কপি রাইটিং কি? কেন, কিভাবে শিখবেন- কপিরাইটিং করে অনলাইনে ইনকাম

বর্তমানে অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হাজারো অনলাইন ইনকাম এর সহজ মাধ্যম গুলোর মধ্যে কপিরাইটিং একটি। আজকে এই আর্টিকেলটি আমি লিখছি শুধুমাত্র যারা কপিরাইটিং করে অনলাইন থেকে ইনকাম করা যায় তাদের গাইডলাইন হিসাবে।

বিশেষ করে যারা অনলাইনে নতুন এসেছেন এবং অনলাইন থেকে আয় করার আগ্রহ প্রকাশ করছেন তারা স্বভাবতই এমন একটি কাজ খুজছেন, যে কাজটি খুব সহজে শেখা যায় এবং খুব সহজে অনলাইন থেকে ইনকাম করা যায়। তেমনি একটি মাধ্যম গুলো কপিরাইটিং।

তো বন্ধুরা আজকে আমি আলোচনা করছি কপিরাইটিং কি? কপিরাইটিং কেন শিখবেন? কপিরাইটিং করে অনলাইন থেকে আয় এর যাবতীয় খুঁটিনাটি বিষয় গুলি।

কপি রাইটিং কি? কেন, কিভাবে শিখবেন- কপিরাইটিং করে অনলাইনে ইনকাম
কপি রাইটিং কি? কেন, কিভাবে শিখবেন- কপিরাইটিং করে অনলাইনে ইনকাম

কপি রাইটিং কি?

অনেকে মনে করে থাকেন, কপিরাইটিং হল কোন একটি কনটেন্ট বা আর্টিকেল কপি করার কাজ। বিষয়টি ঠিক এমন নয়। বলতো কপিরাইটিং হলো – এক ধরনের কনটেন্ট। যে কনটেন্টগুলো মূলত আকারে ছোট হয় এবং যে কোন একটি বিষয় কভার করে। এটি হতে পারে কোনো বিজ্ঞাপন স্ক্রিপ্ট, কোন প্রডাক্ট দেস্ক্রিপশন, অথবা কোন কোম্পানির প্রেজেন্টেশন।

আমি আরো সহজ করে বলছি– মনে করুন আপনি একটি মোবাইলের রিভিউ লিখবেন, একটি মোবাইলের সাধারণত যে বিষয়গুলো প্র্যাকটিক্যালে আছে সে ঠিক সেটাই দেখতে হবে। এখন সেই মডেলের মোবাইলের অন্য একজন রাইটার যখন রিভিউ লিখবে, সেও কিন্তু একই বিষয় লিখবে।

কেন না আপনি যে মোবাইলের রিভিউ লিখেছেন এবং অন্য একজন রাইটার সেই মোবাইলের রিভিউ লিখেছে মোবাইলের মডেল কিন্তু একই তাহলে সেই মোবাইলের বর্ণনা কিন্তু ভিন্ন রকম হতে পারে না। যেহেতু দুইটা লেখা একই রকম এটি হলো একটি কপিরাইটিং।

এখন হয়তো ভাবছেন যে, যেহেতু একটি মোবাইলের সকল রিভিউ একই রকম হয় তাহলে কষ্ট করে লিখে কি লাভ একটা লেখা কপি করলেই তো হয় তাই না? আপনি অন্য কোন লেখা কপি করতে পারবেন না। অন্য একজন রাইটার তার মত করে লিখবে আপনি আপনার মত করে লিখবেন।

কপিরাইটিং কেমন হওয়া উচিৎ?

