বর্তমানে যারা, ওয়েসাইট বা ইউটিউব চ্যানেলে এসইও নিয়ে কাজ করে। তারা সকলেই ব্যাকলিংক সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন।
এসইও এর জগত যেমন- গুরুত্বপূর্ণ তেমনি, কঠিন একটি কাজ হলো ব্যাকলিংক। উক্ত ব্যাকলিংক ওয়েবসাইট এর রেঙ্কিং করার জন্য অনেক বড় ভূমিকা পালন করে।
তবে ব্যাকলিংক নিয়ে অনেকের মনে অনেক ভুল ধারণা আছে। অনেক এর কাছে ব্যাকলিংক অন্য ওয়েবসাইটে গিয়ে শুধু নিজের ওয়েবসাইট এর লিংক তৈরি করার মতো, সহজ আবার কারো কাছে এটি অনেক কঠিক একটি কাজ।
তাই আমরা এখানে আপনাদের জনাব, ব্যাকলিংক কি? কেন ব্যাকলিংক করার দরকার? কিভাবে ব্যাকলিংক করবেন? উক্ত বিষয় গুলোর সঠিক তথ্য পেতে নিচে দেওয়া ধাপ গুলো অনুসরণ করুন।
ব্যাকলিংক কি? (What is Backlink)
ব্যাকলিংক হচ্ছে একটি ওয়েবসাইট এর সাথে অন্য একটি ওয়েবসাইট এর লিংক যুক্ত করে দেওয়া।
মনে করুন- একটি ওয়েবসাইট হলো অনলাইন আয় আর অন্যটি হলো অনলাইন ইনকাম। এখন অনলাইন আয়, ওয়েবসাইটে কোন পোস্ট বা পেজে অনলাইন ইনকাম, ওয়েবসাইট এর লিংক দেওয়া হয়েছে তাহলে, অনলাইন ইনকাম ওয়েসাইটটি অনলাইন আয়, ওয়েবসাইট থেকে একটি ব্যাকলিংক পেয়েছে।
অনলাইন সার্চ ইঞ্জিন গুলো ব্যাকরিংকে এক একটি ভোট হিসেবে গনণা করে থাকে। যে ওয়েবসাইট এরকটি ব্যাকলিংক পায় সে তার পক্ষে একটি ভোট পেয়ে যায়। এরকম ভাবে ব্যাকলিংক যত বৃদ্ধি হবে তত অর্গানিক রেঙ্ক বাড়বে।
আমরা আশা করি আপনি উক্ত আলোচনা অনুসরণ করে বুঝতে পারছেন, ব্যাকলিংক আসলে কি? যদি না বুঝে থাকেন। তবে দয়া করে উক্ত আলোচনাটি আরো একবার পড়ুন।
কেন ব্যাকলিংক দরকার? (Why do you need backlinks)
এসইও এর জগতে থাকা লোকেরা ব্যাকলিংক এর গুরুত্ব সম্পর্কে অনেক ভালো ভাবে জানে। তারপরেও যারা জানে না বা নতুন তাদের জন্য সংক্ষেপে কিছু বলব।
আমরা উপরের আলোচনায় বলেছি, ব্যাকলিংকে সার্চ ইঞ্জিন এক একটি ভোট হিসেবে গনণা করে। যার ব্যাকলিংক যত বেশি হতে তার ভোট ও তত বেশি হবে।
উক্ত ভোট গুলো সার্চ ইঞ্জিন কে কনটেন্ট এর মান ও উপকারীতা নির্দেশ করে। যার ব্যাকলিংক বেশি সার্চ ইঞ্জিন মনে করে তার কনটেন্ট এর মান ভালো।
এসইও এর জন্য ব্যাকলিংক অনেক পূর্বে থেকেই করা হয়। তবে সময় এর সাথে সাথে ব্যাকলিংক এর ধরণের মতো অনেক পরিবর্তন এসেছে।
গুগল এ রেংকিং এলগোরিদম এর মধ্যে একটি হলো Pagerank যেখানে ব্যাকলিংক এর কথা অনেক আগে থেকেই ছিল। তবে সময় এর সাথে এই এলগোরিদম টির মধ্যে অনেক পরিবর্তন হয়েছে।
তাছাড়া গুগল তাদের টপ ৩টি রেঙ্কিং ফেক্টর এর মধ্যে ব্যাকলিংক একটি বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।
এতে করে আপনি বুঝতেই পারছেন ব্যাকলিংক এর গুরুত্ব কতটুকু। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক ব্যাকলিংক আপনার কি কি উপকার গুলো করে, এবং কি জন্য আপনার ব্যাকলিংক করা প্রয়োজন।
- অর্গানিক রেংকিং
- ফাস্ট ইনডেক্সিং
- ডিএ ও পিএ বৃদ্ধি
- অর্গানিক ট্রাফিক
আপনি যদি ব্যাকলিংক করেন, তাহলে উক্ত উপকারীতা গুলো ভোগ করতে পারবেন।
ব্যাকলিংক কোথায় করবেন ? (Where to do backlinks)
উক্ত আলোচনাতে ব্যাকলিংক সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলেন। এখন আপনার মনে প্রশ্ন হতে পারে যে, ব্যাকলিংক কোথায় করবেন।
মানে একটি ওয়েবসাটে অনেক লিংক দেওয়া থাকে, কোন লিংকটা দিয়ে ব্যাকলিংক তৈরি করবেন। আসলে ওয়েবসাইটে প্রধান দুইটি জায়গায় ব্যাকলিংক করা হয়।
একটি হলো রুট ডোমেইনে অন্যটি হলো কনটেন্ট। তো চলুন এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
রুট ডোমেইন ব্যাকলিংক
রুট ডোমেইন হলো প্রধান ডোমেইন। যেমন- আমাদের এই ওয়েবসাইট এর রুট ডোমোইন নেম হলো jit.com.bd.
