ইউটিউব (YouTube) হল একটি ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট যা ব্যবহারকারীদেরকে বিভিন্ন ধরণের ভিডিও দেখার সুযোগ প্রদান করে।
ইউটিউব ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৈরি করা হয়। তার পরে ২০০৬ সালে সার্ভিস শুরু হয়। প্রাথমিক ভাবে, ইউটিউব ভিডিও দেখানো হতো।
তবে এরপর থেকেই ইউটিউব নিয়মিতভাবে ডেভেলপ করা হয়। এবং এখন একটি সম্পূর্ণ মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম হিসাবে পরিচালিত হয়।

ইউটিউবে ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন ধরণের ভিডিও দেখতে পারেন, যেমন মিউজিক ভিডিও, ফিল্ম ট্রেলার, টিউটোরিয়াল, কমেডি শো, নিউজ প্রোগ্রাম, ব্লগ, গেমিং, কর্মসূচি ইত্যাদি।
- ইউটিউব চ্যানেল এবং ভিডিও র্যাংক হচ্ছে না ? জেনে নিন গুরুত্বপূর্ণ টিপস গুলো
- ইউটিউব থেকে আয় করার [AtoZ] গাইডলাইন
- ইউটিউবে কোন ধরনের ভিডিও মানুষ বেশি দেখে ?
ইউটিউবে ব্যবহারকারীরা আপনাদের নিজস্ব চ্যানেল খুলতে পারেন। এবং তাদের নিজস্ব ভিডিও সামগ্রী আপলোড করতে পারেন। ব্যবহারকারীরা ইউটিউব এর মাধ্যমে টিভি প্রোগ্রাম, মিউজিক ভিডিও, ডকুমেন্টারি ইত্যাদির আপলোড করে, টাকা উপার্জন করতে পারেন।
ইউটিউব বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভিডিও প্ল্যাটফর্ম হিসাবে পরিচালিত হয় এবং প্রায়ই এটি বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়।
এটি দ্বারা বিশ্বের বিভিন্ন ধরণের মানুষ এবং সংস্কৃতির মধ্যে সংযোগ স্থাপিত হয়েছে। এবং এর মাধ্যমে অনেকে নিজের ভিডিও সামগ্রী তৈরি করে সম্প্রচার করতে পারেন।
তাই আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে ইউটিউবের ভিডিও আপলোড করার সঠিক নিয়ম গুলো জানিয়ে দেয়া হবে। তাই নিচে দেওয়া পদক্ষেপ গুলো ধাপে ধাপে অনুসরণ করুন।
ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করার সঠিক নিয়ম : মোবাইল দিয়ে (step by step)
ইউটিউবে মোবাইল দিয়ে ভিডিও আপলোড করতে হলে, আপনাকে নিম্নলিখিত ধাপ গুলো অনুসরণ করতে হবে। যেমন-
ধাপ ১: ইউটিউব অ্যাপ চালু করুন অথবা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
ধাপ ২: আপনার ইউটিউব একাউন্টে সাইন ইন করুন। যদি আপনার একাউন্ট না থাকে, তবে নতুন একাউন্ট তৈরি করুন।
ধাপ ৩: স্ক্রীনের ডান বট অংশের উপরের পাশের কর্নারে থাকা ক্যামেরা আইকনে ক্লিক করুন। এটি ভিডিও আপলোড করার জন্য ক্যামেরা অ্যাক্সেস করবে।
ধাপ ৪: আপনার ক্যামেরা চালু হবে এবং আপনি আপনার মোবাইলে যে ভিডিও তৈরি করতে চান? সেটি দিকে নজর রাখুন।
ধাপ ৫: ভিডিও আপলোড করার জন্য উপরের লোগোতে ট্যাপ করুন। এটি আপনাকে ভিডিও আপলোড করার বিভিন্ন মেনু সরবরাহ করবে।