যেহেতু একই প্রোডাক্ট এর জন্য বিভিন্ন রকম ওয়েবসাইট থাকে এবং প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটে আলাদা আলাদা ডিসক্রিপশন এবং রিভিউ লেখা থাকে। তাই কপিরাইটিং করার সময় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে যেন অন্যান্য ওয়েবসাইটের যে কপিরাইটিং কনটেন্ট গুলো রয়েছে সেগুলোর চেয়ে অবশ্যই ভালো মান এবং ভালো কোয়ালিটির লেখা হতে হবে।

যখন আপনার কপিরাইটিং লেখাটি অন্যান্য ওয়েবসাইটের লেখার চেয়ে কোয়ালিটি সম্পন্ন হবে এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি হবে তাহলে অবশ্যই আপনার লেখাটিকে ইউজাররা প্রায়োরিটি দেবে।

[✍️ কিভাবে কপিরাইটিং করলে আপনার লেখাটি ইউনিক এবং হাই কোয়ালিটি হবে সে ব্যাপারে এই কনটেন্টে নিচের দিকে দিয়ে দিয়েছি । তাই লেখাটি শেষ  পর্যন্ত পড়তে হবে। ]

কপি রাইটিং করে কত টাকা আয় করা যায়

এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কেননা যদি কেউ কপিরাইটিং শিখে তাহলে সেটি দিয়ে কত টাকা ইনকাম করা যাবে। কপিরাইট করে কেউ ক্যারিয়ার গড়তে পারবে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাক।

বর্তমানে বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সার মধ্যে অনেকেই কপিরাইটিং করে তাদের ক্যারিয়ার গড়েছেন। বর্তমানে বাংলাদেশে যারা কপিরাইটিং নিয়ে কাজ করছেন তাদের অ্যাভারেজ ইনকাম হচ্ছে মাসে 35 হাজার টাকা। এদের মধ্যে কেউ প্রতি মাসে এক থেকে তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করছেন, আবার কেউ কেউ প্রতি মাসে 10 থেকে 20 হাজার টাকা ইনকাম করছেন।

এখানে আরো একটি বিষয় উল্লেখ্য যে, আপনি কোথায় কাজ করছেন কোন মার্কেটপ্লেসে কাজ করছেন। আপনি কি ধরনের টপিক নিয়ে কাজ করছেন তার ওপর নির্ভর করবে অনেকটাই। আমরা এই আর্টিকেলে আলোচনা করব- কপি রাইটিং শেখার পর আপনি কোথায় কাজ করবেন?

[💸যদি একজন ভাল মানের কপিরাইটার হতে পারেন তাহলে প্রতি মাসে কপিরাইট করে কমপক্ষে 50 হাজার টাকা ইনকাম করা সম্ভব।]

এখন কথা হচ্ছে আপনি যদি কপি রাইটিং শিখেন তাহলে কতদিন সময় লাগতে পারে? এজন্য আমাদের নিচের অংশটুকু আপনাকে পড়তে হবে।

কপিরাইটিং শিখতে কতদিন সময় লাগে

কপিরাইটিং মূলত সহজ যে সকল কাজ রয়েছে তার মধ্যে একটি। কন্টেন্ট রাইটিং এর তুলনায় কপিরাইটিং অনেকটাই সহজ এবং কম সময়ে শেখা যায়। তবে এর সময়সীমা নির্ধারণ হবে আপনি প্রতিদিন কতক্ষণ সময় এর পিছনে ব্যয় করছেন। যদি একজন ইউজার প্রতিদিন তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় ব্যয় করে তাহলে দুই থেকে তিন মাস সময়ের মধ্যে একজন নতুন ব্যক্তি ভালোভাবে কপিরাইটিং শিখতে পারবে।

[💡 copy writing শিখতে মুটামুটি ভাবে একজন নতুন ব্যক্তির 3 থেকে 4 মাস সময় লাগে।]

কেন কপি রাইটিং শিখবেন

আপনি কপিরাইটিং কেন শিখবেন। আউটসোর্সিং করার জন্য বর্তমানে যতগুলো মাধ্যম রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে কম সময়ে শেখা যায় এবং সবচেয়ে সহজ বিধায় আপনি কপিরাইটিং শিখতে পারেন।

