সিভি কি : সিভি হলো- (curriculum vitae) এর সংক্ষিপ্ত রূপ। সিভি হলো- একটি ব্যক্তিগত তথ্যাদি’র রেকর্ড, যা কোনও সার্বিক বা সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত লোকের পূর্বে প্রদর্শন করা হয়।
এই তথ্যাদি সরকার বা অন্যান্য সংস্থা দ্বারা কর্মচারীদের পাসপোর্ট অনুমোদন এবং গোপনীয়তা নিশ্চিত করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
সিভির মাধ্যমে, একজন ব্যক্তির অন্যান্য তথ্যাদি যেমন- ব্যক্তিগত পরিচয়, সংস্থায় কর্মরত সময়কাল, পদের ধরন এবং স্তর, সংঘ এবং গোপনীয়তা স্তর বিবরণ প্রদান করা হয়।

সিভি তথ্য সাধারণত তিনটি স্তরে বিভক্ত করা হয় – মাধ্যমিক সিভি, উচ্চ মাধ্যমিক সিভি এবং মাননীয় সিভি।
সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত লোকের জন্য সিভি অত্র অংশ হালকা বা বড় হতে পারে, যা তাদের অত্র কর্মস্থলে গোপনীয়তা এবং সুরক্ষা প্রদান করে।
- ইউটিউব ভিডিওর জন্য নতুন টপিক কিভাবে খুজবেন?
- ছাত্রদের টাকা আয় করার উপায়
- মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করার উপায় – 7 টি মাধ্যম
মূলত, সিভি একটি সুরক্ষা ব্যবস্থা যা দ্বারা একটি সংস্থা বা সরকার তাদের কর্মচারীদের ভূমিকা, অন্যান্য তথ্য এবং তাদের কার্যক্রমের সীমাবদ্ধতা নিশ্চিত করে।
সিভির মাধ্যমে নিরাপত্তা উন্নয়ন, ব্যক্তিগত পরিচয় যাচাই করণ সহ একটি সুরক্ষা মূলক প্রক্রিয়া সাধারণত পরিচালিত হয়।
তাই আপনারা যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য সিভি লেখার নিয়ম জানতে চান? তারা সঠিক একটি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেছেন।
আপনারা চাইলে নিজের ব্যক্তিগত সিভি নিজে লিখতে পারবেন। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাকে সিভি লেখার নিয়ম বিশেষ করে, চাকরির জন্য সিভি লেখার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেবো।
তাই এই বিষয়ে সঠিক ধারণা পেতে, আমাদের লেখাটি শেষ পর্যন্ত ধৈর্য সহকারে পড়ান।
একটি সিভিতে কি কি থাকা জরুরী
সিভি প্রয়োজনীয় তথ্যের একটি সংক্ষিপ্ত রেকর্ড হিসাবে ব্যবহার হয়। যা একটি ব্যক্তির অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করার পাশাপাশি।
প্রায় সকল সরকারি ও ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান সিভি প্রদানকারী সংস্থার সাথে সম্পর্কিত তথ্য থাকে। সিভিতে অন্যান্য তথ্য হতে পারে :
ব্যক্তিগত পরিচয়: সিভি তথ্যে একজন কর্মচারীর নাম, জন্ম তারিখ, লিঙ্গ, ঠিকানা, ফোন নম্বর ইত্যাদি সম্পর্কিত ব্যক্তিগত পরিচয় থাকতে পারে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: কর্মচারীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম, অধ্যয়নের সময়কাল ইত্যাদি সম্পর্কিত তথ্য সিভিতে থাকতে পারে।
