ব্লগিং কি, কিভাবে শুরু করবেন- ব্লগিং করে আয় করুন মাসে 2 লক্ষ টাকা

বর্তমান সময়ে অনলাইন থেকে আয় করার জনপ্রিয় ও সহজ মাধ্যম হলো ব্লগিং। একজন ব্লগার প্রতি মাসে কত টাকা আয় করে এটা দেখলে আপনার চোখ কপালে উঠে যাওয়ার মত হয়ে যাবে। হ্যাঁ বন্ধু ঠিক শুনেছেন এমনও  ব্লগার আছেন যারা প্রতিমাসে কোটি টাকার উপর ইনকাম করে থাকেন। যাই হোক আজকে আলোচনা করব ব্লগিং করে কিভাবে অনলাইন থেকে আয় করা যায়। ব্লগিং করে অনলাইন থেকে আয় করার যাবতীয় খুঁটিনাটি বিষয়ে থাকছে এই টিউটোরিয়ালে।

আপনি যদি আমাদের এই টিউটোরিয়ালটি পরিপূর্ণভাবে ফলো করেন তাহলে আশাকরি তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে আপনি ব্লগিং থেকে টাকা ইনকাম শুরু করতে পারবেন।

সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, ব্লগিং থেকে ইনকাম করাটা প্রথম অবস্থায় যদিও একটু কঠিন কিন্তু, ব্লগিং ইনকাম একবার শুরু হলে আপনার কাজ কমবে এবং ইনকাম বাড়তে থাকবে। অর্থাৎ এটি এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে আপনি একবার কাজ করবেন এবং আজীবন আয় করতে পারবেন।

অন্যভাবে বলতে গেলে ব্লগিং হলো একটি ফলের বাগানের মত, যেখানে 100 আপেল গাছ একবার রোপন করলেন, এবং ধীরে ধীরে সেটিকে পরিচর্যা করতে হবে। একটি নির্ধারিত সময় যাওয়ার পর সেই গাছগুলো থেকে যখন ফল আসা শুরু করবে, তখন যতদিন যাবে আপনার ফল বাড়তে থাকবে। পক্ষান্তরে আপনার বাগানে প্রথম অবস্থায় যেমন পরিশ্রম হয়েছে এখন কিন্তু আপনার পরিশ্রম অনেকাংশে কমে যাবে।

ব্লগিং ঠিক তেমনি প্রথম অবস্থায় আপনাকে প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে, যখন ফল আসা শুরু করবে আপনার পরিশ্রম কমতে থাকবে এবং আপনার আর্নিং বাড়তে থাকবে।

ব্লগিং করে আয় ব্লগিং কি
ব্লগিং করে আয় ব্লগিং কি

যাই হোক, এবার মুল আলোচনায় আসা যাক।

ব্লগিং করে আয় করার উপায়ঃ

আপনি যদি ব্লগিংয়ের মাধ্যমে ঘরে বসে আয় করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে কিছু নিয়ম কানুন মানতে হবে। এবং ব্লগিং করে অনলাইন থেকে ইনকাম করার জন্য আপনাকে পরিপূর্ণভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।

ব্লগিং করে অনলাইন থেকে আয় করার ইচ্ছা থাকলে যে বিষয়গুলো আপনাকে জানতেই হবে তা আগে জেনে নেয়া যাক।

ব্লগিং কি?

ব্লগিং হলো অনলাইনে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে লেখালেখি, ফটোগ্রাফী, মিডিয়া এবংব্যক্তিগত ডায়েরি, ব্যবসা বা সার্ভিস সংক্রান্ত তথ্য, প্রতিনিয়ত আপডেট করা।

অর্থাৎ ইন্টারনেটে আপনার একটি ওয়েবসাইট/ ব্লগ থাকবে যেখানে আপনি প্রতিদিন যে কোনো একটি বিষয়ের উপর তথ্য, উপাত্ত, মিডিয়া, অন্যান্য বিজনেস সরঞ্জাম আপডেট করবেন।

ব্লগ/ওয়েবসাইট কয়েক ধরনের হয়ে থাকেঃ

১। পাবলিক ব্লগঃ পাবলিক ব্লগ হলো এমন একটি ওয়েবসাইট যেখানে যে কেউ পড়তে পারবে, লিখতে পারবে, এবং যেকোন তথ্য আপডেট করতে পারবে। এসমস্ত ওয়েবসাইটের মালিক একজন বা একাধিক থাকলেও এখানে যে কেউ রেজিস্ট্রেশন করে তাদের বিজনেস প্রচার-প্রচারণা বা অন্যান্য কাজ কর্ম করতে পারে। যেমন, উইকিপিডিয়া.কম

২। ব্যাক্তিগত ব্লগঃ ব্যক্তিগত ব্লগ হল, যেকোনো ব্যক্তিমালিকানাধীন যে কোন একটি বিষয়ের উপর ওয়েবসাইট, যেখানে একজন ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত তথ্য আপডেট করতে পারবে। এবং সে চাইলে যেকোন ইনফরমেশন দিয়ে সাধারণ ভিজিটরকে হেল্প করতে পারবে। এসমস্ত ওয়েবসাইট একজন ব্যক্তি দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে।

৩। ব্যবসায়ীক ওয়েবসাইটঃ ব্যাবসায়িক ব্লগ হলো আপনার একটি ব্যবসা থাকলে সেই ব্যবসার প্রচার-প্রচারণা, ব্যবসার সকল তথ্য, ব্যবসার সুবিধা অসুবিধা, ব্যবসার ক্যাটাগরি, বাস সার্ভিস সংক্রান্ত তথ্য দেয়া থাকবে। যেখানে একজন ভিজিটর আপনার ব্যবসা সম্পর্কে সকল ধারণা পেয়ে যাবে।

