জনতা ব্যাংক একটি বাংলাদেশী ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান যা ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি বাংলাদেশের সরকারী ব্যাংক গুলোর মধ্যে একটি।
এই ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় অবস্থিত এবং বিভিন্ন অঞ্চলে শাখা অফিস রয়েছে।

জনতা ব্যাংক বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরে ব্যাংকের মাধ্যমে, আর্থিক সেবা প্রদান করে। এই ব্যাংকের সেবা গুলো মূলত ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।
ব্যাংক টি জনগণের আর্থিক উন্নয়নে অবদান রাখার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যক্তিগত ও প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধরনের ব্যাংকিং সেবা পাওয়া যায়, যেমন- ব্যক্তিগত একাউন্ট, ব্যাংক সঞ্চয় হিসাব, ব্যক্তিগত ঋণ, ব্যবসায়িক ঋণ, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, অনলাইন ব্যাংকিং সেবা, টেলিফোন ব্যাংকিং, এটিএম সেবা, বিদেশী মুদ্রা আদান-প্রদান সেবা ইত্যাদি।
এছাড়াও এই ব্যাংক বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে এবং সামাজিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প চালু রাখেন।
বাংলাদেশের জনগণের ব্যাংকিং সেবা প্রদানে জনতা ব্যাংকের অবদান রয়েছে। এবং এটি দেশের বাণিজ্যিক ও আর্থিক উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত।
তাই আপনি যদি টাকা জমানোর কথা চিন্তা করেন, অবশ্যই ডিপিএস করতে হবে। ডিপিএস করার জন্য বাংলাদেশের সব থেকে জনপ্রিয় ব্যাংক হচ্ছে জনতা ব্যাংক এখানে আপনি নিশ্চিন্তে, টাকা জমা রাখতে পারেন।
তো জনতা ব্যাংক ডিপিএস কত প্রকার ও কি কি? জনতা ব্যাংক ডিপিএস করতে কি কি লাগবে? সে বিষয়ে জানতে, আমাদের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
জনতা ব্যাংক ডিপিএস কি?
জনতা ব্যাংকে ডিপিএস বোঝায় ডিপোজিট পেনশন স্কিম (Deposit Pension Scheme, সংক্ষেপে ডিপিএস)। এটি একটি সঞ্চয় পদ্ধতি যা জনগণের জন্য উন্নতি সৃষ্টির লক্ষ্যে ভূমিকা পালন করে।
ডিপিএস একটি পেনশন স্কিম যা আমদানির মাধ্যমে মাসিক আয় সৃষ্টি করে, জনগণকে পূর্বনির্ধারিত মেয়াদ ধরে নিরাপদ একটি সঞ্চয় উপার্জন করার সুযোগ প্রদান করে।
জনগণ ডিপিএস এর মাধ্যমে নিরাপদ ও স্থিতিশীল ভাবে টাকা সঞ্চয় করতে পারেন। এই সঞ্চয় পদ্ধতির জন্য জনগণ একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বার্ষিক সঞ্চয় হতে সুদ গ্রহণ করতে পারেন।
আর জনতা ব্যাংক ডিপিএস নির্দিষ্ট সময়ের পাশাপাশি বাড়াতে থাকে এবং মেয়াদে শেষ হয়ে গেলে, জমা কৃত টাকার পরিমানে সুদ সহ উত্তোলন করা যায়।
ডিপিএস প্রক্রিয়া জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে পূর্বনির্ধারিত একটি সঞ্চয় পদ্ধতি যা নিয়মিত পেনশন সঞ্চয় করতে, জনগণকে আর্থিক সুরক্ষা ও স্থায়িত্ব পালন করে।
এই পদ্ধতির মাধ্যমে জনগণ সঞ্চয় একাউন্টে নির্ধারিত মেয়াদে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা করে এবং এর বিবরণী সংক্রান্ত প্রদত্ত মেয়াদে আয় সৃষ্টি করে, যা নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য পূর্ণ করা হয়।
এই পদ্ধতি জনগণকে একটি নিরাপদ ও স্থিতিশীল সঞ্চয় প্রদান করে এবং ভবিষ্যতে আর্থিক সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে।
জনতা ব্যাংক ডিপিএস এর প্রকারভেদ
ডিপিএস মূলত পাঁচ প্রকারের হয়ে থাকে। তাই আমি আপনাদের সুবিধার জন্য এখানে জনতা ব্যাংক ডিপিএস সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেব।
তো চলুন জেনে নেয়া যাক জনতা ব্যাংক ডিপিএস এর প্রকারভেদ গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত।
1. অনিবাসী পেনশন স্কিম জনতা ব্যাংক ডিপিএস।
2. জনতা হজ ডিপোজিট স্কিম জনতা ব্যাংক ডিপিএস।
3. জনতা ডিপোজিট স্কিম জনতা ব্যাংক ডিপিএস।
4. জনতা ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং ডিপিএস।
5. জনতা ব্যাংক নারী কল্যাণ ডিপিএস প্রকল্প।
জনতা ব্যাংকের ডিপিএস (Deposit Pension Scheme) বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে। নিম্নে জনতা ব্যাংকের ডিপিএস সম্পর্কে নিচের অংশে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হলোঃ
