আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি ? আউটসোর্সিং কোথায় করা যায়। (বিস্তারিত জানুন)

আউটসোর্সিং হলো- একটি ব্যবসা প্রক্রিয়া যেখানে, একটি কোম্পানি নিজের নিজস্ব কর্মীদের স্বংস্থানে না রেখে সেবা সরবরাহের জন্য বা প্রক্রিয়া গুলো উৎস বা বিভাগের বাইরের একটি দুইটি দ্বিতীয় পক্ষে সংশ্লিষ্ট করে।

আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি ? (বিস্তারিত জানুন)
আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি ? (বিস্তারিত জানুন)

আউটসোর্সিং প্রায় ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া গুলোর জন্য ব্যবহৃত হয়। যেমন- সফটওয়্যার ডেভেলপ, ওয়েব ডিজাইন এবং ডেটা এন্ট্রি।

এটি একটি উদ্যোগপূর্ণ পদ্ধতি হিসাবে ব্যবহার করা হয়। যা কোম্পানি গুরো খরচ কমাতে এবং উন্নত গুণমানে পরিষ্কার ভাবে সেবা সরবরাহ করতে সহায়তা করে।

আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে একটি কোম্পানি কাজ সংক্রান্ত প্রক্রিয়া গুলো বাহিরের অন্যতম দেশে অথবা অন্য কোনও কোম্পানির জন্য নিয়োগ করে দেয়।

সাধারণত, এই বিদ্যমান অন্য দেশের শ্রমিকদের জন্য বেশ কম মজুরি/ টাকা প্রদান করা হয়। যার ফলে কোম্পানি গুলো খরচ কমাতে এবং উচ্চ গুণমানের সেবা পাওয়ার সুযোগ পায়।

আউটসোর্সিং ব্যবসায়িক পদ্ধতি গুলো মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করার জন্য অনেকে বাংলাদেশের প্রস্তুত কাজের ক্ষেত্রে সহজেই বিদেশী দেশ গুলোর সাথে যোগাযোগ করেন। এটি অন্যান্য দেশের ব্যবসায়িক দক্ষতা, দক্ষতা এবং উচ্চ মানের কাজের জন্য বিখ্যাত হয়েছে।

আউটসোর্সিং এর উদ্দেশ্য কি?

আউটসোর্সিং এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো- কোম্পানি গুলোর কর্মকাণ্ড প্রভাব মুক্ত, কম খরচে এবং উন্নত গুণমানে সম্পাদন করা। এটি কিছু প্রধান লক্ষ্যে রয়েছে। যেমন-

খরচ কমায়: অনেক সময় কোম্পানি গুলো উচ্চ খরচে কর্মকাণ্ড সম্পাদন করতে পারেন। আউটসোর্সিং দ্বারা এই খরচ গুলো হ্রাস করা যায়।

কারণ বাহিরের দেশে শ্রমিকদের মজুরি/ টাকা কম হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, একটি দক্ষ প্রযুক্তিবিদ অথবা ডিজাইনারের বেতন পাশাপাশি বিদেশের একজন প্রযুক্তিবিদ অথবা ডিজাইনারের বেতন অনেক কম হতে পারে।

দক্ষতা উন্নত করা: আউটসোর্সিং দ্বারা কোম্পানি গুলো দক্ষতা উন্নত করতে পারেন। অন্যান্য দেশের ব্যবসায়িক দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং প্রযুক্তি বিদ্যার মাধ্যমে উচ্চ মানের সেবা পাওয়া যায়।

এছাড়াও, অন্যান্য কোম্পানিদের সাথে যোগাযোগ এবং সম্পর্ক স্থাপন করে কোম্পানি গুলো নতুন দক্ষতা অর্জন করতে পারেন।

পেশাদারী সম্প্রদায়ের সমর্থন করা: কিছু পেশাদারী সম্প্রদায়ের জন্য আউটসোর্সিং একটি উপায় হতে পারে তাদের ব্যবসায়িক ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য।

এটি অত্যন্ত ভূমিকা পালন করে, যেমন প্রতিষ্ঠান গুলো পণ্য উৎপাদন করতে সক্ষম হওয়ার পরামর্শ দিয়ে, মার্কেটিং কার্যক্রম চালানোর জন্য মার্কেটিং অভিযান পরামর্শ দেয় আরো ইত্যাদি।

এছাড়াও, কোম্পানি গুলো আউটসোর্সিং ব্যবহার করে, নিজেদের প্রাইমারি প্রক্রিয়া গুলোর চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার মাধ্যমে তাদের মৌলিক কার্যক্রমে আরও দক্ষতা অর্জন করতে পারেন।

আউটসোর্সিং এর জন্য যে সকল গুণাবলি থাকা প্রয়োজন?

