বর্তমান সময়ে বহু মানুষের জিজ্ঞাসিত যার কেতাবি নাম আউটসোসিং। তার সাথে অনলাইন এর এসব বিষয় নিয়ে কিছু ভুল ধারণা বা ভুল তথ্য নিয়ে আলোচনা করব।
আপনি এই পোস্টে জানতে পারবেন আউসোর্সিং কি? আউটিসোসিং কিভাবে শিখব? আপনি যদি উক্ত বিষয়ে সঠিক তথ্য পেতে চান তাহলে আমাদের লেখা গুলো শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
এখনকার সময়ে অনেকেই গুলিয়ে ফেলে ফ্রিল্যান্সিং, আউটসোসিং, মার্কেটার কিংবা ফ্লিপার এর মতো টার্মস বা পেশা গুলো।
তাই উক্ত ভুল ধারণা গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরণে এই আর্টিকেল লেখা। তাই শেষ পর্যন্ত আমাদের লেখা পড়ুন।
ফ্রিল্যান্সিং কি ? (What is Freelancing)
ফ্রিল্যান্সিং হলো মুক্ত বা স্বাধীন পেশা। এটি হলো আপনি নির্দিষ্ট কোন ব্যাক্তি বা কোম্পানির জন্য কাজ না করে। নিজের অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতার মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে কাজ করতে পারবেন।
এটিই হতে পারে নিজ দেশে বা বাইরে যে কোন দেশে যে কোন জায়গায়। আবার এটি হতে পারে চুক্তি ভিত্তিক একটি বা অসংখ্য কাজ।
ফ্রিল্যান্সিং বলতে যা বোঝানো হয় সেটি হলো অনলাইনে বিভিন্ন অভিজ্ঞতার মাধ্যমে ক্যারিয়ার গড়াকে। একজন ফ্রিল্যান্সার অফলাইনে হতে পারে আবার অনলাইনেও হতে পারে।
তবে বর্তমান সময়ে অনলাইনেই লোকেরা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করে। আলোচনার শুরু থেকেই বলেছি অভিজ্ঞতার উপর জোর দিয়ে বলেছি।
এর কারণ হলো আপনি যখন বিশেষ অভিজ্ঞ হবেন তখন অনলাইন বা অফলাইন কাজ এর সাধারণত অভাব হবে নঅ।
অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ ফ্রিল্যান্সার হিসেবে করতে চাইলে তাকে বলা হয় ফ্রিল্যান্সিং জব।
আউটসোর্সিং কি ? (What is Outsourcing)
আউটসোর্সিং এর বিষয়ে বলতে গেলে একটি বিজনেস প্রাকটিস যেখানে ৩য় এক পক্ষের মাধ্যমে কাজ করিয়ে নেওয়া হয়।
এক্ষেত্রে মনে রাখবেন যে, এটি একটি বিজনেস। আসলে ফ্রিল্যান্সিং একটি মুক্ত পেশা হলেও সেটি একদিকে দিয়েও একটি বিজনেস।
এখানে পার্থক্য হলো এ গুলো অন্তর্জাল এর দুনিয়াতে হয়। যাকে আমাদের দেশর অধিকাংশ লোক টেন সার্ফিং তথা বিনোদন বা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করার ক্ষেত্র হিসেবে গণ্য করা হয়।
এছাড়া অনেক আইটি সেন্টার এবং পরিচিত ওয়েবসাইট গুলো ফ্রিল্যান্সার ও আউটিসোর্সিং কে এক সাথে গুলিয়ে ফেলে।
সহজ ভাবে বলতে গেলে আউটসোর্সিং হলো- নিজের কাজ কন্টাক্ট করে অন্য কোন লোক দিয়ে করিয়ে নেওয়া কে আউটসোর্সিং বলে।
যে কাজ করে সে হলো ফ্রিল্যান্সার আর যে কাজ করিয়ে নেন সে হলো আউটসোর্সার।
অনেকে মনে করে যে, আউটসোর্সিং শুধু মাত্র অনলাইনেই করা যায়। এটি কিন্তু একটি ভুল ধারণা করণ আউটসোর্সিং কাজ আপনি অফলাইনেও করতে পারবেন।
কিভাবে আউটসোর্সিং করে?
