কম্পিউটার ভাইরাস কি : কম্পিউটার ভাইরাস হলো একটি মালিশাস সফটওয়্যার প্রোগ্রাম যা কম্পিউটারের সিস্টেমে বেশির ভাগ সময় গোপনে প্রবেশ করে এবং প্রক্রিয়া চালায় যা কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা বুঝতেই পারে না।
কম্পিউটার ভাইরাস অন্যান্য সফটওয়্যার এবং ফাইলগুলির সাথে যুক্ত হতে পারে এবং সেগুলির অপরিষ্কার ভাবে নিয়ন্ত্রণ অর্জন করতে পারে।
- কম্পিউটার ভাইরাস কি ? কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ এবং প্রতিকার
ভাইরাসের মাধ্যমে আক্রান্ত কম্পিউটারে বিভিন্ন প্রকার ক্ষতি সংক্রান্ত সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এর মধ্যে অন্তর্নিহিত থাকা পারে তথ্য নষ্ট বা ধ্বংস হওয়া, কম্পিউটার সম্পূর্ণ অপরিচালিত বা ব্যবহারযোগ্য না হওয়া, পারফরমেন্স নিম্ন হওয়া, গোপন তথ্যের অন্যান্য অক্ষরশঃ অপরিবর্তন হওয়া, কম্পিউটার নেটওয়ার্কে অন্যান্য পরিকল্পনা বা প্রকার ভাষা চালু করা এবং এমন অন্যান্য সমস্যা গুলো।
কম্পিউটার ভাইরাস একটি কম্পিউটার ভেরিফিকেশন প্রোগ্রামের মতোও চলতে পারে, তবে ভাইরাস একটি খারাপ সফটওয়্যার হলেও এর সাথে একটি পাসওয়ার্ড কোড জড়িত থাকে যাতে এটি অপ্রত্যাশিতভাবে নিষ্পত্তি পাওয়া যায় না।
আরো দেখুনঃ
- গুগল মিট কি? কিভাবে google meet অ্যাপ ব্যবহার করবেন ?
- গুগল ক্রোম কোন ধরনের সফটওয়্যার
- অনলাইনে কোর্স বিক্রি করে আয় [বিস্তারিত এখানে]
একটি ভাইরাস কম্পিউটারে প্রবেশ করার পরে, বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে, যেমন- নিউক্লিয়াস পরিবর্তন, ডিস্ক পূর্তি, প্রোগ্রামের সম্পর্কিত ফাইল বা ডেটাবেসের মধ্যে পরিবর্তন এবং মালিশাস কোড সংক্রান্ত অন্যান্য কাজ গুলো।
ভাইরাসের প্রভাবের মধ্যে থাকতে পারে নতুন ভাইরাস বা মালিশাস কোডের সৃষ্টি, নষ্ট বা অপরিবর্তিত ডেটা, নির্দিষ্ট সময়ের পরে প্রণালীর নিষ্পত্তি এবং অন্যান্য ক্ষতিকর প্রভাবের সম্ভাবনা।
এমনকি কম্পিউটার ভাইরাসের সাথে একটি নেটওয়ার্কে সংযোগ থাকলে, সেই নেটওয়ার্কের অন্যান্য কম্পিউটারের সংগঠন এবং কার্যক্রমের প্রভাবিত হতে পারে।
কম্পিউটার ভাইরাস সম্পর্কে সতর্ক থাকা এবং এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করা প্রধান উপায় যাতে কম্পিউটার গুলো ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা করা যায়।
কম্পিউটার ভাইরাস কত প্রকার ও কি কি ?