৫। প্রতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইটঃ প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট হলো এমন একটি ওয়েবসাইট যেখানে একটি প্রতিষ্ঠান সকল খুঁটিনাটি বিষয়ে দেয়া থাকবে। এবং প্রতিষ্ঠান প্রত্যেকটি পদক্ষেপ ওয়েবসাইটে আপডেট করা হবে। যেমন কোন স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি, হাসপাতাল ইত্যাদির ওয়েবসাইট।

৬। সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইটঃ সোশ্যাল মিডিয়া হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগের একটি মাধ্যম। এসমস্ত ওয়েবসাইটে যে কেউ রেজিস্ট্রেশন করে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য আপডেট করতে পারে। এবং বিভিন্ন পারমিশন সাপেক্ষে একজন ব্যক্তির তথ্য অন্য একজন ব্যক্তি দেখতে পারে। এবং একজন ব্যক্তির সাথে অন্য একজন ব্যক্তি যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে এরকম ওয়েবসাইটকে সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইট বলা হয়। যেমন, ফেসবুক, টুইটার, ইত্যাদি।

৭। সার্ভিস রিলেটেড ওয়েরসাইটঃ সার্ভিস ওয়েবসাইট হলো এমন একটি ওয়েবসাইট যেখানে আপনি কোন এলাকায় বা লোকাল ভাবে ব্যবসা করেন সে ব্যবসায় যে যে সার্ভিস গুলো থাকে সেই সার্ভিসগুলো সংক্রান্ত তথ্য ওয়েবসাইটে আপডেট করা। অর্থাৎ আপনার যে বিজনেস আছে সেলস সার্ভিস টাকে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মানুষকে জানানো হচ্ছে সার্ভিস রিলেটেড ওয়েবসাইটের কাজ।

মনে করুন, আপনার নিজ এলাকায় আপনি কার ওয়াস সার্ভিস দিয়ে থাকেন। যদি কেউ গুগলে সার্চ করে “Car wash service near me” তখন আপনার ওয়েবসাইটের তথ্য ওই ব্যক্তিকে দেখাবে। তখন আপনি আপনার সার্ভির ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে কাস্টমার পাবেন।

কেন ব্লগিং করবেন?

আমরা ব্লগিং কেন করব এর সহজ উত্তর হল- টাকা আয় করার জন্য। অর্থাৎ টাকা ইনকাম করার জন্যই আমরা ব্লগিং করবো। তবে হ্যা কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেকেই শখের বসে ব্লগিং করে থাকেন। আবার অনেক লেখালেখি করতে ভালো লাগে দ্বারা নিজেকে অনলাইন জগতে পরিচিত করার জন্য লেখালেখি করে থাকেন।

তবে আমি যে উত্তরটি দিয়েছি টাকা আয় করার জন্য 90% ব্লগার এর উদ্দেশ্য থাকে এটা।

যাইহোক টাকা ইনকাম করা ছাড়াও ব্লগিং করে আরো কিছু সুবিধা উপভোগ করা যায় তা হলঃ

  • অনলাইনে নিজের ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব।
  • একটি প্যাসিভ ইনকাম এর রাস্তা তৈরি করা সম্ভব।
  • নিজেকে সমাজে বা দেশে বিভিন্ন জায়গায় উপস্থাপন করা সম্ভব।
  • একজন সম্মানী ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে গঠন করার জন্য ব্লগিং অন্যতম ভূমিকা পালন করে।
  • ব্লগিং করলে নিজের ব্যক্তিত্ব ঊর্ধ্বগামী হয়ে থাকে। কেননা একজন ব্লগারকে অনেক ফলোয়ার ফলো করে থাকে।
  • বর্তমান সমাজে একজন ব্লগারের ভালো চাহিদা এবং সম্মান রয়েছে।
  • সবচেয়ে বড় বিষয় হলো একজন ব্লগার ব্লগের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটেন্স এনে দেশের উন্নয়নে সহায়তা করে।

ব্লগিং শিখতে কত সময় লাগে?

ব্লগিং শিখতে নরমালি তিন থেকে ছয় মাস সময় লাগতে পারে। তবে যদি আপনি আরো বেশি সময় দিতে পারেন এর চেয়ে কম সময়েই ব্লগিং পেশা জব্দ করা সম্ভব। তবে দু-তিন মাস এই আপনি পুরোপুরি ব্লগিং শিখে ফেলতে পারবেন না। ২-৩ মাসে আপনি যত টুকু শিখতে পারবেন এ দিয়ে আপনি ব্লগিং শুধুমাত্র শুরু করতে পারবেন এরপর প্রতিনিয়ত আপনাকে রিসার্স করতে হবে, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে এবং সে অনুযায়ী এগিয়ে যেতে হবে।

মনে রাখতে হবে ব্লগিং পেশাটি একটা long-term পেশা। এ পেশাতে শুরুর দিকে পরিশ্রম অনেক বেশি সে তুলনায় ইনকাম অনেক কম। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো ব্লগিং কে যারা পেশা হিসেবে নিয়েছেন তারা যত দিন যাচ্ছে তাদের ইনকাম বাড়ছে এবং পরিশ্রম কমে আসছে।

ব্লগিং হলো প্যাসিভ ইনকাম করার একটি অন্যতম মাধ্যম। আরও পড়ুন: পুরোপুরি ব্লগিং শিখতে কতদিন সময় লাগে?

ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়?