মনে করুন- আপনার একটি কোম্পানি আছে। সেখানে আপনি কম্পিউটার যন্ত্রাংশ গুলোর সার্ভিস দিয়ে থাকেন।
যেমন- মাদারবোর্ড, র্যাম, রোম, প্রসেসর, মাউস, কিবোর্ড ইত্যাদি এই জাতীয় জিনস।
এক সময় আপনি খেয়াল করলেন আপনার সেই কোম্পানির যে ওয়েবসাইট আছে। সেটি গুগল বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক হচ্ছে না।
এনখন আপনার কাছে তেমন কোন এসইও এক্সপার্ট নাই। যারা আছেন তারা অন্যান্য কাজে ব্যস্ত যে, এদিকে সময় দিতে পারবে না।
তখন আপনি অবশ্যই বিকল্প রাস্তা খুজবেন। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবার জন্য অবশ্যই আপনার ব্যবসার জন্য একটি লাভজনক পহ্না হিসেবে ফ্রিল্যান্সার খোজবেন।
তখন আপনি বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সার ওয়েবসাইট গুরোতে প্রবেশ করে একটি এডস দিলেন যে, আপনার একজন এসইও এক্সপার্ট লাগবে।
এই কাজটি যে করে দিতে পারবেন তাকে কাজের বিনিময়ে ভালো টাকা দেওয়া হবে। এই যে আপনার কাজ আপনি অন্য জনকে দিয়ে করিয়ে নিচ্ছেন এক্ষেত্রে আপনি হলেন আউটসোর্সার আর যে কাজটি করছে সে আউটসোর্সিং করছে।
আউটসোর্সিং’এর বিভিন্ন ধরন
আউটসোর্সিং এর প্রকৃতি ও কাজ এর ধরণ একে ভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা যায়। নিচের অংশ থেকে কিচূ জেনে রাখার স্বার্থে আমরা কিছু প্রকার ও ধরণের নাম বলেছি।
আপনি যখন আউটসোর্সিং মোটামুটি ভাবে বুঝতে শিখবেন। তখন দেখেতে পারবেন ইতোমধ্যে আপনি নিজের অজান্তেই অনেক ধরণের আউটিসোর্সিঙ এর কাজ করে নিয়েছেন।
এছাড়া এই টাইপ গুলো ভালো করে ব্যাখ্যা করতে গেলে একটি পর্ণঙ্গ আর্টিকেল লেখার দরকার হবে। তাই আপনার সামনে একদিনে পুরো বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
আউটসোর্সিং এর কিছু ধরণঃ
- Business Process Outsourcing.
- Professional Outsourcing.
- IT Outsourcing.
- Project Outsourcing.
- Operational Outsourcing ইত্যাদি।
আউটসোর্সিং কেন করা হয় ?
আউটসোর্সিং কি? কেন করা হয়? এখন আপনি পরিষ্কার ধারণা এখানে জেনে নিতে পারবেন। আসলে আউটসোর্সিং শুধু একটি ভালো রিলেশনশিপ বিল্প আপন করে কাজ করিয়ে নেওয়া না।
এটি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পার্টনারশিপের মতো হয়ে যায় যেখানে একটি বিজনেস এগ্রিমেন্ট থকে।
আপনি যদি একটি ছোট কজের জন্য বেশি সময় কোন এমপ্লোয়ি রাখতে না চান? একজন পূর্ণাঙ্গ এমপ্লয়ি প্রয়োজন না হয় সে জন্য একজন ফ্রিল্যান্সার সব সময় ভালো একটি অপশন।
একজন অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সার দিয়ে যে কোন কাজ আপনি অল্প সময়ের মধ্যে করিয়ে নিতে পারবেন। আর এই সময়ে টাকাই হলো সকল কিছুর সঙ্গী।
আপনি যদি অনলাইনের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সার দিয়ে আউটসোর্স করাতে চান? তাহেলে সেখানে দিন রাত অফিস সিডিউল আসলে কাজ করে না।
আপনি দিন বা রাতের যে কোন সময় কাজ করিয়ে নিতে পারবেন টাকার বিনিময়ে। দেখা গেল আপনি সকালের ঘুম থেকে উঠার পরে বা বিকালে কফির টাইমে আপনার অপসর সময় কাজটি হাতে পেয়ে গেলেন।
প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সররা সাধারণত হাই অভিজ্ঞ ও নিয়মানুবর্তী হয়ে থাকে। এ জন্য আপনি বিশ্বমানের কাজ যথাযথ সময়ে হাতে পেয়ে যাবেন।
সেই সাথে অনেক অল্প বা কম সময়ের মধ্যেই পেয়ে যাবেন। আউটসোর্সিং করার মাধ্যমৈ মার্টেটে আপনার বিজনেসকে প্রাগৈতিহাসিক বিজনেস ট্রাট্রেজির মাধ্যমে ফলো না করে অনেক বেশি গতিশীল রাখতে পারবেন।
এখানে আপনাকে অনেক অল্প টাকা ইনভেস্ট করতে হবে। এবং লং টাইম এমপ্লয়ি টাকা দিয়ে রাখার মতো ঝামেলাই পড়তে হবে না।
আউটসোর্স হিসেবে কি কি ধরনের কাজ করা যায়?
