ফটো ইডিটিং কথাটির সাথে এখন আমরা প্রায় সবাই পরিচিত। প্রযুক্তির কল্যাণে এখন আমরা আমদের ছবিকে সাজিয়ে দিতে পারি এক অনন্যরূপ। ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন কিংবা কোনো ইফেক্টযুক্ত করে আনতে পারি নতুন নতুন চমক। আর কাজগুলো এখন করা সম্ভব কিছু সফটওয়্যার ও অ্যাপ এর সুবাদেই। সে রকমই কিছু ছবি সাজানোর সফটওয়্যার বা অ্যাপস নিয়ে আমরা আজকে কথা বলব। আর সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি এখানে তা হলো আপনাকে এখানে পরিচয় করিয়ে দেয়া হবে ফ্রি ছবি সাজানোর সফটওয়্যার গুলোর সাথে।
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সাথেই থাকুন যাতে পুরো বিষয়টি জানতে পারেন।
চলুন তবে আজকের ছবি সাজানোর সফটওয়্যার গুলো সমন্ধে জেনে আসা যাক-
সেরা ৭ টি ছবি সাজানোর সফটওয়্যার-
1. GIMP
বর্তমান অনলাইন বিশ্বে ফ্রি ছবি সাজানোর সফটওয়্যার এর কথা ভাবতে গেলে বা আপনি যদি সার্চও দিয়ে দেখেন তাহলে গিম্প সবার উপরেই থাকবে। কেননা জনপ্রিয়তার শীর্ষে এখন এই গিম্পের অবস্থান। আপনি এখানে অনেক প্রিমিয়াম ফিচারও ফ্রিতেই পেয়ে যাবেন। যা অন্য সব সফটওয়্যার এ পয়সা দিয়ে কিনতে হয়।
আর এর বাকি সব ফিচার যেমন- লেয়ার, মাস্ক, কার্ভ এবং লেভেল এর বিষয়গুলো এক্কেবারেই অন্যরকম। এছাড়াও আপনার জন্য থাকছে ক্লোন স্ট্যাম্প, এবং হিলিং টুল ব্যবহার এরও সুযোগ। এসব কিছুর বাইরেও গিম্পের ডেভলপাররা গিম্প এর মধ্যে রেখেছেন হাজার হাজার প্লাগ-ইন। যা আপনার ছবি সাজানো বা ফটো ইডিটিংকে পৌঁছে দিতে পারে অনন্য পর্যায়ে। আর এর বাইরেও যদি লাগে আপনি ফটোশপ প্লাগ-ইনও ইনস্টল দিতে পারেন।
Read More:
- সিপিএ মার্কেটিং কী? সিপিএ মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবেন?
- ২০২১ সালে প্রয়োজনীয় ১০টি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস
- 2021 সালে অনলাইনে আয় এর সবচেয়ে সহজ উপায়
- অনলাইনে কোন কাজের চাহিদা বেশি, ১৫ টি কাজের তালিকা
- 2021 সালে 10টি জনপ্রিয় পদ্ধতিতে অনলাইনে আয় [ছাত্র অবস্থায়]
2. Adobe Photoshop Express Editor
তালিকায় দ্বিতীয়তে থাকা এই সফটওয়্যারটি আপনি পিসি এবং অ্যান্ড্রয়েড দুটোতেই ব্যবহার করতে পারবেন। আপনার ফোনে এটি হতে পারে অন্যতম একটি ইডিটিং সফটওয়্যার যা আপনি এর ফিচারগুলোর দিকে একটু তাকালেই বুঝতে পারবেন। তবে এখানে একটি জিনিস বলে রাখা ভালো আর তা হলো এই অ্যাপটি শুধুমাত্র জেপিজি ফরম্যাট সাপোর্ট করে। তবে পিসি ভার্শন এর ক্ষেত্রে আরো কিছু ফিচার রয়েছে। যা এই সীমাবদ্ধতাকে কাটিয়ে তুলতে পারে।
এর অন্যতম সব ফিচারগুলোর মধ্যে আপনি পাচ্ছেন-
- ক্রপ ( Crop)
- স্ট্রেইটেন (Straighten)
- রোটেট (Rotate)
