অনলাইন ব্যবসা (online Business): ব্যবসার মাধ্যমে অনেক সহজেই অল্প সময় এর মাঝে অনেকটাই স্বাবলম্বী হওয়া যায়। তবে এর ঠিক উল্টোটাও ঘটে যেতে পারে বা ঘটতে পারে, যদি না আপনি ব্যবসার ক্ষেত্রে খুব চতুর এবং দক্ষ ভূমিকা পালন না করেন ।
অনলাইন বিজনেস বা অনলাইন ব্যবসা (online Business) অনেকাংশে লাভজনক একটি ব্যবসা ক্ষেত্র। এটিকে ই-বিজনেস বা ইলেকট্রনিক বিজনেস ও বলা হয়ে থাকে। আমরা অনেকেই হয়ত বাস্তব জীবনে ব্যবসা করে অভ্যস্ত।
তবে অনেকেরই জানা নেই যে অনলাইন এর মাধ্যমেও এই ব্যবসা রানিং করানো সম্ভব । এবং শুধু তাই নয় , অনলাইন বিজনেস এর মাধ্যমে যে একটি বড় অংশ লাভ করা যায় তা নিয়ে হয়ত কোনো ধারণা নেই। আবার অনেকে জানে ঠিকই কিন্তু তা শুধু নাম মাত্র। কেননা সে সম্পর্কে জানলেও রয়েছে অনেক সীমিত জ্ঞান।
- অনলাইন ব্যবসা কি? কীভাবে শুরু করবেন।
তাই আজ আমরা আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি অনলাইন ব্যবসা (online Business) ক্ষেত্রের সমস্ত খুটিনাটি বিষয় নিয়ে।
আরও পড়ুন:
- অনলাইনে আয় করার জনপ্রিয় মাধ্যমগুলো
- অনলাইনে আয়ের সবচেয়ে সহজ উপায়
- অনলাইনে আয় বিকাশে পেমেন্ট
- অনলাইনে আয় করার ট্রাষ্টেড ওয়েবসাইট
আশা করি আজ আপনারা সকলেই অনলাইন ব্যবসা (online Business) নিয়ে আপনাদের জ্ঞান পিপাসা পূর্ণ করবেন এবং অনেকেই এক্ষেত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। তাই আমাদের বিশ্বাস আজ আপনারা এই পুরো লেখনীটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। আর তাহলেই আমরা আমাদের সার্থকতা পাব।
অনলাইন ব্যবসা (online Business) কী?
অনলাইন ব্যবসা (online Business) বা ই-বিজনেস হলো এমন এক প্রকার ব্যবসা যেখানে ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে প্রায় সকল প্রকার কমার্সিয়াল লেনদেন এবং সে সম্পর্কিত তথ্যাবলি আদান প্রদান করা হয়। এটি যে কেউ করতে পারে। এমন কোনো বিষয় নেই যে শুধুমাত্র আভিজাত্যের অধিকারী ব্যবসায়ীরাই শুধু এই ব্যবসা করতে পারবে। এই ব্যবসায় যে কেউ উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে।
এই ব্যবসার জন্য প্রডাক্ট এবং সার্ভিস সহ সকল কিছু অনলাইনেই করা হয় এবং সকল প্রকার লেনদেন ও কথোপকথন ইন্টারনেট এর মাধ্যমে সম্পাদিত করা হয়। অর্থাৎ এই ব্যবসার সকল কিছু অনলাইনে করা হয়ে থাকে এবং কেনাবেচার মাধ্যমও হয়ে দাঁড়ায় শুধু অনলাইন।
Read More-
- ইনভেস্ট ছাড়াই অনলাইনে আয় করার উপায়
- মোবাইল দিয়ে অনলাইনে ইনকাম করার সহজ উপায়
- ওয়েব সাইট তৈরি করে অনলাইনে আয়
অনলাইন ব্যবসার (online Business) প্রকারভেদ-
অনলাইন ব্যবসা যে শুধু মাত্র একই জাতের হয়ে থাকে তা কিন্তু নয়। অনলাইন বিজনেসকে আপনি কয়েকটা ভাগে ভাগ করে নিতে পারবেন। চলুন জেনে আসা যাক-