ব্লগিং করে কত টাকা ইনকাম করা যায় এটা আসলেই স্পেসিফিকভাবে বলা সম্ভব না। তবে হ্যাঁ একজন ব্লগার নরমালি 50 হাজার টাকা থেকে শুরু করে কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারে। আবার এমনও ব্লগার রয়েছেন যারা প্রতি মাসে কোটি টাকার উপর ইনকাম করে থাকেন।

এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট কতটা জনপ্রিয়। এবং আপনি কি ধরনের ব্লগিং করছেন তার ওপর। তার সাথে আপনি কতদিন থেকে এই পেশার সাথে জড়িত রয়েছেন এবং আপনার সার্ভিসটি কতদিন থেকে চলছে।

নরমালি যদি কেউ google-adsense কে টার্গেট করে ব্লগিং শুরু করে তাহলে একটি ওয়েবসাইট থেকে 6 মাস থেকে শুরু করে ১ বছরের মাথায় প্রতি মাসে 20 থেকে 50 হাজার টাকা ইনকাম করা সম্ভব।  ব্লগের বয়স বাড়ার সাথে সাথে ভিজিটর বাড়বে এবং আপনার ইনকাম হতে থাকবে।

আমি ব্লগের ইনকাম সম্পর্কে একটি উপাত্ত উপস্থাপন করছিঃ

  • আপনার ওয়েবসাইট সংখ্যা: একটি
  • ওয়েবসাইটের বয়স:  এক বছর
  • ওয়েবসাইটে কনটেন্ট রয়েছে: ৩০০+
  • ওয়েবসাইটে দৈনিক গড় পেজভিউ : 4000+-
  • ইনকামের মাধ্যম: গুগল এডসেন্স
  • তাহলে আপনার মান্থলি এভারেজ ইনকাম হতে পারেঃ

4000 পেজভিউ * 3% এড ক্লিক = দৈনিক 120 ক্লিক। এভারেজ সিপিসি $0.60 * 120 = $ 72.00 । অর্থাৎ দৈনিক আয় $72.00 ডলার এবং মাসিক আয় $72.00 * 30 =$ 2160.00। যা বাংলা টাকা কনভার্ট  করলে দাড়ায়  $ 2160.00 * 84.25 = 1,81,980.00 (এক লক্ষ একাশি হাজার নয়শত আশি টাকা)

এটি একটি স্বাভাবিক ইনকামের মেট্রিক্স দেখানো হলো। বাস্তবে ইনকাম এর চেয়ে কম বেশি হতে পারে তবে পাশাপাশি থাকবে আশা করি।

এখন কথা হচ্ছে, আমি যে ওয়েবসাইটটির তথ্যটি এখানে দিয়েছি এরকম একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে আপনার এক বছরে প্রচুর পরিমাণে পরিশ্রম করতে হবে। 300+ প্লাস কনটেন্ট তারমানে প্রতিদিন কমপক্ষে একটি করে আর্টিকেল লিখতে হবে। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার, এসইও, গেস্টপোষ্ট করতে হবে।

যদি কোন ব্যক্তি প্রতিদিন 5 থেকে 6 ঘন্টা সময় পরিশ্রম করে তাহলে এরকম একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা সম্ভব।

কিভাবে একটি ব্লগ/ওয়েবসাইট তৈরি করবেন?

আপনি যদি ব্লগিং করে টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে প্রথমেই আপনাকে একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। আপনি যদি ইতিমধ্যে ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করা সম্পর্কে জেনে থাকেন তাহলে ভালো আর যদি না জেনে থাকেন তাহলে সমস্যা নেই আমরা বলে দিচ্ছি কিভাবে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হয়।

ব্লগিং করার জন্য যখনই আপনি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন তখন আপনাকে বেশ কিছু জিনিস বা বিষয় মাথায় রাখতে হবে। একটি ব্লগ শুরু করার পূর্বে যে বিষয় গুলো অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে তা নিম্নে আলোচনা করছি। যদি আপনি এই বিষয়গুলি সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে জেনে নিন।

আরে বিষয়গুলো না জেনে না মেনে যদি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে ব্লগিং শুরু করে দেন তাহলে কখনই ব্লগিং করে নিজের ক্যারিয়ার করতে পারবেন না।

আরও পড়ুন: ব্লগিং শুরু করার পূর্বে যে বিষয় গুলো আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে।

টপিক রিসার্চ

প্রথমেই আপনি কি বিষয়ের উপর ব্লগিং করবেন সেই বিষয়টি নির্বাচন করবেন। সে বিষয়টি নির্বাচন করার বিশেষ প্রক্রিয়া হল আপনি যে বিষয়ে লিখতে রিসার্স করতে এবং বিশ্লেষণ করতে ভালোবাসেন সে বিষয়টি আপনার টপিক হিসেবে প্রথম পছন্দের রাখবেন।

কেননা আপনি যদি এমন কোন বিষয় পছন্দ করেন যে বিষয়ে আপনার কোনো আগ্রহ বা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ নেই। তাহলে সে বিষয়টি নিয়ে আপনি বেশিদূর এগোতে পারবেন না। কেননা ইন্টারেস্ট ছাড়া কোন কাজ করেই আনন্দ পাওয়া যায় না। আর যে কাজে আনন্দ নেই সে কাজটি সবচেয়ে কঠিন।

তাই আমার পরামর্শ হলো আপনি যে বিষয়টি নিয়ে রিচার্জ করতে ভালোবাসেন সে বিষয়ে সম্পর্কে আপনি ব্লগিং শুরু করুন।

পেশার সাথে মিলিয়ে টপিক নির্বাচন: মনে করুন আপনি একজন ডক্টর, আপনি সারাক্ষণ বিভিন্ন রোগের লক্ষণ, বিভিন্ন পেশেন্টদের শারীরিক অবস্থা, কিভাবে সুস্থ থাকতে হবে সেই ব্যাপারগুলি, এবং রোগীদের সচেতন মূলক পরামর্শ, ইত্যাদি বিষয়ে ব্লগিং শুরু করতে পারেন। কেননা এটি আপনার পেশার সাথে যায়।