ধাপ ৬: আপনার গ্যালারিতে থাকা ভিডিও গুলো পর্যালোচনা করে, আপনি আপনার পছন্দমতো ভিডিও টি নির্বাচন করতে পারবেন। এটি নির্বাচন করার পর ক্লিক করুন।
ধাপ ৭: ভিডিওটি আপলোড করার আগে আপনি কিছু পরিবর্তন করতে পারেন, যেমন শিরোনাম যুক্ত করতে পারেন। বিবরণ লিখতে পারেন, প্রাইভেসি সেটিংস নির্বাচন করতে পারেন, ট্যাগ যুক্ত করতে পারেন ইত্যাদি।
এই সব পরিবর্তন গুলো আপনি আপনার ভিডিওর সংক্ষিপ্ত বিবরণের নিচে পাবেন।
ধাপ ৮: শেষ ধাপে, আপনি “পাবলিশ” বা “আপলোড” ক্লিক করে, ভিডিওটি ইউটিউবে আপলোড করতে পারেন।
এইভাবে, আপনি মোবাইল দিয়ে ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করতে পারবেন। নিজের চ্যানেলে ভিডিও গুলো সাম্প্রতিক ও সম্প্রচারিত ভিডিও হিসাবে দেখতে পাবেন।
ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করার সঠিক নিয়ম : পিসি দিয়ে (step by step)
ইউটিউবে পিসি দিয়ে ভিডিও আপলোড করতে হলে, আপনাকে নিম্নলিখিত ধাপ গুলো অনুসরণ করতে হবে। যেমন-
ধাপ ১: ইউটিউব এর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে লগইন করুন। যদি আপনার একাউন্ট না থাকে, তবে নতুন একটি একাউন্ট তৈরি করুন।
ধাপ ২: প্রফাইলের উপরে অংশে থাকা “ভিডিও আপলোড করুন” এই বাটনে ক্লিক করুন।
ধাপ ৩: “ভিডিও আপলোড করুন” এ ক্লিক করার পর, এটি আপনাকে ভিডিওটি কোথায় থেকে আপলোড করতে চান? সেটি নির্বাচন করতে দেবে।
আপনি নিজের কম্পিউটার ফাইল থেকে ভিডিও আপলোড করতে চাইলে “ফাইল আপলোড করুন” অপশন বা আপনি গুগল ড্রাইভ বা ড্রপবক্স থেকে ভিডিও আপলোড করতে চাইলে।
“ড্রাইভ থেকে আপলোড করুন” অপশন বা আপনি ডেশবোর্ড থেকে সরাসরি ওয়েবক্যাম দিয়ে ভিডিও আপলোড করতে চান? তাহলে “ওয়েবক্যাম দিয়ে আপলোড করুন” অপশন নির্বাচন করুন।
ধাপ ৪: আপনার নির্বাচিত মেধার উপর নির্ভর করে, আপনাকে ভিডিও নাম এবং বিবরণ যুক্ত করতে হবে। এছাড়াও, আপনি ট্যাগ যুক্ত করতে পারেন এবং সংগ্রহ সেটিংস নির্বাচন করতে পারেন।
ধাপ ৫: এই পর্যন্ত, আপনি আপনার ভিডিও পর্যালোচনা করতে পারেন এবং পরিবর্তন করতে পারেন যদি প্রয়োজন হয়।
ধাপ ৬: প্রয়োজনে, আপনি ভিডিওটিকে গোপনীয় রাখতে পারেন বা অন্যদের সাথে শেয়ার করতে পারেন।
ধাপ ৭: শেষ ধাপে, “পাবলিশ” বা “আপলোড” ক্লিক করে ভিডিওটি ইউটিউবে আপলোড করুন।
এইভাবে, আপনি পিসি দিয়ে ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করতে পারবেন। নিজের চ্যানেলে ভিডিও গুলো সাম্প্রতিক ও সম্প্রচারিত ভিডিও হিসাবে দেখার সুযোগ পাবেন।
ইউটিউব চ্যানেল এবং ভিডিও আপলোড নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন ও উত্তরঃ
অনুগ্রহ করে, আপনার জন্য কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর নিম্নে দেওয়া হলো :
প্রশ্ন ১: কিভাবে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে পারি?
