ২০২২
- দুবাই কাজের ভিসা ২০২২ | দুবাই ভিসা
- মালয়েশিয়া ভিসা আবেদন করার নিয়ম | বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া ভিসা
শেষ কথাঃ
তো বন্ধুরা, আমাদের এই পোস্ট থেকে জানতে পারলেন, ভিসা কার্ড কি? এবং ভিসা কার্ড কিভাবে করতে হয়। উক্ত আর্টিকেল নিয়ে আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে নিয়ে দেওয়া বক্সে কমেন্ট করতে পারেন।
উক্ত ভিসা কার্ড ছাড়া আরো বিভিন্ন ধরণের কার্ড তৈরির পোস্ট পড়তে চাইলে নিয়মিত ভিজিট করুন। আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আল্লাহ হাফেজ।