পক্ষান্তরে আপনি যদি একজন ডক্টর হন এবং আপনি যদি মিউজিক নিয়ে ব্লগিং শুরু করেন তাহলে সেটি আপনার জন্য কখনোই উপযুক্ত হতে পারে না। যখন আপনি একটি কাজ করতে যাবেন অন্যটির ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা থাকে। কেননা দুইটি দুই রকম বিষয়।

পার্সোনাল ইন্টারেস্ট থেকে  বিষয় নির্বাচনঃ মনে করুন আপনি বিভিন্ন গেম খেলতে ভালোবাসেন। সেক্ষেত্রে আপনি কম্পিউটার মোবাইল এবং ল্যাপটপ এর বিভিন্ন গেমস রিভিউ, গেমস এর বিভিন্ন প্রোগ্রাম নিয়ে ব্লগিং শুরু করতে পারেন। কেননা আপনি এই বিষয়ে ইন্টারেস্টেড। যেহেতু আপনার এই বিষয়ে প্রচুর ইন্টারেস্ট রয়েছে তাই আপনি এই বিষয়ে সম্পর্কে খুব সহজেই রিচার্জ করে লেখালেখি করতে পারবেন।

যোগ্যতার সাথে মিলিয়ে টপিক নির্বাচন: আপনার যোগ্যতার সাথে মিলিয়ে ব্লগিং টপিক নির্বাচন করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি যদি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হন তাহলে গ্রাফিক্স ডিজাইন সম্পৃক্ত ব্লগ তৈরি করতে পারেন। আপনি যদি ইলেকট্রিক ইলেকট্রনিক বিষয়ে যোগ্যতাসম্পন্ন হন তাহলে আপনি ইলেকট্রিক ইলেকট্রনিক কোন নিয়ে কাজ করতে পারেন।

অর্থাৎ ব্লগিং এর জন্য যখন টপিক নির্বাচন করবেন তখন অবশ্যই আপনার প্রফেশন, পার্সোনাল ইন্টারেস্ট , এবং যোগ্যতা এই তিনটি বিষয়কে একত্রিত করে একটি টপিক নির্বাচিত করবেন তাহলে আপনি ব্লগিং এ বহুদূর এগিয়ে যেতে পারবেন।

কীওয়ার্ড রিসার্চ

তো বন্ধুরা এতক্ষণ আপনারা জানলেন কিভাবে ব্লগের জন্য একটি বিষয় বা টপিক নির্বাচন করতে হয়। এখন কথা হচ্ছে আপনি একটি টপিক নির্বাচন করে ফেললেন এবং সে অনুযায়ী ব্লগ তৈরী করলেন সে ব্লগ টি করানোর জন্য আপনাকে অবশ্যই কিছু ফর্মুলা অবলম্বন করতে হবে।

আপনি যে টপিক নির্বাচন করেছেন সেই টপিক অনুযায়ী যদি আপনি আর্টিকেল লেখা শুরু করেন এবং কোন কিওয়ার্ড /শব্দকে টার্গেট করে না লিখেন তাহলে আপনার লেখাগুলি গুগলে রেংক হতে অনেক সময় লাগতে পারে।

তাই ব্লগিং শুরু করার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে বেশ কিছু কিওয়ার্ড রিসার্চ করে নিতে হবে এবং সে অনুযায়ী আর্টিকেল লিখতে হবে তাহলে খুব দ্রুত আপনার ওয়েবসাইট রেংকিং এ আসার সম্ভাবনা থাকে।

এখানে আরো একটি বিষয় লক্ষ্য করতে হবে- আপনি যে বিষয়টি নির্বাচন করেছেন সেই বিষয়ে ভিজিটররা অনলাইনে সার্চ করে কিনা। আপনি এমন একটি বিষয় নির্বাচন করলেন যে বিষয়ে অনলাইনে মাসে পাঁচজন পাঁচজন লোক সার্চ করে থাকে তাহলে ঐরকম প্রতীক নিয়ে ব্লগিং করা লাভজনক হবে না।

আমি আরো সহজ করে বলছি- মনে করুন আপনি বিষয় নির্বাচন করেছেন “Smartphone” এবং আপনি “Upcoming Smartphone”, “smartphone price in bangladesh” ইত্যাদি বিষয়ে আর্টিকেল লিখলেন। কিন্তু এসকল কিওয়ার্ডে আরো অন্যান্য ওয়েবসাইটগুলো গুগলের প্রথম পেজে রয়েছে। এখন কথা হচ্ছে আপনি আপনার লেখা দিয়ে আপনার যোগ্যতা কে কাজে লাগিয়ে ঐসকল ব্লগ কে পিছে ফেলে আপনি সামনে আসতে পারবেন কিনা । এটা ভালোভাবে রিসার্স করতে হবে। আপনার যদি মনে হয় আপনি পারবেন না তাহলে বিষয় ঠিক রেখে আপনি কি-ওয়ার্ড পরিবর্তন করে ফেলুন।

আপনাকে এমন একটি কিওয়ার্ড বাছাই করতে হবে- যে কিওয়ার্ডে কম্পিটিশন অনেক কম, সার্চ ভলিওম অনেক বেশী এরকম তাহলে আপনি খুব সহজেই আপনার ওয়েবসাইট থেকে লাভের মুখ দেখতে পারবেন।

আরও পড়ুন: কিভাবে কিওয়ার্ড রিসার্স করবেন। পূর্ণাঙ্গ গাইড।

ডোমেইন রেজিষ্ট্রেশন:

আপনার টপিক নির্বাচন ও কিওয়ার্ড রিসার্স হয়ে গেলে আপনার টপিক এর সাথে মিলিয়ে একটি ডোমেইন রেজিষ্ট্রেশন করে ফেলুন। ডোমেইন হলো আপনার ওয়েব সাইট এর ঠিকানা বা নাম। যেমন- google.com, facebook.com, sohojincome.com ইত্যাদি। কিভাবে একটি ডোমেইন রেজিষ্ট্রেশন করতে হয় এখানে দেখুন

