পার্টনারশিপ চুক্তিপত্র দলিল : আপনারা যারা কয়েকজন মিলে একটি ব্যবসা শুরু করতে চান? সে ক্ষেত্রে অবশ্যই একটি চুক্তি করতে হবে। আর চুক্তি করার জন্য আপনাদের একটি দলিল করতে হবে।
একটি পার্টনারশিপ ব্যবসাতে, একাধিক সদস্য থাকতে পারে। এক্ষেত্রে প্রতিটি সদস্যের সমান অধিকার থাকবে। এক্ষেত্রে কেউ হয়তো পার্টনারশিপ ব্যবসায় বেশি টাকা বিনিয়োগ করবে আবার কেউ কেউ কম টাকা বিনিয়োগ করবে।
তাদের সেই বিনিয়োগের টাকা ব্যবসায়ী কাজে লাগানোর পর। যে পরিমাণে লভ্যাংশ আসবে তাদের টাকার পরিমান হিসেবে প্রদান করা হবে। এ ধরনের চুক্তি সম্পন্ন করার জন্য একটি দলিল লিখতে হবে।
তাই আজকের এই আর্টিকেলে পার্টনারশিপ চুক্তিপত্র দলিল কিভাবে লিখতে হয় সে বিষয়ে, বিস্তারিত জানিয়ে দেব। সম্পর্কে জানতে নীচে দেওয়া তথ্য গুলো মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আমরা এখানে আপনার সুবিধার জন্য পার্টনারশিপ চুক্তিপত্র দলিল নমুনা হিসেবে জানিয়ে দিচ্ছি। একটি পার্টনারশিপ দলিলে কি কি তথ্য সংযুক্ত থাকে। এবং কি কি শর্ত মোতাবেক চুক্তিপত্র সম্পাদন করতে হয়, সে বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নিন।
আর পার্টনারশিপ চুক্তিপত্র দলিল সম্পন্ন করার জন্য আপনারা ১৫০ টাকা মূল্যের বা ৩০০ টাকা মূল্যের নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পের মাধ্যমে চুক্তিপত্র সম্পন্ন করতে পারেন।
পার্টনারশিপ চুক্তিপত্র দলিল
অত্র চুক্তিপত্র দলিল অদ্য ১৩/০৬/২০২৩ ইং তারিখে নিম্নলিখিত পক্ষদের মধ্যে সম্পাদিত করা হলো।
প্রথম পক্ষঃ
মোঃ এনামুল হক, জন্ম তারিখঃ ০১-০১-১৯৯০ ইং, পিতাঃ মৃত আবুল হোসেন, মাতাঃ মোছাঃ কুলসুম বেগম, গ্রামঃ ঢাকা, পোস্টঃ ঢাকা, উপজেলাঃ ঢাকা, জেলাঃ ঢাকা। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী, ধর্মঃ ইসলাম, পেশাঃ ব্যবসা।
দ্বিতীয় পক্ষঃ
মোঃ আশরাফুল আলম, জন্ম তারিখঃ ২৩-০৪-১৯৮৮ ইং, পিতাঃ মোহাম্মদ আজগর আলী, মাথা মোসাম্মৎ ফাহিমা বেগম, গ্রামঃ রামপুরা, পোস্টঃ রামপুরা, উপজেলাঃ রামপুরা, জেলাঃ ঢাকা, জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী, ধর্মঃ ইসলাম, পেশাঃ ব্যবসা।
উপরোক্ত নিয়ম অনুযায়ী প্রথম পক্ষের নাম ঠিকানা এবং দ্বিতীয় পক্ষের নাম ঠিকানা লিখতে হবে। তারপর আপনাকে চুক্তিপত্র দলিল লেখা শুরু করতে হবে। যেমন-
পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার নামে অত্র পার্টনারশিপ চুক্তিপত্র দলিলের আয়না হোক বয়ান শুরু করিতেছি। যেহেতু আমরা সকল পক্ষগণ পরস্পর পরস্পরকে দীর্ঘদিন যাবত চিনি। এমতাবস্থায় আমরা সকল পক্ষগণ একত্রে ব্যবসা পরিচালনা করার ইচ্ছা পোষণ করেছি।
আমরা উপরোক্ত পক্ষদ্বয় একমত হয়ে, আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ জটিলতা নিরলস কল্পে পদ্ম হাজিরান মজলিসে সাক্ষী গনের মোকাবেলায়, এই মর্মে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার জন্য।