আউটসোর্স এর মূল লক্ষ হলো টাকা, সময় এবং শ্রম সাশ্রয় করে নিজের বিজনেসকে উন্নত ও গতিশীল করা।
এ জন্য ঠিক যে, কাজ গুলো অনলাইন এবং অফলাইনে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে করা যায়। ঠিক তেমন ভাবে একই কাজ গুলো আউটসোর্স হিসেবেও করা যায়।
নিচে আউটসোর্সিং করা যায়। এমন কিছু কাজের নামঃ
- সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটার।
- ফ্লিপার ।
- ট্যাক্স ফিলিং এক্সপার্ট ।
- ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট আউটসোর্স ।
- আউটসোর্স পে রোল প্রসেসিং এক্সপার্ট ।
- রিসার্চ & সাপোর্ট।
- সেলস & মার্কেটিং ।
- একাউন্টিং ও বুকিকিপিং ।
- ডিজাইন ও ম্যানুফ্যাকচারিং ।
- গ্রাফিকস ডিজাইন ।
- অডিও, ভিডিও এডিটিং ।
- কাস্টমার সার্ভিস ।
- ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ।
- এসইও এক্সপার্ট ।
- ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ।
- কন্টেন্ট রাইটিং, কপি রাইটিং ইত্যাদি।
আউটসোর্সিং কিভাবে শিখব ?
আউটসোর্সিং করার জন্য একটি ভালো বিজনেস সেন্সের দরাকার হলেও সব ক্ষেত্রেই একজন অভিজ্ঞ প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার দরকার নেই।
আবার সবাই সব কিছু ও জানার দরাকার নাই। কাজ করার মতো কিছু জানলেই হয়ে যাবে। তবে যেখোনে যে জিনিসটি আউটসোর্সিং করেন না কেন তা যাচাই করে নেবার ক্ষমতা ও যোগ্যতা থাকা দরকার।
এ জন্য আউটসোর্সিং করার আগে নিজে কিছু দিন বিভিন্ন বিষয় এর উপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার উচিত। আপনি আউটসোর্সিং শিখতে চাইলে প্রথমে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কিছু মার্কেপ্লেস গুলো কাজ করতে পারেন।
এরকম ভাবে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করার ফলে আপনি ধিরে ধিরে আউটিসোর্সিং এর কাজ শিখে ফেলতে পারবেন।
অনেকেই প্রশ্ন করে যে, কিভাবে আউটসোর্সিং শিখব? আপনি যদি উক্ত আর্টিকেল পড়েন তাহলে আপনি সেই প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন।
আউটসোর্সিং শেখার জন্য আপনি অনলাইনে সার্চ করে ফ্রি কোর্স করতে পারেন। এছাড়া আপনি যদি চান ভিডিও দেখে কোর্স করবেন।
সেক্ষেত্রে ইউটিউবে সার্চ করে আপনার পছন্দ মতো যে কোন আউটসোর্সিং কোর্স অনুসরণ করে, আউটসোর্সিং এর কাজ শিখে নিতে পারবেন।
এছাড়া আপনি যদি পরিস্কার ভাবে আউটসোর্সিং শিখতে চান। তাহলে আপনার পরিচিত যারা আপনার দেশে থেকে আউটসোর্সিং কাজ করে আয় করছে তাদের সাথে যোগাযোগ করে কাজ শিখে নিতে পারেন।
তাদের কাছ আউটসোর্সিং শেখার বিনিময়ে কিছু টাকা খরচ করতে হবে। তবে অল্প টাকা খরচ করে যদি কাজ শিখতে পারেন তবে দীর্ঘস্থীয় ভাবে অনলাইনে আউটিসোর্সিং করে আয় করতে পারবেন।
আরো দেখুনঃ
- ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং কি আর কিভাবে করবেন। চলুন কিছু তথ্য জেনে নেই
- অনলাইন ইনকাম ২০২১ ট্রিক্স – অনলাইনে আয়ের উপায়
- লগো ডিজাইন করে আয় করুন মাসে 50,000/- টাকা। লগো ডিজাইন A2Z
- 2021 সালে সেরা ৭টি ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট
শেষ কথাঃ
তো বন্ধুরা, এই পোস্টে আপনি জানতে পারলেন, আউটসোর্সিং কি? কিভাবে আউটসোর্সিং শিখবেন। আপনি যদি উক্ত বিষয় গুলো পড়েন। তাহলে সঠিক তথ্য গুলো জেনে নিতে পারছেন আশা করা যায়।
আমাদের লেখা আপনার কাছে কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আরো নতুন আর্টিকেল পড়তে চাইলে নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।