আউটসোর্সিং করার জন্য কিছু প্রধান গুণাবলি অবলম্বন করা প্রয়োজন। একটি কোম্পানি যখন আউটসোর্সিং ব্যবহার করতে চায়, তখন নিম্নলিখিত গুণাবলি গুলোর উপস্থাপন করা উচিত। যেমন-

সুসংগঠনশীলতা: একটি কোম্পানির উপর ভরসা রাখা ও প্রশিক্ষণ প্রদানে সুসংগঠনশীলতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আউটসোর্সিং পার্টনার কোম্পানির সাথে ভাল সম্পর্ক স্থাপন, স্থায়ী যোগাযোগ এবং কর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রদানে একটি সুসংগঠনশীল প্রক্রিয়া থাকা প্রয়োজন।

দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা: আউটসোর্সিং পার্টনারের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং ক্ষমতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি কোম্পানি নিজের প্রযুক্তিগত এবং ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া গুলো সম্পন্ন করার জন্য দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন আউটসোর্সিং পার্টনারের সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে।

গুরুত্বপূর্ণ ইনফরমেশন সুরক্ষা: কোম্পানি গুলোর গুরুত্বপূর্ণ ডেটা এবং তথ্য সুরক্ষিত রাখা প্রয়োজন। আউটসোর্সিং করার সময়, কোম্পানি গুলো উচ্চমানের ইনফরমেশন সুরক্ষা ও ডেটা গোপনীয়তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ক্রিয়াকলাপ নিশ্চিত করতে হবে।

যোগাযোগের কার্যক্রম: ভাল যোগাযোগ সম্পর্ক একটি মৌলিক গুণাবলি। কোম্পানির আউটসোর্সিং পার্টনার সহজেই যোগাযোগ করা উচিত এবং কোম্পানির প্রয়োজনের মধ্যে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট নীতিমালা বিবেচনা করতে হবে।

মান নিয়ন্ত্রণ: আউটসোর্সিং পার্টনার দ্বারা সরবরাহকৃত পণ্য বা সেবার মানগত নির্ভরযোগ্যতা ও মানসম্পন্নতা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিষ্ঠান গুলোর নির্দিষ্ট মান নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির উপর ভরসা রাখা প্রয়োজন।

এ গুলো হল কিছু উদাহরণ, কোম্পানি গুলো আউটসোর্সিং ব্যবহার করার সময় বিবেচনা করতে পারে এমন গুণাবলি গুলো। প্রতিষ্ঠান নিজের প্রয়োজন ভিত্তি করে, আউটসোর্সিং প্যার্টনার বাছাই করতে পারেন।

আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি ?

আউটসোর্সিং কাজ করার জন্য সাধারণত নিম্নলিখিত কাজ গুলো সবচেয়ে চাহিদা সম্পন্ন। যেমন-

সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট

সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট আউটসোর্সিং সেক্টরে একটি চাহিদা সম্পন্ন কাজ। এটি অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট, ডাটাবেস ডিজাইন ও ব্যবস্থাপনা, সাইবার সিকিউরিটি সম্পর্কিত ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি কাজ গুলো অন্তর্ভুক্ত করে।

কম্পিউটার সংশ্লিষ্ট সেবাসমূহ:

ডাটা এন্ট্রি, ডাটা প্রসেসিং, ডাটা ম্যানেজমেন্ট, ইনভয়েস্টমেন্ট রিসার্চ, বুককিপিং, লেখকরা লেখা, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং ইত্যাদি কাজ গুলো আউটসোর্স হতে পারে।

কল সেন্টার সেবা:

কল সেন্টার সেবা আউটসোর্সিং করা হতে পারে, যেমন- প্রশ্নোত্তর, গ্রাহক সম্পর্ক, কাস্টমার সাপোর্ট, টেলিসেলস ইত্যাদি।