আরো পড়ুন:  একটি ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করার পূর্বে আপনাকে যে বিষয়গুলো জানতে হবে

ওয়েব সাইট তৈরি করার নিয়ম

আপনার ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করা হয়ে গেলে এবার ওয়েবসাইট তৈরি করার পালা। বর্তমানে ওয়েবসাইট বিভিন্ন প্লাটফর্মে তৈরি করা যায় তাই ওয়েবসাইট তৈরি করার পূর্বে আপনাকে অবশ্যই যেকোনো একটি ব্লগিং প্লাটফর্ম/ সিএমএস (কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) নির্বাচন করতে হবে।

ব্লগিং প্লাটফর্ম /সিএমএস (Content Management System) নির্বাচন

ব্লগিং প্লাটফর্ম তথা CMS (Content Management System) হল আপনার ওয়েবসাইট নিয়ন্ত্রণ করার একটি ফ্রেমওয়ার্ক। এই CMS (Content Management System) এর মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটর এর একটি স্বাভাবিক ডিজাইন, থিম ইনস্টল,  আর্টিকেল লেখা, আর্টিকেল ড্রাফট করা, পেজ তৈরি করা, কমেন্ট করা, কমেন্টের রিপ্লাই দেয়া, আর্টিকেল মুছে ফেলা, কোন কমেন্ট ডিলিট করে দেয়া ইত্যাদির কাজ সম্পন্ন করা যায়।

একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়গুলি অত্যন্ত জরুরী। এই বিষয়গুলি ম্যানেজমেন্ট করার জন্য যেকোনো একটি সিএমএস /ব্লগিং প্লটফর্ম করলে আপনার কাজটি অনেকাংশে সহজ হয়ে যায়।

আপনি যদি কোন কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ছাড়া নিজের থেকে তৈরি একটি ডায়নামিক ওয়েবসাইট বানানোর চেষ্টা করেন সেক্ষেত্রে আপনার যেমন পরিশ্রম হবে যেমন প্রচুর টাকা খরচ হবে।

বর্তমান মার্কেটে প্রচুর ফ্রী সিএমএস পাওয়া যায়। এর মধ্যে অন্যতম হলো:

  • ওয়ার্ডপ্রেস
  • ব্লগার
  • জুমলা
  • লারাভেল ইত্যাদি অন্যতম

আরও পড়ুনঃ

  • ব্লগিং  CMS কিভাবে নির্বাচন করবেন ? বিস্তারি এখানে।
  • ব্লগিং প্লাটফর্ম কি? ওয়ার্ডপ্রেস বনাম ব্লগার- আপনি কোনটি ব্যবহার করবেন।

হোস্টিং ক্রয়

অতঃপর সিএমএস নির্বাচন করার পর আপনাকে একটি ওয়েব হোস্টিং কিনতে হবে। ওয়েব হোস্টিং হলো আপনার ওয়েবসাইটে যে জায়গাটিতে রাখবেন সেই জায়গাটি/ অর্থাৎ আপনার ওয়েবসাইট রাখার মেমোরি কার্ড ওয়েব সার্ভার।

আরও পড়ুন:

  • ওয়েব হোস্টিং কেনার আগে যে ভিষয়গুলি আপনাকে জানতে হবে।
  • কিভাবে এবং কোথায় থেকে ওয়েব হোস্টিং ক্রয় করবেন? এটুজেড গাইড।

এবার ওয়েবসাইট তৈরি করার পালা- আমরা এখানে ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য দুইটি প্ল্যাটফর্ম নিয়ে আলোচনা করব। প্রথমত হচ্ছে ওয়ার্ডপ্রেস এবং দ্বিতীয়তো ব্লগার ফ্রি প্ল্যাটফর্ম।

ওয়ার্ডপ্রেস এ ওয়েবসাইট তৈরি: 

আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেসে আপনার ওয়েবসাইট তৈরি করেন সেক্ষেত্রে আপনাকে ডোমেইন এবং হোস্টিং এই দুইটি জিনিস কিনতে হবে। প্রথম অবস্থায় আপনি ডোমেইন এবং হোস্টিং 1000 টাকা থেকে শুরু করে 3000 টাকার মধ্যে কিনতে পারবেন এবং এটি প্রতিবছরে রিনিউ করতে হবে।

অতঃপর আপনাকে আপনার হোস্টিং প্যানেল থেকে ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল দিতে হবে, থিম আপলোড করতে হবে, থিম কাস্টমাইজ করতে হবে, প্রয়োজনীয় প্লাগইন সেটাপ দিতে হবে।

বিস্তারিত এখানে: কিভাবে ওয়ার্ডপ্রেস এ একটি প্রফেশনাল ওয়েবসাইট তৈরি করবেন- এ টু জেড ভিডিও গাইড।

ফ্রি ব্লগিং প্লাটফর্মে বিনামূল্যে ওয়েবসাইট তৈরি:

আপনি যদি ব্লগিং-এর শুরু অবস্থায় খরচ কমাতে চান সেক্ষেত্রে আপনি গুগলের প্ল্যাটফর্ম ব্লগার ব্যবহার করতে পারেন। ব্লগারে হোস্টিং আজীবন ফ্রি পাবেন। ব্লগার যেহেতু গুগলের প্ল্যাটফর্ম তাই তাদের হোস্টিং তাও মোটামুটি ভালো মানের এতে কোন সন্দেহ নেই।

এক্ষেত্রে আপনাকে শুধুমাত্র একটি ডোমেইন কিনতে হবে। আপনি যদি চান না কিনে গুগলের সাব ডোমেইন ব্যবহার করে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন তবে সেটি প্রফেশনাল দেখায় না। যেহেতু আপনি অনলাইনে আয় করার জন্য ভালো একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন তাই আমার পরামর্শ হলো অবশ্য একটি ডোমেইন কিনে ওয়েবসাইট তৈরি করুন।