কম্পিউটার ভাইরাস হলো একটি অপ্রকাশিত প্রোগ্রাম যা কম্পিউটারে এটাক করে এবং ব্যবহারকারীর জ্ঞান না হলেও অপরিচিত কার্যকারিতা প্রদর্শন করে।
কম্পিউটার ভাইরাসের প্রকার ভিত্তিতে অনেক ভিন্ন ভিন্ন নাম এবং কার্যকারিতা রয়েছে, কিন্তু চলুন কিছু প্রমুখ প্রকার ভাইরাস দেখে নেওয়া যাক।
ম্যালওয়্যার (Malware): ম্যালওয়্যার হলো অন্য ধরনের কম্পিউটার ভাইরাসের সমষ্টি, যা একটি প্রোগ্রাম আকারে থাকে এবং কম্পিউটারের প্রমাণিত উপাদানগুলির উপর প্রভাব ফেলে নেয়।
ম্যালওয়্যার অনেক ধরনের হতে পারে, যেমন ভাইরাস, ট্রোজান, স্পাইওয়্যার, রুটকিট, অ্যাডওয়্যার, ইত্যাদি।
ভাইরাস (Virus): এটি হলো একটি প্রোগ্রাম যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রতিষ্ঠানের কোনো সিস্টেমে প্রবেশ করে এবং তার কার্যকরী কোডগুলি ব্যাপক অংশে ছড়িয়ে দেয়।
ভাইরাস সাধারণত প্রথমে একটি হোস্ট ফাইলে সন্ধান করে এবং তারপরে অন্য ফাইলে নিজেকে সংযুক্ত করে।
ট্রোজান (Trojan): ট্রোজান হলো একটি ভাইরাসের ধরণ যা ব্যবহারকারীর অন্য কোনো সুবিধা প্রদানের নামে বেছে নিজেকে গুপ্তভাবে সংযুক্ত করে দেয়।
এই ধরনের ভাইরাস সাধারণত নিপীড়নকারী বা অন্ধকার কার্যকারিতা প্রদর্শন করে ব্যবহারকারীর জানা ছাড়াই।
স্পাইওয়্যার (Spyware): এটি একটি ক্রেতার অনুমতি ছাড়াই একটি কম্পিউটারে স্থাপিত হয় এবং ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে এবং এগুলি ক্রেতাকে পাঠায়।
স্পাইওয়্যার বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারে, যেমন ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়াই তথ্য চুরি, মার্কেটিং উদ্দেশ্যে ব্যবহার এবং আরও অনেক কিছু।
রুটকিট (Rootkit): রুটকিট হলো একটি অপ্রকাশিত প্রোগ্রাম যা কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেমের সুবিধা দিয়ে তার সংগ্রহকৃত তথ্য ও কার্যকারিতা গোপন করে রাখে।
রুটকিট সাধারণত ব্যবহারকারীর জানা ছাড়াই সাধারণ অপারেটিং সিস্টেম প্রবেশ করে এবং নিয়ন্ত্রণ অর্জন করে।
অ্যাডওয়্যার (Adware): এটি কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্রাউজিং সময়ে অনুপ্রাণিত বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে। এবং ব্যবহারকারীদের আপনীয় তথ্য সংগ্রহ করে।
এটি সাধারণত ফ্রি সফটওয়্যারের সাথে সংযুক্ত থাকে এবং ব্যবহারকারীকে অনুপ্রাণিত বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে আয় উপার্জন করে।
এটি কেবলমাত্র, কম্পিউটার ভাইরাসের কিছু প্রমুখ প্রকার, এখানে আরও অনেক প্রকার ভাইরাস রয়েছে। যা নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য বা কার্যকারিতা অনুযায়ী বিভিন্ন নামের হতে পারে।
ভাইরাসের প্রতিরোধ এবং নিরাপত্তার জন্য কম্পিউটারে আপডেট অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করা উচিত।
কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ গুলো কি কি?
কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার কিছু সাধারণ লক্ষণ গুলো নিম্নরূপঃ
পরিবর্তিত কার্যকারিতা:
যদি আপনার কম্পিউটারে অপ্রকাশিত পরিবর্তিত কার্যকারিতা দেখা যায়। যেমন- অপ্রকাশিত প্রোগ্রামের চালানো, নতুন মেনু গুলি বা বিজ্ঞাপন গুলির প্রদর্শন, তথ্য চুরি, ফাইল ক্র্যাশ ইত্যাদি, তবে এই সমস্যা গুলির সম্ভাবনাও অন্য কোনো সমস্যার কারণ হতে পারে। তাই সঠিক বিশ্বেষণ করা উচিত।
এটাক পরিবর্তন:
কম্পিউটারে অপ্রকাশিত প্রোগ্রাম এবং ভাইরাসের কারণে অপারেটিং সিস্টেমে এবং ফাইলের একটি বিশেষ অংশে পরিবর্তন দেখা যাতে পারে।
উদাহরণ স্বরূপ, কোনো ফাইলের নাম পরিবর্তিত হতে পারে বা কোনো প্রোগ্রামের মধ্যে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য পরিবর্তন হতে পারে।
পারফরমেন্সে ক্ষতি:
ভাইরাসের কারণে কম্পিউটারের কার্যক্ষমতা পরিবর্ধিত হতে পারে। এটি হতে পারে স্পীডের ক্ষেত্রে হানি, অ্যাপ্লিকেশন গুলির প্রতিক্রিয়া মেলা মেশা, কম্পিউটারের/ ল্যাপটপের প্রবেশ বা শাট ডাউনের সময় দ্রুত ব্যাটারি ক্ষয় ইত্যাদির মাধ্যমে বোঝা যায়।
সিস্টেম ফাইল অপারেশন:
যদি আপনার কম্পিউটারে প্রতিবেশী সিস্টেম ফাইলের কার্যক্ষমতা কম হয়ে যায়, যেমন বুটিং সময়ে অপরিচিত অক্ষর বা সিম্বল দেখা যায়, ফাইলগুলি অস্বাভাবিক ভাবে মুছে ফেলা হয় ইত্যাদি, তবে এটি সমস্যার কারণ হতে পারে।
সংক্ষেপে বলতে গেলে, কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ গুলো ভিন্ন ভাবে প্রদর্শিত হতে পারে। এবং সাধারণত অপ্রকাশিত এবং আকার-অবস্থান পরিবর্তন সংক্রান্ত সমস্যার সাথে সম্পর্কিত।
যদি আপনার কম্পিউটারে এই ধরণের লক্ষণগুলো দেখা যায়, তবে সঠিক ভাবে বিশ্বেষণ করুন এবং এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার দ্বারা আপনার কম্পিউটারকে স্ক্যান করুন।
কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত থেকে প্রতিকার করার উপায়?
কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত থেকে প্রতিকার নিতে নিম্নলিখিত কয়েকটি উপায় প্রয়োগ করা যেতে পারেঃ
নিরাপত্তা সংরক্ষণ:
আপনার কম্পিউটারের নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য অপারেটিং সিস্টেম এবং সফটওয়্যার আপডেট রাখুন। নতুন সংস্করণ গুলি সিকিউরিটি করার জন্য নতুন সুরক্ষার প্যাচ এবং সিকিউরিটি আপডেট অন্তর্ভুক্ত থাকে।
অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করুন:
এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ইনস্টল করে ব্যবহার করুন এবং নির্দিষ্ট সময়সীমা পর্যন্ত আপডেট করুন। এটি কম্পিউটারে সন্ধান করে এবং আক্রান্ত ফাইল ও প্রোগ্রামগুলি শনাক্ত করে মুছে দেয়।
ফাইরওয়্যাল ব্যবহার করুন:
একটি ফাইরওয়্যাল ব্যবহার করে আপনার ইন্টারনেট কানেকশন এবং কম্পিউটারের সুরক্ষা সংরক্ষণ করুন। ফাইরওয়্যাল আপনার প্রবেশ এবং বাহিরে যাওয়া তথ্যের মধ্যকার কন্ট্রোল রাখে এবং অপ্রকাশিত কম্পিউটার ভাইরাসের সন্ধান করে তা বাধা দেয়।