আমরা উপরে বলেছি ডোমেইন অথরিটি বা ডিএ এর বিষয়ে। একটি ওয়েবসাইটে যত বেশি কোয়ালিটির ব্যাকলিংক করা হয় তার ডিএ অনেক বৃদ্ধি পায়।
আর ডিএ বৃদ্ধি পেলে আপনার ওয়েবসাইট গুগল এর কাছে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।
তবে ডিএ বাড়ানোর আরো একটি শর্ত হলো ব্যাকলিংক অবশ্যই রুট ডোমেইন হতে হবে। আর যখন আপনার ওয়েবসাইট এর ডিএ বৃদ্ধি হতে তখন সম্পুন্ন ওয়েবসাইট এর রেঙ্কিং উন্নতি হবে।
তাই আপনাকে রুট ডোমেইন এর উপর ব্যাকলিংক তৈরি করে ডিএ বাড়াতে হবে।
কনটেন্ট ব্যাকলিংক
কোনো ওয়েবসাইট এর পেজ, পোস্ট কিংবা ইমেজ গুলো হলো- ওয়েবসাইট এর কনটেন্ট। এসকল কনটেন্ট এর স্পেসিফিক লিংক থাকে।
যেমন- আমাদের ওয়েবসাইটে ওয়েবসাইট থেকে আয় করার উপায় নিয়ে লিখা পোস্টের url হলো jit.com.bd/income for website/ এটিই হলো একটি কনটেন্ট লিংক।
আমরা যখন উক্ত লিংকে দিযে কোন ব্যাকলিংক তৈরি করব তখন সেটিকে কনটেন্ট ব্যাকলিংক বলা হবে।
একটি ওয়েবসাইট যখন কনটেন্ট ব্যাকলিংক তৈরি করা হয়, তখন তার পেজ অথরিটি এবং ডোমেইন অথরিটি বেড়ে যাবে।
কিভাবে ব্যাকলিংক করবেন ? (How to do backlink)
উক্ত আলোচনায় আপনাকে জানিয়েছি, ব্যাকলিংক কি? কেন ব্যাকলিংক করবেন? এখন আমি আপনাকে জানাব কিভাবে ব্যাকলিংক করবেন?
একটি ওয়েবসাইট এর জন্য ব্যাকলিংক করা যেমন, কঠিন কাজ ঠিক তেমনি আবার সহজ।
আপনি যদি কোয়ালিটি কনটেন্ট পাবলিশ করতে পারেন। এমন কিছু ট্রাফিককে দিতে পারবেন, যা সত্যি উপারে আসবে।
তাহলে আপনি ভালো ব্যাকলিংক পাবেন, আবার আপনি স্প্যাম করেও অনেক ব্যাকলিংক করতে পারবেন। তবে তা আপনাকে অল্প সময়ের উপকার করবে দীর্ঘস্থায়ী হবে না।
তো চলুন জেনে নেওয়া যাক ব্যাকলিংক করার জন্য আপনাকে কি করতে হবেঃ
Linkable এসেট তৈরি করুন
linkable এসটে হলেঅ এমন কোন কনটেন্ট যে কনটেন্টে সবাই ব্যাকরিংক তৈরি করতে দিবে। যেমন হতে পারে আপনি কোন একটি টপিক নিয়ে রিসার্চ করে, তার রিপোর্ট দিলেন।
হতে পারে কোন সিক্রেট তথ্য। কোন সফটওয়্যার ইত্যাদি। যখন মানুষ আপনার সেই এসেট ব্যবহার করবে তখন তারা আপনাকে ক্রেডিট দিবে।
আপনি ব্যাকলিংক নিয়ে কনটেন্ট লেখার আগ সময় নিয়ে রিসার্চ করে ১-১৫ টি ব্যাকলিংক বিল্ডিং টিপস বের করলেন। যা আগে কেউ করে নাই।
তারপর অন্যান্য ওয়েবসাইট গুলো থেকে যখন আপনার এই রিসার্চ ভালো লাগবে তখন তারা সেটি ব্যবহার করে আপনাকে ক্রেডিট দিবে। এরকম ভাবে কিছু তৈরি করুন যা, ব্যবহার করে মানুষ আপনাকে ক্রেডিট দিবে।
এছাড়া আরো কিছু উপায় ব্যবহার করতে পারেন যেমন-
- গেস্ট পোস্টিং
- ব্লগ কমেন্টিং
- ব্লগার রিভিউ
- The moving man method
- Broken link building
- Link Reclamation
- Social Media ইত্যাদি।
আপনি ওয়েবসাইট এর জন্য, উক্ত সকল উপায় ব্যবহার করে, ব্যাকলিংক করতে পারবেন। যা আপনার ওয়েবসাইটে অনেক উন্নতি করতে সহায়তা করবে।
আরো পড়ুনঃ
- অফ পেজ এসইও কি ? off page SEO করার উপায়
- অন পেজ এসইও কি ? কিভাবে অন পেজ এসইও করবো ?
- গেষ্ট পোষ্ট কি । গেস্ট পোস্টিং কিভাবে করবেন 2022
- ইউটিউব ভিডিও এসইও কি? ভিডিও র্যাংক করানোর 100% কার্যকরি কৌশল
শেষ কথাঃ
তো বন্ধুরা, এই পোস্টে আপনি জানতে পারলেন, ব্যাকলিংক কি? কিভাবে ব্যাকলিংক করবেন? আপনি যদি ওয়েবসাইটে সঠিক ভাবে ব্যাকলিংক করতে চান? তাহলে উপরে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ব্যাকলিংক তৈরি করা শুরু করুন।
আমাদের লেখা আপনার কাছে কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।