চাকরির ইতিহাস: একটি কর্মচারীর কর্মস্থলের ইতিহাস, পদের ধরন, কার্যক্রমের বিবরণ, কর্মস্থলে অবদানের সময়কাল ইত্যাদি সিভিতে থাকতে পারে।
গোপনীয়তা স্তর: সিভিতে একজন কর্মচারীর সরকারি ও গোপনীয়তা স্তর যেমন “সম্মানিত সিভি” বা “সুরক্ষামূলক সিভি” উল্লেখ করা হতে পারে।
সাক্ষাৎকার ও পরীক্ষা: কিছু সিভি অবদানকারী সংস্থা কর্মীদের জন্য সাক্ষাৎকার এবং পরীক্ষার সময়কাল, প্রশ্ন পত্র বিষয়ক তথ্য সিভিতে সংগ্রহ করতে পারে।
এ গুলো শুধু মাত্র কিছু উদাহরণ, একটি সিভিতে থাকা পূর্ণরূপ তথ্য সংশোধন করে, সংস্থার নীতি ও প্রক্রিয়া অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে
চাকরির জন্য সিভি লেখার নিয়ম
CV লেখার জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম ও সম্পর্কিত তথ্য প্রয়োজন হতে পারে। এই নির্দিষ্ট নিয়ম গুলো প্রয়োগ করা হয়। যাতে, সিভিটি সঠিক এবং আকর্ষণীয় হয়। একটি সাধারণ সিভি লেখার নিয়ম গুলো নিম্নোক্ত আলোচনায় উল্লেখ করা হলো :
সিভির উদ্দেশ্য:
সিভি লেখার প্রথম ধাপ হচ্ছে, সিভির উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা। সাধারণত, এটি একটি ব্যক্তিগত তথ্য হয়ে থাকে। যা নিম্নলিখিত অংশ গুলি অবশ্যই অনুসরণ করতে হয়। যেমন-
- প্রথমে ব্যক্তিগত তথ্য যেমন নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর ইত্যাদি দেওয়া হয়।
- পরবর্তীতে, শিক্ষাগত যোগ্যতা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম, পাশের সাল, উচ্চতর শিক্ষাগত মাধ্যমিক/উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার নাম ও সময়কাল, অর্জনকৃত প্রশিক্ষণের বিবরণ ইত্যাদি উল্লেখ করা হয়।
- এরপরে, কর্মস্থলের তথ্য প্রদান হয়। যেমন- কর্মস্থলের নাম, কর্মস্থলে কাজ করার সময়কাল, পদের নাম এবং বিবরণ, কর্মস্থলের ঠিকানা ইত্যাদি।
- শেষ অংশে, সাধারণত রেফারেন্স পাতা থাকে, যেখানে আপনি পূর্বের কর্মস্থলের বা অন্য কোনও ব্যক্তির তথ্য প্রদান করতে পারেন।
সংক্ষিপ্ততা এবং প্রসঙ্গ:
সিভি সংক্ষিপ্ত ভাবে এবং প্রসঙ্গ মূলক ভাবে লেখা উচিত। বিভিন্ন অংশে সংক্ষিপ্ত তার মধ্যে রাখা হয়। যাতে করে, পাঠকের নজর মূল তথ্য গুলো প্রদর্শিত হয়।
যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা:
সিভির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো- আপনার যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা। এই অংশে আপনি আপনার প্রাপ্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশাগত অভিজ্ঞতা, প্রশিক্ষণ কোর্স এবং সাক্ষাৎকার এর তথ্য প্রদান করতে পারেন।
ব্যক্তিগত দক্ষতা:
আপনার ব্যক্তিগত দক্ষতা, যেমন- কম্পিউটার দক্ষতা, ভাষায় দক্ষতা, সমস্যা সমাধান দক্ষতা ইত্যাদি উল্লেখ করা হয়।
গোপনীয়তা:
আপনার সিভিতে, গোপনীয়তা সংরক্ষণ করতে হবে। যেন আপনার ব্যক্তিগত তথ্য এবং সুপারিশ গণের তথ্য সুরক্ষিত থাকে।