অনলাইন স্টোর- (Inline Store)
আপনি কী অনলাইন ব্যবসাকে (online Business) পছন্দ করেছেন? তাহলে আপনী অনলাইনে একটি স্টোর খুলতে পারেন। যেখানে আপনি আপনার প্রডাক্ট বা সার্ভিস এর মার্কেটিং করতে পারবেন।
আপনি আপনার এই স্টোর এ আপনির নিজস্ব প্রডাক্ট বিক্রি করতে পারেন। এছাড়া আপনি যদা অন্য কোনো স্টোর থেকে প্রডাক্ট ক্রয় করে থাকেন সেটিও এখানে বিক্রয় করতে পারেন। তবে আপনাকে অবশ্যই মাথয় রাখতে হবে যে আপনার সমসাময়িক রা কী নিয়ে কাজ করছে এবং সে অনুযায়ী আপনাকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট- (Apps Development)
বর্তমান সময়ে নিত্য নতুন অ্যাপ এর চাহিদা বেড়ে চলেছে। তাই আপনি এক্ষেত্রে একটি বড় হাত মারতে পারেন। আপনি যদি যথেষ্ট স্কিল সম্পূর্ণ হন তাহলে নিমিষেই আপনি এই কাজে লেগে যেতে পারেন।
তবে এর জন্য আপনাকে একজন দক্ষ অ্যাপ ডেভেলপার হতে হবে। আপনি যদি নিয়মিত অ্যাপ এর ডেভলপমেন্ট এবং নতুন সুযোগ সুবিধা দিতে সক্ষম হতে পারেন তাহলে এই ক্ষেত্রে আপনি বেশ টিকে থাকবেন। মূলত নতুন অ্যাপ তৈরি এবং তার যথাযথ Apps ডেভেলপমেন্ট ঘটানোই এই কাজের মূল নীতি।
ডিজিটাল প্রডাক্ট তৈরি- (Digital Product Making)
ডিজিটাল প্রডাক্ট বলতে মূলত কোনো সফটওয়্যার, গেমস, ই-বুক, ফটোগ্রাফি, অডিও ফাইল ইত্যাদি বোঝানো হয়ে থাকে। আপনি যদি ডিজিটাল প্রডাক্ট সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান রাখেন তাহলে এই সেক্টরে পা বাড়াতে পারবেন।
ডিজিটাল প্রডাক্ট তৈরির মাধ্যমেও আপনি অনলাইন ব্যবসা (online Business) করতে পারবেন। কেননা বর্তমান সময়ে আধুনিকতার ছোঁয়া তে আভরা সকলে ডুবে থাকিহ আর বথেকে ভালো কথা হলো এই প্রোডাক্ট বর্তমান সময়ে বেশ ডিমান্ডেবল। তাই আপনি যত বেশি স্কিল আয়ত্তে এনে এসব ডিমান্ড সম্পূর্ণ কাজ করতে পারবেন তত তাড়াতাড়ি আপনি অনলাইন ব্যবসাতে (online Business) সফল হতে পারবেন।
চ্যাটবোট তৈরি- (Chat boat Making)
চ্যাটবোট হলো এমন একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম যার মাধ্যমে অনলাইন কাস্টমারদের সাথে কথোপকথন ঘটানো যায় আপনি নিজের জন্য একটি নিজস্ব চ্যাটবোট তৈরি করে নিতে পারবেন । এমনকি আপনি বিভিন্ন চ্যাটবোট তৈরি করে তা সেল করতে পারবেন।
আপনি একজন আদর্শ প্রোগ্রামার হলে এই সার্ভিস আপনার জন্য পারফেক্ট। কেননা দক্ষ প্রোগ্রামার ছাড়া একাজ করা সম্ভব সয়ে উঠে না। তাই আপনি একজন প্রোগ্রামার হলে এই কাজে অনলাইন ব্যবষা শুরু করতে পারেন।
ডোমেইন নেইম বাই এবং সেল- (Domain Buy Sell Business)
ডোমেইন নেইম হলো একটি অ্যাড্রেস যা মূলত কোনো IP Address কে ইঙ্গিত করে। আমরা বিভিন্ন লিংক এর শেষে ডট কম বা ডট ওআরজি বা এরকম অনেক কিছু দেখে থাকি। মূলত এগুলোই ডোমেইন নেইমকে ইঙ্গিত করে। আপনি চাইলে আমাদের ডোমেইন কি? নিয়ে পোস্টটি পড়ে আসতে পারেন।
