ই-পাসপোর্ট হচ্ছে- ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট। যেখানে একটি ইলেকট্রকি চিপ লাগানো থাকে যার মাধ্যমে পাসপোর্টধারী সকল প্রকার তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।
পাসপোর্ট এর একাধিক কাগজ গুলো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বলে নতুন ই-পাসপোর্ট এর সূচনা ঘটেছে সারা বিশ্ব জোরে।
ই পাসপোর্টের মধ্যে থাকছে পাসপোর্টধারীর ১০টি আঙুলে ছাপ এবং চোখ এর স্ক্যান। তাছাড়া উক্ত পাসপোর্ট এ পাসপোর্ট ধারীর ৩ ধরণের ছবিও সংরক্ষণ করা হয়। যাতে করে তার পরিচয়ে অন্য কোন ব্যক্তি ব্যাঘাত না ঘটাতে পারে।
আমরা এই পোস্টে আপনাকে জানাব, ই – পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ ২০২২ সম্পর্কে। তার আগে আপনাকে জানতে হবে ই পাসপোর্ট কি? তো চলুন জেনে নেওয়া যাক।
ই-পাসপোর্ট কি?
ই পাসপোর্ট হচ্ছে একটি বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট। যেখানে একটি এমবেডেড ইলেকট্রকি মাইক্রো প্রসেসর চিপ আছে।
ইলেকট্রকি মাইক্রো প্রসেসর চিপ এর মাধ্যে আছে বায়োমেট্রিক তথ্য। যা পাসপোর্টধারীর পরিচয় প্রমানের জন্য ব্যবহার করা হয়।
এখানে মাইক্রো প্রসেসর চিপ এবং অ্যান্টেনাসহ স্মার্ট কার্ড প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়। পাসপোর্ট এর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চিপে সংক্ষণ করে থাকে।
ই পাসপোর্টে যে সকল বায়োমেট্রিক গ্রহণ করা হয় সেগুলো হলো- ছবি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও আইরিশ।
ইলেকট্রনিক বর্ডার কন্ট্রোল ব্যবস্থা দ্বারা পাসপোর্ট চিপ এর বাইরের বায়োমেট্রিক বৈশিষ্ট্য গুলো তুলনামুলক ভাবে যাচাই করা হয়।
উক্ত মাধ্যমে পাসপোর্ট চিপ ইলেকট্রনিক ভাবে সংরক্ষিত ডেটা যাচাই করা হয়। এটি সম্পর্ণ ভাবে বাস্তবায়িত হলে জালিয়াতি করা অনেক কঠিন।
আমাদের জানা মতে, ১২০ টি দেশে ই পাসপোস্ট প্রবর্তন করা আছে।
আমরা আশা করি উক্ত আলোচনা অনুসরণ করে আপনি বুঝতে পারছেন যে, ই-পাসপোর্ট কি? যদি না বুঝে থাকেন, তাহলে দয়া করে আরো একবার উক্ত আলোচনা পড়ে নিন।
আরো দেখুন-
- ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম [অনলাইনে সম্পূর্ণ নতুন নিয়মে]
- জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড । অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন এর খুটিনাটি
ই পাসপোর্ট আবেদন ফি (ই-পাসপোর্ট করার খরচ)
ই পাসপোর্ট আবেদন অনলাইনে দাখিল করার সময় পাসপোর্ট ফি (খরচ) পরিশোধ করা যাবে। পাসপোর্ট ফি অনলাইনে স্বয়ংক্রিয় ভাবে হিসাব করা হবে।
আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে পাসপোর্ট অফিসে আবেদন দাখিল করেন সেক্ষেত্রেও আপনি অনলাইনে পেমেন্ট করতে পারবনে।
অনলাইনে মাধ্যমে ই পাসপোর্ট এর পেমেন্ট ছাড়াও আপনি প্রিমিয়ার ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক এবং এশিয়া ব্যাংক এর নির্ধারিত শাখায় ফি জমা দিতে পারবেন।
তো চলুন জেনে নেওয়া যাক, ই পাসপোর্ট করার খরচ গুলো-
বিতরণের প্রকৃতি |
সাধারণ | |||
৪৮ পৃষ্ঠা |
৬৪ পৃষ্ঠা |
|||
০৫ বছর |
১০ বছর | ০৫ বছর | ১০ বছর | |
নিয়মিত | ৪,০২৫/- টাকা | ৫,৭৫০/- টাকা | ৬,৩২৫/- টাকা |
৮,০৫০/- টাকা |
জরুরী |