নিম্নলিখিত শর্তাবলীর আস্থা রাখিয়া ভবিষ্যৎ জটিলতা নিরলস কল্পে ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র দলিলে আমরা প্রথম পক্ষ এবং দ্বিতীয় পক্ষ ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র দলিলে স্বাক্ষর করিয়া আবদ্ধ হইলাম।
পাতা-২
পার্টনারশিপ ব্যবসার শর্তবলী
এখন প্রথম পক্ষ এবং দ্বিতীয় পক্ষের মধ্যে পার্টনারশিপ চুক্তিপত্র দলিলের কিছু শর্ত সংযুক্ত করতে হবে যে শর্ত মোতাবেক ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে। যেমন-
- এলপি গ্যাস সিলিন্ডার এবং টাইলস এর ব্যবসা এস এম এন্টারপ্রাইজ, ঢাকায় অবস্থিত দোকানটি যৌথভাবে পরিচালনা করা হইবে।
- অত্র পার্টনারশিপ দলিল সহি সম্পাদনের তারিখ হতে পত্র পার্টনারশিপ ব্যবসার মেয়াদ শুরু হবে। এবং আইনানুগ রূপে অবসান না হওয়া পর্যন্ত অত্র ব্যবসা চলমান থাকবে।
- পার্টনারশিপ ব্যবসার মূল অফিস ঢাকা শহরে অবস্থিত থাকবে। যার ঠিকানা ১/৪৫ ঢাকা। এবং অন্যান্য স্থানে অবয়পক্ষের লিখিত অনুমোদন নিয়ে শাখা অফিস খোলা যাবে।
- পার্টনারশিপ ব্যবসার ব্যবসায়ীদের প্রতি ২০,০০,০০/- (বিশ লাখ) টাকা। তন্মধ্যে প্রথম পক্ষ ৬০% এবং দ্বিতীয় পক্ষ ৪০% বিনিয়োগ করবে।
- ব্যবসার এককালীন পুঁজি ছাড়াও যেকোনো সময় পার্টনারশিপ ব্যবসার উন্নতির জন্য পুঁজির পরিমাণ হ্রাস বৃদ্ধি করতে পারবে।
- পার্টনারশিপ ব্যবসার লাভ ক্ষতির অংশ প্রথম পক্ষ ৬০% এবং দ্বিতীয় পক্ষ ৪০% বন্টন করবে।
- প্রত্যেক মাসে অন্তর অন্তর পার্টনারশিপ ব্যবসার লাভ ক্ষতির হিসাব প্রস্তুত করা হবে। প্রথম পক্ষ ৬০ পার্সেন্ট এবং দ্বিতীয় পক্ষ ৪০% ভাগে হিসাব।
- আনুপাতিক হারে উভয়পক্ষ পার্টনারশিপ ব্যবসার সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করবে।
- উক্ত পার্টনারশিপ চুক্তিনাময় যে কোন পরিবর্তন, পরিবর্ধন করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে উভয়পক্ষ সম্মতিক্রমে সেটি সম্পন্ন করা হবে।
- শুধুমাত্র উভয়পক্ষের সম্পত্তিতে এই চুক্তিপত্র দলিল বাতিল এবং ব্যবসা বন্ধ করার ঘোষণা করতে পারবে।
পাতা-৩
এরকমভাবে আপনাদের পার্টনারশিপ ব্যবসার যাবতীয় শর্তগুলো সংযোজন করতে হবে। তারপর নিচে একটি প্যারা করতে হবে যেমন-
এতদ্বার্থে স্বেচ্ছায় স্ব-জ্ঞানে, সুস্থ মস্তিষ্কে অন্যের বিনা প্ররোচনায়, আমার উল্লেখিত পক্ষগণ নিম্নে উল্লেখিত সাক্ষী গণের সম্মুখে নিজ নিজ নাম স্বাক্ষর করিয়া পার্টনারশিপ চুক্তিপত্র দলিল সম্পাদন করিলাম।
স্বাক্ষীগণের স্বাক্ষর ও ঠিকানা
১। স্বাক্ষী গণের নাম ও ঠিকানা।
২। স্বাক্ষী গণের নাম ও ঠিকানা।
৩। স্বাক্ষী গণের নাম ও ঠিকানা।
পার্টনারশিপ ব্যবসায়ীদের নাম ও স্বাক্ষর
১। প্রথম পক্ষের নাম ও প্রথম পক্ষের স্বাক্ষর।
২। দ্বিতীয় পক্ষের নাম ও দ্বিতীয় পক্ষের স্বাক্ষর।
শেষ কথাঃ
আপনারা যারা পার্টনারশিপ চুক্তিপত্র দলিল করতে চান? তারা উপরোক্ত নমুনা অনুযায়ী যে, কোন পার্টনারশিপ চুক্তিপত্র তৈরি করতে পারেন।
আর এই পার্টনারশিপ চুক্তিপত্র দলিল সম্পর্কে আপনার যদি আরো কোন কিছু জানা থাকে। তাহলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন ধন্যবাদ।