সতর্কতা এবং সচেতনতা:
কম্পিউটার ব্যবহার করার সময় সতর্ক থাকুন এবং সতর্ক থাকুন যখন ইন্টারনেটে সংযোগ করছেন বা ফাইল ও প্রোগ্রাম ডাউনলোড করছেন। অজানা সোর্স থেকে এটি যাচাই করুন এবং বিশ্বস্ত সাইট থেকেই সফ্টওয়্যার এবং আপডেট ডাউনলোড করুন।
ডাটা ব্যাকআপ:
গুরুত্বপূর্ণ ডাটা ও ফাইলগুলির নিরাপত্তা বজায় রাখতে আপনি নিয়মিত ভাবে ডাটা ব্যাকআপ করুন। অন্য কোনো সমস্যা হলেও, আপনি পূর্বের ব্যাকআপ থেকে ডাটা উদ্ধার করতে পারবেন এবং তাদের পুনরুদ্ধার করতে পারবেন।
এছাড়াও, যদি আপনি মনে করেন যে, আপনার কম্পিউটার আক্রান্ত হয়েছে, তবে প্রয়োগ করা উচিত যেকোনো সাধারণ সাধারণ বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করেন। বা একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক স্পেশালিস্টের কাছে যান।
তারা আপনাকে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দিতে পারেন। এবং সমস্যাটি পরিষ্কার করতে সাহায্য করতে পারেন।
কম্পিউটারে যে সকল এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করবেন?
কম্পিউটারে ব্যবহৃত যে কয়েকটি জনপ্রিয় এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করা হতে পারে তা নিম্নে দেওয়া হলোঃ
- Norton Antivirus
- McAfee Antivirus
- Avast Antivirus
- AVG Antivirus
- Kaspersky Antivirus
- Bitdefender Antivirus
- Avira Antivirus
- Trend Micro Antivirus
- Malwarebytes
- Windows Defender (এটি উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের সাথে সরাসরি সংযুক্ত থাকে)
এটি শুধুমাত্র, কিছু জনপ্রিয় এন্টিভাইরাস সফটওয়্যারের তালিকা। আপনি এই সফটওয়্যার গুলোর মধ্যে থেকে একটি বা একাধিকটি নির্বাচন করতে পারেন। এবং আপনার পছন্দমত একটি ইনস্টল করতে পারেন।
সাধারণত, এই সফটওয়্যার গুলো কম্পিউটারের সিস্টেম সন্ধান করে এবং আক্রান্ত ফাইল ও প্রোগ্রামগুলি শনাক্ত করে মুছে দেয়।
আরো পড়ুনঃ
- এন্ড্রয়েড মোবাইলের জন্য ৫ টি এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার
- এন্ড্রয়েড মোবাইলকে বানিয়ে ফেলুন কম্পিউটার মাউস
- ম্যালওয়্যার কি ? ম্যালওয়্যার কিভাবে কাজ করে এবং এর প্রকার গুলো
তারা সচেতনতা স্তর উপরে থাকে এবং প্রতিষ্ঠিত ভ্যান্ডালিজমের সম্পর্কে সন্দেহভাজন ফাইল গুলো ট্র্যাক করে। আপনার পছন্দ অনুযায়ী একটি সফটওয়্যার নির্বাচন করার আগে, পড়ে দেখুন এগুলোর বৈশিষ্ট্য, পারফর্মেন্স, দাম, এবং ব্যবহারকারীদের পরামর্শ এর উপর।
শেষ কথাঃ
আপনি যদি অনলাইনে অথবা কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত হতে সমস্যার সম্মুখীন হন, তবে আপনি সমস্যার উপর চিন্তা না করে, আমাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কাজ করুন। ধন্যবাদ…