সিম নিবন্ধন বাতিল করবেন যেভাবে?

কখনো কি এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন যে আপনার আইডী কার্ড দিয়ে আপনার অজান্তেই অন্য কেউ একটি সিম নিবন্ধন করে দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছে। হয়তো বা। এমতাবস্থায় কীভাবে সিম নিবন্ধন বাতিল করবেন সেটা জানা জরুরী।

তবে জানেন কি এই অনিবন্ধিত সিম দ্বারা সে আপনার নামে করা সিম দ্বারা যা ইচ্ছা তাই করতে পারে? আর এর সকল দায় কিন্তু আওঅঅনাকে বহন করতে হবে। এমন কি কোনো অন্যায় করে ফেললেও তার দায় পুরোপুরি আপনার ঘাড়ে এসে পড়তে পারে। ফলশ্রুতিতে,  জেল হাজত সব হয়ে যেতে পারে বিনামূল্যে।

সেজন্যই আপনাকে সব সময় এ বিষয়টির উপর একটু নজড় দিতে হবে। কিন্তু জিনিসটা যদি হয়েই যায় তাহলে কি করবেন? আপনি কি ভাবছেন সব শেষ?  না মোটেও না। আপনি জেনে খুশি হবেন যে, যে সিমটি আপনার নামে আপনার অজান্তেই রেজিস্ট্রার করা হয়েছে তা আবার আন রেজিস্টারড বা আপনি আপনার নিবন্ধিত সিমটি বাতিল করতে  পারবেন।

আর আমাদের আজকের আলোচনা উক্ত বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই হতে যাচ্ছে। হ্যা, আমরা আজকে জানব কিভাবে আপনি আপনার অজান্তেই নিবন্ধিত সিম বাতিল করবেন অর্থাৎ সিম নিবন্ধন বাতিল করার নিয়ম।

চলুন তবে জেনে আসা যাক আমাদের আজকের মূল বিষয়- 

কীভাবে সিম নিবন্ধন বাতিল করবেন
কীভাবে সিম নিবন্ধন বাতিল করবেন

আপনার নামে সিম নিবন্ধন করে কেউ চালাচ্ছে কি না তা কি করে জানবেন?

হ্যা, প্রথমেই আপনাকে অবশ্যই খুজে বের করতে হবে যে আপনার নামে আদৌ কোনো সিম নিবন্ধিত রয়েছে কি না। কেননা তা না করেই আপনি বলে ফেলতে পারেন না এই সেই। তাই একজন প্রকৃত বুদ্ধিমান হিসাবে পরিচয় দিতে হলে প্রথমেই খুজে বের করুন আপনার নামে কোন কোন নাম্বার নিবন্ধিত রয়েছে।

আপনার নামে সিম নিবন্ধন চেক করতে যা করবেন তা হলো-

এক্ষেত্রে আপনার অবশ্যই আপনার এন আই ডি এর শেষ চারটি ডিজিট বা সংখ্যা জানতে হবে। আর বলে রাখছি এ জন্য কোনো চার্জ কাটা হবে না।

এরপর যা করতে হবে তা হলো-

  • প্রথমেই আপনার ফোনের যে কল অপশনটি রয়েছে সেখানে চলে যান।
  • কলে অপশনে আসার পর আপনাকে নিমোক্ত কোডটি ডায়াল করতে হবে-
  • কোড- *16001#
  • এরপর পরই আপনার কাছে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের শেষ চার ডিজিট এর কথা জিজ্ঞেয়া করা হবে যা আপনাকে ওখানে আসা স্থানে টাইপ করতে হবে। এন আই ডি এর শেষ ডিজিটগুলো অবশ্যই মনে রাখবেন।
  • আপনি আপনার এন আই ডি এর চার ডিজিট টাইপ করার পর একটি মেসেজ আসবে।

আপনার কাজ শেষ!!!

আপনার যে মেসেজটি এসেছে সেখানে আপনি দেখতে পারবেন আপনার নামে কতটি প্রি-পেইড বা পোস্ট পেইড সিম রয়েছে।  কোন কোম্পানির কতটা সিম ব্যবহার করছেন তাও দেখতে পারবেন।

আরও পড়ুনঃ

আর এর মধ্য থেকেই আপনার যে নাম্বারটি অপরিচিত মনে হয় তা বের করুন। এটাই হয়তো আপনার অজান্তেই রেজিস্ট্রার বা নিবন্ধন করা সে সিম।

এটা আদৌ কি সম্ভব আপনার আইডি কার্ড দিয়ে আপনার অজান্তেই সিম নিবন্ধন করা?

প্রথমে আমরা একটু এ বিষয়টির দিকে তাকাই। একটু ভেবে দেখুন, আমরা কিন্তু এখন শুধু ভোটার আইডি কার্ড বা এন আই ডি কার্ড নিয়ে গেলেই সিম নিবন্ধন সম্ভব হয় না। এর জন্য আমাদের আরো কিছু বাড়তি বিষয় রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ফিঙ্গারপ্রিন্ট। যা ছাড়া সিম নিবন্ধন কখনোই করা সম্ভব নয়। আর এই ব্যবস্থাটি এখন সব সিম অপারেটররাই চালু করেছেন। সেক্ষেত্রে দেখতে গেলে আপনার এন আই ডি থাকলেই কেউ সিম নিবন্ধন করতে পারবে না। কেননা ফিঙ্গারপ্রিন্ট ছাড়া এটা অসম্ভব।

তার মানে দাড়াচ্ছে যে কেউ চাইলেই সিম নিবন্ধন করতে পারবে না শুধুমাত্র আপনার এন আই ডি দ্বারা। সেক্ষেত্রে আপনি সস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারেন।

