ইঞ্জিনিয়ারিং কি ? ইঞ্জিনিয়ারিং কত প্রকার ? ইঞ্জিনিয়ার এর কাজ কি ?

ইঞ্জিনিয়ারিং কি : আমাদের আজকের আলোচনা তে, ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়া চেষ্টা করব।

বর্তমান সময়ে মানব সভ্যতার সবচেয়ে বড় সাফল্যের চাবিকাঠি হচ্ছে তাদের উন্নত চিন্তা-ভাবনা এবং অকল্পনীয় উদ্ভাবনে শক্তি।

উক্ত উদ্ভাবনের শক্তিকে মানুষ একদম সৃষ্টির গোড়া থেকে কাজে লাগিয়ে যাচ্ছে। আর বর্তমান সময়ে, জগতের মানুষ এই উদ্ভাবনী শক্তির চর্চাকে নাম দিয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং।

ইঞ্জিনিয়ারিং কি ? ইঞ্জিনিয়ারিং কত প্রকার ? ইঞ্জিনিয়ার এর কাজ কি ?
ইঞ্জিনিয়ারিং কি ? ইঞ্জিনিয়ারিং কত প্রকার ? ইঞ্জিনিয়ার এর কাজ কি ?

আমাদের ইতিহাসের পাতায় চোখ রাখলে দেখা যায়। সারা পৃথিবী জুড়ে আছে অজসহ ইঞ্জিনিয়ারিং এর নিদর্শন।

তাই আপনি যদি ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেতে চান। তাহলে আমাদের এই পোস্টে আপনারা জানতে পারবেন। ইঞ্জিনিয়ারিং কি? ইঞ্জিনিয়ারিং কত প্রকার এবং ইঞ্জিনিয়ারিং এর কাজ কি।

তো বন্ধুরা আপনারা যারা ইঞ্জিনিয়ারিং এর তথ্য জানতে চান? তারা নিজেদের তথ্যগুলো শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে করুন।

ইঞ্জিনিয়ারিং কি ?

ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে, সাইন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং এর ম্যাথমেটিক্স শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত একটি শাখা।

এই শাখাতে বিদ্যার্থীদের মূলত চার ধরনের বিষয়ের উপর বিস্তারিতভাবে শিক্ষা প্রদান করা হয় আর এই শিক্ষা ব্যবস্থা আমাদের সর্বতাই প্রায় হাজার হাজার বছর ধরে চলছে।

বিশেষ করে ইঞ্জিনিয়ারিং শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে লেটিন শব্দ ইঞ্জিন থেকে। মানে যার অর্থ মানসিক শক্তি বা একটি সুকৌশলী আবিষ্কার।

আপনাকে আরো সহজ ভাবে বলতে গেলে ইঞ্জিনিয়ার হচ্ছে বিজ্ঞান এবং অংকের প্রয়গিক ব্যবহারের মাধ্যমে কোন সমস্যা সমাধান করার বিদ্যা।

এছাড়া এ বিদ্যাতে, বিজ্ঞান, অংক, প্রযুক্তি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার পাশাপাশি শিল্পকলার বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করা হয়। তাছাড়া ইঞ্জিনিয়ারিং কে একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় পেশা হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।

যেখানে সাইন্স এবং ম্যাথমেটিক্স ব্যবহার করার ফলে, বিভিন্ন ধরনের মেশিন ডিজাইন এবং টেস্ট করানো হয়।

তাছাড়া এই ইঞ্জিনিয়ারিং বিদ্যাকে কাজে লাগিয়ে। যারা এ ধরনের আবিষ্কার গুলো করে থাকে। বা যন্ত্রপাতির রক্ষণাবেক্ষণ এর পাশাপাশি আরও বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান করে। তারাই হচ্ছেন ইঞ্জিনিয়ার বা প্রকৌশলবিদ।

ইঞ্জিনিয়ারিং কত প্রকার ?

আপনারা উপরের আলোচনাতে ইঞ্জিনিয়ার কি এ বিষয়ে জানতে পারলেন এখন আমি সেই আলোচনার প্রেক্ষিতে আপনাকে জানিয়ে দেবো ইঞ্জিনিয়ারিং কত প্রকার ও কি কি?

তো চলুন ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রকার গুলোর সাথে পরিচয় হওয়া যায়। যেমন-

মেকানিক্যাল

মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি মেশিন উৎপাদন করা।

যেমন-

  • গাড়ি
  • ইঞ্জিন
  • মহাকাশযানের যন্ত্রপাত
  • নকশা তৈরি করা
  • ওয়েপন সিস্টেম
  • রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি।

তাছাড়া, রোবটিক্স, টারবাইন, ফার্ম মেশিনারি যন্ত্রপাতি তৈরি করা হয়।

ইলেকট্রিকাল

ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং শাখায় বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস মেশিন এবং সিস্টেমের ডিজাইন তৈরি কন্ট্রোল এবং মনিটরিং করা হয়।

সিভিল

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে, ইঞ্জিনিয়ারিং এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি শাখা এ ধরনের ইঞ্জিনিয়ারিং এর সাথে বিভিন্ন ধরনের ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রোজেক্ট।

যেমন-

  • রেলওয়ে
  • রাস্তা
  • ব্রিজ
  • টানেলের ডিজাইন তৈরি করা
  • কনস্ট্রাকশন করা
  • মেরামত করা এবং
  • ইনস্পেকশনের কাজ

এ সকল ইঞ্জিনিয়াররা সরকারি এবং বেসরকারি প্রজেক্ট সামলানোর পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ারিং এর শাখা। যেমন- সার্ভেয়িং, স্টাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়েও কাজ করে থাকেন।