আপনি বিভিন্ন কোম্পানির জন্য বা যে কোনো অথরিটি এর কাছে এসব ডোমেইন নেইম সেল করতে পারেন। এমনকি এগুলো ক্রয় করতেও পারবেন। আপনি যে ডোমেইন নেইমগুলোতে পপুলারিটি পাবেন সেই নেইমগুলো সেল করতে পারবেন। এবং এ ক্ষেত্রটি অনলাইন ব্যবসা (online Business) এর বেশ বড় অংশ জুড়ে রয়েছে।
ব্লগ তৈরি করা- Blogging
আপনি যদি একজন রাইটার হয়ে থাকেন কিংবা রাইটিং কে ভালোবেসে থাকেন তাহলে আপনি বেশ সহজেই একজন ব্লগার হতে পারবেন। আপনি নিজেই নিজের ব্লগ তৈরি করে নিতে পারবেন বা অন্য কাউকে ব্লগ তৈরি করে দিতে পারবেন। তবে এজন্য আপনার বেশ রাইটিং স্কিল এর প্রয়োজন পড়বে।
আপনি ব্লগ তৈরি করে নিজস্ব ওয়েবসাইট কিংবা যে কোনো ওয়েব সাইটে ছেড়ে দিতে পারেন। এভাবে আপনি যখন একজন প্রফেশনাল ব্লগার হতে পারবেন। আপনি বেশ ডিমান্ড পেয়ে যাবেন। যা আপনার অনলাইন ব্যবসাকে (online Business) সামনে আগাতে অনেক সুবিধে করবে।
ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্ট- Vertual assistant
আমাদের প্রত্যেক কাজেই কারো না কারো সাহায্যের দরকার হয়। কেননা কোনো কাজ আমরা একাই করতে সক্ষম নাও হতে পারি। ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্ট ঠিক এমনই একটি জায়গা নিয়ে আমাদের সামনে উপস্থিত সয়েছে। ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্ট হলো এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে আপনি আপনার সমস্ত কাজের অংশের একটি ভাগ একজনকে দিয়ে দিবেন। সে সেগুলি যথাযথ রক্ষণাবক্ষেণ করবে এবং কাস্টমার খুজে পপুলারিটি বাড়াবে। বিনিময়ে আপনি তাকে কিছু কমিশন দিবেন।
ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্টশিপ আজ একটি বিরাট অংশ দখল করেছে ।আপনি যদি সঠিক জ্ঞান এবং স্কিল সমৃদ্ধ হয়ে থাকেন তাহলে এই ক্ষেত্র আপনার জন্য এক অনন্য সম্পদ। ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্ট হিসেবে কাজ করে অনলাইন ব্যবসার (online Business) একটি বড় অংশ আপনি আয়ত্তে আনতে পারবেন।
ওয়েব সাইট ফ্লিপিং- website flipping
ওয়েব সাইট ফ্লিপিং হলো অনলাইন এর সহায়তায় বিভিন্ন ওয়েব সাইট ক্রয় এবং বিক্রয় করা। আজ অনেকেই ওয়েব সাইট বানিয়ে সেটিকে সেল করছে। এবং অনেক ক্ষেত্রে ডোমেইন ও সেল করা হয় এর সাথে। এর কারণ হলো বর্তমানে অনেকেই অ্যাডসেন্স অর্ডার নিতে পারে না। কিংবা বারবার চেষ্টা করা সত্ত্বেও তারা হতাশ হয়ে যান।
