নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম : আমাদের মধ্যে অনেক মানুষ রয়েছে, যারা সময়মতো ভোটা নিবন্ধন করতে পারেননি।
বিশেষ করে, তারা জানেন না যে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম কি এবং নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে ? বর্তমান সময়ে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করা অনেক সহজ ব্যাপার।

কিন্তু অনেকের সঠিকভাবে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন না। যার ফলে তাদেরকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
তাই আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে, নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম এবং নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে সে বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব।
যা অনুসরণ করে আপনার নতুন ভোটারের আবেদন করতে পারলে, দ্রুত সময়ের মধ্যে অনলাইন থেকে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
তো বন্ধুরা চলুন আর সময় নষ্ট না করে, জেনে নেয়া যাক। নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত।
ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে নতুন ভোটার
বাংলাদেশের প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক অর্থাৎ 18 বছর বয়সেদের ভোটার হওয়া নাগরিক অধিকার। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন সময়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে থাকেন।
এই সময় ভোটার তথ্য সংগ্রহকারীরা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে, দুই নং ফরমে নতুন ভোটা নিবন্ধন ফরম পূরণ করে নেন।
এছাড়া ভোটার তথ্য সংগ্রহকারীদের সুবিধামতো ভেনু তৈরি করে ডাটা এন্টির কাজ সম্পন্ন করে থাকেন। তো যারা নতুন ভোটারের যোগ্য ব্যক্তি তারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে খুব সহজেই ভোটার হতে পারবেন।
আমরা জানি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন প্রতিবছর একবার ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু করে নতুন ভোটার বানিয়ে থাকেন। আপনারা সেই সময় নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য আবেদনকারীর বয়স
আপনি যদি নতুন ভোটার নিবন্ধন বা ভোটার আইডি কার্ড করতে চান। সে ক্ষেত্রে আবেদনকারীর বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বছর হতে হবে। এক্ষেত্রে ১৮ বছরের বেশি হলে সমস্যা নেই।
কিন্তু আঠারো বছরের কম নাগরিক, ভোটার হতে পারবে কিন্তু, ভোটার আইডি কার্ড গ্রহণ করতে পারবে না, সেই সাথে ভোট ও দিতে পারবে না।
যখন ব্যক্তির বয়স ১৮ বছর হয়ে যাবে তখন অটোমেটিক ভাবে ভোটার তালিকায় নাম চলে যাবে। তখন ভোটার আইডি কার্ড পাবে সেই সাথে ভোট দিতে পারবে।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম
আপনার যারা নতুন ভোটার নিবন্ধন করতে চান? তারা দুই পদ্ধতিতে, নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে পারবেন। তো নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম জানতে নিচের অংশগুলো অনুসরণ করুন।
০১. উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে দুই নং নিবন্ধন ফরম সংগ্রহ করুন। ভোটের নিবন্ধন ফরম পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, আবেদন ফরমের সাথে জমা দিন।
প্রতিটি দুই নং নতুন ভোটার নিবন্ধন ফরমে একটি করে ইউনিক নম্বর রয়েছে। যার মাধ্যমে ভোটার আবেদনকারী তথ্যাদি যাচাই করা হয়।
তো ভুটান নিবন্ধন ফরমটি ফটোকপি করে একাধিক ব্যক্তির ব্যবহার করতে পারবে না। কোন কম্পিউটার ফটোকপির দোকান থেকে এই ফর্ম সংগ্রহ করতে পারবেন না।
ভোটার আবেদন করার পরে উপজেলা নির্বাচন অফিসার এবং রেজিস্ট্রেশন অফিসার আপনার আবেদন যাচাই করে, সকল তথ্য এবং কাগজপত্র সঠিকতা পেলে, নতুন ভোটার অনুমোদন করে দিবেন।
০২. অনলাইনের মাধ্যমে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল এই services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে।
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন সাবমিট করলে।২ নং নতুন ভোটার নিবন্ধন ফরম ডাউনলোড হবে। সেটি প্রিন্ট করে, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আবেদনের সাথে সংযুক্ত করে উপজেলা নির্বাচন অফিসে জমা করতে হবে।
তারপর উপজেলা নির্বাচন অফিসার এবং রেজিস্টার অফিসার আপনার ভোটার আবেদন এবং দাখিল করার কাগজপত্র যাচাই করে, সঠিকতা পেলে, নতুন ভোটার হওয়ার অনুমোদন দিয়ে দিবে।
নতুন ভোটার নিবন্ধন ফরমে গুরুত্বপূর্ণ কাজ গুলো কি ?
