আর্টিকেল লেখার নিয়ম | কিভাবে আকর্ষনীয় আর্টিকেল লিখবেন: যারা ব্লগিং পেশা নিয়ে আছেন তারা তারা অবশ্যই এটা জানেন যে, ব্লগপোস্ট তথা একটা কনটেন্ট একটা ওয়েবসাইটের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ । বলা হয়ে থাকে Content Is King for a Website, সুতরাং বুঝতেই পারছেন আপনি যদি ব্লগিং করতে চান তাহলে আপনার ব্লগ পোস্ট অবশ্যই গুণগতমান সম্পন্ন হতে হবে।
আপনি এলোপাথাড়ি হাজারটা ব্লগ পোস্ট করার চেয়ে গুণগত মানের 5 থেকে 10 টি পোস্ট করলে আপনি ভালো ফলাফল পাবেন। তাই আজকে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করছি, কিভাবে একটি ভাল মানের ব্লগ পোস্ট লিখবেন, একটি ব্লগ কনটেন্ট/আর্টিকেল লেখার যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বা গুরুত্বপূর্ণ ধারা বা নিয়ম কানুন সেগুলো বিস্তারিত আজকে আমি এখানে আলোচনা করছি । তো চলুন শুরু করা যাক।
2020 সালে অনলাইনে আয়ের সেরা মাধ্যমগুলো।
ব্লগ এর বিষয় নির্বাচন:
একটি আকর্ষণীয় ব্লগ পোস্ট লিখতে হলে আপনাকে অবশ্যই লেখার বিষয় নির্বাচন করতে হবে। আপনি ব্লগে লেখার ক্ষেত্রে বিষয় নির্বাচন করার জন্য যে বিষয়টি আপনি খুব ভালো জানেন, ভালো বোঝেন এবং যে বিষয়টি সম্পর্কে আপনি ভালো ভাবে ভাবতে পছন্দ করেন, রিসার্চ করতে পছন্দ করেন, সেই বিষয়ের উপর লিখুন। তাহলে অবশ্যই আপনার লেখাটি একটি ভালো মানের লেখা হিসেবে বিবেচিত হবে।
আর এমন কোন বিষয় নির্বাচন করা যাবে না যে বিষয়ে আপনি কোন কিছুই জানেন না। আপনার অজানা বিষয় নিয়ে যদি ব্লগ পোস্ট লিখতে যান তাহলে সেই বিষয়ে আপনাকে রিসার্চ করতে করতে সময় কেটে যাবে কিন্তু ভালোভাবে সে লেখাটি আপনি প্রকাশ করতে পারবেন না । এমনকি ভিজিটরদের আকর্ষিতও করতে পারবেন না।
সেজন্য ব্লগে লেখার ক্ষেত্রে যে বিষয়টি আপনি সবচেয়ে ভালো বুঝেন, সেই বিষয়টি নিয়েই ভাবতে থাকুন, আর্টিকেল লিখতে থাকুন এবং সে বিষয়ে লেখা গুলো আপনার ভিজিটরদের মাঝে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন ভালো মানের লেখা যে বিষয়য়েই হোকনা কেন সাজিয়ে গুছিয়ে লিখতে পারলে সে বিষয়ে আপনি সফল হতে পারবেন।
একটি ভালো মানের আর্টিল লিখতে হলে যে বিষয়গুলি মাথায় রাখতে হবেঃ
রির্সাচ: আর্টিকেল লেখার নিয়ম
আপনি যে বিষয়ের লিখবেন অবশ্যাই সেই বিষয়ে আপনাকে রিসার্চ করতে হবে। গুগল, ইউটিউব বা অন্যন্য জায়গা থেকে একাধিক বা রিসার্চ করে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। তারপর তা নিজের ভাষায় সুন্দর ও সহজলভ্য ভাষায় উপস্থাপন করতে হবে।
হেডলাইন এর ব্যবহার: আর্টিকেল লেখার নিয়ম
ব্লগে লেখার জন্য হেডলাইন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস। লেখার শুরুতে অবশ্যই লেখার হেডিং টি আপনাকে খুবই বিবেচনা করে নির্ধারণ করতে হবে। কেননা আশি শতাংশ পাঠক যারা হেডলাইন দেখে একটি লেখাকে পড়ার মনস্থ করে। যদি আপনার হেডলাইনটা একটি ভিজিটরের পছন্দ মতো না হয় তাহলে সে আপনার লেখাটিকে কখনোই পড়বেনা।