সাধারণত, সিভি এবং সম্পর্কিত তথ্য গুলো গোপন রাখা হয়। এবং শুধু মাত্র যারা সিভি প্রক্রিয়ায় নির্ধারিত তাদেরকে জানানো হয়।
উপরের নিয়ম গুলো মেনে চলে, আপনি একটি আকর্ষণীয় ভাবে সিভি তৈরি করতে পারেন। তবে, সিভি লেখার জন্য সৃজনশীলতা মূলক জ্ঞান এবং ভালো লেখার প্রক্রিয়া সম্পর্কে আরও জ্ঞান অর্জন করতে হতে পারে।
চাকরির জন্য CV লেখার নমুনা
নিচে একটি সিভির নমুনা দেওয়া হলো। এটি শুধুমাত্র একটি নমুনা এবং আপনি এটি কে আপনার প্রোফাইল ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সম্পাদন করতে পারেন। যেমন-
ব্যক্তিগত তথ্য:
নাম: এখানে ব্যক্তির নাম লিখুন।
ঠিকানা: হাউস নং: ১২৩, রোড নং: ১১, গ্রাম:, ডাকঘর:, উপজেলা:, জেলা:।
ফোন নম্বর: ০১৯********
ইমেইল: [email protected]
শিক্ষাগত যোগ্যতা:
ব্যাচেলর অফ সায়েন্স (কম্পিউটার সায়েন্স), জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা, বাংলাদেশ, ২০১৪-২০১৭,
এইচএসসি (বিজ্ঞান), ঢাকা কলেজ, ঢাকা বোর্ড, বাংলাদেশ, ২০১৩।
এসএসসি (বিজ্ঞান), পাইলট স্কুল, ঢাকা বোর্ড, বাংলাদেশ, ২০১১।
অভিজ্ঞতা:
সফটওয়্যার ডেভেলপার, এবিসি কোমপানি, ঢাকা, বাংলাদেশ, ২০১৯-বর্তমানে।
অভিজ্ঞতা-১
- উন্নত ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন বিকাশে কাজ করা
- ডেটাবেস ডিজাইন এবং পরিচালনা করা
- প্রোগ্রামিং এবং টেস্টিং কাজ করা
- সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, সফটওয়্যার লিমিটেড, ঢাকা, বাংলাদেশ, ২০১৭-২০১৯
অভিজ্ঞতা-২
- মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন বিকাশ এবং পরিচালনা করা
- ই-কমার্স ওয়েবসাইট প্রোগ্রামিং এবং পরিচালনা করা
দক্ষতা:
- প্রোগ্রামিং ভাষা: Java, Python, JavaScript.
- ওয়েব ডেভেলপমেন্ট: HTML, CSS, JavaScript, ReactJS.
- ডাটাবেস প্রযুক্তি: MySQL, MongoDB.
ভাষায় দক্ষতা:
বাংলা (মাতৃভাষা), ইংরেজি (প্রফেশনাল লেভেল)।
রেফারেন্স:
আপনার প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে, রেফারেন্সের তথ্য দেওয়া যাবে। যা আপনার সিভির গুরুত্ব বাড়িয়ে দিবে।
এটি একটি সিভি লেখার নমুনা, যা আপনার সিভির নমুনা হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন। আপনি আপনার সিভি’ র নমুনা টি আপনার কর্মস্থল পদের বিবরণ, কোর্স বা প্রশিক্ষণের বিবরণ, প্রশিক্ষণে অংশ গ্রহণ এর বিবরণ ইত্যাদি দ্বারা তৈরি করতে পারেন।
আপনার সিভি লেখার সময়, আপনার প্রোফাইল, যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা বিবরণ গুলো ব্যবহার করে, আপনি উপযুক্ত তথ্য যুক্ত করতে ভুলবেন না।
শেষ কথাঃ
চাকরির জন্য সিভি তৈরি করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানিয়ে দিলাম। যদি আরও কোনো প্রশ্ন থাকে বা আরও কিছু সাহায্য প্রয়োজন হয়। তাহলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। ধন্যবাদ…