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য নির্বাচন অফিস থেকে ২ নং ফরম নিয়ে আবেদন করতে পারবেন।
অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করে উভয় ক্ষেত্রে, একটি জরুরী কাজ আছে সেটি হল 2 নং নতুন ভোটার নিবন্ধন ফরম এর পিছনের পাতায়, ৩৪ নং ক্রমিকের সনাক্তকারীর এন আই ডি।
এবং ৩৫ নং ক্রোমিকে স্বাক্ষর এই দুইটি জায়গায় আপনার প্রতিবেশী বা অন্য যেকোনো একজন পরিচিত ব্যক্তির ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার সংযুক্ত করতে হবে।
তারপর সেই ব্যক্তির স্বাক্ষর সংগ্রহ করতে হবে। পিতা ও মাতা এবং স্বামী-স্ত্রীর ভোটার আইডি কার্ড এ ক্ষেত্রে না ব্যবহার করাই ভালো। কারণ তাদের ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার ফর্মের প্রথম পাতায় দেওয়া থাকবে।
তারপর ফর্মে থাকা ৪০ নম্বর ক্রমিকে যাচাইকারীর নাম সংযুক্ত করতে হবে। এক্ষেত্রে যাচাইকারী অবশ্যই একজন জনপ্রতিনিধি ব্যক্তি হতে হবে। এক্ষেত্রে হতে পারে চেয়ারম্যান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, মেম্বার, মহিলা মেম্বার, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইত্যাদি ব্যক্তি।
যাচাইকারীর নাম এর জায়গায় কোন সাধারণ মানুষের নাম লিখবেন না। এতে আপনার নতুন ভোটার আবেদন বাতিল হয়ে যেতে পারে।
তারপর নতুন ভোটার আবেদন পত্রের ৪১ নাম্বার কমিকে যাচাইকারীর এনআইডি নাম্বার সংযুক্ত করতে হবে। তারপর 42 নং টমিকে যাচাইকারী স্বাক্ষর গ্রহণ করতে হবে অবশ্যই সিলসহ।
নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে ?
আপনারা উপরের আলোচনায় জানতে পারলেন নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে। এখন আপনাদের জানিয়ে দেবো নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে। যেমন-
- ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র
- পিতার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- বিবাহিত হলে কাবিননামার সনদ
- ব্যক্তির রক্তের গ্রুপের রিপোর্ট
- চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, ওয়ার্ড নাম্বার বা কাউন্সিলর এর প্রত্যয়ন পত্র
- নাগরিকত্ব সনদপত্র
- বাসা বাড়ির যেকোনো একজনের নামে থাকা বিদ্যুৎ বিল, পানি বিল, গ্যাসের বিল কপি
- পৌর করের রশিদ, চৌকিদারী টেক্সট রশি, বাড়ি ভাড়ার রশেদ যেকোনো একজন সদস্য নামে হলেই হবে
- আগে কখনো ভোটার হয়নি মর্মে একটি অঙ্গীকারনামা প্রদান করতে হবে
- পাসপোর্ট ধারী ব্যক্তিদের পাসপোর্ট এর কপি
- ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কপি
আপনি যদি নতুন ভোটার হতে চান? তবে অবশ্যই উপরে দেয়া ভোটার হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো সংগ্রহ করতে হবে।
তারপর, ভোটার আবেদনের সাথে এই কাগজপত্র গুলো সংযুক্ত করে উপজেলা নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে।
শেষ কথাঃ
আপনি যদি নতুন ভোটার হতে চান, তাহলে সরাসরি উপজেলা নির্বাচন অফিসের মাধ্যমে আবার অনলাইনের মাধ্যমে, নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
এছাড়া নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে সে বিষয়েও জানিয়ে দিয়েছি। আর এই আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার যদি কোন কিছু জানার থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
সেইসাথে আমাদের ওয়েবসাইট থেকে, এন আইডি কার্ড অর্থাৎ ভোটার আইডি কার্ড সম্পর্কে, নতুন নতুন আপডেট জানতে চাইলে নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।