বর্তমান অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে কপিরাইটিং এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যেহেতু বর্তমানে বিভিন্ন প্রোডাক্ট রিলেটেড এবং বিভিন্ন নতুন নতুন অনলাইন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের এবং কোম্পানি তৈরি হচ্ছে সেক্ষেত্রে তাদের প্রচুর পরিমাণে কপিরাইটিং এর চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে নতুন নতুন যে সকল প্রোডাক্ট রিলিজ হচ্ছে সেগুলি পরিচালনার জন্য ম্যাক্সিমাম কপিরাইটার বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস থেকে হায়ার করে থাকে।

তাই যারা বর্তমানে কপিরাইটিং পেশাতে আসতে চাচ্ছেন তাদের ক্যারিয়ার গড়ার জন্য এটি হতে পারে একটি সুদূরপ্রসারি উদ্যোগ। অনেকে মনে করে থাকেন কপিরাইটারের বর্তমান মার্কেটপ্লেসগুলোতে ডিমান্ড খুবই কম। কিন্তু আমি বলব কপি রাইটার দের বর্তমান মার্কেটপ্লেসগুলোতে প্রচুর চাহিদা এবং ভালো মানের স্মার্ট উপার্জনের সুযোগ রয়েছে।

একজন কপিরাইটারের কেমন ইনকাম হতে পারে সে বিষয়ে নিচে দুটি স্ক্রিনশট দিয়ে দিলাম। স্ক্রীনশট দুটো দেখলে আশা করি কপিরাইট নিয়ে আপনার সকল ধারনা পাল্টে যাবে।

স্ক্রীনশট দুটি জনপ্রিয় দুটি মার্কেটপ্লেস freelancer.com এবং fiber.com থেকে নেওয়া হয়েছে:

বর্তমান মার্কেটপ্লেসে কপিরাইট এর চাহিদা
কপিরাইটিং করে ইনকাম

নিচে আরও একটি স্ক্রিনশট দেয়া হল আপনারা এই স্কিনশর্টটি দেখলে বুঝতে পারবেন একজন কপিরাইটার কি পরিমানে ইনকাম করতে পারে।

একজন কপিরাইটার মাসে কত টাকা আয় করতে পারে।
কপি রাইটিং করে অনলাইনে আয়

কপিরাইটিং করতে হলে কি কি জানতে হবে

কপিরাইটিং শিখতে হলে অবশ্যই আপনাকে বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে অন্যথায় আপনি কপিরাইট করতে পারবেন না। একজন কপি রাইটার হতে হলে যে বিষয়গুলো আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে নিম্নে তার একটি লিস্ট দিয়ে দিলামঃ

Research: কপিরাইটিং করতে হলে আপনাকে অবশ্যই যে বিষয়ে কপিরাইটিং করবেন সেই বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে  Research করার দক্ষতা থাকতে হবে। রিসার্চ করা ছাড়া কোনো বিষয়ে লেখালেখি করলে সে বিষয়টি কখনোই ভালো মানের কনটেন্ট তৈরি করা সম্ভব নয়।

Writing Skill: আপনাকে একজন স্কিলড রাইটার হতে হবে। যেকোনো বিষয়ে রিচার্জ করার মাধ্যমে লেখালেখি এর যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। কেননা বর্তমান মার্কেটপ্লেসগুলোতে আপনি সবসময় একই ক্যাটাগরীর একই রকম কাজ পাবেন না। তাই আপনার রাইটিং স্কিল যত বেশি হবে আপনি কপিরাইটিং তত বেশি ইনকাম করতে পারবেন। তাছাড়া আপনার রাইটিং স্কিল ভালো থাকলে আপনি যেকোন কপিরাইটিং কনটেন্ট রাইটিং এবং ক্রিয়েটিভ রাইটিং করে সফলতা অর্জন করতে পারবেন।