এরোস্পেস

এরো স্পেস হচ্ছে ইলেকট্রিক্যাল এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একটি বিশেষ শাখা। এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে এয়ারক্রাফট।

এবং স্পেসক্রাফটের যন্ত্রাংশ এর ডিজাইন তৈরি করার নির্মাণ করা এবং পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজ করা হয়।

নিউক্লিয়ার

নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং এর শাখাতে ইঞ্জিনিয়াররা পারমাণবিক শক্তিকে ব্যবহার এবং নিয়ন্ত্রণ করে। বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি সিস্টেম এবং পদ্ধতির নকশা তৈরি এবং নির্মাণ করেন এবং পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজ চালিয়ে থাকেন।

বায়োমেডিক্যাল

হেলথ কেয়ার বা মেডিসিন সেক্টরে যে সকল ডিভাইস এবং যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়। সেই সকল যন্ত্রপাতির নির্মাণের দায়িত্ব থাকে বায় মেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের উপর।

কেমিক্যাল

কেমিক্যাল শাখার ইঞ্জিনিয়াররা ফিজিক্স বায়োলজি কেমিস্ট্রি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং এর শর্ত অনুযায়ী বিভিন্ন প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সিস্টেম এবং পদ্ধতি ব্যবস্থাপনা করে থাকেন।

কম্পিউটার

কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ ইঞ্জিনিয়াররা কম্পিউটারের হার্ডওয়ার, সিস্টেম, সফটওয়্যার এবং নেটওয়ার্ক তৈরি করে থাকেন।

ইন্ডাস্ট্রিয়াল

ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ার বিভিন্ন ধরনের সেবা, যন্ত্রপাতি এবং সিস্টেমগুলোর ডিজাইন এবং পর্যালোচনা করে থাকেন।

এনভায়রনমেন্টাল

এনভায়রনমেন্টাল এ ধরনের ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে, পরিবেশকে দূষণমুক্ত করে বসবাসের উপযোগী করে তোলা।

মেরিন

মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রধানত সামুদ্রিক জগতকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। এ ধরনের ইঞ্জিনিয়ারিং এ শিপিং তেল শোধনাগার অন বোডিং সাবমেরিন ইত্যাদি ডিজাইন ইত্যাদি নির্মাণ করা হয়।

ফুড

ভোট ইঞ্জিনিয়াররা মূলত কৃষি সংক্রান্ত উৎপাদন এবং খাদ্যের উৎপাদন প্রসেসিং ডিস্ট্রিবিউশন এবং স্টোরিং এর সুবিধার জন্য বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন এবং অ্যাপ্লিকেশন এর ডেভলপমেন্ট করা থাকে।

এগ্রিকালচারাল

এগ্রিকালচারাল কিংবা বায়ো সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিং এ কৃষির উন্নতির উদ্দেশ্য বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং আসলে কেমিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল, এনভারমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ফুট সাইন্স এবং আরও বিভিন্ন ধরনের ইঞ্জিনিয়ারিং এর শাখার সাথে সম্পর্ক যুক্ত।

ইঞ্জিনিয়ার এর কাজ কি ?

আপনারা উপরে আলোচনাতে ইঞ্জিনিয়ারিং কি ইঞ্জিনিয়ারিং কত প্রকার এ বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা পেয়ে গেলেন এখন আমরা এই আলোচনার প্রেক্ষিতে আপনাকে জানাবো ইঞ্জিনিয়ারিং এর কাজ কি।

আধুনিক সময়ে ইঞ্জিনিয়ারিং এর পেশার এত শাখা এবং উপ শাখা আছে যে আলাদা করে ইঞ্জিনিয়ারদের কাজগুলো বর্ণনা করা একেবারেই সম্ভব হবে না।

তারপরও বিভিন্ন শাখা ইঞ্জিনিয়াররা আমাদের বিভিন্ন ধরনের পরিষেবা প্রদান করে থাকে যেমন-

তারা এডভান্স প্রস্থেটিকস এর উপর কাজ করে। নতুন মেটেরিয়াল তৈরি করেন। ইঞ্জিনের ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন ধরনের জ্বালানের অনুসন্ধান করেন স্বচ্ছ জলের সিস্টেম তৈরি করেন এছাড়া ব্রীজ নির্মাণ করেন।

এর পাশাপাশি সেল মেমব্রেন থেকে স্যাটেলাইট ইঞ্জিনিয়ার পর্যন্ত সকলেই বিজ্ঞান এবং অংক ব্যবহার করে। বিশ্বের সকল আশ্চর্য এবং জটিল সমস্যাগুলোর সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন।

যে কোন ধরনের ইঞ্জিনিয়ারের এই কাজের প্রাথমিক শর্ত আছে। মানবজীবনকে আরো বেশি করে আরামদায় করে তোলার উদ্দেশ্য নিয়ে।

দৈনন্দিন সমস্যা গুলো বিজ্ঞানসম্মত সমাধান করা।

তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট ডিজাইন, মূল্যায়ন তৈরি, পরীক্ষা করা, পরিবর্তন করা, পর্যবেক্ষণ করা, এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা ইঞ্জিনিয়ারদের মূল কাজ।

এছাড়া ইঞ্জিনিয়ারদের আরো অসংখ্য কাজ রয়েছে। যা আপনারা ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়ার সময় সে বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে জেনে নিতে পারবেন। আশা করা যায়।

শেষ কথাঃ

তো বন্ধুরা আজ আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাকে জানানো হলো, ইঞ্জিনিয়ারিং কি ইঞ্জিনিয়ারিং কত প্রকার এবং ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ কি।

আমাদের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার পর আপনার কাছে কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দেবেন।

আর আমাদের ওয়েবসাইট থেকে এই ধরনের, আরো নতুন নতুন প্রযুক্তিগত তথ্য জানতে, নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top