অনিবাসী পেনশন স্কিম (Non-Resident Pension Scheme):
এই প্রকারের ডিপিএস অনিবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য উপলব্ধ। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশি নাগরিকরা এই স্কিমের মাধ্যমে নির্দিষ্ট মেয়াদে টাকা জমা করতে পারেন।
জনতা হজ ডিপোজিট স্কিম (Janata Hajj Deposit Scheme):
এই স্কিমটি হজ যাত্রীদের জন্য প্রদান করা হয়। জনগণ এই স্কিমে মাসিক ভিত্তিতে জমা করে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা সঞ্চয় করে, হজ যাত্রার জন্য প্রদান করতে পারেন। শুধুমাত্র জনতা হজ ডিপোজিট স্কিমে কোন প্রকার সুদ প্রদান করা হয় না।
জনতা ডিপোজিট স্কিম (Janata Deposit Scheme):
এই স্কিমে সাধারণ গ্রাহকরা নির্দিষ্ট মেয়াদে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা করে, সঞ্চয় করতে পারেন। টাকার পরিমাণ, মেয়াদ এবং সুযোগ গুলো নির্দিষ্ট হতে পারে।
এবং আপনার জমাকৃত টাকার উপর, নির্দিষ্ট পরিমাণের সুদ প্রদান করা হবে যা আপনার জমানো টাকার মেয়াদ শেষ হলে একসঙ্গে উত্তোলন করতে পারবেন।
জনতা ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং ডিপিএস (Janata Bank School Banking DPS):
এই স্কিমটি শিক্ষার্থীদের জন্য প্রদান করা হয়। শিক্ষার্থীরা এই স্কিমে নির্দিষ্ট মেয়াদে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা করে সঞ্চয় করতে পারেন।
জনতা ব্যাংক নারী কল্যাণ ডিপিএস প্রকল্প (Janata Bank Nari Kalyan DPS Project):
এই স্কিমটি নারীদের জন্য প্রদান করা হয়। নারীদের জন্য এই স্কিমে নির্দিষ্ট মেয়াদে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা করে সঞ্চয় করতে পারেন। নির্দিষ্ট মেয়দের মধ্যে প্রতিবছর ডিপিএস এ টাকার পরিমাণ অনুযায়ী সুদ প্রদান করা হবে।
উপরে উল্লিখিত সব গুলো ডিপিএস প্রকার জনতা ব্যাংকের দ্বারা প্রদান করা হয় এবং এ গুলো জনগণের আর্থিক সুরক্ষা ও স্থায়িত্ব প্রদানে সাহায্য করে।
জনতা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং প্রয়োজনীয় কাজগপত্র
জনতা ব্যাংকে একটি একাউন্ট খুলতে প্রথমে আপনার সামান্য কাজগপত্র সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা থাকতে হবে। নিম্নলিখিত কাজগপত্র গুলো প্রয়োজন হতে পারে। যেমন-
আবেদন ফরম:
প্রথমে আপনাকে জনতা ব্যাংকের একাউন্ট খোলার জন্য আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। আবেদন ফরম ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা যাবে বা সাধারণত ব্যাংকের শাখার পাওয়া যায়।
আইডেন্টিটি প্রমাণ:
আপনাকে নিজের পরিচয়পত্র যেমন- জন্ম সনদ, ন্যাশনাল আইডেন্টিটি কার্ড (এনআইডি), পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদির একটি কপি সংযুক্ত করতে হবে।
যদি আপনি অন্য কোনও পরিচয়পত্র প্রদান করতে চান, তবে আপনাকে ব্যাংকে সংশ্লিষ্ট বিবরণ জানাতে হবে।
ঠিকানার প্রমাণ:
জনতা ব্যাংক আপনার স্থায়ী ঠিকানা প্রমাণের জন্য বিভিন্ন কাগজপত্র গ্রহণ করে। এটি হতে পারে বিদ্যুৎ বিল, পাসপোর্ট, মালিকানার কাগজপত্র, ভূমির নথি ইত্যাদি। আপনাকে অবশ্যই সত্যিকারের প্রমাণ সরবরাহ করতে হবে।
ছবি:
জনতা ব্যাংক ডিপিএস খোলার জন্য একটি ছবি প্রয়োজন হবে যা আপনার ডিপিএস প্রোফাইলে যোগ করতে হবে।
উপরে উল্লিখিত কাগজপত্র গুলো সঠিকভাবে সংগ্রহ করে নিতে হবে। এবং তারপরে আপনি জনতা ব্যাংকে সে গুলো সংযুক্ত করে, একাউন্ট খুলতে পারবেন।
এই বিষয়ে আপনার যদি কোনও সন্দেহ বা প্রশ্ন থাকেন, তবে সরাসরি জনতা ব্যাংকের শাখায় যোগাযোগ করে সঠিক তথ্য ও সহায়তা গ্রহণ করতে পারেন।
শেষ কথাঃ
বন্ধুরা আজকের এই আর্টিকেলে জনতা ব্যাংক ডিপিএস কি এবং ডিপিএস কত প্রকার ও কি কি এ বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা পেয়ে গেলেন।
এখন সুরক্ষিত ভাবে, আপনার টাকা সঞ্চয় করে বা ডিপিএস করে রাখতে চাইলে, জনতা ব্যাংকের যেকোনো একটি প্রকল্প বেছে নিতে পারেন।
আর জনতা ব্যাংক ডিপিএস সম্পর্কে আপনার যদি আরো কোন কিছু জানার থাকে, অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
ধন্যবাদ।