Competitor Analysis: আপনি যে বিষয়টিতে লিখছেন সে বিষয়টি সম্পর্কে এর আগে কি ধরনের কনটেন্ট অন্যান্য রাইটাররা লিখেছে সে বিষয়গুলো আপনাকে অবশ্যই রিসার্স করতে হবে। এবং 10 থেকে 12 টি কনটেন্ট ভালোভাবে রিসার্স করার পর আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনার কনটেন্ট তাদের চেয়ে যেন গুণগতমানে ভালো হয়।

কম্পিউটার এনালাইসিস এর মাধ্যমে আপনি অন্যান্য ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলো সম্পর্কে বিশদ ধারণা পাবেন। এবং তারা যে সমস্ত ফিচার/ভ্যালু যুক্ত করেছে আপনাকে তার চেয়ে ভালো এবং বেশি ফিচার যুক্ত করতে হবে।

Creative idea: আপনাকে সব সময় নিত্যনতুন ক্রিয়েটিভ আইডিয়ার মাধ্যমে লেখাকে সাজিয়ে তুলতে হবে। যখন আপনার একটি লেখাতে ভালো ক্রিয়েটিভিটি থাকবে তখন যেকোন সার্চ ইঞ্জিন এবং যেকোনো সেটা কে পছন্দ করবে। মনে রাখবেন আপনি যত সৃজনশীলতা প্রয়োগ করতে পারবেন আপনার সফলতার সম্ভবনা তত বেশি হবে।

New topic: অবশেষে একটি লেখাতে নতুন নতুন আইটেম, ফিচার, এবং নতুন ডিজাইন প্রয়োগ করতে হবে। অন্যরা যেভাবে আর্টিকেল সাজিয়েছে আপনার আর্টিকেল তার থেকে সম্পূর্ণ বিভিন্ন ভাবে সাজাতে হবে। মনে রাখবেন অন্য কোন আর্টিকেল বা কনটেন্ট ফলো করে লেখালেখি করলে কখনোই ভালো কিছু করতে পারবেন না। আপনার লেখালেখিতে অবশ্যই নতুনত্ব আনতে হবে।

Reading:  আপনি যে বিষয়টিতে লেখালেখি করবেন সেই বিষয়টি সম্পর্কে প্রচুর পরিমাণে পড়াশোনা করতে হবে। এবং একটি লেখাকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে তোলার জন্য পড়ার কোনো বিকল্প নেই। আপনার কনটেন্ট এর রিলেটেড সকল কন্টাক্ট রয়েছে সেগুলো আপনি ভালভাবে পড়ুন দেখুন তারা কিভাবে তাদের কন্টাক্ট কে ভ্যালু প্রদান করেছে। তারপর আপনার কনটেন্ট তাদের চেয়ে বেশি ভ্যালুয়েবল করার চেষ্টা করুন।

আরোও পড়ুন: গ্রাফিক্স ডিজাইন করে আয় করুন মাসে 5000 ডলার। গ্রাফিক্স ডিজাইন কি? কীভাবে শুরু করবেন

কিভাবে কপিরাইটিং শিখবেন

বর্তমানে বিভিন্ন ট্রেনিং সেন্টার রয়েছে আপনারা চাইলে সেখানে গিয়েও কপিরাইটিং এবং কনটেন্ট রাইটিং শিখতে পারেন। তবে কপিরাইটিং বা কনটেন্ট রাইটিং লেখার জন্য সবচেয়ে ভালো হয়ে হচ্ছে গুগোল এবং ইউটিউব।

আপনি লেখালেখি সম্পর্কে বিভিন্ন রিসোর্স এবং ভিডিও ইউটিউবে পেয়ে যাবেন। ইউটিউবে ভিডিও দেখে অথবা গুগল সার্চ করে কপিরাইটিং সম্পর্কে বিশদভাবে ধারণা নিতে পারবেন এবং সে অনুযায়ী প্রতিনিয়ত প্র্যাকটিস করে যান। আশাকরি ট্রেনিং সেন্টার এর চেয়ে ভালো কিছু শিখতে পারবেন।