সে জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হল, লেখা হেডলাইন টি খুব ভালোভাবে দেওয়া। একটি আর্টিকেলের হেডলাইন যত সুন্দর হবে, ভিজিটরদের লেখাটি পড়ার চান্স ততটাই বেড়ে যাবে। যদি আপনার হেডলাইন টি সুন্দর না হয় আপনার লেখাটির যতই ভালো হোক না কেন আপনার লেখাটি কোন ভিজিটর পড়তে চাইবে না। কেননা একটি লেখা হেডলাইন এর দ্বারাই বিচার করা হয়। আপনার লেখার দৈর্ঘ অনুযায়ী কয়েকটি H2 হেডলাইন ব্যবহার করতে হবে।
প্রকৃত ও সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডটি হেড লাইনের বৈশিষ্ঠঃ
- হেড লাইন 5 থেকে 9 ওয়ার্ডে মধ্যে লিখা
- যে কোন একটি পাওয়ার ওয়ার্ড বেবহার করা (যেমন, best, pawerful, main, Challange, perfact)
- যে কো একটি সংখ্যা ব্যবহার করা
- যে কোন একটি ব্যাকেট ব্যবহার করা (জরুরী নয়)
ভূমিকাঃ সুন্দরভাবে সাজিয়ে ভূমিকা লিখতে হবে যাতে একজন ভিজিটর ১ম পেরাগ্রাফ পড়েই পুরো আর্টিকেল এর বিষয়টি বুঝতে পারে।
গ্রামার ও শুদ্ধ বানান: আর্টিকেল লেখার নিয়ম
ব্লগ রাইটিং এর ক্ষেত্রে গ্রামার ও শুদ্ধ বানান খুবই গুরুত্বপূর্ণ । কেনানা গ্রামার ও বানান অশুদ্ধ থাকলে আপনার রিডার আস্থা হাড়িয়ে ফেলবে। আর যখন আপনার লেখাটিতে গ্রামার এবং অশুদ্ধ বানান থাকবে তখন আপনার লেখাটি থেকে ভিজিটররা দূরে সরে যাবে ।
তাই একটি পোস্ট বা আর্টিকেল প্রকাশ করার পূর্বে অবশ্যই রিভিশন করতে হবে। শুদ্ধ বানান এবং গ্রামার এর উপর খুবই গুরুত্ব দিতে হবে।
ভিজিটরদের আকর্ষন: কিভাবে আকর্ষনীয় আর্টিকেল লিখবেন
আপনার লেখাটি এমন ভাবে শুরু করতে হবে যেন শুরুতেই ভিজিটরদের আকর্ষণ করা যায়। কেননা ভিজিটর সবসময় আকর্ষিত কোন বিষয় নিয়ে পড়তে পছন্দ করেন। যখনই আপনার লেখাটি কোন আকর্ষণমূলক হবে তখন এর ভিজিটর আপনার লেখাকে বেশি সময় দিয়ে পড়বে।
আপনার লেখাটিতে কিছু ফান, এবং কিছু অজানা বিষয় তুলে ধরুন ভিজিটর এর আগে কখনো পড়েনি। আর যখন একটা ভিজিটর কোন নতুন কিছু জানতে পারবে এবং শিখতে পারবে তখন আপনার লেখার প্রেমে পড়ে যাবে। আর যখন আপনাকে পছন্দ করবে তখনই আপনি পূর্ণতা লাভ করবেন। আপনার লেখায় যদি কোন ভিজিটর বা পাঠক না পড়ে তাহলে সেই লেখার কোনো মূল্যই থাকবে না।
একটি লেখার পূর্বে অবশ্যই এই লেখাটি সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা নিতে হবে এবং ভিজিটরদের আকর্ষণ করে লেখাটা লিখতে হবে।
ছবি এবং ভিডিও ব্যবহার
আপনার ব্লগ পোস্ট লেখার সময় ব্লগের মধ্যে লেখার বিষয় অনুযায়ী সুন্দর ছবি ব্যবহার করতে হবে। যেন ভিজিটররা আপনার লেখার মাঝে ছবি দেখেই বুঝতে পারে এ লেখাটির বিষয় সম্পর্কে। পারলে ইনফোগ্রাফিক ব্যবহার করবেন।
যাতে ভিজিটররা ছবি থেকেও তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। এমনকি আপনার লেখার রিলেটেড কোন ভিডিও লেখার মাঝে উপস্থাপন করতে পারেন। অনেক ইউজার রয়েছে যারা দীর্ঘ সময় লেখাটাকে পড়তে পছন্দ করেন না ভিডিওর মাধ্যমে সেই তথ্যটি জানার চেষ্টা করে সেক্ষেত্রে ভিডিওটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
মোটিভেশনাল সমাপনী।
আপনার লেখাটির শেষের দিকে মোটিভেশনাল সমাপনী করতে হবে। আপনার সম্পূর্ণ লেখাতে যে বিষয়গুলো রয়েছে তার সারাংশ বা সার মর্ম টিকে সংক্ষিপ্তভাবে মোটিভেশনাল সমাপনীতে তুলে ধরতে হবে। এটা একটি ইউজার একটি রিডার খুবই পছন্দ করেন।
থাম্বনেইল ইমেজ ব্যবহার