বিস্তারিত এখানে: কিভাবে ফ্রিতে ব্লগারে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন। এ টু জেড ভিডিও গাইড।

ব্লগিং করে আয় করার জনপ্রিয় কিছু মাধ্যমঃ

ব্লগিং করে আয় করার প্রচুর মাধ্যম  রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহ্রত ও বহুল পরিচিত সহজ ও জনপ্রিয় কয়েকটি মাধ্যম আলোচচনা করছি। এবং এখানে যে বিষয়গুলো আলোচনা করেছি এগুলোর মধ্য থেকে যে কোন একটি মাধ্যম ব্যবহার করে ব্লগিং করে ইনকাম করতে পারেন এছাড়া অন্যান্য যে ভেতর গুলো রয়েছে সেগুলো তুলনামূলকভাবে একটু কঠিন।

সবাই যেহেতু সহজ বিষয়গুলোই খুঁজে থাকে তাই আমি সহজ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করছি।

গুগল এডসেন্স থেকে আয়

ব্লগিং করে অনলাইন থেকে আয় করার জনপ্রিয় এবং সহজ মাধ্যম গুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রথমে যে মাধ্যমটি রয়েছে সেটি হল গুগল এডসেন্স। গুগল গুগলের একটি বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক। অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হাজারো বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বহুল পরিচিত এড নেটওয়ার্ক হল গুগল এডসেন্স। এটি গুগলের নিজস্ব একটি সার্ভিস তাই এখান থেকে প্রতারিত হওয়ার কোন চান্স নেই।

আপনি যদি গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে ব্লগিং করে ইনকাম করতে চান, সেক্ষেত্রে অবশ্যই গুগল এডসেন্স এর যে নীতিমালা গুলো রয়েছে সেগুলো আপনাকে মেনে আপনার ওয়েবসাইটটি তৈরি করতে হবে। যদি আপনার ওয়েবসাইটটি গুগল এডসেন্সের নীতিমালা অনুযায়ী না হয় তাহলে গুগল এডসেন্স কখনোই আপনার ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করবে না।

আপনার ওয়েবসাইট কে কয়েকটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গুগল এডসেন্স এর সাথে সংযুক্ত করতে হবে। 

  • প্রথমে আপনার ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে।
  • খুব সুন্দর এবং সাদাসিধা ডিজাইন করতে হবে।
  • গুগোল এর নীতিমালা অনুযায়ী কনটেন্ট প্রকাশ করতে হবে।
  • সবকিছু ঠিক থাকলে গুগল এডসেন্স এর জন্য আবেদন করতে হবে।
  • গুগল এডসেন্স আপনার ওয়েবসাইট যাচাই-বাছাই করে তারপর গুগল এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করার জন্য অনুমোদন দেবে।
  • আর যখন গুগল এডসেন্স আপনার ওয়েব সাইটে এড প্রদর্শনের জন্য অনুমোদন দেবে তখন আপনার ওয়েবসাইটে গুগল এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে পারবেন।
  • আপনার ওয়েবসাইটে যখন গুগল এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন থাকবে তখন ভিজিটর যখন আপনার ওয়েবসাইট থেকে কোন বিজ্ঞাপনে ক্লিক করবে তখন আপনার একাউন্টে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টাকা জমা হতে থাকবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইনকাম করার যত মাধ্যম রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে সহজ ও অল্প সময়ে ইনকাম করা সম্ভব হল গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে। গুগল অ্যাডসেন্স থেকে প্রতিমাসে কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করা সম্ভব।

আরও পড়ুন:

  • কিভাবে গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে অনলাইন থেকে আয় করবেন? এ টু জেড গাইড।
  • গুগল এডসেন্স এর যে বিষয়গুলো জানা অত্যন্ত জরুরী।
  • গুগোল অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রভাল পাওয়ার ২০ কার্যকরী টিপস।
  • গুগল এডসেন্স থেকে কত টাকা ইনকাম করা যায়? দেখলে চোখ কপালে উঠে যাবে।
  • গুগল এডসেন্স এর জন্য কিভাবে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন?

এফিলিয়েট মার্কেটিং

ব্লগিং করে অনলাইন থেকে আয় করার জনপ্রিয় মাধ্যম গুলোর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে এফিলিয়েট মার্কেটিং। এফিলিয়েট মার্কেটিং হল আপনার একটি ওয়েবসাইট থাকবে। সেখানে অন্যান্য ওয়েবসাইট থেকে এফিলিয়েট লিংক কালেক্ট করে সেই লিংকগুলোর মাধ্যমে তাদের প্রোডাক্ট ও সার্ভিস বিক্রয় করতে হবে।  এফিলিয়েট লিংক এর মাধ্যমে যে প্রোডাক্ট বিক্রি হবে আপনি প্রত্যেকটি প্রোডাক্টের জন্য কমিশন পেয়ে থাকবেন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য তিন ক্যাটাগরির প্রোডাক্ট রয়েছেঃ ফিজিক্যাল প্রডাক্ট, ডিজিটাল প্রোডাক্ট, ও সার্ভিস। 

ফিজিক্যাল প্রডাক্ট: ফিজিক্যাল প্রডাক্ট হল, ব্যবহারযোগ্য প্রোডাক্ট, যে প্রোডাক্টটি সরাসরি শিপমেন্ট করতে হয়। ফিজিক্যাল প্রডাক্ট কমিশন তুলনামূলকভাবে একটু কম থাকে। এরপর সাধারণত ২% থেকে ১৫% পর্যন্ত কমিশন থাকে। এছাড়া রয়েছে ডেলিভারি এবং এর মত কিছু ঝামেলা। যাইহোক এসব ঝামেলা যে কোম্পানির প্রোডাক্ট সেল করবেন সে কোম্পানি মেইন্টেইন করবে। আপনার কাজ হবে শুধুমাত্র পণ্য অর্ডার করিয়ে দেয়া।

ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট এর উদাহরণ: জামা-কাপর, টিভি, ফ্রিজ, মোবাইল, লেপটপ ইত্যাদি।

ডিজিটাল প্রোডাক্ট: ডিজিটাল প্রোডাক্ট প্রোডাক্ট গুলো আপনাকে সরাসরি ব্যবহার করতে হয় না। এগুলো সফট কপি বা ডাউনলোড ভার্সন থাকে। এ সমস্ত প্রোডাক্ট সাধারণত ১০% থেকে শুরু করে ৬০% পর্যন্ত কমিশন দিয়ে থাকে। এটার মার্কেটাররা সাধারণত ডিজিটাল প্রোডাক্ট এর এফিলিয়েশন টা বেশি করে থাকে কেননা ডিজিটাল প্রোডাক্ট এর কমিশন অনেক বেশি থাকে।

ডিজিটাল প্রোডাক্ট এর উদাহরণ, কোন সফটওয়্যার, ডোমেইন, হোস্টিং, এসএসএল, থিম, প্লাগিন, এন্টিভাইরাস, এডিটর, ইত্যাদি।

সার্ভিস: সার্ভিস হল কোন কোম্পানি কোন একটি সার্ভিস দেয় সেই সার্ভিসের জন্য আপনাকে কাস্টমার জোগাড় করে দিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি প্রতিটি কাস্টমারের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে টাকা পাবেন। অথবা কারো কোন একটি অনলাইনে কোর্স রয়েছে আপনি সেই কোডটি বিক্রয় করে দেবেন। প্রতিটি কোর্সের জন্য আপনার নির্ধারিত পরিমাণ টাকা পাবেন।

যেমন: ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স, এসইও কোর্স, ভিডিও এডিটিং কোর্স, কার ওয়াশ সার্ভিস, বিউটি পার্লার সার্ভিস, হোটেল বুকিং, বাস বা এয়ার টিকেট বুকিং ইত্যাদি।

আরও পড়ুন:

  • এফিলিয়েট মার্কেটিং কি? কিভাবে শুরু করবেন? এ ‍টু জেড গাইড।
  • এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য কোন প্রোডাক্ট কাজ করা উচিৎ?

ব্যান্ডিং এন্ড প্রোমোশন

ব্লগিং ইনকামের জন্য আরও একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হল ব্র্যান্ডিং এন্ড প্রোমোশন। সহজভাবে বলতে গেলে প্রিন্টিং এন্ড প্রোমোশন হল কোন একটি কোম্পানির প্রচার প্রচারণা করা। যখন আপনার একটি ওয়েবসাইট থাকবে এবং সেখানে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে ভিজিটর থাকবে। বিভিন্ন কোম্পানি আপনাকে তাদের ফ্রেন্ড বা তাদের অফারকে প্রমোট করার জন্য অফার করে থাকবে। তখন আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নির্ধারিত টাকার বিনিময়ে তাদের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কে প্রচার করতে হবে।

আরো পড়ুন: ব্র্যান্ড এন্ড প্রোমোশন করে কিভাবে টাকা ইনকাম করবেন?

স্পন্সর এন্ড প্রোডাক্ট রিভিউ

ব্লগিং করে আয় করার জনপ্রিয় মাধ্যম গুলোর মধ্যে আরও একটি মাধ্যম হলো স্পন্সর এন্ড প্রডাক্ট রিভিউ। আপনি যদি স্পেশাল কোন প্রোডাক্ট সম্পর্কিত ওয়েবসাইট তৈরি করেন তাহলে বিভিন্ন কোম্পানির প্রোডাক্ট রিভিউ করে প্রচুর পরিমাণে টাকা আয় করতে পারবেন।

মনে করুন আপনার ওয়েবসাইটটি মোবাইল এবং ল্যাপটপ এর দাম সম্পর্কে। অর্থাৎ আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রোডাক্ট এর মূল্য, আপকামিং প্রোডাক্ট, ডিসকাউন্ট এর প্রোডাক্ট এর রিভিউ করে থাকেন।

এক্ষেত্রে বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানি বিভিন্ন কম্পিউটার কোম্পানি আপনার সাথে যোগাযোগ করবে। তারা আপনাকে অফার করবে যে তাদের একটি নতুন প্রোডাক্ট রিভিউ করার জন্য। আপনি নির্দিষ্ট টাকার মাধ্যমে তাদের প্রোডাক্ট রিভিউ করে দেবেন। এতে আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তাদের প্রোডাক্টটি প্রচার-প্রচারণা হল এবং আপনিও টাকা ইনকাম করতে পারলেন।

আরো পড়ুন: স্পনসর এবং প্রোডাক্ট রিভিউ করে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়?