- রো ফটো সাপোর্ট (Raw photo support)
- ৪৫ টি ভিন্ন ভিন্ন ইফেক্ট (45 different effects)
- ১৫ টি বর্ডার ও ফ্রেম (15 borders and frames)
- ব্লে মিশ রিমুভাল (Blemish removal )
3. Canva
ক্যানভা এর নাম আপনি নিশ্চয় শুনে থাকবেন কেননা অনলাইন ফটো ইডিটর হিসাবে এর খ্যাতি অনেক ছড়িয়ে পড়েছে। আর এই খ্যাতির মূল কারণ ক্যানভা আপনাকে ইডিটিং এর জন্য দেয় হাজার হাজার সুবিধা। আপনি ইচ্ছামতো টেমপ্লেট সেই সাথে হাজার হাজার ইফেক্টও ব্যবহার করতে পারবেন। তাই আমি মনে করি এটি আপনার জন্য অন্যতম একটি ছবি সাজানোর সফটওয়্যার।
এছাড়াও আপনার ইডিট করা ছবি কিংবা টেমপ্লেট সংরক্ষণের জন্য আপনাকে দেয়া হবে ১ জিবি ফ্রি স্টোরেজ। আর এই সুবিধা আপনি পাবেন শুধুমাত্রে ক্যানভাতে সাইন ইন করা মাধ্যমে। উক্ত সফটওয়্যারটি অনলাইন ভিত্তিক হওয়ায় মোবাইল কিংবা পিসি এর জন্য একই রকম সুবিধা দিয়ে থাকে।
ক্যানভা এর বহুল ব্যবহৃত ফিচার এর মধ্যে রয়েছে-
- ফিল্টার সমূহ (Filters)
- ব্রাইটনেছ (Brightness/Color adjustment)
- ক্রপ (Crop)
- ফটো রিসাইজিং (Resize )
- রোটেট ( Rotate)
- ফ্লিপ ( Flip )
Read More
- ব্লগে Page View বৃদ্ধি ও Visitor ধরে রাখার ১৫ টি দুর্দান্ত কৌশল
- ফ্রিল্যান্সিং কী? কীভাবে শুরু করবেন? সেরা ১০ ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস
- ডিজিটাল মার্কেটিং কি? কিভাবে শুরু করবেন?
- ঘরে বসে অনলাইনে আয় করার সহজ উপায়
- অনলাইনে আয় করার ১২ টি সহজ উপায় [for student]
4. Ashampoo Photo Optimizer
আপনার যদি হাতে অনেক ছবি থাকে আর সেই ছবি ইডিট করার সময়ও অনেক কম। তাহলে ঘাবড়াবেন না। Ashampoo Photo Optimizer আপনাকে খুব ভালো ভাবেই উক্ত বিষয়ে সাহায্য করতে পারে। এর ইন্টারফেস পুরোপুরি পরিষ্কার অর্থাৎ কোনো রকম অ্যাড আপনি এখানে পাবেন না।
আর ফিচার এর কথা বলতে গেলে বোলওঁতে হয় এর অনন্য সব টুলস এর কথা। যা হয়তো এই ছোট্ট আলোচনায় আপনাকে বোঝানো সম্ভব নয়। তবে এটা মনে রাখবেন ফটো ইডিটিং এর দুনিয়ায় Ashampoo Photo Optimizer এক অনন্য পর্যায়ে চলে গিয়েছে।
5. Fotor
সিম্পল কিছু ইডিটিং এর জন্য ফোটোর আপনার জন্য হালকার মধ্যেই ভালো কিছু উপহার দিতে পারে। এর ব্যাচ প্রোসেসিং টুল একে অন্য সব ফটো ইডিটর থেকে একদম আলাদা করে রেখেছে। এই ফিচারটির জন্যই ফোটর এখন এক অনন্য পর্যায়ে আসীন। এছাড়াও “ফুল প্রুফ টিল্ট শিফট” টুলটি এর কাজও ফোটরকে এত জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে। আর এর কাজ অনেক সহজ যা আপনি খুব অল্পদিনের মাঝেই শিখে ফেলতে পারেন।
তবে আপনি যদি রিটাচিং এর জন্য ফোটরকে ব্যবহার করতে যান তাহলে নিঃসন্দেহে আপনাকে সমস্যায় পড়তে হবে। আপনি মন মতো ফলাফল পাবেন না। কিন্তু ওভার অল বোলওঁতে গেলে ফোটর কিন্তু একটি জনপ্রিয় সফটওয়্যার।