আপনার একটি ব্লগ পোস্ট কে আকর্ষণীয় করে তুলতে হলে অবশ্য একটি থাম্বনেইল ইমেজ ব্যবহার করতে হবে। থাম্বনেইল ইমেজটা হল একটি ওয়েবসাইটে বা একটি ব্লগে প্রবেশ করার পর প্রত্যেকটা পোস্ট এর সাথে যে ইমেজটি দেখা যায় সেটাই হল থাম্বনেইল ইমেজ।
একটি ইমেজ যতটা আকর্ষণীয় হবে সেই আর্টিকেল এ ক্লিক করার হার ততটাই বেড়ে যাবে। তাই একটি ব্লগ পোস্ট করার সময় একটি অপটিমাইজ, ও সুন্দর থাম্বনেইল ইমেজ তৈরি করতে হবে ।
আসলে একটি ব্লগ পোস্টে ক্লিক করার জন্য একটি থাম্বনেইল ইমেজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেখা গেছে একটি ব্লগ পোস্ট বা একটি ইউটিউব ভিডিওর উপর ইমেজের উপর ডিপেন্ড করে প্রায় 25% ভিজিটর সে বিষয়টি নিয়ে পড়া/ দেখার ইচ্ছা পোষণ করে।
ট্যাগ এর ব্যবহার
আপনার লেখাটির বিষয়ে কয়েকটি ট্যাগ ব্যবহার করা যেতে পারে। একটি ব্লগপোস্টে ট্যাগ যেমনটা একটি সার্চ ইঞ্জিন এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ তেমনি ইউজার ফ্রেন্ডলি ও হতে পারে। যখন একটা ইউজার আপনার ব্লগ পোস্টটিকে পড়তে থাকবে তখন যখন ট্যাগ গুলোকে দেখবে । তখন আপনার পোস্ট সম্পর্কে তার সুস্পষ্ট ধারণা চলে আসবে সে জন্য একটি ব্লগ পোস্টে ট্যাগ এর ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ক্যাটাগরি নির্ধারণ
আপনি একটি ব্লগ পোস্ট/আর্টিকেল লেখার পর সেটি পাবলিশ করার আগে অবশ্যই একটি ক্যাটাগরিতে সিলেক্ট করতে হবে। যাতে করে কোন ভিজিটর কোন ক্যাটাগরির কোন পোস্ট খুঁজতে সে ক্যাটাগরিতে ক্লিক করে সহজেই পেয়ে যায়। তাই লেখাটির প্রকাশ করার পূর্বে অবশ্যই এমন একটি ক্যাটাগরি নির্ধারণ করতে হবে, যে ক্যাটাগরির সাথে বা বিষয়ের উপর লেখাটি মিল রয়েছে।
সঠিক ক্যাটাগরি নির্বাচনের ওপর নির্ভর করে আপনার লেখাটি ভিজিটর দের কাছে পৌঁছার রাস্তা।
টেবিল কন্টেন্ট এর ব্যবহার
টেবিল অফ কনটেন্টের ব্যবহার। টেবিল অফ হল এমন একটি টুলস বা নিয়ম, যদি খুব দীর্ঘ পোস্ট হয় তাহলে প্রত্যেকটা হেডলাইন একটি টেবিল আকারে লেখার শুরুতে প্রদর্শন করবে এবং ইউজার রা যেটা পড়তে ইচ্ছা পোষণ করবে সেই হিডার এর উপর ক্লিক করে সরাসরি সেই হেড লাইনে চলে যাবে।
টেবিল অব কন্টেন্ট আসলে দীর্ঘ কনটেন্ট এর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। ছোটখাটো কোনো কনটেন্ট বা লেখার জন্য টেবিল অফ কনটেন্টের কোন প্রয়োজন নেই।
সবশেষে আমাদের পরামশঃ
আপনার আর্টিকেল বা লেখা যাতে ভিজিটর রা পছন্দ করে সেই জন্য ভালো এবং কোয়ালিটি আর্টিকেল লিখতে হবে। আপনার আর্টিকেল যদি একজন ইউজারের কাছে ভালো লাগে তাহলে বার বার আপনার সাইটে ভিজিটর প্রবেশ করবে।
ব্লগ পোস্টে কতগুলো ট্যাগ ব্যবহার করা যাবে ? যদি বলতেন উপকৃত হতাম
আপনার ইচ্ছামতো ব্যবহার করতে পারবেন। তবে যদি ট্যাগ ইন্ডেক্স করেন তবে যতি বেশি ট্যাগ ব্যবহার করবেন ততগুলো ইন্ডেক্স হবে এতে আপনার কন্টেন্ট ডুপ্লিকের এর পরিমান বেড়ে যাবে। যদিও এটা তেমন কোন সমস্য না। ধন্যবাদ
ভালো লাগছে
আকর্ষণীয় ব্লগ তৈরী করতে আপনার দেওয়া পোষ্টটি অনেক তথ্যবহুল। তবে আমার একটি ব্লগ সাইট রয়েছে দয়া করে আমার সাইটের একটি ব্যাকলিংক দিলে অনেক উপকৃত হতাম। ধন্যবাদ
Thanks.Vai