বর্তমান সময়ে, আমাদের টাকা প্রয়োজনে, বিশেষ কোন প্রয়োজনে অনেক সময় নিজেদের জমি অন্যের কাছে বন্ধক রাখতে হয়। তো আমরা যখন জমি বন্ধক দিতে যাই।
তখন কিভাবে জমি বন্ধক দেওয়ার চুক্তিপত্র তৈরি করতে হয়। বা জমি বন্ধক রাখার নিয়ম কি এবং জমি বন্ধক রাখার দলিল কিভাবে লিখতে হয় কি কি শর্ত থাকে এর চুক্তিপত্র দলিলে।
এ বিষয়ে আমাদের আর্টিকেলে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। নিচের আলোচনাতে আমরা জমি বন্ধক রাখার নমুনা হিসেবে একটি ফরমেট প্রস্তুত করেছি।
যে জমির বন্ধক নমুনা অনুসরণ করে, আপনারা খুব সহজেই অঙ্গীকার নামা লিখে ফেলতে পারবেন।
আর জমির বন্ধক অঙ্গীকারনামা লেখার জন্য অবশ্যই একটি স্ট্যাম্প / দলিল প্রয়োজন হবে। আপনারা চাইলে ১৫০ টাকার স্ট্যাম্পে বা ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে জমি বন্ধকের অঙ্গীকারনামা লিখতে পারেন।
তো চলুন আর সময় নষ্ট না করে জেনে নেই। জমি বন্ধক রাখার অঙ্গীকারনামা কিভাবে লিখতে হয়।
“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম”
জমি বন্ধকের অঙ্গীকার নামা
ব্যক্তির নামঃ (যে জমির মালিক তার নাম লিখবেন), পিতার নামঃ (জমির মালিকের পিতার নাম লিখবেন), মাতার নামঃ (এখানে জমি মালিকের মাতার নাম লিখবেন), ধর্মঃ ইসলাম, জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী, পেশাঃ কৃষি।
প্রথম পক্ষ জমির মালিক – বন্ধন দাতা।
ব্যক্তির নামঃ (যে জমি বন্ধক নিবে তার নাম লিখবেন), পিতার নামঃ (জমির বন্ধক নিবে তার পিতার নাম লিখবেন), মাতার নামঃ (এখানে বন্ধক নিবে তার মাতার নাম লিখবেন), ধর্মঃ ইসলাম, জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী, পেশাঃ কৃষি।
দ্বিতীয় পক্ষ জমির – বন্ধন দাতা।
পাতা- ২
এরকম ভাবে জমি বন্ধকের অঙ্গিকার নাম আর লেখার সময়, প্রথমে প্রথম পক্ষ জমির মালিক এবং দ্বিতীয় পক্ষ জমির বন্ধক দাতার নাম ঠিকানা উল্লেখ করবেন।
তারপর বিস্তারিত লেখা শুরু করবেন। যেমন-
পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার নামে শুরু করিয়া, অত্র জমি বন্ধক অঙ্গীকারনামা আইননুগ বয়ান শুরু করিতেছি। যেহেতু প্রথম পক্ষ নিম্নে তফসিলে বর্ণিত সম্পত্তির মালিক সূত্রে প্রাপ্ত হইয়া শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখল করিয়ে আসিতেছেন।
প্রথম পক্ষের নগদ টাকার বিশেষ দরকার হইলে, দ্বিতীয় পক্ষকে নিম্নে তফসিলে বর্ণিত ৫ নং দাগে ২০ শতাংশ জমি বন্ধক দেওয়ার প্রস্তাব করিলে, আপনি দ্বিতীয় পক্ষ এই প্রস্তাব গ্রহণ করিয়া নিম্নে, ২০ শতাংশ জমি বন্ধক নিতে সম্মতি হইয়াছেন। যেহেতু প্রথম পক্ষ এবং দ্বিতীয় পক্ষ কয় শর্ত সাপেক্ষে অত্র জমি বন্ধক নামা চুক্তিপত্রে আবদ্ধ হইলাম।