উত্তর: নিচের ধাপ গুলো অনুসরণ করে আপনি একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে পারবেন :
- ইউটিউবে সাইন ইন করুন আপনার একাউন্টে।
- সাইন ইন করার পর, প্রোফাইল চ্যানেল আইকনে ক্লিক করুন।
- “চ্যানেল তৈরি করুন” বাটনে ক্লিক করুন.
- চ্যানেলের নাম এবং বিবরণ লিখুন, এবং চ্যানেলের লোগো এবং কভার ফটো সেট করুন।
- “চ্যানেল তৈরি করুন” বাটনে ক্লিক করুন।
প্রশ্ন ৪: আমি কি ভিডিওর জন্য কপিরাইট সাংগ্রহ করতে পারি?
উত্তর: হ্যাঁ, আপনি ইউটিউবে আপনার ভিডিওর জন্য কপিরাইট সাংগ্রহ করতে পারেন। আপনি আপনার ভিডিওতে মনোনীত সঙ্গীত, গ্রাফিক্স, ছবি বা অন্য কিছুর ব্যবহার করতে পারেন।
যদি আপনি সেগুলোর জন্য যথাযথ অনুমতি অর্জন করেন বা নিজে তৈরি করেন। কিছু ভিডিও কন্টেন্ট, যেমন টিভি প্রোগ্রাম, সিনেমা সিন, বা অন্য প্রকার ভিডিওর ক্লিপ, পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন, বা স্লাইডশো, কপিরাইট সংরক্ষিত হতে পারে। এবং এগুলোকে আপনার ভিডিওতে ব্যবহার করা উচিত নয়।
যদি আপনি কপিরাইট সাংগ্রহ করেন না অথবা নিয়মানুযায়ী ব্যবহার অনুমতি অর্জন না করেন।
আপনি আপনার ভিডিওতে ব্যবহৃত যেকোনো কন্টেন্টের কপিরাইট সাংগ্রহ করার জন্য। নিজের উদ্যোগ নেওয়ার পূর্বে, সংশ্লিষ্ট কন্টেন্ট এর মালিকের সাথে যোগাযোগ করুন এবং অনুমতি অর্জন করুন।
প্রশ্ন ৫: আমি কি চ্যানেল সাবস্ক্রাইবারদেরকে টিপস এবং পরামর্শ দিতে পারি?
উত্তর: হ্যাঁ, আপনি ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবারদেরকে টিপস, পরামর্শ এবং তথ্য দিতে পারেন। আপনার চ্যানেলে বিভিন্ন ধরণের ভিডিও তৈরি করে এবং তাদেরকে উপযুক্ত সাবজেক্টে পরামর্শ দিতে পারেন।
এছাড়াও আপনি মনোনীত টিপস, টিউটোরিয়াল, হ্যাকস এবং আরও অন্যান্য তথ্যগুলি উপলব্ধ করাতে পারেন। যা আপনার সাবস্ক্রাইবারদের উপকারে আসবে।
এটি আপনার চ্যানেলকে পরিবর্তনশীল এবং আকর্ষনীয় করবে। এবং লোকজনের প্রতিক্রিয়া বা সাবস্ক্রাইবার বাড়ানোর জন্য সহজ উপায়।
এই গুলি কিছু উদাহরণ প্রশ্ন এবং উত্তর। আপনি ইউটিউবে চ্যানেল এবং ভিডিও প্রকাশনার সাথে আরও বিস্তারিত নিয়ম এবং তথ্য জানতে ইউটিউবের সহায়তা এবং সমর্থন সেকশনে দেখুন।
শেষ কথাঃ
আপনারা উপরোক্ত আলোচনায় জেনে নিতে পারলেন। ইউটিউব ভিডিও আপলোড করার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে। যা আপনারা মোবাইল এবং পিসি দ্বারা খুব সহজেই ইউটিউব ভিডিও গুলো আপলোড করতে পারবেন মুহূর্তের মধ্যে।
এছাড়া ইউটিউব ভিডিও আপলোড করার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে। আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে, তবে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
ধন্যবাদ।