[💡 প্রো টিপস: যে কোন বিষয় ট্রেনিং সেন্টার থেকে একটি লিমিটেড/নির্ধারিত পরিমানে তথ্য পাবেন। কিন্তু গুগল বা ইউটিউব থেকে আনলিমিটেড/অসংখ্য তথ্য পাবেন কোন ট্রেনিং সেন্টার থেকে কখনই পাবেন না।]

কপি রাইটিং করে কোথায় থেকে আয় করবেন

কপিরাইটিং শেখার পর কোথায় থেকে আয় করবেন? আপনি কপিরাইটিং শেখার পর আপনি চাইলে যেকোনো একটি আইটি প্রতিষ্ঠানে সহজে একটি চাকরি পেয়ে যেতে পারেন। তাছাড়া আপনারা চাইলে ঘরে বসে অনলাইনে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস থেকেও আয় করতে পারেন। কপিরাইটিং করে অনলাইন থেকে আয় করার বেশ কিছু জনপ্রিয় মাধ্যম আমি নিচে আলোচনা করলামঃ

মার্কেটপ্লেস থেকে আয়: কপিরাইটিং শিখার বর আপনি চাইলে যেকোন মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট করে সেখান থেকে বিভিন্ন বায়ারের কাজ করে আয় করতে পারেন। বর্তমানে বেশিরভাগ কপিরাইট ওরা বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসগুলোতে একাউন্ট করে ইনকাম করছেন। কপিরাইটিং করে আয় করার জন্য প্রধান মাধ্যম হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে বেছে নিচ্ছেন তারা।

কপিরাইটিং করে আয় করার জনপ্রিয় কিছু মার্কেটপ্লেস হলঃ

  • Fiber.com
  • Freelancer.com
  • Upwork.com
  • Guru.com
  • Peopleperhour.com
  • Iwriter.com

ইত্যাদি। এছাড়াও প্রচুর মার্কেটপ্লেস রয়েছে আপনারা যখন ফ্রীলান্সিং করবেন তখন একের পর এক মার্কেটপ্লেসগুলোর পেয়ে যাবেন সেখানে একাউন্ট করে আপনাদের কাজ খুঁজে নিতে পারেন।

নিজের সার্ভিস সেন্টার তৈরির মাধ্যমে আয়: অথবা আপনারা চাইলেই দুই থেকে তিনজন মিলে একটি গ্রুপ তৈরি করে একটি “কপিরাইটিং সার্ভিস” চালু করতে পারেন। এবং যাদের যাদের কপিরাইটিং এর প্রয়োজন হবে তারা আপনাদের সার্ভিস থেকে সেবা নিতে পারবে। এবং নির্ধারিত একটি মূল্য নির্ধারণ করতে হবে যে মূল্যে যেকোনো ভাইয়া আপনাদের কাছ থেকে সেবা নিতে পারে। এটি যেমন নিজের একটি ব্যবসা তেমনি এই ব্যবসা করে প্রচুর পরিমাণে লাভবান হওয়া সম্ভব। তবে এ ব্যবসায় পরিচালনা করার জন্য আপনাকে প্রচুর পরিমাণে মার্কেটিং করতে হবে।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয়: কপিরাইটিং শেখার পর ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনার রাইটিং স্কিল সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে পারেন। এবং যাদের কপিরাইটিং এর প্রয়োজন হবে তারা আপনার সাথে যোগাযোগ করে কাজ করিয়ে নেবে। এবং এর মাধ্যমে আপনি কপিরাইটিং করে ইনকাম করতে পারবেন। অনলাইনে নিজের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দেয়ার জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং। এটি খুবই পাওয়ারফুল একটি মাধ্যম।