জমি বন্ধকের নাম আমার শর্ত সমূহ
০১. প্রথম পক্ষ, জমি বন্ধক দাতা, দ্বিতীয় পক্ষ, জমি বন্ধক গ্রহীতার নিকট হতে, নিম্নের তফসিলে বর্ণিত ফসলি খালি জমি বন্ধক রাখিয়া এককালীন নগদ ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকা সাক্ষীগণের মোকাবেলায় বুঝিয়া নিয়েছেন।
০২. অত্র অঙ্গীকার জমি খানা ফসলে জমি, দ্বিতীয় পক্ষ নিজেই ফসলাদি রোপন করিয়া তাহা ভোগ করিবেন। তিনি চাইলে অন্য কারো সহযোগিতার মাধ্যমে লাগাইয়া ভোগ করিতে পারিবেন।
০৩. যতদিন না পর্যন্ত প্রথম পক্ষ, দ্বিতীয় পক্ষকে টাকা ফেরত না দিতে পারবে। ততদিন পর্যন্ত দ্বিতীয় পক্ষ বৈদখল করে আসবে। এতে করে প্রথম পক্ষ কোন ওজর আপত্তি করিতে পারিবেন না।
০৪. প্রথম পক্ষ যখন জমি বন্ধক বাবদ ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকা দ্বিতীয় পক্ষের নিকট ফেরত দেবে। তখন দ্বিতীয় পক্ষ বন্ধুকে জমির দখল প্রথম পক্ষের নিকট ফেরত দিতে বাধ্য থাকিবেন।
০৫. প্রথম পক্ষ জমির বন্ধক থাকাকালীন কোন, কারো কাছে বন্ধুকে জমি হস্তান্তর করিতে পারিবেন না। যদি হস্তান্তর করে দ্বিতীয় পক্ষ তাহলে আইনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে পারিবে।
০৬. জমি দাতা যদি চুক্তি চলাকালীন সময়ে মৃত্যুবরণ করে, আবার বন্ধকী জমির গ্রহীতা মৃত্যুবরণ করলে তাহাদের বৈধ হওয়ার উক্ত বন্ধকী টাকা গ্রহণ এবং ফেরত দিতে বাধ্য থাকিবেন।
এতদার্থে স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে, সুস্থ মস্তিষ্কে, বিনা প্ররোচনায়, অত্র ফসলি জমির বন্ধক নামা দলিল পাঠ করিয়া উপস্থিত সাক্ষী গনের মোকাবেলায় নিজ নাম স্বাক্ষর করিলাম।
পাতা- ৩
বন্ধকী অঙ্গিকার নামা দলিলের তফসিল পরিচয়
জেলাঃ (এখানে জেলার নাম লিখবেন) উপজেলাঃ (এখানেও উপজেলার নাম লিখবেন), এখানে জমির দাগ দম লিখবেনঃ (যেমন- ৫ নং)
জমির দাগ নং জমির পরিমাণ
০১। ০৫ নং।
০২। ২০ শতাংশ।
স্বাক্ষীগণের নাম ও স্বাক্ষর
০১। প্রথম স্বাক্ষী।
০২। দ্বিতীয় স্বাক্ষী।
০৩। তৃতীয় স্বাক্ষী।
প্রথম পক্ষ জমি বন্ধকী দাতা’র স্বাক্ষর এবং দ্বিতীয় পক্ষ জমি বন্ধক গ্রহীতা’র স্বাক্ষর
শেষ কথাঃ
তো আপনারা যারা টাকার প্রয়োজনে জমি বন্ধক দিতে চান? তারা উপরে উল্লেখিত জমি বন্ধক এর অঙ্গীকারনামা অনুসরণ করে, খুব সহজেই ১৫০ টাকা বা ৩০০ টাকা স্ট্যাম্পে চুক্তিপত্র সম্পন্ন করতে পারবেন।
এই অঙ্গীকারনামা আমার লেখার পাশাপাশি আরো অন্যান্য দলের লেখার নিয়ম জানতে, আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।