কনটেন্ট/ আর্টিকেল রাইটিং সেবা:

ব্লগ লেখা, আর্টিকেল লেখা, বুক লেখা, সংবাদ লেখা, সম্পাদক পরামর্শ ইত্যাদি কাজ গুলো আউটসোর্স হতে পারে।

গ্রাফিক্স ডিজাইন এবং মাল্টিমিডিয়া সেবা:

গ্রাফিক্স ডিজাইন, লোগো ডিজাইন, উইব ডিজাইন, ইলাস্ট্রেশন, এনিমেশন, ভিডিও এডিটিং ইত্যাদি কাজ গুলো আউটসোর্স হতে পারে।

মার্কেটিং এবং প্রচার সেবা:

ডিজিটাল মার্কেটিং, সামাজিক মাধ্যম মার্কেটিং, ইমেল মার্কেটিং, এসইও, পেইড প্রচার, পাবলিসিটি ইত্যাদি কাজ গুলো আউটসোর্স হতে পারে।

এগুলো শুধু মাত্র কিছু উদাহরণ, আউটসোর্সিং পার্টনারদের সাথে যোগাযোগ করে, আরও অনেক কাজ কেরতে পারবেন। কোম্পানি গুলো নিজেদের প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে, আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো করিয়ে নিয়ে থাকে।

আউটসোর্সিং এর জন্য জনপ্রিয় ওয়েবসাইট তালিকা

আউটসোর্সিং এর জন্য কিছু জনপ্রিয় ওয়েবসাইট নিম্নে উল্লেখ করা হলো। যেমন-

Upwork (www.upwork.com):

এটি একটি প্রয়োজনীয় স্কিল ওয়েবসাইট যেখানে ফ্রিল্যান্সারদের সাথে কোম্পানি গুলো সংযুক্ত করে থাকে। এখানে ফ্রিল্যান্সারদের আউটসোর্সিং কাজ খুঁজে পাওয়া যায়। এবং প্রতিষ্ঠান গুলো স্বল্প টাকা পেমেন্ট করে কাজ করতে পারে।

Freelancer (www.freelancer.com):

Freelancer হলো আরেকটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট যেখানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ফ্রিল্যান্সার সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। কোম্পানি গুলো এখান থেকে ফ্রিল্যান্সার নিয়োগ করতে পারে এবং ফ্রিল্যান্সার সাথে আউটসোর্সিং কাজ চুক্তি করতে পারে।

Fiverr (www.fiverr.com):

Fiverr হলো– একটি পপুলার ওয়েবসাইট যেখানে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য মাইক্রোজব বিভিন্ন সেবা পাওয়া যায়। কোম্পানির ক্লায়েন্ট’ রা এখান থেকে সেবা কিনতে পারে এবং প্রয়োজনে আউটসোর্সিং কাজ অর্জন করতে পারে।

Guru (www.guru.com):

এটি একটি অনলাইন প্রয়োজনীয় পেশাদার ওয়েবসাইট যেখানে ফ্রিল্যান্সারদের সাথে বিভিন্ন সেবা সরবরাহ করা হয়। এখানে ফ্রিল্যান্সারদের আউটসোর্সিং কাজ খুঁজে পাওয়া যায়। এবং প্রতিষ্ঠান গুলো কাজের জন্য পেশাদার ফ্রিল্যান্সারদের সন্ধান করতে পারে।

এটি মাত্র কিছু উদাহরণ, যেখানে ফ্রিল্যান্সারদের এবং প্রতিষ্ঠান গুলোর জন্য আউটসোর্সিং সেবা প্রয়োজনীয় এবং সমন্বিত করার জন্য ওয়েবসাইট সমূহ।

আপনি এই ওয়েবসাইট গুলো ব্যবহার করে, প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় কাজ গুলো আউটসোর্স করতে পারেন।

শেষ কথাঃ

আউটসোর্সিং ব্যবহার করা হলে কোম্পানি গুলো কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করতে এবং ব্যয় কমাতে সক্ষম হয়। এখন আউটসোর্সিং সম্পর্কিত কোনও বিষয়ে আরও প্রশ্ন থাকলে, কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

ধন্যবাদ…

আপনার জন্য আরও আর্টিকেল

Leave a Comment