ই-কমার্স ব্যবসা করে ইনকাম

ই-কমার্স ব্যবসার ব্লগিং এর অন্তর্ভুক্ত, কেননা এই ব্যবসাটি একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে। ই-কমার্স বলতে বোঝানো হয়েছে অনলাইন শপ। আপনার একটি ওয়েবসাইট থাকবে সেখানে বিভিন্ন প্রোডাক্ট লিস্ট করা থাকবে এবং কাস্টমাররা সেখানে প্রোডাক্ট অর্ডার করবে আপনারা সেই প্রোডাক্টটি সে কাস্টমারের ঠিকানায় ডেলিভারি করে দেবেন এটি হচ্ছে কমার্সের রুলস।

ই-কমার্স ব্যবসা দুই ধরনের হয়ে থাকে একটি হচ্ছে সরাসরি এবং অন্য আরেকটি হচ্ছে multi-vendor।

আরো পড়ুন: ই কমার্স ব্যবসা কিভাবে শুরু করবেন এ টু জেড গাইড।

ই-কমার্স মাল্টি ভেন্ডর ব্যাবসা

ই-কমার্স multi-vendor ব্যবসাটি ই-কমার্স এর অন্তর্ভুক্ত তবে একটু ভিন্ন রূপ রয়েছে। ই-কমার্স multi-vendor বৃষ্টি হলো একটি ওয়েবসাইট থাকবে। এবং সেই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিক্রেতারা তাদের প্রোডাক্ট লিফটিং করতে পারবে। যখন কোনো ক্রেতা সে প্রোডাক্টগুলো কেউ অর্ডার করবে তখন বিক্রেতারা নিজেরাই সেটাকে ডেলিভারি করে দেবে এতে ওয়েবসাইট এর কর্তৃপক্ষ কোনো কাজ থাকবে না। সকল কাজ ক্রেতা এবং বিক্রেতা রাই সম্পন্ন করবে।

মাঝখান থেকে ওয়েবসাইটের মালিক একটি কমিশন/সার্ভিস চার্জ রেখে দেবে।

ড্রপ-শিপিং ব্যবসা

বর্তমানে ড্রপশিপিং একটি মজার ব্যবসা। এখানে আপনার নিজস্ব কোন প্রোডাক্ট এর প্রয়োজন হবে না। আপনি একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে খুব সহজেই একটি ড্রপশিপিং বিজনেস শুরু করতে পারবেন।

ড্রপ শিপিং বিজনেস হলো: আপনি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন সেখানে বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে তাদের পণ্য গুলো নিয়ে এসে আপনার ওয়েবসাইটে লিস্টিং করবেন। যখন কোন কাস্টমার আপনার ওয়েবসাইটে একটি পণ্য অর্ডার করবে আপনি সেই পণ্যটি অরিজিনাল ওয়েবসাইট থেকে অর্ডার করে কাস্টমার এর ঠিকানায় পাঠিয়ে দেবেন।

অরিজিনাল ওয়েবসাইটে যদি একটি পণ্যের মূল্য 20 ডলার হয়ে থাকে আপনি সেই পনেরো দিন হলো আপনার ওয়েবসাইটে 30 ডলার লিস্টিং করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি পণ্যের জন্য আপনার 10 ডলার করে প্রফেট থাকবে।

আরও পড়ুন: ড্রপশিপিং ব্যবসা কি? কিভাবে ড্রপশিপিং ব্যবসা শুরু করবেন। 

সাস ব্যবসা:

সাস বিজনেস হলো, অল্প পরিশ্রমে লাইফ টাইম ইনকাম করার একটি প্রসেস। এখানে আপনার ওয়েবসাইটে বেশি কনটেন্ট এর প্রয়োজন নেই, আপনি সাধারণত একটি টুলস বা সফটওয়ার চালু করে রাখবেন। এবং রীতিমত আপনার ওয়েবসাইট এর মার্কেটিং করবেন। এবং আপনার ওয়েবসাইটে গুগল এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করবেন অথবা এফিলিয়েট লিংক এর মাধ্যমে ইনকাম করতে পারেন।

যেমন: পিডিএফ মেকার, এইজ ক্যালকোলেটর, আইডি কার্ড মেকার, ইমেজ টু গিফ মেকার ইত্যাদি।

আরও পড়ুন: সাস ব্যবসা কি? কিভাবে শুরু করবেন? এটুজেড গাইড।

 অনলাইল টুলস ওয়েবসাইট

অনলাইন টুলস এর ব্যবসাটিও মজার একটি ব্যবসা। শুধুমাত্র আপনি একটি টুলস এর ওয়েবসাইট তৈরি করে বিভিন্ন জায়গায় মার্কেটিং করি ভিজিটর জেনারেট করবেন। এবং গুগল এডসেন্স এর বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রচুর টাকা আয় করতে পারবেন।

যেমন: SEO Tools, Domain Availability Checker, Website earning checker, Website traffic checker,  ইত্যাদি।

আরও পড়ুন: কিভাবে টুলস ওয়েবসাইট তৈরি করবেন? এটুজেড গাইড।

সর্বোপরি আমাদের পরামর্শ:

আপনি যদি ব্লগিংয়ের মাধ্যমে অনলাইন থেকে ইনকাম করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ধৈর্য সহকারে কাজে নামতে হবে। আজকে এই টিউটোরিয়ালে আমরা যে বিষয়গুলো আলোচনা করেছি ভালোভাবে পড়ে বুঝে শুনে তারপর আপনি কাজ শুরু করুন। আমাদের এই টিউটোরিয়ালে জে রিসোর্স গুলো রয়েছে, যদি আপনি ভালোভাবে বুঝে কাজ শুরু করেন আশা করি অবশ্যই আপনি ব্লগিং এ সাকসেস হতে পারবেন।

তবে ব্লগিং শুরু করার পূর্বে অবশ্যই বারবার ভেবেচিন্তে বুঝে-শুনে টপিক নির্বাচন করবেন। ব্লগিং এর জন্য তোফিক নির্বাচন করাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

বন্ধুরা যদি আপনার কোনো প্রশ্ন, পরামর্শ বা মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন। আমরা যত দ্রুত সম্ভব রিপ্লাই দেয়ার চেষ্টা করব। আল্লাহ হাফেজ।

আপনার জন্য আরও আর্টিকেল

1 thought on “ব্লগিং কি, কিভাবে শুরু করবেন- ব্লগিং করে আয় করুন মাসে 2 লক্ষ টাকা”

  1. এই ধরনের বিজনেস করতে গেলে কোন লাইসেন্সের প্রয়োজন হবে।

    Reply

Leave a Comment