তাই অনেকে আছে যারা ওয়েব সাইটে কাজ এবং ওয়েব সাইট তৈরির ক্ষেত্রে অনেক পারদর্শী। আর তাই তারা বিভিন্ন ওয়েব সাইট তৈরি করছে । এবং সেগুলো নিজের জন্য ব্যবহার করে পরবর্তী সময়ে সেগুলো সেল করছে। এর জন্য কোডিং বেশ ভালো করে আয়ত্তে আনতে হয়। তবে ওয়েব সাইট ফ্লিপিং অনলাইন আয় এর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
অনলাইন রিয়াল ইস্টেট ইনভেস্টমেন্ট- (real state business)
অনলাইন রিয়াল ইস্টেট ইনভেস্টমেন্ট বর্তমান সময়ে দৃশ্যমান। এটি হলো একটি নির্দিষ্ট শতাংশ কোনো প্লট বা প্রোপারটি কেনার ক্ষেত্রে ইনভেস্ট করা। এর সুবিধা হলো এখানে পুরে মানি নাদিয়ে আপনি তার একটি পারসেনটেজ দিতে পারবেন। যার ফলে আপনার সহজেই কোনো প্রোপারটি এর অধিকারী হতে পারবেন।
তবে অনলাইনে এই ব্যবসা করার ক্ষেত্রে আপনাকে যথেষ্ট চোখ কান খোলা রাখতে হবে। আপনি যদি অন্ধকার ঘরে ঢিল মারেন আপনি বেশ ক্ষতির সম্মূখীন হতে পারেন। আপনাকে প্রথমে সবকিছু দেখে শুনে বুঝে নিয়ে এই ব্যবসায় আগাতে হবে।
অনলাইন ট্রান্সক্রিপশন প্লাটফর্ম –
অনলাইন ট্রান্সক্রিপশন প্লাটফর্ম হলো এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে আপনি কোনো একটি অডিও কিংবা ভিডিও ফাইল এর প্রতিলিপি তৈরি করতে পারবেন। এটির জন্য আপনাকে একজন দক্ষ শ্রোতা এবং টাইপার হওয়া বাঞ্ছনীয়।
এমন অনেক অনলাইন প্লাটফর্ম রয়েছে যেখানে এই অনলাইন ট্রান্সক্রিপশন এর কাজ দেয়া হয়। এবং আপনি আপনার দক্ষতা কাজে লাগিয়ে বেশ সহজেই এই ক্ষেত্র থেকে অনেক টাই আয় করতে সক্ষম হবেন। আপনি একজন আদর্শ টাইপার হলে আপনি এই ব্যবসা থেকে অনেক সহজেই লাভবান হতে পারবেন।
মূলত এগুলো হলো অনলাইন ব্যবসা এর কিছু প্রকারভেদ। কোন কোন ক্ষেত্রে এই অনলাইন ব্যবসা করা যায় তা নিয়ে কিছু বিস্তারিত কথা বলা হলো। আমরা অনেকেই হয়ত অনলাইনে ব্যবসা সম্পর্কে জানলেও সঠিক জানিনা যে কোন ক্ষেত্রে বা অনলাইন ব্যবসার জন্য কী রকম প্রকারভেদ থাকতে পারে। তবে আজ অন্তত একটি মোটামুটি ধারণা পাওয়া সম্ভব হলো ।
এখন আমরা অনলাইন ব্যবসা কী এবং কীরকম তার ক্ষেত্র বা প্রকারসমূহ তা নিয়ে বিস্তারিত ধারণা পেলাম। তবে কীভাবে অনলাইন ব্যবসা করা সম্ভব তা নিয়েও আমাদের অনেক মতভেদ রয়েছে। আমরা জানিনা কীভাবে আমরা অনলাইন ব্যবসা করতে পারি। তাই আজ এর ক্ষেত্র গুলো জানার পাশাপাশি আমরা জানব কী উপায় অনুসরণ করে বা কোন পথে আমরা অনলাইন ব্যবসায় অংশ নিতে পারি। তাহলে এখন অনলাইন ব্যবসা ক্ষেত্রে কীভাবে আমরা অংশ নিতে পারি তা আলোচনা করা হলো-
হেলথকেয়ার- health care
বর্তমানে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে দ্রুত সার্ভিস দেয়া একটি স্বাভাবিক রীতি হয়ে গেছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা আমাদের প্রধান নীতি হওয়ায় হেলথকেয়ার সেক্টরে এর চাহিদা বেড়ে চলেছে। তাই আজ টেলিমেডিসিন কিংবা অনলাইনের মাধ্যমে ই-চিকিত্সা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এই প্লাটফর্ম টির পেছনে যেটি কাজ করছে সেটি এক ধরনের অনলাইন ব্যবসা। তাই আপনি ই-হেলথকেয়ারে অংশ নিয়ে অনলাইন ব্যবসা করতে পারেন।
