বিজ্ঞান , এই শব্দটি সবার কাছেই কম বেশি পরিচিত। পরিচিত হবেই না বা কেনো। বর্তমান যুগ তো বিজ্ঞানেরই যুগ। সকালে ঘুম থেকে উঠার পর থেকে রাতে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত বিজ্ঞানের সাথেই তো থাকি আমরা। এইতো সকালে ঘুম থেকে উঠার পর টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করবেন সেখান থেকেই বিজ্ঞানের শুরু l বিজ্ঞান ছাড়া অচল আমাদের জীবন l গরম লাগলে ফ্যান ছেড়ে দিয়ে শান্তির ছোঁয়া পাওয়া, অসুস্থ লাগলে ওষুধ খেয়ে সুস্থতা অনুভব করা সবই তো বিজ্ঞানের অবদান।
কিন্তু বিজ্ঞান কি শুধু আশীর্বাদ? নাকি অভিশাপ ও?
সব কিছুর ভালো খারাপ দুটা দিক থাকে। বিজ্ঞানের ও আছে। দৈনন্দিন জীবনকে অনেক সহজ করে তুললেও বিজ্ঞানের অভিশপ্ত দিক গুলোকে অবহেলা করার উপায় নাই। বিজ্ঞান যেখানে আমাদের সময় বাঁচিয়ে যাচ্ছে সেখানে বিজ্ঞান আবার আমাদেরকে করে তুলছে পরনির্ভরশীল। আমরা এখন প্রযুক্তি নির্ভর। বলা যায় অলস হয়ে যাচ্ছি। ছোটো শিশু থেকে নিয়ে বড় সবাই এখন স্মার্টফোনপ্রেমী। এই স্মার্টফোন শিশুর মেধা বিকাশে কতটা বাধা দেয় তা কেউ ভেবে দেখি না। শিশুর মানসিক ও শারীরিক অনেক ক্ষতি সাধন করে এই স্মার্টফোন। যখন এতটা প্রযুক্তি ছিলো না তখন শিশুরা ঘরের বাইরে খেলতে যেতো। সেই সময় শিশুদের মধ্যে তৈরি হতো বন্ধুত্বপূর্ন আচরণ, একে অপরের সাথে মিলে মিশে থাকার মানসিকতা যা বর্তমানে রীতিমত দেখায় যায় না। এখন আসি তরুণ সমাজে বিজ্ঞানের অপকারিতা। একটি দেশের জন্য তরুণ সমাজ সেই দেশের মেরুদন্ড। কিন্তু বর্তমানে একদল তরুণ সমাজ প্রযুক্তির অবদানে বিভিন্ন অপকর্মের লিপ্ত হয়েছে। পত্রিকার কাগজ খুললেই দেখা যায় ধর্ষণ, খুন, ডাকাতি এই রকম অহরহ ঘটনা। এইসব ঘটনার পিছনে লুকিয়ে থাকে বিজ্ঞানের হরেক রকম অবদান। পর্নগ্রাফিতে আসক্তি তরুণ সমাজকে নিয়ে যাচ্ছে অন্ধকারের।
বিজ্ঞান অভিশাপ হিসেবে স্বাস্থ্যের জন্য ও দায়ী। এখন মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে বিজ্ঞান ওষুধ তৈরি করে, যে বিজ্ঞান অসুস্থ রোগীকে সুস্থ করে তুলে সে বিজ্ঞান কিভাবে স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকির হতে পারে? হা অবশ্যই হতে পারে। দিনের বেশিরভাগ সময় যারা মোবাইল, ল্যাপটপ স্ক্রিনে কাটায় তাদের বেশিভাগের চোখের সমস্যা। অফিসে এক নাগাড়ে আট থেকে দশ ঘন্টা যারা বসে কাজ করে তাদের দেখা যায় স্থূলতার সমস্যা। এই স্থূলতার কারণে দেখা যায় বিভিন্ন রকমের মরণঘাতি রোগ যেমন : হাই কোলেস্টেরল, হাই ব্লাড প্রেসার, স্ট্রোক ইত্যাদি।
তাহলে বুঝা যাচ্ছে বিজ্ঞান উপকার করছে ঠিক কিন্তু অপকারিতা ও কম না। তাহলে কি আমরা বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির ব্যবহার ছেড়ে দিবো ? নাহ, এইটা সল্যুশন না এবং এইটা করা সম্ভব ও না। তাহলে উপায়? উপায় হলো বিজ্ঞানকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করা। শিশুদেরকে যতো সম্ভব স্মার্টফোন, ল্যাপটপ এইসব থেকে দূরে রাখা। যারা অফিসে কাজ করে সময়ে সময়ে বিরতি নেয়া। নিয়মিত ব্যায়াম করা। তরুণ সমাজের মধ্যে সামাজিক মূল্যবোধ গড়ে তোলা। এভাবেiই বিজ্ঞান এর অভিশপ্ত দিকগুলো তে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।