নিজের ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে আয়: এছাড়া আপনি চাইলে আপনি নিজে একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে সেখানে বিভিন্ন কপিরাইটিং করে ইনকাম করতে পারেন। আপনার একটি ওয়েবসাইট থাকলে সেখানে আপনি খুব সহজেই গুগল এডসেন্স বা অন্যান্য এর নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ভালো পরিমানে আয় করতে পারবেন। বর্তমানে রাইটারদের পছন্দের বিষয়ের মধ্যে  ব্লগিং ও একটি জনপ্রিয় পছন্দ।

কপিরাইটিং ও কন্টেন্ট রাইটিং এর মধ্যে পার্থক্য

কপিরাইটিং এবং কনটেন্ট রাইটিং এরমধ্যে কিছু পার্থক্য এবং কিছু মিল রয়েছে। কপিরাইটিং এবং কন্টেন্ট রাইটিং এর মধ্যে পার্থক্য গুলো এবং মিলগুলো আমরা নিচে বিশদভাবে আলোচনা করছি।

কপি রাইটিং এবং কন্টেন্ট রাইটিং এর মধ্যে পার্থক্যঃ

পার্থক্য ১ঃ  লেখার স্টাইল এর দিক থেকে বেশ কিছু ভিন্নতা রয়েছে। যেমন- কনটেন্ট রাইটিং এ যে কোন একটি বিষয় সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করা হয়। আমাদের এই লেখাটির এটি আপনারা এখন পড়ছেন এটি হলো একটি কনটেন্ট / আর্টিকেল। পক্ষান্তরে কপিরাইটিং এ সাধারণত, কোন বিজ্ঞাপন, কোন ইমেইল, বা কোন পণ্যের রিভিউ সম্পর্কে লেখা হয়।

পার্থক্য ২ঃ লেখার দীর্ঘ অনুযায়ী পার্থক্য। কনটেন্ট রাইটিং মূলত অনেক দীর্ঘ লম্বা হয়ে থাকে 1 হাজার থেকে 5 হাজার ওয়ার্ড হতে পারে। পক্ষান্তরে কপিরাইটিং আকারে ছোট হয়ে থাকে 100 থেকে 500 ওয়াটের মধ্যে কপিরাইটিং হয়ে যায়।

পার্থক্য ৩ঃ কপিরাইটিং এবং কনটেন্ট রাইটিং দুটি ভিন্ন কাজের জন্য ব্যবহার করা হয়। কনটেন্ট রাইটিং মূলত কোন একটি বিষয় সম্পর্কে বিশদ ধারণা দেয়ার জন্য লেখা হয়। এটি সাধারণত ইনফর্মেটিভ হয়। এবং কপিরাইটিং কোন একটি বিষয় কাউকে জানানোর জন্য বা কোন একটি পণ্য সম্পর্কে ধারণা কাউকে ধারনা দেওয়ার জন্য লেখা হয়।

কপি রাইটিং এবং কন্টেন্ট রাইটিং এর মধ্যে মিলঃ

  • কপি রাইটিং এবং কনটেন্ট রাইটিং দুইটি এক ধরনের লেখা এই দিক দিয়ে এডিট এর মিল রয়েছে।
  • কপিরাইটিং এবং কনটেন্ট রাইটিং দুটি 100% ইউনিক এবং অরিজিনাল হতে হয়।
  • কপি রাইটিং এবং কনটেন্ট রাইটিং দুটি বিষয়ের জন্য রিসার্চ বা গবেষণা করতে হয়।
  • কপিরাইটিং এবং কনটেন্ট রাইটিং দুটি বিষয়ের জন্য কম্পিটিটর এনালাইসিস করতে হয়।
  • কপি রাইটিং এবং কনটেন্ট রাইটিং উভয়ের জন্যই কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে হয়।
  • কপিরাইটিং এবং কনটেন্ট রাইটিং দুটি বিষয়ই ইউজার ফ্রেন্ডলি লিখতে হয়।
  • কপি রাইটিং এবং কনটেন্ট রাইটিং এসইও ফ্রেন্ডলি লিখতে হয়।
  • কপি রাইটিং এবং কনটেন্ট রাইটিং দুটি বিষয়ের জন্যই বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে প্রচুর চাহিদা রয়েছে।