ফুড- food
আমর সবাই খেতে বেশ ভালোবাসি। এমন কেউ কি আছে যারা ফাস্ট ফুভ খেতে অস্বীকার করবে? অধিকাংশ মতে কখনোই না। আমরা খাওয়ার মাঝেও কিন্তু আনন্দ উপভোগ করি।
আজকাল অনেক পেইজ বা সাইট রয়েছে যেখান থেকে আপনারা আপনার পছন্দের খাবার এর অর্ডার দিতে পারবেন। মূলত এগুলোর অর্ডার বা ডেলিভারি প্রায় সবকিছুই অনলাইনেই করা হয়ে থাকে। ফুডপান্ডা এর নাম মোটামুটি সবাই কমবেশি শুনেছি। এটি ঠিক সে রকম একটি পেইজ। দারুণ সব সুস্বাদু খাবার এর অর্ডার এসব পেইজে দেয়া যায় । কিন্তু আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন যে এরা যে কাজগুলো করে থাকে তা কিন্তু অনলাইন ব্যবসার ই অন্তর্গত? না জানলে তাহলে আজই নাহয় জেনে রাখুন!
হোটেল এবং টুরিজম- hotel & tourism
ঘুরতে সবাই কমবেশি পছন্দ করি।তা কেনই বা না! যদি ব্যস্ত সময় এর মাঝে হালকা অবসর পাওয়া যায় তাতে দোষ কোথায়? আজ অনলাইনে এরকম অনেক টুরিজম অফার পাওয়া যায়। যেখানে নির্দিষ্ট দিনের মাঝে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণের জন্য একটি প্রোগ্রাম থাকে
এছাড়া অনলাইনে হোটেল এর টিকেট বুকিং তো চলছেই। ভাবতে পারেন যে এগুলো তো সামনা সামনি করা যায় । কিন্তু চিন্তা করুন যারা সামনাসামনি টিকেট বুক করছে তারা তো করছেই, পাশাপাশি অনলাইনে এই ব্যবসার জন্য আপনি যে অতিরিক্ত অ্যামাউন্ট পাচ্ছেন? তাই হোটেল ও টুরিজম এও আপনি অনলাইন ব্যবসা করতে পারেন।
এডুকেশন ক্ষেত্র- Education and Jobs
অনলাইনে ক্লাস কিন্তু নিত্য নতুন বিষয় নয়। অনেক আধুনিক দেশেই এর চল বেশ অনেক আগে থেকেই রয়েছে। এজন্য ই-লার্নিং নামে একটি আলাদা শব্দই তৈরি হয়েছে। কিংবা অনেকেই অনলাইনে প্রাইভেট পড়ায় । এছাড়া এরকভ তো আছেই যে রিমোট অঞ্চল থেকেও ইন্টারনেট এর মাধ্যমে পড়ালেখা করছে।
কিছু কিছু ওয়েবসাইট ও রয়েছে যেমন ধরুন খান একাডেমি। এগুলো সবই অনলাইন ব্যবসার অংশ। আপনি যদি কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই অনলাইনে ব্যবসা করতে চান তাহলে এরকম উদ্যোগ নিতে পারেন।
কুটির শিল্প বিজনেস –
অনেকেই একটু বেশি শৌখিন আবার অনেকে একটু কম। তবে এই শৌখিনতার বশেই অনেকে কিন্তু ঘরে বসেই নিজ হাতে সেলাই বা যে কোনো হ্যান্ডিক্রাফটস আইটেম বানিয়েছেন। আর আশ্চর্য জনক হলেও সত্য যে আপনার এই শখের বশে বানানো আইটেম গুলো কিন্তু অনেক মূল্যবান ।
আজকাল অনেকেই এই রকম পেইজ চালাচ্ছে যেখানে এরকম হ্যান্ডিক্রাফটস আইটেম বানিয়ে সেল করছে। তাই চোখ কান খোলা রাখলে আপনিও কিন্তু অনলাইনে থেকে এরকম ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন।
