চাঞ্চল্যকর দাবি মার্কিন বিজ্ঞানী ড.এলিস সিলভারের..
মার্কিন বিজ্ঞানী এলিস সিলভার এর লেখা সারা জাগানো -’HUMANS ARE NOT FROM EARTH-এ সায়েন্টিফিক ইভ্যালুয়েশন অফ দ্য এভিডেন্স’ বইটিতে, এলিস সিলভার, যিনি রীতিমতো যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করতে চেষ্টা করেছেন ‘মানুষ পৃথিবী গ্রহের কোন জীব নয়’।
বিশ্ববিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং অনেক আগেই বলেছিলেন, “এলিয়েন আছে , অবশ্যই আছে।” একটা সময় নাসার গবেষকেরা কেপলার টেলিস্কোপের সাহায্যে এমন ২০টি গ্রহের সন্ধান পেয়েছিলেন, যেখানে প্রাণের অস্তিত্ব আছে বলে ধারণা করা হয়। নাসার প্রথম সারির বিজ্ঞানী অ্যালেন স্টেফান , বিজ্ঞানী সিলভানো পি কলম্বানো , বিজ্ঞানী থমাস জুরবিউকেন বিভিন্ন সময় বলেছেন, এলিয়েনদের থেকে নাসা আর বেশি দূরে নেই। সেদিন খুব নিকটে, আর কয়েক বছরের মধ্যেই নাসা এলিয়েনদের কাছে ঠিকই পৌঁছে যাবে।
তবে, সম্প্রতি নাসার এই বক্তব্যে জল ঢেলে দিয়েছেন এক বিজ্ঞানী। তাঁর চাঞ্চল্যকর মতবাদ নিয়ে ঝড় উঠেছে খোদ বিজ্ঞানীমহলে। তিনি দাবী করেছেন মানুষই এলিয়েন বা ভিনগ্রহের জীব। অথচ, একদিন জীববিজ্ঞানীরা বলেছিল, প্রায় ১৮ লক্ষ বছর পূর্বে আফ্রিকায় সৃষ্টি হয়েছিল প্রথম মানব প্রজাতি হোমো ইরেক্টাস।
ড. এলিস সিলভার, যিনি একমাত্র বিজ্ঞানী বললেন , মানুষই ভিনগ্রহের জীব। আমেরিকার প্রখ্যাত পরিবেশবিদ ড. এলিস সিলভার। তিনি তাঁর ‘হিউম্যান আর নট ফ্রম আর্থ: এ সায়েন্টিফিক ইভ্যালুয়েশন অফ দ্য এভিডেন্স’ বইটিতে রীতিমতো যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করতে চেষ্টা করেছেন, ‘মানুষ পৃথিবীর জীব নয়’। বহুদিন ধরে গবেষণা করার পর তাঁর সিদ্ধান্ত, অন্য জীবদের মতো মানুষের সৃষ্টি পৃথিবীতে হয়নি।
কয়েক লক্ষ বছর আগে অন্য গ্রহ থেকে মানুষকে পৃথিবীতে ছেড়ে যাওয়া হয়েছিল। ড. এলিস সিলভার বলেছেন, মানুষের শরীরে থাকা অনেক ত্রুটি বুঝিয়ে দেয়, পৃথিবী মানুষের নিজের গ্রহ নয়। পৃথিবীর অনান্য উন্নত প্রাণীর সঙ্গে মানুষের শরীরের এত পার্থক্য কেন! এই প্রশ্নটির ওপরেই দাঁড়িয়ে আছে ডঃ এলিস সিলভারের মতবাদটি ও শত প্রশ্ন।
ড. সিলভারের সেই চাঞ্চল্যকর থিয়োরির কিছু দিক বিশ্লেষণ…….
ড. সিলিভারের মতে, পৃথিবীতে মানুষ ছাড়া থাকা সব প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণীকূল পরিবেশ থেকেই সরাসরি তাদের প্রয়োজন মিটিয়ে নেয়। উদ্ভিদ তার গায়ে এসে পড়া সূর্যালোক, বাতাসের কার্বন-ডাই-অক্সাইড আর মাটি থেকে জল নিয়ে নিজের খাবার তৈরি করে নেয়। বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীরা সরাসরি উদ্ভিদকে খেয়ে বা অনান্য প্রাণীকে খেয়ে পৃথিবীতে বেঁচে থাকে। কিন্তু মানুষ প্রকৃতিতে স্বাভাবিকভাবে পাওয়া বা গজিয়ে ওঠা খাবার সরাসরি খেতে অপছন্দ করে কেন?
