মহাকাশে প্রাণের অস্তিত্ব

বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে মহাকাশ ও মহাকাশে প্রাণের অস্তিত্ব নিয়ে বিজ্ঞানীদের কৌতুহলের শেষ নেই।

বিভিন্ন গ্রহ বা উপগ্রহে প্রাণের অস্তিত্বের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা আশাবাদী।

মঙ্গল গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব

অধ্যাপক গ্রেডির মতে,মঙ্গল গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব পাওয়া যেতে পারে।তবে সেখানে খুব উন্নত বুদ্ধির কোন প্রাণের সন্ধান পাওয়া যাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।গ্রেডির মতে মঙ্গল গ্রহে যদি কোন প্রাণের সন্ধান পাওয়াও যায় তবে সেটি খুবই ক্ষুদ্রাকৃতির হবে।প্রায় ব্যাকটেরিয়ার মত।
১৮৭০ এর দিকে জ্যোতির্বিজ্ঞানী উইলিয়াম হার্শেল মঙ্গল গ্রহের প্রাণীদের আকার কেমন হবে তা নিয়ে একটি তত্ত্ব দিয়েছিলেন।তার মতে মঙ্গল গ্রহের প্রাণিরা মানুষের চেয়ে লম্বা হবে।
তিনি গ্যালিলিওর সময়ের চেয়েও আরো শক্তিশালী টেলিস্কোপ দিয়ে মঙ্গল গ্রহের আকার ও মৌসুম পর্যবেক্ষণ করতেন।
তার হিসেবে মঙ্গল গ্রহ যেহেতু পৃথিবীর চেয়ে আকারে ছোট,তাই তার মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পৃথিবীর চেয়ে কম।অতএব,সেখানে যে প্রাণ রয়েছে তাদের পক্ষে লম্বা হওয়া সম্ভব হবে।অর্থাৎ, মার্শানরা মানুষের চেয়ে লম্বা।

জুপিটারের উপগ্রহ ইউরোপায় প্রাণের অস্তিত্ব

বৈজ্ঞানিক মনিকা গ্রেডি মন্তব্য করেছিলেন যে, তিনি প্রায় নিশ্চিত যে জুপিটারের একটি চাঁদ ইউরোপায় প্রাণের অস্তিত্ব আছে।তবে সেটি কথা বলতে ও চলাফেরা করতে পারে না এমন কোন এলিয়েন হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

অধ্যাপক মণিকা গ্রেডি মনে করেন যে,ইউরোপার বরফের নিচেই ঐ প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে।ইউরোপা উপগ্রহটি ১৫ মাইল পুরো বরফের আবরণে আবৃত।

শনির উপগ্রহ এনসেলাদাসে প্রাণের অস্তিত্ব

এনসেলাদাস উপগ্রহটি পুরো বরফের আবরণের আচ্ছাদিত।এর নিচে রয়েছে তরল সমূদ্র।
মনে করা হয় যে,বরফের আবরণের নিচের অংশটি তরল থাকার কারণ নিশ্চয়ই সেখানে কোন ধরণের তাপের উৎস হতে পারে।
আমাদের পৃথিবীতে সমুদ্রের তলদেশে এক ধরণের তাপ নির্গমন হওয়ার ফাটল বা রন্ধ্র রয়েছে।যার ফলে সেখানে এক ধরণের বিক্রিয়া ঘটে যা জলজ প্রাণীদের জন্য খাদ্য প্রস্তুত করতে সাহায্য করে।
ইউরোপা বা এনসেলাদাস চাঁদ বা অন্য কোন পুরো বরফে আবৃত উপগ্রহেও হয়ত এই একই প্রক্রিয়া থাকতে পারে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা।
তবে অধ্যাপক গ্রেডির মতে, “পৃথিবী থেকে অন্যান্য গ্রহের দূরত্ব এতই ব্যাপক যে সেসব গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব খুজে পেতে আমরা আদৌ সফল হব কিনা তা কখনোই নিশ্চিতভাবে বলা যায় না।”
তিনি আরো বলেন,”এখন পর্যন্ত মহাকাশে যেসব সিগন্যাল পাওয়া গেছে দুঃখজনকভাবে সেগুলোর মধ্যে কোনটাই যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য বা আসল নয়

যেভাবে মহাকাশে প্রাণের অস্তিত্বের সন্ধান করেন বিজ্ঞানীরা

ছায়াপথে পৃথিবীর মত ৪০ বিলিয়ন গ্রহ থাকতে পারে বলে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা অনুমান করেন।
বিজ্ঞানীরা সৌরজগতের বাইরে প্রায় চার হাজারের মত গ্রহ শনাক্ত করেছেন।এগুলোকে এক্সোপ্ল্যানেট বলা হয়।
পৃথিবীর সকলল প্রাণীদের শরীর থেকে বর্ণ ও গন্ধহীন মিথেন গ্যাস নির্গমন হয়।উইপোকা থেকে শুরু করে মানুষ সবার শরীর থেকেই মিথেন গ্যাস বের হয়।তবে আগ্নেয়গিরি থেকেও মিথেন গ্যাস বের হয়
“এক্সোপ্ল্যানেট” কে পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার আদর্শ জায়গা  মনে করেন বিজ্ঞানীরা।কারণ হল এগুলোর পরিবেশ।এগুলো নিজেদের নক্ষত্রপুঞ্জ থেকে খুব বেশি দূরে নয় আবার খুব বেশি কাছেও নয়।তাই তাদের আবহাওয়া অতিরিক্ত গরম বা অতিরিক্ত ঠান্ডা নয় বরং দুইয়ের মাঝামাঝি।
তাই এসব এক্সোপ্ল্যানেটেই প্রাণের উৎস থাকার সম্ভাবনা বেশি বলে অধিকাংশ বিজ্ঞানীদের ধারণা।
তাই তারা মহাকাশে প্রাণ অর্থাৎএলিয়েন এর অস্তিত্ব খুজতে এক্সোপ্ল্যানেট নিয়েই বেশি গবেষণা করা উচিত বলে মনে করছেন।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top