৬,৩২৫/- টাকা | ৮,০৫০/- টাকা | ৮,৬২৫/- টাকা |
১০,৩৫০/- টাকা |
অতিব জরুরী | ৮,৬২৫/- টাকা | ১০,৩৫০/- টাকা | ১২,০৭৫/- টাকা |
১৩,৮০০/- টাকা |
আপনি উক্ত ছকে যে, টাকার পরিমাণ দেখতে পারছেন। গুলোর মধ্যে আপনি যে, ধরণের ই পাসপোর্ট করবেন সেটি বাছাই করে নিতে পারেন।
আপনি উক্ত ছক মোতাবেক, ৪৮ পৃষ্ঠা এবং ৬৪ পৃষ্ঠা অনুযায়ী ৫ বছর ও ১০ বছর এর জন্য তিনটি ক্যাটাগরিতে ই পাসপোর্ট করতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ
ই-পাসপোর্ট আবেদন করার নির্দেশাবলী
- ই পাসপোর্ট এর আবেদন পত্র অনলাইনে পূরণ করতে পারবেন।
- ই পাসপোর্ট আবেদন এর ক্ষেত্রে কোন কাগজ পত্র সত্যায়িত করার প্রয়োজন হবে না।
- ই পাসপোর্ট ফরমে কোন ছবি যুক্ত এবং তা সত্যায়িত করার প্রয়োজন হবে না।
- জাতীয় পরিচয় পত্র বা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী অনলাইনে আবেদন পত্র পূরণ করতে হবে।
- অপ্রাপ্ত বয়স্ক (১৮ বছর এর কম) আবেদনকারী যার জাতীয় পরিচয় পত্র নেই। তার পিতা বা মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।
- জাতীয় পরিচয় পত্র বা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ। নিম্নোক্ত বয়স অনুযায়ী সাবমিট করতে হবেঃ
- ১৮ বছর এর নিচে হলে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ দিতে হবে।
- ১৮ থেকে ২০ বছর হলে জাতীয় পরিচয় পত্র বা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ দিতে হবে।
- ২০ বছর এর উপরে হলে জাতীয় পরিচয় পত্র দিতে হবে (আবশ্যক)। কিন্তু বিদেশে বাংলাদেশ মিশন হতে আবেদন এর জন্য অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ গ্রহণ যোগ্য হবে।
- উক্ত আবেদন ফরমে যে তারকা চিহ্নিত ক্রমিক নম্বর আছে সে গুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে।
- অভিভাবকত্ব/দত্তক গ্রহণ এর জন্য পাসপোর্ট আবেদন এর সাথে সুরক্ষা সেবা বিভাগ, স্বারাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে জারীকৃত আদেশ দাখিল করতে হবে।
- আবেদন এর বর্তমান ঠিকানা সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনে সাবমিট করতে হবে।
- ১৮ বছরের নিচে এবং ৬৫ বছর এর উপরে সকল আবেদনে ই পাসপোর্ট এর মেয়াদ হবে (৪৮ পৃষ্ঠা) ৫ বছর।
- প্রাসঙ্গিক টেকনিক্যাল সনদ যেমন- ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তারা, ড্রাইভার ইত্যাদি যুক্ত করতে হবে।
- প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক জিও, এনওসি, প্রত্যয়নপত্র, অবসররোত্তর ছুটির আদেশ, পেনশন বই আপলোড করতে হবে।
- প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বিবাহ সনদ। এবং বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে তালাকনামা সাবমিট করতে হবে।
- দেশ এর অভ্যন্তরে আবদেন এর জন্য জন্য প্রযোজ্য ফি এর উপর নির্ধারিত হারে ভ্যাট সহ অন্যান্য চার্জ অতিরিক্ত হিসেবে প্রদেয় হবে। বিদেশে আবেদন এর জন্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি প্রদেয় হবে।
- কুটনৈতিক ই পাসপোর্ট এর জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর কনস্যুলার এবং ওয়েলফেয়ার উইং বা ইমিগ্রেশন এবং পাসপোর্ট অধিদপ্তর এর প্রধান কার্যাল বরাবর আবেদন সাবমিট করতে হবে।