এসবের পাশাপাশি বেশ কিছু মার্কেটিং প্লাটফর্ম রয়েছে যেখানে আপনি অনায়াসে অনলাইনের সুবিধা নিয়ে ব্যবসা করতে পারেন। যেমন-
Affliate মার্কেটিং-
অন্য কোনো ক্লায়েন্ট এর প্রোডাক্ট প্রচারের মাধ্যমে তা সেল করার পর সেই ক্লায়েন্ট এর নিকট থেকে কমিশনের কিছু অংশের শেয়ার পাওয়ার মাধ্যমে যে মার্কেটিং বিজনেস করা হয় তাই-ই হলো Affliate মার্কেটিং। উদাহরণ স্বরূপ – ধরুন আপনি আপনার প্রোডাক্ট একজনকে দিলেন যেন সে আপনার প্রোডাক্ট এর যথাযথ প্রচার করিয়ে সেল করে। এবং সেটার যে সম্পূর্ণ কমিশন আপনি পাবেন তার কিছু অংশ সেই ক্লায়েন্ট এর সাথে শেয়ার করলেন।
এক্ষেত্রে সেই ক্লায়েন্ট যে কমিশন পেল এটিই তার জন্য একটি Affliate মার্কেটিং। আর আপনি কিন্তু Affliate মার্কেটিং এর মাধ্যমে অনলাইনে এক রীতিমতো প্রফেশনাল ব্যবসায়ী হয়ে উঠতে পারেন।
Cost Per Action মার্কেটিং –
CPA মার্কেটিং হলো Affliate মার্কেটিং এর একটি ‘Style’ মাত্র। কিন্তু পার্থক্য হলো Affliate মার্কেটিং এ আপনি কাস্টমার রেজিস্ট্রার করানোর পর যদি তারা প্রোডাক্ট নিতে যদি সম্মতি না দেয় তাহলে আপনি কোনো কমিশন পাবেন না। আপনি তখনই কমিশন পাবেন যখন আপনি কাস্টমারের কাছে আপনার ক্লায়েন্ট এর প্রোডাক্ট সেল করাতে পারবেন।
অন্যদিকে CPA মার্কেটিং এ আপনার প্রোডাক্ট সেল না হলেও সমস্যা নেই। এক্ষেত্রে আপনাকে শুধু আপনার Affliate এ কাস্টমারকে রেজিস্ট্রার করাতে হবে। আর রেজিস্ট্রার করালেই আপনি আপনার কমিশন পেয়ে যাবেন। যেহেতু এখানে প্রোডাক্ট সেল না করালেও কমিশন পাওয়া সম্ভব, তাই অনেকেই এই মার্কেটিং এর প্রতি বেশ উৎসুক। তবে এই মার্কেটিং এর সাহায্যে ব্যবসা করলে Affliate মার্কেটিং এর চেয়ে তুলনামূলক কম লাভবান হবেন।
Content মার্কেটিং-
Content মার্কেটিং হলো এমন একটি ক্ষেত্র যেটি কিছু সৃজনশীল সৃষ্টি এবং অনলাইন বিষয়বস্তু যেমন ভিডিও, ব্লগ এবং সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট করার মাধ্যমে কাজ করে থাকে। মূলত এটি কোনো একটি কন্টেন্ট কে কেন্দ্র করে রেলিভেন্ট, সৃজনশীল এবং জ্ঞান বিষয়ক তথ্য প্রদান করে যা কিছু লেখনীর মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। তবে এটি কোনো ব্রান্ড এর প্রচার করে না কিন্তু কোনো প্রডাক্ট বা সার্ভিস এর প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করে।
আসলে এটি হলো সম্পূর্ণ নিজস্ব লাভ। আপনি বিভিন্ন কন্টেন্ট বানালেন আর সেগুলো অনলাইনে সেল করলেন। আর এভাবে আপনি অনলাইনে একটি নিজস্ব ব্যবসা ক্ষেত্র স্থাপন করতে পারবেন।
এতক্ষণ পর্যন্ত অনেক কথাই বলা হলো। অনলাইন ব্যবসার ধারণা, ক্ষেত্র, প্রকার সমূহ এবং কীভাবে অনলাইন ব্যবসা (online Business) অংশ নিবেন। তবে আপনি যদি একদম বিগিনার হন সেক্ষেত্রে কী করবেন? তাহলে আসুন জ্ঞান এর পরিধিকে আর একটু বাড়িয়ে দিই-