ড. সিলিভারের মতে, সরাসরি পরিবেশ থেকে নেওয়া খাবার হজম করতে পারে না একমাত্র জীব মানুষই। তাই সে অন্যভাবে তার খাদ্যের প্রয়োজন মেটায়। মানুষ যদি পৃথিবীরই জীব হতো, তাহলে সে বাকি প্রাণীদের মতোই পরিবেশ থেকে পাওয়া খাবার সরাসরি খেয়ে হজম করতে পারত।
মানুষকে এই গ্রহের সবচেয়ে উন্নত প্রাণী বলে মনে করা হয়। কিন্তু ড. এলিস সিলভারের মতে মানুষই হল পৃথিবীর সবথেকে খাপছাড়া জীব। মানুষই হল পৃথিবীর জলবায়ুতে টিকে থাকার পক্ষে সবচেয়ে অনুপযোগী জীব। কারণ, পৃথিবীর বাকি সব জীব সারাজীবন খোলা আকাশের নীচে, প্রখর রোদ , তুমুল ঝড় বৃষ্টি সহ্য করে বেঁচে থাকতে পারে।
মানুষ কেন পৃথিবীর বাকি সব প্রাণীর মতো বৃষ্টিতে ঘন্টার পর ঘন্টা ভিজতে পারে না! কয়েক ঘন্টার বেশি সূর্য্যের প্রখর রোদে থাকলে, একমাত্র মানুষেরই কেন ‘হিট স্ট্রোক’ হয়! সূর্যের আলোয় বেশি সময় থাকলে আমাদের ত্বকের চামড়া কালো হয়ে যায় কেন? কেন সূর্যের আলোয় মানুষেরই চোখ ধাঁধিয়ে যায়? অন্য প্রাণীদের ক্ষেত্রে তো তা দেখা যায় না। এগুলি কি প্রমাণ করে না অতিরিক্ত সূর্যরশ্মি মানুষের পক্ষে উপযুক্ত নয়!হয়তো একটা সময় মানুষ থাকত কোনও নরম আলোয় ভরা গ্রহতে।
মানুষের মধ্যেই প্রচুর দীর্ঘস্থায়ী রোগ বা ক্রনিক ডিজিজ দেখা দেয় কেন? ডঃ এলিস সিলভারের মতে, ব্যাক পেন (back pain) হল মানুষের অন্যতম দীর্ঘস্থায়ী রোগ। পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ এই রোগে ভোগেন। কারণ, মানুষ পৃথিবীর অনান্য প্রাণীর মতো চার পায়ে হাঁটে না। এর ফলে, হাঁটা চলা ও বিভিন্ন কাজে মাধ্যাকর্ষণের সাহায্য পায় না। পৃথিবীর বাকি প্রাণীদের কি ঘাড়ে, পিঠে, কোমরে ব্যাথা হয়? মানুষের এই ‘ব্যাক পেন’ রোগটিই প্রমাণ করে, মানুষের দেহ অন্য কোনও গ্রহে বসবাসের উপযুক্ত হয়ে সৃষ্টি হয়েছিল। যে গ্রহের মাধ্যাকর্ষণ ছিল পৃথিবীর তুলনায় অনেক কম।
পৃথিবীতে থাকা কিছু দীর্ঘজীবী প্রাণী, যেমনঃ আফ্রিকার হাতি, অ্যালডাবরা ও গ্যালাপাগোস দ্বীপের কচ্ছপ, বো-হেড তিমি, গ্রেটার ফ্লেমিঙ্গো, গ্রিন-উইং ম্যাকা ওদের চোখেও কি চল্লিশের পরে হাইপার মেট্রোপিয়া ঘটে? বয়েসের সঙ্গে সঙ্গে তাদের শ্রবণক্ষমতা ক্ষমতা হ্রাস পায়।
পৃথিবীর কোনও মানুষই ১০০% সুস্থ নয় কেন? প্রত্যেকেই এক বা একাধিক রোগে ভোগেন কেন?
মানব শিশুর মাথা বড় হওয়ার জন্য নারীদের স্বাভাবিক উপায়ে প্রসব করতে প্রবল যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। প্রসব করতে গিয়ে আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ মা ও শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মানুষ ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোনও প্রজাতির লক্ষ লক্ষ স্ত্রী প্রাণী ও শাবক প্রসবকালে মারা গিয়েছে কী? মানব শিশু জন্মের পরেই পৃথিবীর উন্নত প্রাণীগুলির শাবকদের মতো হাঁটতে শিখে না কেন?
মানুষের দেহে কেন ২২৩টি অতিরিক্ত জিন রয়েছে? পৃথিবীর অনান্য প্রাণীদের দেহে অতিরিক্ত জিন নেই কেন?
মানুষের ঘুম নিয়ে গবেষণা করে গবেষকরা বলছেন পৃথিবীতে দিন ২৪ ঘন্টার, কিন্তু আমাদের দেহের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি (body clock) বলছে, আমাদের দিন হওয়া উচিত ছিল ২৫ ঘন্টার। মানবজাতির সৃষ্টিলগ্ন থেকেই দেহঘড়িতে একটি দিনের জন্য কেন ২৫ ঘন্টা বরাদ্দ করা হয়েছিল!
বিভিন্ন বিজ্ঞানী ডঃ এলিস সিলভারের থিওরিটির ব্যাপক সমালোচনা করেছেন। কিন্তু অনেকে আবার তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। তাঁরা বলেছেন ডঃ এলিস সিলভার যে যুক্তিগুলো উপস্থাপন করেছেন, সেগুলো কিন্তু একেবারেই ফেলে দেওয়ার মতো নয়! সত্যিই তো পৃথিবীর অনান্য প্রজাতির জীবের চেয়ে আমরা কেন বা বেশি আলাদা? বুদ্ধিমত্তায় কেনই বা বিশেষ আগানো?
সত্যি আসলেই কী আমরা পৃথিবীর প্রাণী! নাকি আমরা ভিনগ্রহ থেকে এসে পৃথিবী গ্রহকে শাসন করছি! রহস্যটির উত্তর লুকিয়ে থাক কালের গর্ভে! একটা প্রশ্নটা কিন্তু, থেকেই যায়! মানুষের সৃষ্টি যদি পৃথিবীতে না হয়ে থাকে বা আমরাই যদি ভিনগ্রহ থেকে পৃথিবীতে এসে থাকি, তাহলে কাঁঁদের খুঁজতে আমেরিকার নাসা ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার খচ্চা করছে?
তথ্যসূত্র: Internet
ড:এলিস সিলভা।
Great Post
এতো ভালো লেখা ! পড়ে খুব আনন্দ পেলাম ৷ সত্যি বিজ্ঞানীদের চিন্তাগুলো খুবই মজার ৷ লেখককে অনেক ধন্যবাদ ৷