কপি রাইটারদের জন্য জব

কপিরাইটের দের জন্য রয়েছে বিভিন্ন কাজে চাকরির সুযোগ। একজন ভাল মানের কপিরাইটারের জন্য জব এর কোন অভাব হয়না। একজন কপিরাইটার কোথায় কোথায় চাকরি করতে পারে তার একটি ধারণা স্বরূপ লিস্ট আমরা নিচে উপস্থাপন করলাম।

অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে: একজন কপি রাইটার চাইলে অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে নিজের একাউন্ট করে সেখান থেকে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে পারেন। যেটা উপরে আমরা আলোচনা করেছি। যদি বিষয়টি না পড়ে থাকেন তাহলে একটু উপরের দিকে আবার একটু পড়ে আসার অনুরোধ রইল।

বিভিন্ন কোম্পানীতেঃ একজন কপিরাইটার খুব সহজেই যে কোন প্রেস,  বিজ্ঞাপন এজেন্সি, ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি, বিভিন্ন ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম খুব সহজেই জব পেতে পারে।

কপিরাইট এর জন্য এছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের কাজের সুযোগ রয়েছে। যখন একজন ইউজার কপিরাইটিং শিখবে এবং শিখতে শিখতে সকল ধরনের কোম্পানি মার্কেটপ্লেস এবং অন্যান্য ইনকামের মাধ্যম গুলো তাদের আয়ত্তে চলে আসবে।

রাইটিং লেখার সাথে সাথে বহু ধরনের মার্কেটপ্লেসের সাথে পরিচিত হতে থাকবে। বর্তমানে যে সমস্ত মার্কেটপ্লেস রয়েছে সেগুলোতে কাজ করতে পারবে এছাড়াও বর্তমানে আরো অনেক নতুন নতুন পেজ এর সৃষ্টি হচ্ছে সেগুলো আপনাকে খুঁজে খুঁজে বের করে সেখানে কাজের জন্য আবেদন করতে হবে।

সর্বোপরি আমাদের পরামর্শঃ

কপিরাইটিং সম্পর্কে আশা করি একটি বিশেষ ধারণা এই আর্টিকেল থেকে আপনি পেয়েছেন। আমার পরামর্শ থাকবে যদি আপনারা কপিরাইটিং অথবা আর্টিকেল রাইটিং শিখতে চান তাহলে ধৈর্য সহকারে সকল নিয়ম কানুন মেনে শিখতে হবে।

যখন সকল নিয়ম কানুন মেনে এবং ধর্য সহকারে আপনি এই কাজগুলো শিখবেন পরবর্তীতে আপনার কাজের কোন অভাব হবে না। মনে রাখবেন আপনার যত দক্ষতা থাকবে আপনি ততই বেশি আয় রোজগার করতে পারবেন এবং বিভিন্ন জায়গায় আপনার জবের অফার ততই বেশি আসবে। কোন বিষয়ে সংকীর্ণ জ্ঞান নিয়ে কখনোই কাজ করতে যাবেন না তাহলে মাঝপথে আটকে যাবেন।

বন্ধুরা যদি আমাদের এই লেখাটি আপনার কাছে ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদের জানার সুযোগ করে দিন। আর যদি আপনার কোন মতামত বা পরামর্শ থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন।

ধন্যবাদ।

আপনার জন্য আরও আর্টিকেল

1 thought on “কপি রাইটিং কি? কেন, কিভাবে শিখবেন- কপিরাইটিং করে অনলাইনে ইনকাম”

Leave a Comment