একজন বিগিনার হিসেবে আপনি কিছু ছোট ছোট ব্যবসা গড়ে তুলতে পারেন। যেমন-
i) হোম কন্ট্রাক্টর: আপনি যদি এমন কোনো কোম্পানি তে কাজের অভিজ্ঞতা থাকে যারা হোম রিপেয়ার বা এই টাইপ কাজ করে থাকে, তাহলে আপনি নিজেই একটি নিজস্ব ছোটখাটো ব্যবসা গড়ে তুলতে পারেন।
ii) ল্যান্ডসকেপিং বিজনেস: এটি হলো কোনো বিল্ডিং কন্সট্রাকশন বা যে কোনো ইকোসিস্টেম এর উপযোগী পরিবেশ তৈরি করা এক্ষেত্রে কিছু উপকরণ আর ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকলেই আপনি সহজে এই ব্যবসা করতে পারবেন।
iii) ফ্রিল্যান্স রাইটার: আপনি যদি একজন ভালো রাইটার হয়ে থাকেন তাহলে একজন ফ্রিল্যান্স রাইটার হিসেবে নিজেকে পরিচিত করতে পারবেন। আপনি বিভিন্ন ওয়েব সাইটে লিখার মাধ্যমে একটি ছোট ব্যবসায় অংশ নিতে পারেন।
iv) ব্লগার: একইভাবে রাইটিং স্কিল এর ফলে একজন ব্লগার হিসেবেও নিজেকে তৈরি করতে পারেন।
v) হোম ক্লিনিং সার্ভিস : যারা মোটামুটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা পছন্দ করি তারা ইচ্ছা করলেই এরকম একটি ব্যবসা চালু করতে পারি।
vi) চাইলড কেয়ার সার্ভিস : পাশাপাশি আপনি বেবি সিটিং এর মতো চাইলড কেয়ার সার্ভিস চালাতে পারেন।
vii) সোশ্যাল মিডিয়া কনসালটেন্ট: আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে বেশ দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে আপনার এই দক্ষতা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কিত বিভিন্ন সার্ভিস চালাতে পারেন।
viii) ওয়েব ডিজাইন: আপনি একজন আদর্শ ওয়েব ডিজাইনার হলে আপনার টার্মস অনুযায়ী বিভিন্ন ওয়েব ডিজাইন এর সার্ভিস অফার করতে পারেন।
ix) ফটোগ্রাফি: ভালো ছবি তোলার ক্ষমতা থাকলে আপনি ঠিক এই গুণ দিয়ে অনলাইনে একটি ব্যবসা চালাতে পারেন। এমন অনেক সাইট আছে যারা শুধু ফটোগ্রাফি নিয়ে কাজ করে। আপনি আপনার তোলা এই প্রত্যন্ত ছবিগুলি তাদের দিয়ে একটি ব্যবসার রাস্তা শুরু করতে পারেন।
শেষ কথা-
আমরা চেষ্টা করেছি যতটা পারি আপনাদের সামনে অনলাইন ব্যবসার (online Business) সুস্পষ্ট এবং বিস্তারিত ধারণা নিয়ে কোনো সন্দেহ না রাখার। পাশাপাশি অনলাইন ব্যবসার ক্ষেত্র গুলি এবং কীভাবে অনলাইন ব্যবসা শুরু করতে পারেন তা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। বাকি দায়িত্ব ঠিক আপনার উপরেই যে আপনি কোন পথটি বেছে নিবেন।
আমাদের বিশ্বাস আপনি উপরোক্ত তথ্য গুলোর দ্বারা বেশ উপকৃত হয়েছেন। তবুও আপনাদের কোনো জানার আকাঙ্ক্ষা থাকলে তা আমাদের জানাতে ভুলবেন না! আশা করি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে আপনিও অনলাইন ব্যবসায় সফল হতে পারবেন।