- বিদেশ বিমন হতে নতুন পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করা হলে স্থায়ী ঠিকানার কলামে বাংলাদেশ এর যোগাযোগ ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।
- জরুরী পাসপোর্ট এর আবেদনের জন্য নতুন ইস্যু নিজ উদ্যোগে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ সংগ্রহ করে আবশ্যিক ভাবে আবদেন এর সাথে সাবমিট করতে হবে।
- আবেদন করার সময় মূল জাতীয় পরিচয় পত্র, অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল সনদ সরকারি আদেশ, অনাপত্তি প্রদর্শন সাবমিট করতে হবে।
- পাসপোর্ট রি-ইস্যুর জন্য মূল পাসপোর্ট প্রদর্শন করতে হবে।
- হারিয়ে যাওয়া পাসপোর্ট এর জন্য মূল জিডি কপি প্রদর্শন করতে হবে।
- ৬ (ছয়) বছর বয়সের নিম্নোক্ত আবদেন এর ক্ষেত্রে 3R Size এর ছবি সাবমিট করত হবে।
- পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে বা চুরি হয়ে গেলে দ্রুত নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করতে হবে। নতুন পাসপোর্টের জন্য পুরাতন পাসপোর্ট এর ফটোকপি, জিডি কপি সহ আবেদন সাবমিট করতে হবে।
ই পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম ২০২৩
ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে চাইলে, আপনাকে প্রথমে www.epassport.gov.bd এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পরে, “Directly to online application” অপশনে ক্লিক করবেন।
তারপরে, আপনাকে ধাপে ধাপে বর্তমান ঠিকানার বিভাগের নাম, জেলার নাম, থানার নাম সিলেক্ট করতে হবে। তারপরে ব্যক্তিগত তথ্য সম্বলিত ই পাসপোর্টের মূল ফরমটি পূরণ করে সাবমিট করতে হবে।
তারপরে, মেয়াদ ও পাসপোর্টের পৃষ্ঠা সংখ্যা অনুযায়ী ফি জমা দিতে হবে। পেমেন্ট এর জন্য যে, কোনো ব্যাংকের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড দিয়ে অনলাইনে পেমেন্ট করতে পারবেন।
আরো দেখুনঃ
- পাসপোর্ট করার নিয়ম ঝামেলা ছাড়াই অনলাইনে নিজের পাসপোর্ট করুন
- মাস্টার কার্ড কি? মাস্টার কার্ড খোলার নিয়ম (বিস্তারিত)
- ভিসা কি? ভিসা কিভাবে করতে হয় ২০২৩
শেষ কথাঃ
তো বন্ধুরা, এই আর্টিকেল থেকে আপনি শিখতে পারলেন। ই পাসপোর্ট কি? এবং অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম ও খরচ ২০২৩ সম্পর্কে।
ট্যাগঃ ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ ২০২৩ ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ ২০২৩ ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ ২০২৩ ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ ২০২৩ ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ ২০২৩
ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ ২০২৩ ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ ২০২৩ ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ ২০২৩ ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ ২০২৩ ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ ২০২৩
আপনি যদি ই পাসপোর্ট করতে চান তাহলে উক্ত নির্দেশনাবলী অনসুণ করে কাজ শুরু করুন। আমাদের লেখা আপনার যদি ভালো লাগে। তাহলে একটি শেয়ার করুন। আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে ধন্যবদা।