6. BeFunky
BeFunky সফটওয়্যারটি নিঃসন্দেহে ফ্রি এর মধ্যে সেরা একটি ছবি সাজানোর সফটওয়্যার । আমি ব্যক্তিগত ভাবে আপনাকে বোলওঁতে পারি যে আপনি এটির প্রেমে পড়ে যাবেন কিছুদিন ব্যবহার এর মাধ্যমেই। এটা অনলাইন এবং মোবাইল এ আলাদা ভাবে ব্যবহার করার সুযোগ আপনি পাবেন।
এছাড়াও কার্টুনাইজার অ্যাপ হিসাবে এর এক বিশাল খ্যাতি রয়েছে। পাশাপাশি ওয়েল পেইন্টিং এবং পপ আর্ট ইফেক্টস ও থাকছে এর সাথে। আর এটি সম্পর্কে বলা হয়ে থাকে BeFunky হলো সকলের ফটোশপ। অর্থাৎ যে কেউ খুব সহজেই এটি ব্যবহার করতে পারবে। আপনার কোনো ধরনের টেকনিক্যাল জ্ঞান থাকার প্রয়োজন নেই।
7. Pixlr
অনলাইন ফটো ইডিটর হিসাবে তুমুল নাম কামিয়েছে পিক্স এল আর। আপনার বিশ্বাস না হলো অনলাইন ফটো ইডিটর হিসাবে সার্চ করে দেখতে পারেন। আপনি এক্কেবারে শুরুতেই পিক্স এল আর কে পেয়ে যাবেন। ব্যাক গ্রাউন্ড রিমুভ থেকে শুরু করে ইউটিউব কিংবা ব্লগ পোস্টের থাম্বনেইল বানানোর জন্য এটি তুমুলভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
এর দুটো ভার্শন আপনি পাবেন তার মধ্যে একটি হলো-
Pixlr – X এবং অপরটি হলো Pixlr -E । শুধুমাত্র ৫ মিনিট ব্যয় করেই আপনি এখান থেকে ভালো মানেরে একটি ইউটিউব থাম্বনেইল বা ব্লগপোস্ট এর থাম্বনেইল তৈরি করে ফেলতে পারেন।
যারা ফোন কিংবা পিসিতে যারা ফটো ইডিটর ইনস্টল দিতে চান না তাদের জন্য আমার সাজেশন পিক্স এল আর। আশা করি আপনি এর সাথে খুব শীঘ্রই পরিচিত হয়ে উঠবেন।
Read More
- ডিজিটাল মার্কেটিং কি? কিভাবে শুরু করবেন?
- এফিলিয়েট মার্কেটিং কি? কিভাবে শুরু করবেন
- সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি ? কিভাবে এবং কেন করবেন
- ফ্রিল্যান্সিং কী? কীভাবে শুরু করবেন? সেরা ১০ ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস
পরিশেষে-
ফটো ইডিটিং সফটওয়্যার এখন আপনি অনেক পাবেন। আর যদি ফ্রি এর আশায় থাকেন তাহলেই সমস্যা নেই। তবে আপনি যদি ফ্রি খুঁজেন তাহলে আপনাকে একোটা বিষয় করতেই হবে আর তা হলো একাধিক সফটওয়্যার ব্যবহার করা।
আর উপরোক্ত সফটওয়্যার সবগুলোই আপনার কাজে আসতে পারে যদি আপনি তার সঠিক ব্যবহার করতে জানেন। সঠিক ব্যবহার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বোলওঁতে বোঝায় তা সম্পর্কে পুরোপুরি জানা। যদিও উপরোক্ত সফটওয়্যার গুলোর ক্ষেত্রে তা বেশি একটা লাগবে না।
আশা করি উপরোক্ত জিনিসগুলো আপনার কাজে আসবে। এ রকমই নিত্য নতুন টেক সমন্ধিত বিষয় জানতে পাশেই থাকুন। আর উপরোক্ত পোস্টটি সমন্ধে কোন রকম মন্তব্য থাকলে তা জানান কমেন্ট বক্সে। ধন্যবাদ।
Nc