তবে একটা কথা কি জানেন ব্যতিক্রম সব জায়গায় হয়েই থাকে না হলে আপনার এন আই ডি দ্বারা অন্য কেউ কেন সিম নিবন্ধন করতে যাবে। কাহিনীটা কিছুটা এমন হতে পারে যে আপনি কোনো জায়গায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়েছিলেব তা থেকেই হয়তো সেই দোষী লোকটি তা সংগ্রহ করে আপনার এন আই ডি দ্বারা সিম নিবন্ধন করেছে। যদিও বিষয়টা অনেক বিরল তারপরও এটা কিন্তু ঘটেই যাচ্ছে।

এক্ষেত্রে কেউ আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করে সিম নিবন্ধন করলে আপনাকে ভোগান্তিতে পড়তে  হতে পারে। তবে তার সমাধানও কিন্তু আমাদের কাছে রয়েছে। হ্যাঁ,  যদি উক্ত ঘটনাটি ঘটে যায় তবে কি করবেন তা একটু পরেই বলছি।

সিম নিবন্ধন বাতিল করার নিয়ম-

এত কিছুর পরও যদি আপনার নামে অজান্তেই সিম রেজিস্ট্রার হয়ে যায় তাহলে তো আসলেই কিছুই করার নেই। যাই হোক আমরা এই সিমটি কিন্তু নষ্ট করে ফেলতে পারি। অর্থাৎ আমার সিম নিবন্ধন টি বাতিল করতে পারি। যার ফলে আমাদের আর সেই দায় ভার নিতে হবে না কোনো ভাবেই। তো কিভাবে করবেন সেই প্রশ্ন এখন নিশ্চয় আপনার মনে ঘুর ঘুর করছে তাই না?

আর অপেক্ষা করতে হবে না। এ পর্যায়ে আমরা এই নিবন্ধিত সিম বাতিল করার নিয়ম সমন্ধেই জানব।

আরও পড়ুনঃ

আর আপনার কাজটি সম্পাদনের জন্য আমাদের সাথেই থাকুন। সেই সাথে নিচের স্টেপগুলো খুবই সতর্কতার সাথে অনুসরণ করুন-

  • সিম নিবন্ধন বাতিল অর্থাৎ নিবন্ধিত সিম টি বাতিল করতে হলে আপনাকে আপনার অপারেটর এর নিকটস্থ কাস্টমার কেয়ার এর শরণাপন্ন হতে হবে। তাই শুরুতেই আপনি চলে যান নিকটস্থ কোনো কাস্টমার কেয়ারে।
  • আপনার সাথে আপনার নামে অজান্তেই নিবন্ধিত সিমটি নিয়ে যান। তবে সেটি যদি আপনার কাছে না থেকে থাকে তবে প্রয়োজনীয় কাগজগুলো যেমন- এন আই ডি কার্ড অবশ্যই সাথে নিয়ে যাবেন। আর সাথে থাকবে নিবন্ধিত সিম এর কাগজ পত্র ।
  • আর আপনাকে তো অবশ্যই সেখানে উপস্থিত থাকতেই হবে।

এ রকম ভাবেই আপনি নিকটস্থ কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে আপনার কাজটি সম্পাদন করে ফেলতে পারেন। আর আপনার মাথা থেকে এক তুমুল বোঝাও নেমে যাবে। যেহেতু তা না ঠিক করলে আপনার নামেই অনেকে খারাপ কাজ করে ফেলতে পারতো।

পরিশেষে-

উপরোক্ত পুরো আলোচনা জুড়ে আমরা জেনেছি কিভাবে একটি সিম এর নিবন্ধন বাতিল করা সম্ভব। আর উক্ত উপায় অনুসরণ করলে আপনিও পারবেন আপনার কোনো নিবন্ধিত সিম বাতিল করতে। তবে এখানে কিন্তু একটি স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। কেননা একজন যে আপনার নামে আপনার অজান্তেই একটি সিম খুলে ফেললো তার দায় কে নিবে? আর আইনীভাবে এটা তো এক গুরুতর অপরাধ, তাই না?

সেক্ষেত্রে স্থায়ী সমাধান এর জন্য পরিস্থিতি যদি বেশি এলোমেলো হয়ে যায় তবে পুলিশ এর শরণাপন্ন হোন। আর বেশিদূর না গড়াতে চাইলেও সিমটা অবশ্যই নিবন্ধন বাতিল করুন। যাতে করে নিরাপদ থাকতে পারেন। এতে করে সমস্যা একটু কমবে ।

আশা করি উপরোক্ত পোস্টটি আপনার কাজে আসবে যদি আপনি এমন পরিস্থিতির শিকার হয়ে থাকেন।  আর সামনে কি নিয়ে লেখা দেখতে চান তা অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন। পাশাপাশি পোস্ট সমন্ধিত কোনো প্রশ্ন থেকে থাকলে তা অবশ্যই কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 thoughts on “সিম নিবন্ধন বাতিল করবেন যেভাবে?”

  1. সিম নিবন্ধন বাতিল করার পর ওই সিমে কার নামে বিকাস বা রকেট একাউন্ট আছে এইটা জানা সম্ভব কি না?

    1. জি বিকাশ অফিসে গেলে আপনাকে ভেরিফাই করে তারা জানিয়ে দেবে।

  2. সম্পূর্ণ নাম্বার আসে না কেন?
    শুধু প্রথম ৩ ডিজিট আর শেষের ৩ ডিজিট আসে।

  3. নিবন্ধন বাতিলের পর কি পুনরায় সেটি নিতে পারবো?

Scroll to Top